পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : শব্দগত অর্থে পৌরনীতি হলো নগররাষ্ট্রে বসবাসরত নাগরিকদের আচরণ ও কার্যাবলি সংক্রান্ত বিজ্ঞান। পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ ঈরারপং শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে দুটি ল্যাটিন শব্দ- Civis ও Civitas থেকে। Civis অর্থ ‘নাগরিক’, আর Civitas অর্থ ‘নগররাষ্ট্র’। সুতরাং উৎপত্তিগত অর্থে নগররাষ্ট্র ও নগরবাসী সম্পর্কিত রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে জ্ঞানের যে শাখা গড়ে উঠেছে তাই পৌরনীতি।
সংস্কৃত ভাষায় নগরকে ‘পুর’ বা ‘পুরী’ এবং নগরের অধিবাসীদের ‘পুরবাসী’ বলা হয়। আর পৌর হচ্ছে ‘পুর’ এর বিশেষণ যার অর্থ পুর বা নগর সংক্রান্ত বিষয়। প্রাচীন গ্রিসের এথেন্স, স্পার্টা ইত্যাদি ছিল এক একটি নগররাষ্ট্র। তবে বিশ্বের বর্তমান রাষ্ট্রগুলো প্রাচীন গ্রিসের ‘নগররাষ্ট্রের’ (City-State) মতো ছোট ও সরল নয়।
পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১: তানভীর ও রাশেদ দুই বন্ধু। তারা দু’জনে ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ছে। রাষ্ট্র, সরকার সংবিধান, নাগরিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা এই সব বিষয়ের প্রতি তানভীরের আগ্রহ বেশি। অন্যদিকে, রাশেদ সব সময় মুদ্রাব্যবস্থা, আয়-ব্যয়, বাজেট তৈরি, সম্পদের সুষম বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। তাই কলেজে তারা পছন্দমত বিষয় নির্বাচন করে। তানভীর ও রাশেদ পাঠ্যবিষয় নিয়ে আলোচনা করে লক্ষ করল বিষয় দু’টি ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য এক।
ক. রাষ্ট্র কী?
খ. শব্দগত অর্থে পৌরনীতি বলতে কী বোঝায়?
গ. তানভীর ও রাশেদ কোন দু’টি বিষয়ের প্রতি আগ্রহী? তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে নির্ণয় কর।
ঘ. তানভীর ও রাশেদের মত তুমিও কি মনে কর বিষয় দুইটি ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য অভিন্ন? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রাষ্ট্র এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন যার নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সংগঠিত সরকার, সার্বভৌমত্ব এবং কম অথবা বিপুল জনসমষ্টি রয়েছে।
খ. শব্দগত অর্থে পৌরনীতি হলো নগররাষ্ট্রে বসবাসরত নাগরিকদের আচরণ ও কার্যাবলি সংক্রান্ত বিজ্ঞান।
পৌরনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ ঈরারপং শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে দুটি ল্যাটিন শব্দ- Civis ও Civitas থেকে। Civis অর্থ ‘নাগরিক’, আর Civitas অর্থ ‘নগররাষ্ট্র’। সুতরাং উৎপত্তিগত অর্থে নগররাষ্ট্র ও নগরবাসী সম্পর্কিত রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে জ্ঞানের যে শাখা গড়ে উঠেছে তাই পৌরনীতি। সংস্কৃত ভাষায় নগরকে ‘পুর’ বা ‘পুরী’ এবং নগরের অধিবাসীদের ‘পুরবাসী’ বলা হয়। আর পৌর হচ্ছে ‘পুর’ এর বিশেষণ যার অর্থ পুর বা নগর সংক্রান্ত বিষয়। প্রাচীন গ্রিসের এথেন্স, স্পার্টা ইত্যাদি ছিল এক একটি নগররাষ্ট্র। তবে বিশ্বের বর্তমান রাষ্ট্রগুলো প্রাচীন গ্রিসের ‘নগররাষ্ট্রের’ (City-State) মতো ছোট ও সরল নয়।
গ. উদ্দীপকের বর্ণনা অনুযায়ী, তানভীর পৌরনীতি ও সুশাসনের প্রতি, আর রাশেদ অর্থনীতি বিষয়ের প্রতি আগ্রহী।
পৌরনীতি ও সুশাসন হচ্ছে সামাজিক বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে সরকারের সংগঠন ও পদ্ধতি, সংবিধান এবং নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্যসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি এটি নাগরিকের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং স্থানীয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে। অন্যদিকে, অর্থনীতি বা অর্থশাস্ত্র সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা, যা পণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ, বিনিময়, বিতরণ, ভোগ ও ভোক্তার আচরণ এবং মানুষের অভাব ও বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সীমিত সম্পদ সম্পর্কে আলোচনা করে।
উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, দুই বন্ধু তানভীর ও রাশেদ একই কলেজে দুটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ছে।
রাষ্ট্র সরকার, সংবিধান, নাগরিক, আন্তর্জাতিক সংম্বা এগুলোর প্রতি তানভীরের আগ্রহ থাকায় সে পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়টি নিয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে মানুষ যেসব কাজ করে তার সবকিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। আবার পৌরনীতি ও সুশাসনের পরিধি বা বিষয়বস্তু কেবল সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি নাগরিকতার সাথে সম্পর্কিত সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। অন্যদিকে, মুদ্রা ব্যবস্থা, আয়-ব্যয়, বাজেট তৈরি, সম্পদের সুষম বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি রাশেদ বেশি আগ্রহী। এটি অর্থনীতি বিষয়টিকেই নির্দেশ করে। কেননা, অর্থনীতি নাগরিকদের অর্থ উপার্জন, অর্থ ব্যয় এবং সীমিত অর্থে কীভাবে বহুবিধ চাহিদা পূরণ করতে হয় সে সম্পর্কে জ্ঞান দান করে।
ঘ. হ্যাঁ, তানভীর ও রাশেদের মত আমিও মনে করি বিষয় দুইটি ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য অভিন্ন।
উদ্দীপকে উল্লিখিত পৌরনীতি ও সুশাসন এবং অর্থনীতি বিষয় দুটি গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। উভয়ই সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা। পৌরনীতি ও সুশাসনকে বলা হয় নাগরিকতা বিষয়ক বিজ্ঞান, আর অর্থনীতিকে বলা হয় অর্থনীতি বিষয়ক বিজ্ঞান। পৌরনীতি ও সুশাসন নাগরিকের অধিকার, দায়িত্ব, কর্তব্য, আচরণ, প্রত্যাশা প্রভৃতি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে। আর অর্থনীতি নাগরিকের সুবিধার্থে বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। উভয়ের লক্ষ্য নাগরিকের কল্যাণ সাধন করা।
প্রতিটি রাজনৈতিক সমস্যার যেমন অর্থনৈতিক দিক রয়েছে, তেমনি প্রতিটি অর্থনৈতিক সমস্যার রয়েছে রাজনৈতিক দিক। তাই রাজনীতিবিদদের অর্থনৈতিক জ্ঞান এবং অর্থনীতিবিদদের রাজনৈতিক জ্ঞান থাকা দরকার। সমাজসেবা, সমবায়, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, সম্পদের বণ্টন, উৎপাদন ইত্যাদি পৌরনীতি ও অর্থনীতি উভয় শাস্ত্রেই গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়। পৌরনীতি ও সুশাসন মূলত নাগরিককে অধিকার ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন করে। অন্যদিকে, অর্থনীতি মানুষের জীবনে অভাব ও চাহিদার মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করে সুন্দর ও সুখী জীবনযাপনে সহায়তা করে থাকে। এভাবে এ দুটি বিষয় নাগরিক জীবনকে পরিপূর্ণতা দেওয়ার জন্য কাজ করে। একটি দেশের রাজনৈতিক সংগঠনের স্থায়িত্ব ও সমৃদ্ধি সে দেশের অর্থনৈতিক সংগঠনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। আবার কোনো দেশের আর্থিক উন্নতি ও অবনতি সমানভাবে সে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল।
পরিশেষে বলা যায়, বর্তমান কল্যাণমূলক রাষ্ট্রগুলো নাগরিকের সার্বিক মঙ্গলের লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসংস্থান, মজুরি, সমবায় আন্দোলন, কর-খাজনা ইত্যাদি অর্থনৈতিক কাজগুলো রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। এদিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায়, । পৌরনীতি ও সুশাসন এবং অর্থনীতি প্রকৃতপক্ষে গভীরভাবে পরস্পর সম্পর্কিত দুটি বিষয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২: রাফি একাদশ শ্রেণিতে মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু বিষয় বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে সে তার বাবার কাছে পরামর্শ চাইল। তিনি তার সন্তানকে সুনাগরিকের গুণাবলি অর্জন এবং নাগরিক অধিকার ভোগ ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালনের জন্য নাগরিকতা সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়কে পাঠ্য হিসেবে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। তখন রাফি তার বাবাকে বলল, এ বিষয়ে অনার্স পড়ার তো কোনো সুযোগ নেই। রাফির বাবা বললেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ের সাথে ঘনিষ্ঠতর একটি বিষয়ে অনার্স পড়ার সুযোগ আছে।
ক. সুশাসন কী?
খ. আইনের শাসন বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে রাফির বাবা যে বিষয়টি বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তার বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দুটি বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: জাহিন উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র। সে তার পাঠ্যবিষয় হিসেবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বেছে নিয়েছে। এর প্রথমটি রাষ্ট্রে একজন নাগরিক হিসেবে ব্যক্তির কার্যাবলি ও অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করে, আর অন্যটি শিক্ষা দেয় কীভাবে একজন নাগরিক আয় ও ব্যয়ের সঠিক জ্ঞান লাভের মাধ্যমে জীবনকে সমৃদ্ধ করবে।
ক. নাগরিকতা কী?
খ. তুমি কীভাবে একজন স্থানীয় নাগরিক?
গ. উদ্দীপকে নির্দেশিত প্রথম বিষয়টি অধ্যয়নের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয় দুটি পরস্পর গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত ব্যাখ্যা করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: কামালের বাবা একজন সুনাগরিক। তিনি সন্তানকে তার আদর্শে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে দুটি বিষয় অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। প্রথম বিষয়টি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার পাশাপাশি রাষ্ট্র, সরকার, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি রাষ্ট্রের অতীত ঘটনাবলির আলোকে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে সহায়তা করবে।
ক. Civitas শব্দের অর্থ কী?
খ. পৌরনীতিকে নাগরিকতা বিষয়ক বিজ্ঞান বলা হয় কেন?
গ. প্রথম বিষয়টি কীভাবে কামালকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে? ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয় বিষয়ের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী নায়লা বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত তার বান্ধবীকে বলছিল, দেশের উন্নতি করতে হলে আমাদের এমন কিছু গুণাবলি অর্জন করা প্রয়োজন, যা একটি বিশেষ বিষয় অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি।
ক. ‘Natus’ শব্দের অর্থ কী?
খ. জাতি বলতে কী বোঝায়?
গ. নায়লা যে গুণাবলি অর্জনের কথা বলছিল সেগুলোর বর্ণনা দাও।
ঘ. উক্ত গুণাবলি রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে আবশ্যক- বিশ্লেষণ করো।
◉ আরও দেখো: পৌরনীতি ১ম ও ২য় পত্র সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ১ম অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে মোট ৫টি প্রশ্ন উত্তর আমরা তোমাদের জন্য তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। সবগুলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post