পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর : যে সব অধিকার একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয় সেগুলোকে রাজনৈতিক অধিকার বলে। রাজনৈতিক অধিকার সংবিধান অথবা আইনের মাধ্যমে স্বীকৃত থাকে। এ অধিকার ভোগের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে রাষ্ট্রের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে পারে। চারটি রাজনৈতিক অধিকার হলো: ১. ভোটদান করা ২. নির্বাচিত হওয়া ৩. সরকারি চাকরি লাভ ও ৪. বিদেশে অবস্থানকালে নিরাপত্তা লাভ।
পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী কীভাবে সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে?
উত্তর : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী (Pressure Group) হচ্ছে কোনো সংগঠিত সামাজিক গোষ্ঠী যারা নিজেদের স্বার্থরক্ষা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের আচরণকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে না। এরা সরকারের কাছে তাদের দাবি-দাওয়া উত্থাপন করে।
দাবি দাওয়া আদায় না হলে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। আবার সরকারের নীতিবহির্ভূত কাজের বিরুদ্ধে জনসমর্থন গড়ে তোলে। গোষ্ঠীগুলো নানা বিষয়ে সরকারকে যৌক্তিক পরামর্শ প্রদান করে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সক্রিয় ভূমিকার ফলে সরকার জনকল্যাণমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য হয়।
২. তথ্য অধিকার আইন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : বাংলাদেশ সরকার তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০০৯ সালের ৫ এপ্রিল যে আইন পাস করে তাই তথ্য অধিকার আইন। তথ্য অধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার। রাষ্ট্রের বিধানাবলি মান্য করা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো নাগরিকের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে তথ্য অধিকার বলে।
এর আওতায় আইনানুগ কোনো প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কর্তৃপক্ষের গঠন, উদ্দেশ্য, কার্যাবলি, কর্মসূচি, দাপ্তরিক নথিপত্র, আর্থিক সম্পদের বিবরণ ইত্যাদি তথ্য হিসেবে বিবেচিত। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মতো বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া প্রত্যেক নাগরিকেরই তথ্য জানার এবং জানানোর অধিকার রয়েছে।
৩. অর্থনৈতিক সাম্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর : অর্থনৈতিক সাম্য বলতে উৎপাদন ও বণ্টনের ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য দূর করে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান করাকে বোঝায়। অর্থনৈতিক সাম্য থাকলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সব মানুষ কাজ করার ও ন্যায্য মজুরি পাবার সুবিধা লাভ করে। অর্থনৈতিক সাম্যের মূল কথা হচ্ছে যোগ্যতা অনুযায়ী সম্পদ ও সুযোগের বণ্টন। ব্রিটিশ রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হ্যারত জোসেফ লাস্কি ঐধৎড়ষফ ঔড়ংবঢ়য খধংশর. এর মতে, ‘ধনবৈষম্যের সাথে অর্থনৈতিক সাম্য অসঙ্গতিপূর্ণ হবে না, যদি এই । বৈষম্য দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
৪. চারটি রাজনৈতিক অধিকারের নাম লেখো।
উত্তর : যে সব অধিকার একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয় সেগুলোকে রাজনৈতিক অধিকার বলে। রাজনৈতিক অধিকার সংবিধান অথবা আইনের মাধ্যমে স্বীকৃত থাকে। এ অধিকার ভোগের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে রাষ্ট্রের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে পারে। চারটি রাজনৈতিক অধিকার হলো: ১. ভোটদান করা ২. নির্বাচিত হওয়া ৩. সরকারি চাকরি লাভ ও ৪. বিদেশে অবস্থানকালে নিরাপত্তা লাভ।
৫. স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ ও অটুট রাখার জন্য কতগুলো পদ্ধতি রয়েছে। এগুলোকে স্বাধীনতার রক্ষাকবচ বলা হয়। স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এটি সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথকে সুগম করে। স্বাধীনতা অর্জনের পর তা রক্ষা করাও অত্যন্ত জরুরি।
ব্রিটিশ রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হ্যারল্ড জোসেফ শাস্কি এর মতে, ‘সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা না থাকলে অধিকাংশ ব্যক্তি স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। স্বাধীনতার অনেকগুলো রক্ষাকবচ রয়েছে। যেমন- আইন, সংবিধানে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সামাজিক ন্যায়বিচার, দায়িত্বশীল সরকারব্যবস্থা, সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ইত্যাদি।
৬. তথ্য অধিকার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : তথ্য অধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি মানবাধিকার। রাষ্ট্রের বিধানাবলি মানা সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো বিষয়ে নাগরিকের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে তথ্য অধিকার বলে। আইনানুগ কোনো প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কর্তৃপক্ষের গঠন, উদ্দেশ্য, কার্যাবলি, কর্মসূচি, দাপ্তরিক নথিপত্র, আর্থিক সম্পদের বিবরণ ইত্যাদিকে তথ্য বলা হয়।
প্রত্যেক নাগরিকেরই তথ্য জানার এবং জানানোর অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের ৫ এপ্রিল “তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ পাস করে। এ আইনটি সাংবাদিক, গবেষক, মানবাধিকারকর্মী, সমাজসেবকসহ নাগরিক সমাজের উপকারে আসছে এবং কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রশংসা কুড়িয়েছে।
৭. লালফিতার দৌরাত্ম্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : লালফিতার দৌরাত্ম্য বলতে আমলাতন্ত্রের কেঠার আনুষ্ঠানিকতা, দীর্ঘসূত্রিতা, নিয়ম-কানুনের বাড়াবাড়ি বা পূর্ববর্তী নিয়ম-কানুনকে অন্যভাবে অনুসরণ ও অনুকরণ করাকে বোঝায়। সপ্তদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে Red Tapism বা ‘পালফিতার দৌরাত্ম্য’ প্রত্যয়টির প্রচলন হয়। সে সময় সরকারি ফাইলপত্র লাল রঙের ফিতায় বেঁধে রাখা হতো।
তখন থেকেই আমলাতন্ত্রের অতি আনুষ্ঠানিকতা, দীর্ঘসূত্রিতা, নিয়মকানুনের বেশি কড়াকড়ি বোঝাতে লালফিতার দৌরাত্ম্য শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়। লালফিতার দৌরাত্ম্যের ফলে মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর বিভিন্ন বিষয় ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে থাকে। এতে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হয় ও নাগরিকরা ভোগান্তির শিকার হয়। এ বিষয়টিই লালফিতার দৌরাত্ম্য বা Red Tapism নামে পরিচিত।
৮. সামাজিক ন্যায়বিচার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : সামাজিক ন্যায়বিচার বলতে বোঝায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সমাজের সবার প্রতি বিচারের মানদ- হবে এক ও অভিন্ন। আইনের চোখে সবাই সমান সমাজে বসবাসকারী সবার সুবিচার ও সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষিত হবে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সামাজিক ন্যায়বিচার ব্যক্তিস্বাধীনতার অন্যতম রক্ষাকবচ।
৯. তথ্য অধিকার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : তথ্য অধিকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি মানবাধিকার। রাষ্ট্রের । বিধানাবলি সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো বিষয়ে নাগরিকের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে তথ্য অধিকার বলে। আইনানুগ কোনো প্রতিষ্ঠান, সংগঠন বা কর্তৃপক্ষের গঠন, উদ্দেশ্য, কার্যাবলি, কর্মসূচি, দাপ্তরিক নথিপত্র, আর্থিক সম্পদের বিবরণ ইত্যাদিকে তথ্য বলা হয়।
প্রত্যেক নাগরিকেরই তথ্য জানার এবং জানানোর অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের ৫ এপ্রিল তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ পাস করে। এ আইনটি সাংবাদিক, গবেষক, মানবাধিকারকর্মী, সমাজসেবকসহ নাগরিক সমাজের উপকারে আসছে এবং কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সবমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
১০. নাগরিকদের কেন কর্তব্য পালন করা উচিত?
উত্তর : রাষ্ট্রের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে গতিশীল ন্যায়ানুগ করার জন্য নাগরিকদের কর্তব্য পালন করা উচিত। রাষ্ট্রে নাগরিকদের কর্তব্য পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ সংবিধানের ২১নং অনুচ্ছেদে নাগরিকদের কর্তব্য পালনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অধিকার ভোগের পাশাপাশি কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে ব্যক্তি ও সমাজজীবনে উন্নতি লাভ করা যায়। রাষ্ট্র ও সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা কেবল কর্তব্য পালনের মাধ্যমেই সম্ভব। তাছাড়া রাষ্ট্রের কাছ থেকে অধিকার পেতে হলে নাগরিককে কর্তব্য পালন করতে হয়।
আরো দেখো: পৌরনীতি ও সুশাসন সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post