পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ৮ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামী ও জাসদ নির্বাচন বর্জন করে। উপরন্তু রাজনৈতিক দলগুলো মনোনয়ন জমা দেয়া ও মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং নির্বাচনের দিন সর্বাত্মক হরতাল পালন করে। ফলে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং হরতাল, সহিংস আন্দোলন ইত্যাদির কারণে উক্ত নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়।
পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ৮ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কী ধরনের কাজ সম্পাদন করে?
উত্তর : বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন বাস্তবায়ন ও ও সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করে। নির্বাচন ব্যবস্থায় আইন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ, মনোনয়নপত্র বাছাই চূড়ান্ত মনোনয়নপত্র প্রকাশ, নির্বাচনি আচরণবিধি ঘোষণা, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন গ্রহণ ও বাতিল, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন গ্রহণ, ফলাফল প্রকাশ এবং নির্বাচিত দলকে সরকার গঠনের জন্য গেজেট প্রকাশসহ বিভিন্ন আইনি কার্যক্রম করে।
২. নির্বাচনে কেন নাগরিকদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন?
উত্তর : আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিনিধিত্বমূলক শাসন পরিচালিত।
নাগরিকগণ তাদের ভোট প্রদানের মাধ্যমে প্রতিনিধি নিবার্চন করে আইন প্রণয়ন এবং সরকার পরিচালনায় অংগ্রহণ করে থাকে। আর প্রতিনিধি বাছাইয়ের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণ তথা নাগরিকদের পক্ষেই শাসন পরিচালনা করে থাকে। আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের সফলতার পূর্বশর্তই হচ্ছে নির্বাচন। এজন্যই বর্তমান প্রতিনিধিত্বমূলক শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচনে নাগরিকের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
৩. নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠিত হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান।
সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ নির্দেশ করবেন, সেরূপ সংখ্যক অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। উক্ত বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপ্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করবেন।
৪. ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হওয়ার সম্ভাবনায় ভোটার উপস্থিতি কম ছিল।
৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামী ও জাসদ নির্বাচন বর্জন করে। উপরন্তু রাজনৈতিক দলগুলো মনোনয়ন জমা দেয়া ও মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং নির্বাচনের দিন সর্বাত্মক হরতাল পালন করে। ফলে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং হরতাল, সহিংস আন্দোলন ইত্যাদির কারণে উক্ত নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়।
৫. গণভোট বলতে কী বুঝ?
উত্তর : গণভোট বলতে কোনো বিষয়ে জনমত যাচাইকে বোঝানো হয়। যদি কোনো বিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদের আইনই যথেষ্ট বলে মনে না হয়, সেক্ষেত্রে এরূপ কোনো বিলে সম্মতিদানের পূর্বে রাষ্ট্রপতি জনমত যাচাইয়ের ব্যবস্থা করেন। এটাই গণভোট নামে পরিচিত।
৬. কীভাবে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : নির্বাচন ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়।
এ ব্যবস্থায় জনগণের অভাব, অভিযোগ জানার এবং সেগুলো দূরীকরণে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ যথাযথ ভূমিকা পালনের সুযোগ পায়। বস্তুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়। তাই বলা যায়, নির্বাচন সরকার ও জনগণের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে।
৭. নির্বাচকম-লী বলতে কী বোঝ?
উত্তর : প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য যারা প্রতিনিধি নির্বাচন করে তাদেরকে নির্বাচকম-লী বলে।
নির্বাচকমণ্ডলী বা ভোটাররাই হচ্ছে প্রতিনিধি বাছাইয়ের জন্য যোগ্য বিচারক। বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়স্ক যারা ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে তাদেরকে ভোটার বা নির্বাচকম-লী বলা হয়।
৮. প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়াকে কী বলে? ব্যাখা করো।
উত্তর : প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়াকে বলা হয় নির্বাচন ।
নির্বাচন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে দেশের ভোটাধিকার প্রাপ্ত নাগরিকগণ তাদের প্রতিনিধি বাছাই করে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার একটি নিয়মিত ও দীর্ঘ মেয়াদি রাজনৈতিক ব্যবস্থাই হলো নির্বাচন। এটি মূলত প্রতিনিধি বাছাইয়ের একটি প্রক্রিয়া। এটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার একটি মৌলিক এবং অপরিহার্য বিষয়। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই যোগ্য প্রতিনিধি বাছাই করে শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়।
৯. বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তর : বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থার প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
১. সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থার সর্বস্তরে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা সচল রাখা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে প্রত্যেক নাগরিক ভোটদানের অধিকারী।
২. বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটারগণ তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রয়োগ করে থাকে। ভোট প্রদানের গোপনীয়তা রক্ষার মাধ্যমে তারা প্রতিনিধি নির্বাচন করে।
১০. বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থার দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করো।
উত্তর : বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থার প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
১. বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো- সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থার সর্বস্তরে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা সচল রাখা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব প্রাপ্তবয়স্ক, অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে প্রত্যেক নাগরিক ভোটদানের অধিকারী।
২. বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটারগণ তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রয়োগ করে থাকে।
আরো দেখো: পৌরনীতি ও সুশাসন সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ৮ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post