পৌরনীতি ২য় পত্র ১ম অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : বঙ্গভঙ্গ বলতে ১৯০৫ সালে বাংলা প্রেসিডেন্সিকে ২ ভাগে বিভক্ত করাকে বোঝায়। প্রায় ২ লক্ষ বর্গমাইল আয়তনের বাংলা প্রেসিডেন্সিকে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে পূর্ব বঙ্গ ও আসাম এবং বাংলা প্রদেশ নামে ২টি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়। ব্রিটিশ ভারতের তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করেন। যা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।
পৌরনীতি ২য় পত্র ১ম অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১: ঔপনিবেশিক শাসন ও নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত ‘গ’ রাষ্ট্রের জনগণ দীর্ঘদিন যাবৎ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে চলেছে। গণআন্দোলনে বাধ্য হয়ে শাসকগোষ্ঠী একটি নতুন আইন প্রণয়ন করে রাষ্ট্রকে দুভাগে ভাগ করে দুটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্ম দিয়ে দেশ ত্যাগ করে।
ক. মন্ত্রিমিশন পরিকল্পনার সদস্য সংখ্যা কতজন?
খ. বঙ্গভঙ্গ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পঠিত কোনো আইনের সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আইনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মন্ত্রিমিশন পরিকল্পনার সদস্য সংখ্যা ৩ জন।
খ. বঙ্গভঙ্গ বলতে ১৯০৫ সালে বাংলা প্রেসিডেন্সিকে ২ ভাগে বিভক্ত করাকে বোঝায়।
প্রায় ২ লক্ষ বর্গমাইল আয়তনের বাংলা প্রেসিডেন্সিকে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে পূর্ব বঙ্গ ও আসাম এবং বাংলা প্রদেশ নামে ২টি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়। ব্রিটিশ ভারতের তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করেন। যা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।
গ. উদ্দীপকে প্রণীত আইনের সাথে আমার পঠিত ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের সাদৃশ্য রয়েছে। ভারতবর্ষের জনগণ ব্রিটিশ শাসনের এক পর্যায়ে তাদের শোষণ থেকে মুক্তি পেতে গণআন্দোলন শুরু করে। তাছাড়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের পরস্পর বিরোধী দাবির প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার মহাসমস্যায় পড়ে। ভারতের এই রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা দূর করার লক্ষ্যে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটেন ১৯৪৭ সালের ৩ জুন একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
এটি কার্যকর করার লক্ষ্যে ৪ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনি একটি বিল উত্থাপন করেন। এ বিলে ব্রিটিশ ভারতে ‘ভারত’ ও ‘পাকিস্তান’ নামে দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। ১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই বিলটি রাজকীয় সম্মতির মাধ্যমে আইনে পরিণত হয়। এটিই ১৯৪৭ সালের ‘ভারত স্বাধীনতা আইন’ নামে খ্যাত।
উদ্দীপকের ‘গ’ রাষ্ট্রের জনগণ ঔপনিবেশিক শোষণ থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘদিন যাবৎ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে চলেছে। তাদের গণআন্দোলনে বাধ্য হয়ে শাসকগোষ্ঠী একটি নতুন আইন প্রণয়ন করে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়। শাসকগোষ্ঠীর প্রণীত নতুন আইন অনুযায়ী জন্ম হয় দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের। এ আইনের সাথে ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত আইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আইন অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের গুরুত্ব অপরিসীম।
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সমস্যা সমাধানের পথ সুগম হয়। এর মাধ্যমে ভারতবর্ষে দুইশ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে এবং পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। এ আইনের মাধ্যমে গভর্নর জেনারেল ও গভর্নরের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার বিলুপ্তি ঘটে। ফলে পাকিস্তান ও ভারতে দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা দূরীভূত হয় ।
দীর্ঘ আন্দোলন, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পর ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন প্রণয়ন করা হয়। এজন্য এ আইন ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দলিল। উক্ত আইন প্রণয়নের ফলে এ উপমহাদেশে রক্তপাতহীন ও স্বাধীনতা যুদ্ধ ছাড়াই স্বাধীন দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণের কৃষ্টি, সভ্যতা, সাহিত্য ইত্যাদিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করে। ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। নতুন প্রেরণা ও আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দুটি স্বাধীন দেশের জনগণ নতুনভাবে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির ইতিহাসে ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের গুরুত্ব অপরিসীম।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২: ‘গ’ একজন রাজনৈতিক নেতা। মানবতার কল্যাণ তাঁর রাজনীতির মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের কথা চিন্তা করে তিনি একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
ক. ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় কখন?
খ. ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পঠিত কোনো ঐতিহাসিক প্রস্তাবের সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ প্রস্তাবের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ নিহিত ছিল- বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: ভারতীয়দের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ১৮৮৫ সালে সর্বপ্রথম এ উপমহাদেশে একটি রাজনৈতিক দলের উদ্ভব ঘটে। মুসলমানগণও তাদের স্বার্থ এবং দাবি-দাওয়া পূরণের উদ্দেশ্যে আরো একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। দল দুটি প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রিটিশদের প্রতি আনুগত্য দেখায়। পরবর্তীতে দল দুটির নেতৃত্বে ভারত বিভক্ত হয়ে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
ক. দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রবক্তা কে?
খ. প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে কোন কোন রাজনৈতিক দলের কথা বলা হয়েছে?
ঘ. যেকোনো একটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আলোচনা করো। ভারত বিভক্তিতে উক্ত দল দুটির ভূমিকা মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: নাগরিকদের অধিকতর সেবা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকার ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে দু’ভাগে ভাগ করে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন’ ও ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন’ নামে পৃথক দুটি সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত করে।
ক. বঙ্গভঙ্গ কী?
খ. দ্বৈতশাসন বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পঠিত কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনার মূলে ছিল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে নস্যাৎ করা – বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: ‘ক’ রাষ্ট্রের প্রদেশগুলোতে প্রাদেশিক বিষয়গুলোকে দুভাগ করে সংরক্ষিত বিষয় ও হস্তান্তরিত বিষয় নামে নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। সংরক্ষিত বিষয়গুলো গভর্নর তার হাতে রাখেন।
ক. মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইন কী?
খ. লাহোর প্রস্তাব বলতে কী বোঝ?
গ. ‘ক’ রাষ্ট্রের প্রদেশে প্রবর্তিত আইনের সাথে তোমার পঠিত ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনের সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আইনের কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করো।
◉ আরও দেখো: পৌরনীতি ১ম ও ২য় পত্র সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পৌরনীতি ২য় পত্র ১ম অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে মোট ৫টি প্রশ্ন উত্তর আমরা তোমাদের জন্য তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। সবগুলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post