পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বলতে নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক জনগণের স্বশাসনকে বোঝায়।
স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থায় স্থানীয় সরকারগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের নিযুক্ত কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হয় না। এর প্রতিনিধিগণ এলাকার জনসাধারণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত অথবা সরকার কর্তৃক মনোনীত হন। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো আইনের মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এরা নিজ নিজ এলাকার জনগণের নিকট দায়ী থাকেন। বাংলাদেশে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ প্রভৃতি।
পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
১. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘ঢ’ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১১টি। ‘ঢ’ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল, স্বাস্থ্যক্লিনিক ও ঘরবাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিয়ে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ ও জনগণের সক্রিয় ভূমিকায় ‘ঢ’ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাধিত হয়।
ক. পৌরসভার প্রধানকে কী বলা হয়?
খ. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ‘ঢ’ কোন স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান? উক্ত প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি আলোচনা করো।
ঘ. ‘ঢ’ প্রতিষ্ঠানকে অধিক কার্যকর করার ক্ষেত্রে জনগণের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পৌরসভার প্রধানকে মেয়র বলা হয়।
খ. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বলতে নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক জনগণের স্বশাসনকে বোঝায়। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থায় স্থানীয় সরকারগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের নিযুক্ত কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হয় না। এর প্রতিনিধিগণ এলাকার জনসাধারণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত অথবা সরকার কর্তৃক মনোনীত হন। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো আইনের মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
এরা নিজ নিজ এলাকার জনগণের নিকট দায়ী থাকেন। বাংলাদেশে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ প্রভৃতি।
গ. উদ্দীপকের ‘ঢ’ হলো সিটি কর্পোরেশন নামক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর মধ্যে সিটি কর্পোরেশন অন্যতম। বিভিন্ন স্থানের বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহৎ নগরীর পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করা হয়েছে। এটি মূলত একটি নগরভিত্তিক স্থানীয় সংস্থা। উদ্দীপকে এ প্রতিষ্ঠানটিরই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
উদ্দীপকের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ‘ী’-এর সংখ্যা হলো ১১। এ প্রতিষ্ঠানটি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যক্লিনিক ও ঘরবাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিয়ে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ ও জনগণের সক্রিয় ভূমিকায় এ সংস্থার কার্যক্রম সাধিত হয়। সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রেও এমনটি লক্ষণীয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১১ টি সিটি কর্পোরেশন রয়েছে। যথা: ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও গাজীপুর। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ অর্থাৎ মেয়র, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলররা সিটি কর্পোরেশনের কার্যাবলি সম্পাদন করেন।
এসব কাজে জনগণও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। মহানগরীর উন্নয়ন, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নানাবিধ সমস্যা সমাধানের জন্য সিটি কর্পোরেশন বহুবিধ কাজ করে থাকে। সন্ত্রাস দমন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই রোধের জন্য এ প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মহানগরীর জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে সিটি কর্পোরেশন বহুমুখী দায়িত্ব পালন করে। যেমন- হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ ও নির্মাণের অনুমতি প্রদান, শৌচাগার নির্মাণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ইত্যাদি।
এছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের কার্যাবলির মধ্যে রয়েছে— রাস্তাঘাট নির্মাণ, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, বিশ্রামাগার নির্মাণ, মোটরগাড়ি ও ট্রাক ছাড়া অন্য সকল প্রকার যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান ও চলাচল ইত্যাদি। এ সংস্থাটি শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, নগর পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন, সাহায্য ও পুনর্বাসনেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এছাড়াও জনকল্যাণ এবং মহানগরের উন্নয়নে সংস্থাটি ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
ঘ. ‘ঢ’ প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ সিটি কর্পোরেশনকে অধিক কার্যকর করার ক্ষেত্রে জনগণ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। সিটি কর্পোরেশন মহানগরের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে। এর মেয়র ও কাউন্সিলরদের জনগণ সরাসরি নির্বাচন করতে পারে। এর ফলে সিটি কর্পোরেশনে জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারাও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
সিটি কর্পোরেশনের সীমিত জনবলের পক্ষে মহানগরের মতো বিশাল এলাকার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে জনগণ নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ও আবর্জনা ফেলে ও নিজ দায়িত্বে নিজেদের বাড়ির পাশ পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করে। মহানগরের জনগণের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণের জন্য সিটি কর্পোরেশন গভীর ও অগভীর নলকূপ খনন করে। জনগণ পানির অপচয় রোধ করে সকলের জন্য পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে। জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করে। এসব কাজে এলাকার জনগণ সম্পৃক্ত হয়ে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করে। ভূমি অধিগ্রহণ, বাড়িঘর স্থানান্তর ইত্যাদি কাজেও জনগণ কর্পোরেশনকে সাহায্য করে।
এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী ঘরবাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে জনগণ সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন সংগ্রহ করে। রাস্তাঘাটে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার ব্যাপারেও এ প্রতিষ্ঠানটিকে জনগণ সহযোগিতা করে। পরিশেষে বলা যায়, মহানগরের উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সিটি কর্পোরেশন যেসব কাজ করে তা মূলত জনগণের স্বার্থেই পরিচালিত হয়। এ কারণে জনগণও এসব কাজে সহযোগিতা করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
২. ছোট একটি শহরের জনপ্রতিনিধি জনাব কামরুল ইসলাম তার শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট ও খেলাধুলার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। অন্যান্য সদস্যের সহায়তায় তিনি এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা, নিরক্ষরতা দূরীকরণ এবং বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কার্যাবলি সম্পাদন করেন। তিনি ও তার ৪ জন সদস্য নিয়ে গঠিত সালিশি আদালত এলাকার ছোটখাটো বিবাদ ও কলহের মীমাংসা করতে পারেন।
ক. স্থানীয় সরকার কাকে বলে?
খ. সর্বজনীন ভোটাধিকার বলতে কী বোঝায়?
গ. জনাব কামরুল ইসলাম যে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত সরকারের প্রধান তার গঠন উল্লেখ করো।
ঘ. উক্ত স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকারের সকল কার্যক্রম উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয় নাই— মন্তব্য করো।
৩. মরিয়ম বেগম হারবাং গ্রামে বাস করে। সে গ্রামের কয়েকজন দুঃস্থ মহিলাকে নিয়ে একটি কুটির শিল্প গড়ে তোলে। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই তারা অর্থ সংকটে পড়ে। তাদের কিছু মালামালও চুরি হয়ে যায়। তখন তারা বেশ হতাশ হয়ে পড়ে। ঐ সময় তাদের এলাকার একটি স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাদের বেশ সহযোগিতা করে। ফলে তাদের প্রতিষ্ঠানটি এখন অনেক বড় হয়েছে।
ক. বর্তমানে বাংলাদেশে সিটি কর্পোরেশনের সংখ্যা কয়টি?
খ. পৌরসভার গঠন বর্ণনা করো।
গ. উদ্দীপকে যে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কথা বলা হয়েছে তার কার্যাবলি সংক্ষেপে লিখ।
ঘ. তুমি কি মনে কর, উক্ত সংস্থা গ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
৪. আবীর গ্রামে বাস করে। সে এবার প্রথম একটি স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। বিধি অনুযায়ী সে এই সংস্থার নির্বাচনে মোট তিন জনকে ভোট দেবার সুযোগ পায়। সংস্থাটিতে মোট ১৩ জন নির্বাচিত হন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে। আবীর মনে করে, উত্ত সংস্থাটি স্থানীয় জনমতের প্রাধান্য দিয়ে এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত রাখবে এবং স্থানীয় জনগণকে সকল কাজে সম্পৃক্ত করবে।
ক. মুসলিম লীগ কবে গঠিত হয়?
খ. দ্বৈত শাসন বলতে কী বোঝ?
গ. স্থানীয় জনগণের উন্নতিতে এই সংস্থাটি কী কী ভূমিকা রাখছে? আলোচনা করো।
ঘ. ‘উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে জনগণের অংশগ্রহণ যত বেশি হবে গণতন্ত্রের ভীতও শক্তিশালী হবে।’ — তুমি কি একমত যুক্তি দেখাও।
৫. চুন্নু মিয়া গ্রামভিত্তিক স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধান তিনিসহ আরো কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সমন্বয় ঐ প্রতিষ্ঠান গঠিত দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনের জন্য একজন সরকারি বেতনভুক্ত কর্মচারিও নিযুক্ত। রফিক সাহেব অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তার নির্বাচনি এলাকার সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চান। কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কিছু সীমাবদ্ধতা ও অনুভব করেন।
ক. দুর্নীতি কাকে বলে?
খ. খাদ্যে ভেজাল রোধ করা প্রয়োজন কেন?
গ. জনাব চুন্নু মিয়া কোন পদে আসীন? তার প্রতিষ্ঠানের গঠন বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে চুন্নু মিয়ার প্রতিষ্ঠান কী কাজ করে? প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি পরিচালনার ক্ষেত্রে তার সীমাবদ্ধতা কী? বিশ্লেষণ কর।
◉ আরও দেখো: পৌরনীতি ১ম ও ২য় পত্র সকল অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পৌরনীতি ২য় পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে মোট ৫টি প্রশ্ন উত্তর আমরা তোমাদের জন্য তৈরি করেছি। আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। সবগুলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post