সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, প্রায় ১০০ বছর আগেকার নারীর সামাজিক অবস্থান জানতে চেয়ে তোমাদের ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইতে একটি ছক রয়েছে। কোর্সটিকায় আজকের এই আলোচনায় আমি তোমাদের সাথে এই ছকটি পূরণ নিয়ে আলোচনা করব। যদিও ইতোমধ্যেই ইউটিউবে আমি এ বিষয়টির ওপর একটি ক্লাস নিয়েছিলাম। এখানে সেই ক্লাসটি তোমরা লিখিত আকারে পাবে এবং সমাধান সংগ্রহ করতে পারবে।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন যখন ছোট ছিলেন, সমাজে নারীদের জন্য ছিল কঠোর পর্দাপ্রথা। তিনি নিজেও যখন খুব ছোট ছিলেন, তখন বাড়ির বাইরে তো বটেই, এমনকি বাড়ির ভেতরেও তাঁকে পর্দা মেনে চলতে হতো।
প্রায় ১০০ বছর আগেকার নারীর সামাজিক অবস্থান
তাঁর লেখা ‘অবরোধবাসিনী’ বইয়ে তিনি প্রায় একশ বছর আগেকার নারীদের অবরুদ্ধ অবস্থানের কথা কিছু কাহিনি বর্ণনার মাধ্যমে তুলে এনেছেন। বইয়ের শুরুতে তিনি বলেছেন, “গোটা ভারতবর্ষের কুলবালাদের অবরোধ কেবল পুরুষের বিরুদ্ধে নয়, মেয়েমানুষের বিরুদ্ধেও।
তোমরা আজকের আলোচনায় জানতে পারবে:
- প্রায় ১০০ বছর আগেকার নারীর সামাজিক অবস্থান কেমন ছিল?
- প্রায় ১০০ বছর আগেকার নারীর অবস্থান
- ১০০ বছর আগের নারীর অবস্থান ও ভূমিকা
- ১০০ বছর আগের নারীর ভূমিকা
- বর্তমান সময়ে নারীর সামাজিক ভূমিকা
অবিবাহিতা বালিকাদিগকে অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া এবং বাড়ির চাকরানি ব্যতীত অপর কোনো স্ত্রীলোক দেখিতে পায় না। বিবাহিতা নারীগণও বাজিকর-ভানুমতী ইত্যাদি তামাসাওয়ালী স্ত্রীলোকদের বিরুদ্ধে পর্দা করিয়া থাকেন। ” খুশি আপা ওদের ‘অবরোধবাসিনী” থেকে কয়েকটা কাহিনি শোনালেন।
প্রায় ১০০ বছর আগেরকার নারীর সামাজিক অবস্থান
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে নারীদের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। নারীরা শিক্ষাদীক্ষায় ছিল অনগ্রসর। তাদের খুব বেশিদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করার অধিকার ছিল না। তারা বাড়িতে বসেই আরবি এবং ফারসি পড়ত। এর বাইরে তারা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেত না।
যেহেতু নারীদের ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ারই সুযোগ ছিল না, ফলে নারীরা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারত না। আর পড়ালেখা না করার এসব নারীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনও ছিল না।
তখনকার সময়ে বাল্যবিয়ের খুব প্রচলন ছিল। ফলে খুবই অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ের পিড়িতে বসতে হত। অল্প বয়সের মেয়েদের বৃদ্ধ পাত্রের সাথেও বিয়ে দেওয়া হত। আর তখন সতীদাহ প্রথা প্রচলিত থাকায় স্বামী মারা গেলে নারীদেরকেও স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হত।
প্রায় ১০০ বছর আগেরকার নারীর সামাজিক ভূমিকা
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে নারীদের সামাজিক অবস্থান যেমন নড়বড়ে ছিল, তেমন তাদের ভূমিকাও ছিল চার দেয়ালের মধ্যে। নারীদের কাজ ছিল সন্তান জন্ম উৎপাদন, সন্তান লালন-পালন, পরিবারের কর্তার আদেশ-নিষেধ পালন করা ইত্যাদি।
তবে এসময়ে নারীদের জাগরণে বেশকিছু সংখ্যক নারীও কাজ করেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- বেগম রোকেয়া এবং নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরীর মত মহীয়সী নারীরা। তাঁরা নারীদেরকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন। ফলে তখনকার সময়ে অনেক নারীই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। যদিও তা ছিল খুবই নগণ্য। তাই বলা যায়, প্রায় ১০০ বছর পূর্বে নারীর সামাজিক ভূমিকা ছিল খুবই সামান্য।
খুশি আপা বললেন, আমরা রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখা থেকে প্রায় ১০০ বছর আগেকার নারীর একটা চিত্র পেয়েছি আর এখানে আমরা বর্তমান সময়ের নারীর আরো একটা চিত্র পেলাম। চলো, দলগতভাবে এই সময়ের নারীর অবস্থান এবং ভূমিকা খুঁজে ছকে সাজিয়ে উপস্থাপন করি।
দলগতভাবে এই সময়ের নারীর অবস্থান এবং ভূমিকা ছকে সাজিয়ে উপস্থাপন করি: (মূল বইয়ের ১২২ নম্বর পৃষ্ঠা)
বর্তমান সময়ের নারীর সামাজিক অবস্থান
বর্তমান সময়ে নারীর সামাজিক অবস্থান অনেক উন্নত। এখনকার নারীরা আর আগের মত চারদেয়ালের মাঝে আবদ্ধ থাকেন না। তারা বাইরের দুনিয়ার সংস্পর্শে আসেন।
এখনকার সময়ে নারীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পান। আগেরকার সময়ে নারীর যেখানে শুধুমাত্র ঘরে বসে সাধারণ শিক্ষার্জন করতেন, এখনকার সময়ে নারীরা শৈশব থেকেই বিদ্যালয়ে ভর্তি হন, উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যলয়ে ভতি হন, বিদেশে যান। জ্ঞান- বিজ্ঞান চর্চা করেন।
তবে শুধু লেখাপড়ার ক্ষেত্রেই না, ক্যারিয়ারের দিক থেকেও নারীরা এখন অনেক অগ্রসর। পড়াশোনা শেষ করে নারীরা এখন ভালো চাকরী করছেন, নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন । পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে সমান অধিকার ভোগ করছেন। তাই বলা যায়, বর্তমান সময়ের নারীরা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি অগ্রসর, স্বাধীন এবং আত্মনির্ভরশীল ।
বর্তমান সময়ের নারীর সামাজিক ভূমিকা
বর্তমান সময়ের নারীরা সামাজিক বিভিন্ন কর্মকা- গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এখন নারীরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছেন। এর ফলে তারা রাষ্ট্রীয় কাজে ভূমিকা রাখছেন। পুরুষের মত নারীরাও সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্ত্রানে কাজ করছেন, জীবিকা নির্বাহ করছেন।
নারীরা এখন পুলিশ অফিসার হচ্ছে, শিক্ষক হচ্ছেন। এছাড়াও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে তারা উচ্চ পদে চাকরীও করছেন। নারীরা এখন প্রধানন্ত্রী হচ্ছেন, রাষ্ট্রের বিরোধী দলের প্রধান হচ্ছেন, ত্রীড়ায় নারীরা শিরোপ জয় করে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছেন।
লেখাপড়ায় নারীরাই এখন পুরুষদের তুলনায় অনেক এগিয়ে। প্রতিবছর এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় মেয়ের পাশের দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে থাকে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা এখন এগিয়ে গেছে এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
শুধু সরকারী কাজেই নয়, বিনোদন, খেলাধুলাসহ অন্যান্য সামাজিক কর্মকা-েও নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়। এসব ক্ষেত্রে তাদের অসামান্য অবদান দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। যা প্রমাণ করে যে, বর্তমান সময়ের নারীর সামাজিক ভূমিকা অপরিসীম ।
১০০ বছর আগেরকার নারীর অবস্থান এবং বর্তমান সময়ের নারীর অবস্থান নিচের ছকে লিখি: (মূল বইয়ের ১২২ নম্বর পৃষ্ঠা)
প্রায় ১০০ বছর আগেরকার নারী
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে নারীদের সামাজিক অবস্থান যেমন নড়বড়ে ছিল, তেমন তাদের ভূমিকাও ছিল চার দেয়ালের মধ্যে। নারীদের কাজ ছিল সন্তান জন্ম উৎপাদন, সন্তান লালন-পালন, পরিবারের কর্তার আদেশ-নিষেধ পালন করা ইত্যাদি।
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে নারীদের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। নারীরা শিক্ষাদীক্ষায় ছিল অনগ্রসর। তাদের খুব বেশিদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করার অধিকার ছিল না। তারা বাড়িতে বসেই আরবি এবং ফারসি পড়ত। এর বাইরে তারা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেত না।
যেহেতু নারীদের ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ারই সুযোগ ছিল না, ফলে নারীরা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারত না। আর পড়ালেখা না করার এসব নারীরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনও ছিল না।
তখনকার সময়ে বাল্যবিয়ের খুব প্রচলন ছিল। ফলে খুবই অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ের পিড়িতে বসতে হত। অল্প বয়সের মেয়েদের বৃদ্ধ পাত্রের সাথেও বিয়ে দেওয়া হত। আর তখন সতীদাহ প্রথা প্রচলিত থাকায় স্বামী মারা গেলে নারীদেরকেও স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হত।
এখনকার সময়ের নারী
এখনকার সময়ে নারীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পান। আগেরকার সময়ে নারীর যেখানে শুধুমাত্র ঘরে বসে সাধারণ শিক্ষার্জন করতেন, এখনকার সময়ে নারীরা শৈশব থেকেই বিদ্যালয়ে ভর্তি হন, উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যলয়ে ভতি হন, বিদেশে যান। জ্ঞান- বিজ্ঞান চর্চা করেন।
বর্তমান সময়ের নারীরা শিক্ষিত হয়ে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকা- গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এখন নারীরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছেন। এর ফলে তারা রাষ্ট্রীয় কাজে ভূমিকা রাখছেন। পুরুষের মত নারীরাও সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্ত্রানে কাজ করছেন, জীবিকা নির্বাহ করছেন। নারীরা এখন পুলিশ অফিসার হচ্ছে, শিক্ষক হচ্ছেন। এছাড়াও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে তারা উচ্চ পদে চাকরীও করছেন। নারীরা এখন প্রধানন্ত্রী হচ্ছেন, রাষ্ট্রের বিরোধী দলের প্রধান হচ্ছেন, ত্রীড়ায় নারীরা শিরোপ জয় করে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছেন।
লেখাপড়ায় নারীরাই এখন পুরুষদের তুলনায় অনেক এগিয়ে। প্রতিবছর এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় মেয়ের পাশের দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে থাকে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা এখন এগিয়ে গেছে এবং রাষ্ট্রের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
শুধু সরকারী কাজেই নয়, বিনোদন, খেলাধুলাসহ অন্যান্য সামাজিক কর্মকা-েও নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়। এসব ক্ষেত্রে তাদের অসামান্য অবদান দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। যা প্রমাণ করে যে, বর্তমান সময়ের নারীর সামাজিক ভূমিকা অপরিসীম ।
আরো দেখো: ৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান সবগুলো অধ্যায়ের সমাধান
উপরে দেওয়া ‘উত্তরমালা’ অপশনে ক্লিক করে ৭ম শ্রেণি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৬ষ্ঠ অধ্যায় প্রায় ১০০ বছর আগেকার নারীর সামাজিক অবস্থান সমাধান সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post