ফ্রিল্যান্সারদের কাছে ফাইভার একটি পরিচিত নাম। নিজের ক্রিয়েটিভিটির প্রমাণ করে এখান থেকে একজন ফ্রিল্যান্সার উপার্জন করতে পারেন বিপুল পরিমাণে অর্থ। কিন্তু নতুন যারা ফাইভারে একাউন্ট খোলেন, তাদের পর্যাপ্ত গাইডলানের অভাবে নিজেদের গিগ র্যাঙ্ক করাতে পারেন না। ফলে ভালো কাজ জানা সত্বেও তাদের সেল হয় না।
আজ কোর্সটিকায় আমরা সামগ্রিক একটি গিগ নয় বরং গিগে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজ নিয়ে কথা বলবো। যার সঠিক ব্যবহার করে আপনি আপনার গিগ বায়ারের কাছে অতি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। এতে করে আপনার গিগ আগের থেকে বেশি র্যাঙ্ক হবে এবং আপনার সেল হওয়ার সম্ভবনাও আগের তুলনায় অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
►► আরো দেখুন: ইমেজ দিয়ে ফাইভার গিগ র্যাঙ্ক করবেন যেভাবে
►► আরো দেখুন: ডাউনলোড করুন সকল ফ্রিল্যান্সিং বাংলা পিডিএফ বই একসাথে
►► আরো দেখুন: মেয়েদের ফ্রিল্যান্সিং – মেয়েদেরও আসা উচিত ফ্রিল্যান্সিং পেশায়
►► আরো দেখুন: ফ্রিল্যান্সিং করতে চান? বায়ারকে ইমপ্রেস করবেন কিভাবে?
►► আরো দেখুন: Download ফ্রিল্যান্সিং : ইন্টারনেট থেকে আয় (Update Version)
►► আরো দেখুন: হাবলুদের ফ্রিল্যান্সিং Download PDF Book
ফাইভারে গিগ তৈরি করার ক্ষেত্রে ফিচার ইমেজ অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গিগ ইমেজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটি আকর্ষণীয় গিগ ইমেজ আপনাকে বায়ার বা ক্লায়েন্ট পেতে অনেক সহযোগিতা করবে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন এটা আসলে কতটা গুরুত্ব বহন করে। তাই আপনার গিগ তৈরির ক্ষেত্রে ফিচার ইমেজের প্রতি আলাদা নজর দিতে হবে। আপনি নিজে যখন রিসার্চের জন্য অন্য কারো গিগ দেখেন, তখন কি দেখে একটি গিগে প্রবেশ করেন? নিশ্চয়ই টাইটেল এবং ইমেজ। ঠিক একইভাবে একজন বায়ার বা ক্লায়েন্ট আপনার গিগ ইমেজ দেখে আকর্ষিত হয়ে গিগে প্রবেশ করবে। আর ভাগ্য ভালো থাকলে অর্ডারও পেয়ে যেতে পারেন।
গিগ ইমেজ তৈরির ক্ষেত্রে আপনাকে অন্তত ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেনে চলতে হবে। আর আপনি এই বিষয়গুলো ফুলফীল করতে পারতে অবশ্যই তা আপনার গিগ র্যাঙ্ক করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
১. Quality
গিগের ফিচার ইমেজের জন্য আপনি যে ইমেজটি পছন্দ বা তৈরি করবেন তার কোয়ালিটি অবশ্যই ভালো হতে হবে। অর্থাৎ কোন রকম pixelated image use করা যাবে না। অনেককেই দেখা যায় গিগের ইমেজ কোয়ালিটির দিকে বিশেষ নজর রাখে না। এতে করে বায়ার আপনার সার্ভিসের ব্যপারে সন্দেহ পোষণ করতে পারে। তাই সতর্কতার সাথে ইমেজের ভালো কোয়ালিটি বজায় রাখুন।
২. Copyright
কপিরাইট ইমেজ অর্থাৎ Stock Image ব্যবহার করবেন না। ফাইভার Terms & Conditions এ Copyright এর ব্যাপারটি খুব কঠোরভাবে বলা আছে। সুতরাং এমনকি Copyright Image ব্যবহারের ফলে আপনার গিগ র্যাঙ্ক তো করবেই না, বরং একাউন্ট ব্যান হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
৩. Clickbait
ইমেজের মাঝে কোন ক্লিক সিম্বল বা আইকন ব্যবহারকে Clickbait বলা হয়। এই ধরেনের কোন Clickbait Symble ব্যবহার করা যাবে না।
৪. Badges
সেলারদের সেল অনুযায়ী ফাইবার আপনাকে ব্যাজ দেবে। কিন্তু আপনি ফাইভারে কত নম্বর সেলার এটা ব্যাজ হিসেবে গিগ ইমেজে ব্যবহার করা যাবে না। আপনি ফাইভারে কোন পজিশনে রয়েছেন এটা বায়ার আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করলেই দেখতে পাবে। তাই গিগ ইমেজে এই ধরনের ব্যাজ কখনই ব্যবহার করা উচিত না।
৫. অতিরিক্ত লেখা পরিহার করুন
অনেককেই দেখা যায় ইমেজের মাঝে অনেক বেশি পরিমাণে টেক্সট ব্যবহার করেন। ফলে বায়ার কনফিউসড হয়ে যায় অনেক সময়। তাছাড়া এতে করে গিগের ইম্প্রেশন ভালো হয় না। সর্বদা চেষ্টা করবেন গিগ ইমেজ যতটুকু ক্লিন রাখা যায়। অর্থাৎ খুবই অল্প কথায় আপনার পারপোস ক্লায়েন্টকে বোঝানো।
৬. কম কনটেন্ট ব্যবহার করুন
গিগ ইমেজে অতিরিক্ত কনটেন্ট ব্যবহারের অভ্যাস পরিহার করুন। যেমন ধরুন, আপনি আপনার বায়ারকে লোগো ডিজাইনের সার্ভিসটি দিকে চান। সেক্ষেত্রে গিগ ইমেজে ইউনিক একটি লোগো ব্যবহার করুন। কখনোই একটি ইমেজে ৪-৫ টি লোগো যুক্ত করে হিজিবিজি করে ফেলবেন না। মূল কথা, যতটুকু জায়গা খালি রেখে মিনিমাল ইমেজ তৈরি করা যায় ততই ভালো।
৭. ইমেজের সাইজ ঠিক রাখুন
গিগের ফিচার ইমেজ তৈরির ক্ষেত্রে সঠিক Proportions অনুসরণ করুন। ইমেজের অনুপাত ঠিক রাখতে 550 Pixels by 370 Pixels রেশিও মেইন্টেইন করে গিগ ইমেজ তৈরি করুন। এই মাপের ইমেজ তৈরি করলে তা আপনার গিগে সুন্দরভাবে মানানসই এবং ফিট হবে।
৮. একই ইমেজ একাধিক গিগে ব্যবহার করবেন না
আপনার যদি একাধিক গিগ থাকে তাহলে একই ইমেজ একাধিক গিগে ব্যবহার করবেন না। প্রতিটি গিগের জন্য ইউনিক ফিচার ইমেজ ডিজাইন করার চেষ্টার করুন এবং আপার সার্ভিসকে আলাদাভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করুন।
৯. নিজের সত্যিকারের চেহারা দেখান
ইমেজে নিজের ছবি দেয়াটা বাধ্যতামূলক কোন শর্ত নয়। কিন্তু আপনি যদি নিজের ছবি আপনার গিগের ফিচার ইমেজে যুক্ত করতে চান, তাহলে রিয়েল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং প্রফেশনাল মানের ইমেজ ব্যবহার করুন।
১০. অপ্রাঙ্গিক ইমেজ ব্যবহার করবেন না
আপনার সার্ভিসের সাথে যায় সর্বদা এমন ইমেজ ব্যবহার করুন। ধরুন, আপনি দিচ্ছেন Digital Marketing এর সার্ভিস, কিন্তু ইমেজে ব্যবহার করেছেন লোগোর আইকন। এর ফলে বায়ার আপনার সার্ভিস নিয়ে সন্দেহ পোষণ করবে। সুতারং এই ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
সবশেষে কিছু বোনাস:
সবকিছু ঠিক রেখে ইমেজ তৈরি তো করলেন। এখন আপনার প্রয়োজন হতে পারে Image SEO করার। Image SEO করলে গিগটি Buyer Friendly হবে। যখন বায়ার তার কোন সার্ভিস ক্রয়ের জন্য সার্চ বক্সে ফ্রিল্যান্সার খুঁজবে, তখন হতে পারে ওই পেইজে আপনার গিগটি থাকতে পারে। কাজ পেতে হলে কোন সুযোগই হাত ছাড়া করা যাবে না। আর তাই আপনার ইমেজের ভেতরেও অদৃশ্য কিছু Keyword ইনপুট করতে হবে। আর এটাই হচ্ছে Image SEO।
কিভাবে করবো Image SEO?
ইমেজের সাইজ (550 Pixels by 370 Pixels) ঠিক রেখে আপনার ফিচার ইমেজটি তৈরি করুন। এরপর ফটোশপের Menu বার থেকে File > File info তে ক্লিক করুন। তারপর একটি ডায়ালগ Box আসবে। সেখানে আপনার ইমেজের প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে বক্সগুলো পূরণ করে সেভ করুন। ব্যস, হয়ে গেল Image SEO এর কাজ। এখন থেকে আপনার ওই ইমেজ অনলাইনের যেখানেই শেয়ার হোক না কেন, তাতে আপনার অথরিটি বা কপিরাইট থাকবে। ইমেজ অপটিমাইচজেশন বা ইমেজ এসইওর জন্য নিচের ভিডিওটি দেখুন।
https://youtu.be/XyBoEraaRDk
সবশেষে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে অবশ্যই ধৈর্য ধরে স্টেপ বাই স্টেপ আপনাকে সামনে আগাতে হবে। জীবনে সফল হওয়ার কোন শর্টকাট নেই। তাই পরিশ্রম করুন। সফলতা আসবেই। প্রিয় পাঠক, কোর্সটিকায় আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান, তা জানিয়ে নিচে কমেন্ট করুন। ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন।
Discussion about this post