ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র ২য় অধ্যায় : বিপণন পরিবেশ হলো নিয়ন্ত্রিত ও অনিয়ন্ত্রিত বিভিন্নউপাদানের সমষ্টি। এগুলো এক ধরনের ‘শক্তি’ হিসেবেও পরিচিত। কারণ এগুলো শক্তির মতোই পরিবেশের উপর প্রভাব বিস্তার করে। প্রথম পাঠে পরিবেশের সাধারণ অর্থ ও বিপণন পরিবেশ-এরপ্রাথমিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পরবর্তী পাঠে আপনি পাবেন ব্যষ্টিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রযোগ্য শক্তি বা উপাদানগুলোর প্রতিষ্ঠানের উপর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
তৃতীয় পাঠে রয়েছে সামষ্টিক পরিবেশ অর্থাৎ নিয়নত্র-বহির্ভূত উপাদানগুলোর আলোচনা। সামগ্রিক পরিবেশের সাথে সমন্দরমূলক বিপণন কার্যক্রম গ্রহণের উপর বিপণনের সফলতা নির্ভর করে। এজন্য বিপণনকারীকে সামগ্রিক পরিবেশ ও বিপণন পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান এবং এগুলোর প্রভাব সম্পর্কে জানতে হয়। কারণ এ শক্তিগুলো সর্বদা পরিবর্তনশীল। পরিবেশের এই পরিবর্তন বিপণনের ক্ষেত্রে যেমন অনিশ্চয়তা ও হুমকি সৃষ্টি করে, তেমনি কিছু সুযোগেরও সৃষ্টি করে।
বিপণনকারী পরিবেশ বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপণন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। তাই সাংগঠনিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য একজন বিপণনকারীকে সংগঠনের বিপণন পরিবেশের উপর গুরতন্তারোপ করতে হয়, যা এই ইউনিটে আলোচনা করা হলো। সর্বশেষ পাঠে বাংলাদেশের বিপণন পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র ২য় অধ্যায়
১. জনাব আসিফ ও জনাব ফাহিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য এম বি এ পাস করে বের হয়েছেন। সম্প্রতি আসিফ অ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে যোগদান করেন, যেটি দেশের মুদ্রাবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও ঋণ নিয়ন্ত্রণের সাথে সংশ্লিষ্ট। অন্যদিকে জনাব ফাহিম ‘ই’ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে যোগদান করেন, যেটি জনগণের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনে ঋণদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন নিশ্চিত করে। কার্যাবলি ভিন্ন হলেও ফাহিমের কর্মরত ব্যাংককে আসিফের কর্মরত ব্যাংকের নিকট দায়বদ্ধ থাকতে হয়।
ক. ই-ব্যাংকিং কি?
খ. গারনিশি আদেশ মান্য করা ব্যাংকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. কার্যাবলির ভিত্তিতে জনাব আসিফের ব্যাংকটি কোন ধরনের ব্যাংক? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ফাহিমের কর্মরত ব্যাংককে আফিসের কর্মরত ব্যাংকের নিকট দায়বদ্ধ থাকার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো।
২. দেশের দ্রব্যমূল্যের মান দিন দিন বেড়েই চলছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্বিগ্ন হয়ে একটি সার্কুলার জারি করে। সেখানে উল্লেখ করা হয় এখন থেকে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে ঋণ নিতে হলে ১% অধিক হারে সুদ দিতে হবে। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর পর্যাপ্ত তারল্য থাকায় এতে কোনো সাড়া যাওয়ায় যায়নি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য সার্কুরার ব্যাংকগুলোর জমার হার ১.৫% বৃদ্ধি করে। এ সিদ্ধান্তে সব ব্যাংক সহযোগিতা করলেও গোমতী ব্যাংক এড়িয়ে যায়। বিষয়টি অনুসন্ধানে ধরা পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ঋণ সুবিধা স্থগিত করে।
ক. নিকাশ ঘর কী?
খ. কোন ব্যাংককে মুদ্রাবাজারের অভিভাবক বলা হয় এবং কেন?
গ. বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম সার্কুলার ঋণ নিয়ন্ত্রণের কোন কৌশলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে তুমি মনে করো? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ঋণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয় সার্কুলার এবং তৎপরবর্তী কার্যক্রম কি ফলপ্রসূ হবে বলে তুমি মনে করো? যুক্তি দাও।
জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন-১. কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী?
উত্তর: জনকল্যাণের উদ্দেশে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এবং সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীনে পরিচালিত দেশের এক ও অনন্য ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে।
প্রশ্ন-২. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব কী?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব হলো দেশের মুদ্রামান স্থিতিশীল রাখা।
প্রশ্ন-৩. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য হলো দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা।
প্রশ্ন-৪. তালিকাভুক্ত ব্যাংক কী?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলার অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়ে কোনো ব্যাংক যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদস্য পদ লাভ করে তখন তাকে তফসিলি বা তালিকাভুক্ত ব্যাংক বলে।
প্রশ্ন-৫. অর্থ সরবরাহ কী?
উত্তর: অর্থ সরবরাহ বলতে দেশের সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত মোট বিহিত মুদ্রার পরিমাণকে বোঝায়।
প্রশ্ন-৬. ব্যাংক সৃষ্ট মুদ্রা কী?
উত্তর: ব্যাংক সৃষ্ট মুদ্রা বলতে চেক, ক্রেডিট কার্ড বা এমন কোনো দলিলকে বোঝায় যা অর্থের মতো ব্যবহৃত হওয়ার কারণে অর্থের উপযোগ বাড়ে; যেমন: চেক, ব্যাংক ড্রাফট, ক্রেডিট কার্ড প্রভৃতি।
প্রশ্ন-৭. ঋণ নিয়ন্ত্রণ কী?
উত্তর: ঋণের পরিমাণ কাম্য মাত্রায় বজায় রাখাকে ঋণ নিয়ন্ত্রণ বলে।
প্রশ্ন-৮. ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয় কোন ব্যাংককে?
উত্তর: ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।
প্রশ্ন-৯. সাধারণ বা সংখ্যাÍক পদ্ধতি কী?
উত্তর: ঋণের উদ্দেশ্য বা ব্যবহারের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আরোপ না করে সাধারণভাবে বাজারে ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলকে সাধারণ বা সংখ্যাÍক পদ্ধতি (Quantitative Method) বলে।
প্রশ্ন-১০. ব্যাংক হার কী?
উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যে সুদের হারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করে বা প্রথম শ্রেণির বিল বা সিকিউরিটিজসমূহ বাট্টা করে নেয় সেই হারকে ব্যাংক হার বলে।
প্রশ্ন-১১. ব্যাংক হার নীতি কী?
উত্তর: ব্যাংক হারের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলকে ব্যাংক হার নীতি বলে।
প্রশ্ন-১২. খোলাবাজার নীতি কী?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে বিভিন্ন ধরনের বন্ড, সিকিউরিটিজ, শেয়ার ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ঋণদান সামর্থ্য হ্রাস-বৃদ্ধির যে কৌশল গ্রহণ করে তাকে খোলাবাজার নীতি বলে।
প্রশ্ন-১৩. জমার হার পরিবর্তন নীতি কী?
উত্তর: জমার হার পরিবর্তন করে ঋণ নিয়ন্ত্রণের কৌশলকে জমার হার পরিবর্তন নীতি বলে।
প্রশ্ন-১৪. CRR কী?
উত্তর: তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের আমানতের যে অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নগদে জমা রাখতে হয় তাকে CRR বলে।
প্রশ্ন-১৫. SLR কী?
উত্তর: তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নগদে ও অংশবিশেষ বন্ড, সিকিউরিটিজ ক্রয় করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখার বিধানকে SLR বলে।
প্রশ্ন-১৬. গুণগত বা নির্বাচনমূলক পদ্ধতি কী?
উত্তর: কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ঋণের উদ্দেশ্য ও ব্যবহারের প্রতি খেয়াল রেখে যে ঋণ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তাকে গুণগত বা নির্বাচনমূলক পদ্ধতি বলে।
প্রশ্ন-১৭. ঋণের বরাদ্দকরণ নীতি কী?
উত্তর: বিশেষ খাত চিহ্নিত করে সেক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ কম বেশি করার নীতিকে ঋণের বরাদ্দকরণ নীতি বলে।
প্রশ্ন-১৮. ভোক্তা ঋণ নিয়ন্ত্রণ কী?
উত্তর: ভোগ্য পণ্য ক্রয়ের জন্য প্রদেয় ঋণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তাকে ভোক্তা ঋণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বলে।
প্রশ্ন-১৯. জামানতি ঋণের প্রান্তিক হার পরিবর্তন কী?
উত্তর: কী পরিমাণ মূল্যের জামানতের বিপক্ষে কত টাকা ঋণ দেয়া হবে সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রয়োজনীয় নিয়ম-নীতি নির্ধারণ করাকে জামানতি ঋণের প্রান্তিক হার পরিবর্তন বলে।
প্রশ্ন-২০. প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ কী?
উত্তর: তালিকাভুক্ত ব্যাংক প্রচলিত নিয়ম ভঙ্গ করে ঋণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাকে প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ বলে।
প্রশ্ন-২১. মুদ্রাবাজার তত্ত্বাবধান কী?
উত্তর: স্বল্পমেয়াদি মূলধন যোগানের জন্য মুদ্রার লেনদেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সমন্বয়ে গঠিত বাজারকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক গঠন ও পরিচালনা করাকে মুদ্রাবাজার তত্ত্বাবধান বলে।
প্রশ্ন-২২. নিকাশ ঘর কী?
উত্তর: ব্যাংকিং লেনদেন থেকে উদ্ভূত আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনার নিষ্পত্তিস্থলই হলো নিকাশ ঘর।
প্রশ্ন-২৩. গারনিশি আদেশ কী?
উত্তর: গারনিশি আদেশ হচ্ছে কোনো ব্যাংকের প্রতি আদালত কর্তৃক প্রদত্ত এক ধরনের আদেশ, যা পাওয়ার পর ব্যাংক কোনো নির্দিষ্ট গ্রাহকের হিসাব বন্ধ করে দেয়।
প্রশ্ন-২৪. বিধিবদ্ধ রিজার্ভ কী?
উত্তর: তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের আমানতের যে নির্দিষ্ট অংশ বাধ্যতামূলকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখা হয় তাকে বিধিবদ্ধ রিজার্ভ বলে। বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের আমানতে ১৩% বিধিবদ্ধ রিজার্ভ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়।
প্রশ্ন-২৫. ”Clearing House”-এর আভিধানিক অর্থ কী?
উত্তর: ”Clearing House”-এর আভিধানিক অর্থ হলো ‘নিষ্পত্তি স্থল’।
প্রশ্ন-২৬. নিকাশ ঘরের অধিবেশন দিনে কয় বার বসে?
উত্তর: নিকাশ ঘরের অধিবেশন দিনে ২ বার বসে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন-১. কোন ব্যাংক বিনিময় হার নির্ধারণ করে? ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিনিময় হার নির্ধারণ করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশীয় মুদ্রার সাথে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অনুকূল রাখার স্বার্থে দেশের অভ্যন্তরে বৈদেশিক মুদ্রার আগমন-নির্গমন এবং ক্রয়-বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে সম্পৃক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ভার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ ছাড়াও এ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ কাম্যস্তরে বজায় রাখার জন্য ব্যাংকটি বিভিন্ন প্রয়াস চালায়।
প্রশ্ন-২. মুদ্রামান সংরক্ষণের দায়িত্ব কার ওপর ন্যস্ত থাকে?
উত্তর: মুদ্রামান সংরক্ষণের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর ন্যস্ত থাকে। দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা ও মুদ্রাবাজারের গঠন ও পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্ভব হয়েছে। মুদ্রাবাজার বলতে মুদ্রা ও মুদ্রা ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণের সাথে জড়িত সংস্থার সমষ্টিকে বোঝায়। মুদ্রাবাজার গঠন, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ কার্যাবলি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্পাদন করে থাকে।
প্রশ্ন-৩. কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকারের হিসাবরক্ষক বলা হয় কেন?
উত্তর: সরকারের ব্যাংক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের হিসাব পরিচালনা করে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে নানা ধরনের আর্থিক লেনদেন ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের হিসাব সংরক্ষণ করে। এজন্য সরকারের নিকট পূর্ণরূপে দায়ী থাকে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকারের হিসাবরক্ষক বলা হয়।
প্রশ্ন-৪. ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল কোন ব্যাংককে বলা হয় এবং কেন?
উত্তর: ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহ যেকোনো কারণেই তারল্য সংকটে বা আর্থিক সংকটে পড়তে পারে। এ সময় ব্যাংকগুলো যখন অন্য কোনো উৎস হতে অর্থ সংগ্রহে ব্যর্থ হয় তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সরবরাহে এগিয়ে আসে। এ ধরনের ভূমিকা রাখে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয়।
প্রশ্ন-৫. কোন ব্যাংককে মুদ্রাবাজারের অভিভাবক বলা হয় এবং কেন?
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারের অভিভাবক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের মুদ্রাবাজার গঠন, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। দেশের ব্যাংক, বিল বাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মুদ্রাবাজারের সদস্য। তাদের যথাযথ উন্নয়ন সাধন দেশের অর্থ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। তাই এরূপ বাজারের গঠন ও উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্যোগ গ্রহণ করে। এছাড়াও তা বাস্তবায়নে সদস্যদের নিয়ে এই ব্যাংক কাজ করে।
প্রশ্ন-৬. ব্যাংক হার নীতি বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ব্যাংক হারের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলকে ব্যাংক হার নীতি বলে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিরোধে ব্যাংক হার বৃদ্ধি করে। অনুরূপভাবে মুদ্রা সংকোচনের প্রয়োজনে ব্যাংক হার হ্রাস করে। ব্যাংক হার বৃদ্ধি পেলে বাজারে ঋণের পরিমাণ হ্রাস পায়। অন্যদিকে এ হার হ্রাস পেলে বাজারে ঋণের পরিমাণ বাড়ে। এভাবেই এ নীতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করে।
প্রশ্ন-৭. ঋণ নিয়ন্ত্রণে খোলাবাজার নীতি বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে বিল, বন্ড, সিকিউরিটিজ ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় করে ঋণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল গ্রহণ করলে তাকে খোলাবাজার নীতি বলা হয়। এটি ঋণ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম পদ্ধতি। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে প্রচুর নগদ টাকা জমা থাকলে তারা অধিক ঋণ প্রদান করে। ফলে দেশে ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বে ক্রয়কৃত ঋণপত্রসমূহ খোলাবাজারে বিক্রি করার মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ও জনগণের নিকট থেকে টাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করে। ফলে ব্যাংক ও জনগণের কাছে থাকা অর্থের পরিমাণ কমে আসে এবং তাদের ঋণদান সামর্থ্য হ্রাস পায়। জনগণের সঞ্চয়ের প্রবণতা, বাণিজ্যিক বাংকসমূহের তহবিল পরিস্থিতি প্রভৃতি বিষয়ের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই খোলাবাজার নীতির কার্যকারিতা নির্ভর করে।
প্রশ্ন-৮. ঋণ নিয়ন্ত্রণ কেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম কাজ?
উত্তর: ঋণের পরিমাণ কাম্যমাত্রায় বজায় রাখাকে ঋণ নিয়ন্ত্রণ বলে। দেশের সামগ্রিক ঋণের পরিমাণ কাম্যমাত্রায় বজায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দায়িত্ব পালন করে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যাংক হওয়ায় ঋণ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম কাজ।
প্রশ্ন-৯. কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকারের ব্যাংক বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে অর্থসংক্রান্ত কার্যাবলি সম্পাদন ও পরামর্শ প্রদান করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকারের ব্যাংক বলা হয়। এই ব্যাংক দেশের ব্যাংক ও মুদ্রা ব্যবস্থার নেতৃত্ব প্রদানের জন্য সরকারের মালিকানায় ও নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মালিক, পরিচালক ও নিয়ন্ত্রক সরকার। এ ব্যাংক সরকারের পক্ষে অর্থ লেনদেন করে, হিসাব রাখে ও সরকারকে প্রয়োজনে ঋণ দেয়।
প্রশ্ন-১০. কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কেন অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার বলা হয়?
উত্তর: তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হিসাব খুলে ব্যাংকিং সেবা লাভ এবং লেনদেন সুবিধা ভোগ করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার বলা হয়। সাধারণ জনগণ যেভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকে হিসাব খুলে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করে তেমনি তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হিসাব খুলে লেনদেন করে। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহের ব্যাংকার হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
►► আরো দেখো: এইচএসসি অন্যান্য বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র ২য় অধ্যায় ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post