ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় : পণ্যমূল্য নির্ধারণ বাজারজাতকারীর জন্য একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ কেননা ভোক্তার কাছে মূল্য অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তাই মূল্য নির্ধারণে বাজারজাতকারী বিশেষ সতকর্তা এবং কৌশল অবলম্বন করেন। এই ইউনিটে মূল্য নির্ধারণের যাবতীয় তথ্য আলোচনা করা হয়েছে।
এই ইউনিটে মোট দুইটি পাঠ রয়েছে। প্রথম পাঠে মূল্য সম্পর্কে ধারণা, এর উদ্দেশ্য এবং মূল্য নির্ধারণে যেসব বিষয় প্রভাব ফেলে তাদের সন্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় পাঠে পণ্য মুল্য নির্ধারণের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র ৫ম অধ্যায়
সামি ৫০,০০০ টাকার মাল বিক্রয় করেছেন। ক্রেতা রাফি ১ মাস পর টাকা দিতে চায়। সামি বললেন, আপনি স্ট্যাম্পযুক্ত একটি কাগজে ১ মাস পর আমাকে টাকা দেবেন এটি লিখে দিন। অন্যদিকে সামি, রাসেল থেকে নিজেই ৭০,০০০ টাকার মাল কিনেছেন। এক মাস পর টাকা দিতে চাইলে রাসেল বললেন, আমি স্ট্যাম্পযুক্ত সাদা কাগজে একটি দলিল তৈরি করে দেই। আপনি তাতে স্বীকৃতি লিখে স্বাক্ষর করবেন। সামি স্বাক্ষর কেন করতে হবে-এ নিয়ে ভাবছেন।
ক. চেক স্তূপ পরিস্কারকরণ কী?
খ. মোবাইল ব্যাংকিং হোম ব্যাংকিং অপেক্ষা উত্তম কেন?
গ. রাফি প্রদত্ত দলিলটি কোন ধরনের হস্তান্তরযোগ্য দলিল? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রাসেল এর লিখিত দলিলে সামির স্বাক্ষরের আবশ্যকতা বিশ্লেষণ করো।
জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন-১. হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল কী?
উত্তর: ঋণের যে দলিলের মালিকানা এক হাত থেকে অন্য হাতে হস্তান্তর করলে গ্রহীতা এর বৈধ মালিকানা পায় তাকে হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল বলে।
প্রশ্ন-২. সরকারি নোট কী?
উত্তর: একটি দেশের সরকার নিজ দায়িত্বে বিহিত মুদ্রা হিসেবে যে নোটের প্রচলন করে তাকে সরকারি নোট বলে। বর্তমানে বাংলাদেশে এক টাকা, দুই টাকা এবং পাঁচ টাকা হচ্ছে সরকারি নোট। সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত এই নোটগুলোকে বিহিত মুদ্রা বলা হয়।
প্রশ্ন-৩. ব্যাংক নোট কী?
উত্তর: সরকারের অনুমতিক্রমে সরকারের ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত কাগজী মুদ্রা বা নোটকে ব্যাংক নোট বলে। বর্তমানে বাংলাদেশে দশ টাকা, বিশ টাকা, পঞ্চাশ টাকা, একশত টাকা, পাঁচশত টাকা এবং এক হাজার টাকা নোট হচ্ছে ব্যাংক নোট।
প্রশ্ন-৪. পে-অর্ডার কী? [ব. বো. ১৬]
উত্তর: ব্যাংকের কোনো একটি শাখা যে দলিলের মাধ্যমে এর গ্রাহকদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের নিশ্চিত প্রতিশ্র“তি প্রদান করে তাকে পে-অর্ডার বলে।
প্রশ্ন-৫. কোন ব্যবসায়ের ফলে চেকের প্রচলন শুরু হয়?
উত্তর: ব্যাংক ব্যবসায়ের ফলে চেকের প্রচলন শুরু হয়।
প্রশ্ন-৬. পাওনাদার কর্তৃক কোন বিল লিখা হয়?
উত্তর: পাওনাদার কর্তৃক বিনিময় বিল লিখা হয়।
প্রশ্ন-৭. বিনিময় বিল ও চেকে কয়টি পক্ষ থাকে?
উত্তর: বিনিময় বিল ও চেকে তিনটি পক্ষ থাকে।
প্রশ্ন-৮. বিহিত মুদ্রা কী?
উত্তর: সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত নোটকে বিহিত মুদ্রা বলা হয়। এক টাকা, দুই টাকা এবং পাঁচ টাকা বাংলাদেশে প্রচলিত বিহিত মুদ্রা।
প্রশ্ন-৯. অঙ্গীকারপত্র কী? [ঢা. বো. ১৭]
উত্তর: অঙ্গীকারপত্র বা প্রমিসরি নোট বলতে সাধারণ অর্থে এমন কোনো পত্র বা দলিলকে বোঝায় যাতে কোনো ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট সময় পর প্রদানের অঙ্গীকার প্রদান করে।
প্রশ্ন-১০. অঙ্গীকারপত্রের অপর নাম কী? [সি. বো. ১৭]
উত্তর: অঙ্গীকারপত্রের অপর নাম প্রতিশ্র“তিপত্র।
প্রশ্ন-১১. রেজিস্টার্ড ঋণপত্র কী?
উত্তর: গৃহীত ঋণের স্বীকারোক্তি হিসেবে ঋণদাতাকে প্রতিষ্ঠান যে ঋণের দলিল প্রদান করে তাকে রেজিস্টার্ড ঋণপত্র বলে।
প্রশ্ন-১২. বাণিজ্যিক বিনিময় বিল কী?
উত্তর: ব্যবসায়িক লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য যে বিনিময় বিল ব্যবহৃত হয় তাই বাণিজ্যিক বিনিময় বিল।
প্রশ্ন-১৩. আদেষ্টা কে?
উত্তর: যিনি বিল প্রস্তুত করে এতে স্বাক্ষর প্রদান করেন তাকে আদেষ্টা বলে।
প্রশ্ন-১৪. আদিষ্ট কে?
উত্তর: বিনিময় বিলে পণ্যের মূল্য পরিশোধের জন্য নির্দেশিত ব্যক্তিকে আদিষ্ট বলে।
প্রশ্ন-১৫. পে-অর্ডারে মোট কয়টি পক্ষ থাকে?
উত্তর: পে-অর্ডারে মোট ২টি পক্ষ থাকে, যথা: প্রস্তুতকারী ও প্রাপক।
প্রশ্ন-১৬. বাংলাদেশে সরকারি নোটে কার স্বাক্ষর থাকে?
উত্তর: বাংলাদেশে সরকারি নোটে অর্থ সচিবের স্বাক্ষর থাকে।
প্রশ্ন-১৭. অবাধে হস্তান্তরযোগ্য দলিল কোনগুলো?
উত্তর: অবাধে হস্তান্তরযোগ্য দলিলগুলো হলো- বিনিময় বিল, প্রতিশ্র“তিপত্র ও চেক।
প্রশ্ন-১৮. ভ্রমণকারীর চেক কী?
উত্তর: বিদেশ ভ্রমণে সহায়তার জন্য ভ্রমণকারীদের অনুকূলে ব্যাংক যে বিশেষ ধরনের চেক ইস্যু করে তাকেই ভ্রমণকারীর চেক বলে।
প্রশ্ন-১৯. ভ্রাম্যমান নোট কী? [কু. বো. ১৭]
উত্তর: ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত যে অবাণিজ্যিক ঋণের দলিলের মাধ্যমে ব্যাংক তার এক বা একাধিক শাখা বা প্রতিনিধিকে কোনো ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের নির্দেশ দেয় তাকে ভ্রাম্যমান নোট বলে।
প্রশ্ন-২০. ব্যাংক ড্রাফট বা আজ্ঞাপত্র কী? [চ. বো. ১৭]
উত্তর: চাহিবামাত্র প্রাপককে অর্থ পরিশোধের জন্য ব্যাংকের এক শাখা কর্তৃক অন্য শাখা বা প্রতিনিধি ব্যাংককে যে লিখিত নির্দেশ দেয়া হয় তাকে ব্যাংক ড্রাফট বলে।
প্রশ্ন-২১. ব্যাংক নোট কে প্রচলন করে?
উত্তর: ব্যাংক নোট সরকারের পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচলন করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ এটি করে থাকে।
প্রশ্ন-২২. অভ্যন্তরীণ ড্রাফট কী?
উত্তর: ড্রাফটের ক্রেতা এবং প্রাপক দেশের ভেতরে অবস্থান করলে সে ড্রাফটকে অভ্যন্তরীণ ড্রাফট বলে।
প্রশ্ন-২৩. দশ টাকার নোট কোন ধরনের নোট?
উত্তর: দশ টাকার নোট হলো ব্যাংক নোট।
প্রশ্ন-২৪. কোনটি বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয় হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল?
উত্তর: চেক হলো বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয় হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল।
প্রশ্ন-২৫. ব্যাংকের আজ্ঞাপত্র সাধারণত কত মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে?
উত্তর: ব্যাংকের আজ্ঞাপত্র সাধারণত ৩ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন-১. হস্তান্তরযোগ্য ঋণ দলিল বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: হস্তান্তরের মাধ্যমে যে দলিলের মালিকানার পরিবর্তন ঘটে তাকে হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল বলে।
যথানিয়মে একহাত থেকে অন্যহাতে হস্তান্তরের মাধ্যমে এ দলিলের হস্তান্তরগ্রহীতা এর বৈধ মালিকানা লাভ করে। আমাদের দেশের আইনে অঙ্গীকারপত্র, বিনিময় বিল ও চেক হস্তান্তরযোগ্য দলিল হিসেবে গণ্য।
প্রশ্ন-২. হস্তান্তরযোগ্য দলিলকে প্রামাণ্য দলিল বলা হয় কেন?
উত্তর: হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন মোতাবেক হস্তান্তরযোগ্য দলিল প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। হস্তান্তরযোগ্য দলিল দু’পক্ষের লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় এবং এ দলিলে দু’পক্ষের লেনদেনের সকল বিবরণী, অর্থ ফেরতের সময় তাদের স্বাক্ষরসহ উল্লেখ করা থাকে। তাই পরবর্তীতে ধার করা ব্যক্তি অর্থ ফেরতে অস্বীকার করলে অর্থের প্রাপক এই দলিলকে প্রমাণ হিসেবে আইনের সাহায্য নিতে পারে। তাই হস্তান্তরযোগ্য দলিলকে প্রামাণ্য দলিল বলা হয়।
প্রশ্ন-৩. ‘চেকের আদিষ্ট হলো ব্যাংক’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: চেকের আদিষ্ট হলো ব্যাংক। হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, চেক হলো একটি বিনিময় বিল, যা কোনো ব্যাংকের ওপর কাটা বা ইস্যু করা হয় এবং এর অর্থ চাহিবামাত্র পরিশোধ্য। অর্থাৎ চেকের মাধ্যমে আমানতকারী প্রাপককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের জন্য ব্যাংককে নির্দেশ দেয়। ব্যাংক সব ঠিক থাকলে চেকের অর্থ চাহিবামাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে প্রদানে বাধ্য থাকে।
প্রশ্ন-৪. বিনিময় বিল বলতে কী বোঝ? [কু. বো. ১৬]
উত্তর: বিনিময় বিল হচ্ছে এমন একটি হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল যার মাধ্যমে প্রস্তুতকারক কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বা তার আদেশে অন্য কাউকে বা বাহককে নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের জন্য ব্যাংক শর্তহীন নির্দেশ দেয়। সাধারণত ধারে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিক্রেতা বিনিময় বিলের মাধ্যমে ক্রেতার নিকট থেকে নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে অর্থ আদায় করে। মেয়াদের আগেই অর্থ সংগ্রহ করলে ক্রেতা-বিক্রেতার নিকট থেকে বাট্টা পায়।
প্রশ্ন-৫. লভ্যাংশ ওয়ারেন্ট বলতে কী বোঝায়? [চ. বো. ১৬]
উত্তর: লভ্যাংশ ঘোষণার পর তা ব্যাংক হতে সংগ্রহের জন্য কোম্পানি শেয়ার মালিকদের যে প্রমাণপত্র প্রদান করে তাকে লভ্যাংশ ওয়ারেন্ট বলে। লভ্যাংশ ওয়ারেন্টে প্রাপ্ত মোট লভ্যাংশের পরিমাণ উল্লেখ থাকে। এটি ব্যাংকে জমা দিয়ে শেয়ার মালিক অর্থ সংগ্রহ করে নিতে পারে। এরূপ ওয়ারেন্ট দাগকাটা না হলে যথানিয়মে এটি হস্তান্তরযোগ্য দলিলের মর্যাদা পায়। এর দ্বারা হস্তান্তরগ্রহীতা এর অর্থ সংগ্রহের অধিকারী হয়।
প্রশ্ন-৬. লেনদেন নিষ্পত্তিতে হস্তান্তরযোগ্য দলিল গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বাংলাদেশে বহাল আইন অনুযায়ী প্রাপকের নির্দেশ অনুসারে প্রদেয় অঙ্গীকারপত্র, বিনিময় বিল ও চেককে হস্তান্তরযোগ্য দলিল বলে। বৈদেশিক বাণিজ্যে লেনদেন নিষ্পত্তিতে বিনিময় বিল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সকল সমাজেই লেনদেন নিষ্পত্তিতে আমরা চেকের ব্যবহার লক্ষ করি। অঙ্গীকারপত্রও পাওনাদারগণ গ্রহণ করে। মেয়াদি বিনিময় বিল ও অঙ্গীকারপত্রে বাট্টাকরণের সুযোগ থাকে। সর্বোপরি এরূপ দলিল আদালতে ঋণের প্রামান্য দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সে কারণে লেনদেন নিষ্পত্তিতে হস্তান্তরযোগ্য দলিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
►► আরো দেখো: এইচএসসি অন্যান্য বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post