বর্তমান ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে ফেসবুক মার্কেটিং কি এটাই সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন। ফেসবুকে অ্যাডভান্সড সব ফিচার যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে ফেসবুক মার্কেটিং। ফেসবুক এখন আর কেবল বিনোদনের মাধ্যম না। সঠিক ব্যবহার জানলে এটিই হতে পারে আপনার আয়ের অন্যতম উৎস।
আর এভাবে শুধু ফেসবুক মার্কেটিং কি এই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আপনি প্রতি মাসে উপার্জন করতে পারেন প্রচুর অর্থ। যদি সঠিক গাইডলাইন নিয়ে এগোতে পারেন এবং এই গাইডলাইনগুলো কাজে প্রয়োগ করতে পারেন, তাহলে ফেসবুক থেকে মাসে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন আপনাকে দিয়েও সম্ভব। দরকার শুধু অধ্যাবসায় ও কাজে লেগে থাকার মানসিকতা।
►► আরো দেখুন: ইনস্টাগ্রাম থেকে মাসে আয় করুন ৫০ হাজার টাকা
►► আরো দেখুন: শুধু ইমেইল পাঠিয়ে আয় করুন ঘরে বসে
►► আরো দেখুন: চাকরী পাচ্ছেন না? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে জীবন গড়ুন
আজ আমরা ফেসবুক থেকে অনেকগুলো উপায়ে ইনকামের একটি উপায়, অর্থাৎ ফেসবুক মার্কেটিং কি তা নিয়ে কথা বলবো। বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান ফেসবুকে মার্কেটিং করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি ফেসবুকে মার্কেটিং এর সেবা দিয়েও অনেক তরুণ নিজের আত্মপ্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। তাই ফেসবুক মার্কেটিং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখন একটি সম্ভাবনার নাম।
বর্তমান বিশ্বে সবথেকে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের তালিকায় ফেসবুকের অবস্থান সবার শীর্ষে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই এর জনপ্রিয়তা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের তুলনায় অনেক অনেক বেশী।
যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে এমন লোক খুব কমই আছেন যারা প্রতিদিন ফেসবুকে লগইন করে না। আর এভাবে বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মানুষ প্রতিমাসে এই প্লাটফরমটি ব্যবহার করে থাকেন।
যেহেতু জনপ্রিয় এই প্লাটফর্মটি প্রতিদিন প্রায় ২.৩ বিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করে, তাই বিশাল এই জনগোষ্ঠীর উপস্থিতী কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই ফেসবুকে আপনার প্রতিষ্ঠান কিংবা যেকোন সার্ভিসের প্রচারণা চালাতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে ফেসবুক মার্কেটিং এখন অনেক বেশি ফলদায়ক ও কার্যকরী বলে প্রমাণিত।
ফেসবুক মার্কেটিং কি?
ফেসবুক মার্কেটিং বর্তমান সময়ের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ফেসবুক ব্যবহার করে কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবাকে গ্রাহকরের কাছে পৌঁছে দেয়া অথবা কোম্পানির ব্র্যান্ডিং ও ভিজিবিলিটি বৃদ্ধি করাই হচ্ছে ফেসবুক মার্কেটিং।
শহর থেকে শুরু করে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটে ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এখন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনের বেশিরভাগ সময় কাটায়। এসব সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে সবথেকে বহুল ব্যবহৃত ফেসবুক। তাই পণ্যের ডিজিটাল প্রচারণাকে আরো জোরদার করার জন্য ফেসবুক কেন্দ্রিক যে মার্কেটিং পরিচালনা করা হয়, তাই মূলত ফেসবুক মার্কেটিং।
ফেসবুক মার্কেটিং এ সাধারণত কোন পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন তৈরি করে সেটিকে সম্ভাব্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। ফেসবুকের অ্যাডভান্সড সব ফিচারের কল্যাণে ফেসবুক মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ। এ ব্যবস্থায় একজন মার্কেটার তার পণ্য কিনতে সর্বাধিক আগ্রহী এমন সব গ্রাহককে সহজেই খুঁজে নিতে পারে।
এক নজরে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা
সারাবিশ্বে প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ প্রতিমাসে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধু ফেসবুকই ব্যবহার করেন আনুমানিক ২.৬ বিলিয়ন মানুষ। আর এর মধ্যে অন্তত ২.৩ বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন ফেসবুকে লগিন করে থাকেন।
অপরদিকে প্রতিদিন ফেসবুকে ছবি আপলোড করা হয় প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন। যা সত্যিই বেশ অবিশ্বাস্য। প্রতি মিনিটে জনপ্রিয় এই প্লাটফরমে ৫,১০,০০০ টি কমেন্ট, ২,৯৩,০০০ টি স্ট্যাটাস এবং ১,৩৬,০০০ টি ছবি আপলোড হয়ে থাকে। তাহলে খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা ঠিক কতখানি।
ফেসবুকের এই প্রচণ্ডরকমের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার বহু কাঙ্খিত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শুরু করে দিতেই পারেন। এতক্ষণ আমরা ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবার আমরা কিভাবে ফেসবুকে মার্কেটিং করতে পারি এ বিষয়ে সংক্ষেপে জানবো। কোর্সটিকায় ফেসবুক মার্কেটিং তথা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে আরো পর্বভিত্তিক বিস্তর লেখা প্রকাশ করা হবে। আর সেগুলো পাওয়ার জন্য কোর্সটিকা ওয়েবসাইটকে বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
কিভাবে করবেন ফেসবুক মার্কেটিং?
ফেসবুকের এই প্রচণ্ডরকমের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার বহু কাঙ্খিত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শুরু করে দিতেই পারেন। এতক্ষণ আমরা ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবার আমরা কিভাবে ফেসবুকে মার্কেটিং করতে পারি এ বিষয়ে সংক্ষেপে জানবো। কোর্সটিকায় ফেসবুক মার্কেটিং তথা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে আরো পর্বভিত্তিক বিস্তর লেখা প্রকাশ করা হবে। আর সেগুলো পাওয়ার জন্য কোর্সটিকা ওয়েবসাইটকে বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং: আপনি যদি প্রারম্ভিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার হন, তাহলে আপনি কোন প্রকার প্রিমিয়াম সার্ভিসে না গিয়ে ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। তবে এ জন্য আপনার একটি জনপ্রিয় পেজ থাকতে হবে। যেখানে থাকবে অসংখ্য একটিভ লাইকার। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং আপনার মার্কেটিং প্রসেসের ক্ষেত্রে খুবই কম কার্যকর। কারণ, পেইড মার্কেটিং এ আপনি এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুলস এবং সুবিধা পাবেন, যা ফ্রি মার্কেটিং এ কখনোই পাবেন না।
পেইড ফেসবুক মার্কেটিং: ফেসবুকের পেইড মার্কেটিং এর কৌশলকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার প্রোডাক্টের প্রচারণা চালাতে পারেন। আর এ জন্য আপনাকে আপনার প্রোডাক্টের ওপর ভিত্তি করে ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করতে হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি খুবই সামান্য পরিমাণ অর্থ খরচ করে আপনার ফেসবুক লাইকার বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং বিশ্বব্যপী তার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে দিতে পারবেন। ফেসবুকের প্রিমিয়াম মার্কেটিং সার্ভিস নেয়ার প্রয়োজনীয়তা মূলত এখানেই যে এর মাধ্যমে আপনি আপনার টার্গেট করা কাস্টামারদের কাছে সার্ভিস রিচ করতে পারেবন।
একইভাবে আপনি যদি বই বিক্রি করতে চান, আপনার ডিসপ্লে করা বইগুলো বইপ্রেমীরাই দেখবে। ফলে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন ওই সকল লোকদের কাছে পৌঁছানোর সম্ভবনা কম, যারা আপনার পণ্য সম্পর্কে আগ্রহী নয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন, কেন বেশীরভাগ ব্যবসায়ীরা এখন ফেসবুক মার্কেটিং এর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, প্রযুক্তি সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ অনেক বেড়ে যাওয়ায় এখন অনলাইনে সক্রিয় থাকা লোকেদের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে। আর এই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব ইত্যাদির মত সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত। যেখানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শুধুমাত্র ফেসবুকে একটিভ থাকে এমন ইউজার সংখ্যায় অনেক বেশি। তাই তাদেরকে টার্গেট করে আপনি যদি আপনার ফেসবুক মার্কেটিং প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন, তাহলে আপনার সফলা নিশ্চিত।
ফেসবুক বিজ্ঞাপন: আপনার বিজনেস পেজের জন্য যথেষ্ট লাইকার কিংবা ফ্যান সংগ্রহ করা হয়ে গেলে আপনার পরবর্তী কাজ হবে ফেসবুক বিজ্ঞাপন তৈরি করা। আপনার প্রোডাক্টটি নির্বাচন করুন এবং তার জন্য সুন্দর একটি ব্যানার ডিজাইন করুন, যেখানে আপনার প্রোডাক্টকে আপনি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবেন। আপনি ইচ্ছে করলে ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
ফেসবুকের এডভার্টাইজমেন্ট টুল ব্যবহার করে আপনার বিজ্ঞাপনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিন। অর্থাৎ আপনি কত দিনের জন্য বিজ্ঞাপনটি ফেসবুকে রাখতে চান। সকল তথ্য দিয়ে আপনার বিজ্ঞাপনটি সাজান এবং আপনার টার্গেট করা লোকদের নির্বাচন করে দিন।
ব্যস…. বাকী কাজ ফেসবুকের। আপনি আপনার বিজ্ঞাপনের জন্য যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবেন, ফেসবুক আপনার বিজ্ঞাপনটি ততদিন আপনার টার্গেট করা ক্রেতাদের কাছে পৌছে দেবেন। যেখান থেকে আপনি আপনার প্রতিটি পোস্টে কাঙ্খিত এনগেজমেন্ট পেতে সক্ষম হবেন।
কেন করবেন ফেসবুক মার্কেটিং?
উপরে দেয়া পরিসংখ্যান থেকে নিশ্চয়ই আপনি ফেসবুক এর গ্রহণযোগ্যতা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সারাবিশ্বে অন্তত ৪২% ব্যবসায়ী মনে করেন, ফেসবুক তাদের বিজনেসের প্রধান হাতিয়ার। তারা তাদের বিজনেস প্রোডাক্টগুলোর প্রচারণার জন্য সবথেকে বেশি ফেসবুকের ওপর নির্ভরশীল। ১৮-২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারীর মধ্য ৫০% ব্যবহারকারী ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুক ব্যবহার করে। এক প্রতিবেদনে বলা হয় ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রতি বছর ১৭% হারে বাড়ে এবং এটি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
যেখানে ফেসবুকের এমন ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা সেখানে এবং বিশাল সক্রীয় জনগোষ্ঠীর উপস্থিতী, সেখানে আপনার ব্যবসার প্রচারণা না করাটাই সবচেয়ে অযৌক্তিক। আপনার ব্যবসার প্রচারণা পাশাপাশি পণ্য বিক্রির জন্য এর থেকে বড় মার্কেটপ্লেস আপনি আর কোথাও পাবেন না।
►► আরো দেখুন: ইনস্টাগ্রাম থেকে মাসে আয় করুন ৫০ হাজার টাকা
►► আরো দেখুন: শুধু ইমেইল পাঠিয়ে আয় করুন ঘরে বসে
►► আরো দেখুন: চাকরী পাচ্ছেন না? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে জীবন গড়ুন
প্রিয় পাঠক, কোর্সটিকায় আপনি কোন বিষয়ে লেখা চান, তা জানিয়ে নিচে কমেন্ট করুন। ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন এই লিংক থেকে।
তাহলে আপনি কবে শুরু করছেন আপনার ফেসবুক মার্কেটিং? কোর্সটিকায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর পরবর্তী পর্বে আমরা শেয়ার করবো ফেসবুক মার্কেটিং এ সফল হওয়ার দুর্দান্ত সব কৌশলগুলো। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন। আপনার জন্য শুভকামনা।
Discussion about this post