বাঁচতে দাও কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : মানুুষ ও প্রকৃতির সুষ্ঠু বিকাশে পরিবেশ সংরক্ষণ প্রয়োজন। মানুষ ও প্রকৃতি পরিবেশের অংশ। মানুষের মতো প্রকৃতির সঠিক বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দরকার। তাই পরিবেশ ধ্বংস হলে মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষ দিন দিন যেভাবে পরিবেশ ধ্বংস করছে, এভাবে চলতে থাকলে প্রাণিজগৎ একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই পরিবেশ সংরক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাঁচতে দাও কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. রঙিন কাটা ঘুড়ির পিছে বালকের ছোটার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: শিশুরা দুরন্তপনা পছন্দ করে। ঘুড়ির পিছে দৌড়ে তারা পরম আনন্দ লাভ করে।
বুদ্ধির বিকাশ আর বেড়ে ওঠার সময় হলো শিশুকাল। এ সময়ে শিশুদের ইচ্ছা যদি কার্যক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হয়, তবে তাদের মানসিক বুদ্ধি প্রখর হয়। মূলত শিশুসুলভ আনন্দে অবগাহনের জন্যই বালক রঙিন কাটা ঘুড়ির পেছনে ছোটে।
২. বালির ওপর শিশুর কত্ত কিছু আঁকার কারণ দর্শাও।
উত্তর: শিশুরা সাধারণত কল্পনাপ্রবণ। মূলত কল্পনার বাস্তব প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতেই শিশুরা বালির ওপর কত্ত কিছু আঁকে।
শিশুরা প্রাণবন্ত। নিজের খেয়ালে তারা অনেক কিছু করে। বস্তুত অবচেতন মনে শিশুরা সবসময় সৃষ্টি করতে চায়। এই সৃষ্টি পিপাসার কারণেই শিশুরা বালির ওপর ইচ্ছামতো আঁকাআঁকি করে।
৩. কবি কেন সুজন মাঝিকে নৌকা বাইতে দিতে বলেছেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সুজন মাঝি একা একা গহিন গাঙে নৌকা বায়। তাকে গভীর নদীতে নৌকা চালানোর স্বাধীনতা দিতে এবং অব্যাহত রাখার জন্যই কবি সুজন মাঝিকে গাহিন গাঙে নৌকা বাইতে দিতে বলেছেন।
মাঝিরা যেসব নদীতে নৌকা চালান, সেগুলো আমাদের গ্রাম বাংলার দৃশ্য। মাঝিরা যদি নৌকা না চালায়, তবে বাংলার বুক থেকে অমূল্য দৃশ্য হারিয়ে যাবে। গ্রাম বাংলার সেসব দৃশ্য বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই কবি সুজন মাঝিকে বাইতে দিতে বলেছেন।
৪. কবি কেন ফুলকে ফুটতে দিতে বলেছেন?
উত্তর: ফুল আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ও উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে। এ কারণেই কবি ফুলকে ফুটতে দিতে বলেছেন।
বাংলা প্রকৃতি এত সুন্দর হওয়ার পেছনে ফুলের অবদান অনস্বীকার্য। শুধু বাংলা নয়, ফুল না থাকলে যেকোনো প্রকৃতিই মরে যাবে। মূলত প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই কবি ফুলকে ফুটতে দিতে বলেছেন।
৫. ‘জোনাক পোকা আলোর খেলা খেলছে রোজই’—চরণটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: “জোনাক পোকা আলোর খেলা খেলছে রোজই”—চরণটি দ্বারা জোনাকির নিজেকে বিকশিত করার কথা বলা হয়েছে।
‘বাঁচতে দাও’ কবিতায় কবি প্রাণিজগৎ, প্রকৃতি ও পরিবেশের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের কথা বলেছেন। একটি শিশুর বিকাশে চারপাশের সুস্থ পরিবেশ খুবই প্রয়োজনীয়। সুস্থ পরিবেশ থাকলে জোনাকিরা মনের আনন্দে তাদের নিজস্ব আলো ছড়িয়ে দিতে পারবে। তেমনি সুস্থ পরিবেশে শিশুরাও তাদের নিজেকে জোনাকির আলো ছড়ানোর মতো বিকশিত করতে পারবে।
৬. পরিবেশ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন কেন?
উত্তর: মানুুষ ও প্রকৃতির সুষ্ঠু বিকাশে পরিবেশ সংরক্ষণ প্রয়োজন।
মানুষ ও প্রকৃতি পরিবেশের অংশ। মানুষের মতো প্রকৃতির সঠিক বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দরকার। তাই পরিবেশ ধ্বংস হলে মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষ দিন দিন যেভাবে পরিবেশ ধ্বংস করছে, এভাবে চলতে থাকলে প্রাণিজগৎ একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই পরিবেশ সংরক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৭. ঘুঘুকে কেন কবি ডাকতে দিতে বলেছেন?
উত্তর: ঘুঘুর ডাক বাংলার প্রকৃতিতে ছন্দ সৃষ্টি করে। মূলত পরিবেশের মাধুর্য বৃদ্ধির জন্যই কবি ঘুঘুকে ডাকতে দিতে বলেছেন।
ঘুঘুর ডাক বাংলার বুকে অতি পরিচিত। মধ্যদিনে যখন পৃথিবী ঈষৎ ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তখন ঘুঘুর ডাক এক ধরনের স্নিগ্ধ আবেশ ছড়ায়। ঘুঘুর ডাক বন্ধ হয়ে গেলে বাংলার প্রকৃতি যেন অসম্পূর্ণ হয়ে পড়বে। এ জন্যই কবি ঘুঘুকে ডাকতে দিতে বলেছেন
৮. কাজল বিলে পানকৌড়িকে নাইতে দেওয়ার আহ্বান দ্বারা কবি কী বুঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: কাজল বিলে পানকৌড়িকে নাইতে দেওয়ার আহ্বান দ্বারা কবি প্রকৃতির সকল প্রাণীর স্বাধীনতা ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকারের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। যেমন পানকৌড়ি স্বাধীনভাবে জলকেলি করে আনন্দ পায়, তেমনি পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীরই নিজ নিজ পরিবেশে নিরাপদে ও মুক্তভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। কবি এখানে প্রতিটি জীবের স্বাধীনতা, সৌন্দর্য ও আনন্দের গুরুত্ব তুলে ধরে বলতে চান যে, তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কোনো বাধা দেওয়া উচিত নয়।
৯. ফুটতে দাও, ছুটতে দাও—এ কথাগুলো দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: ‘ফুটতে দাও, ছুটতে দাও’—এই কথাগুলোর মাধ্যমে কবি মানুষের স্বাধীনতা, প্রকৃতির স্বাভাবিক প্রবাহ এবং জীবনের স্বতঃস্ফূর্ত বিকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি চান, গোলাপ যেমন তার সৌন্দর্য নিয়ে অবাধে ফুটতে পারে, শিশুরা তেমনি মুক্তভাবে খেলাধুলা করতে ও দৌড়াতে পারুক। অর্থাৎ, বাধা-বিপত্তি দিয়ে জীবনের স্বাভাবিক গতি রোধ করা উচিত নয়, বরং প্রতিটি প্রাণ ও প্রকৃতিকে তার নিজস্ব ছন্দে বিকশিত হতে দিতে হবে।
১০. শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে কেন?
উত্তর: পরিবেশ ধ্বংস হলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
শামসুর রাহমান ‘বাঁচতে দাও’- কবিতায় প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণিজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের কথা বলেছেন। একটি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের সঙ্গে পরিবেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে গেলে, পরিবেশ ধ্বংস হবে। ফলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
আরও দেখো—ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের চারুপাঠ বাংলা বই থেকে বাঁচতে দাও কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায় থেকে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য মোট ১০টি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ দেওয়া হয়েছে। Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তরগুলো সংগ্রহ করে নাও। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক জ্ঞানমূলক, সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সমাধান পেতে উপরে দেওয়া লিংকে ভিজিট করো।
Discussion about this post