বিদায় হজ প্রশ্ন উত্তর : প্রিয় নবীজি (সা.) উপস্থিত সোয়া লাখ সাহাবির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা বিদায় হজের ভাষণ নামে পরিচিত। এটি ছিল তাঁর জীবনের সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক ভাষণ, যা তিনি দশম হিজরি সনের নবম জিলহজ আরাফার দিনে মসজিদে নামিরাতে ও জাবালে রহমতের ওপরে এবং পরদিন দশম জিলহজ ঈদ ও কোরবানির দিন মিনাতে প্রদান করেছিলেন।
বিদায় হজ প্রশ্ন উত্তর
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
হিজরি, হজ, মহানবী, কাবাশরিফ, আরাফাত, ভাষণ, বান্দা, আমির, উপাসনা, ক্রীতদাস, যিলকাদ।
- হিজরি—আরবি সাল বা বছর।
- হজ—বিশেষ প্রক্রিয়াসম্পন্ন ফরয ইবাদত।
- মহানবি—হযরত মুহাম্মদ (স)।
- কাবাশরিফ —আল্লাহর ঘর বিশেষ, যা মক্কায় অবস্থিত।
- আরাফাত—মক্কার এক সুবিশাল ময়দান।
- ভাষণ—বক্তব্য।
- বান্দা—উপাসক।
- আমির—শাসক, বাদশাহ।
- উপাসনা—ইবাদত, আরাধনা।
- ক্রীতদাস—কেনা গোলাম।
- যিলকাদ—হজের মাস তথা যিলহজের পূর্বের মাস।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তেরি করি।
আরাফাত, ক্রীতদাস, কাবাশরিফ, মহানবি, হিজরি, হজ।
ক. দশম …….. হজের সময় এসে গেল।
খ. তাঁদের ইচ্ছা নবিজির (স) সঙ্গে …….. পালন করবেন।
গ. …….. হযরত মুহাম্মদ (স) প্রথমেই আল্লাহর প্রশংসা করলেন।
ঘ. যাঁরা তাঁকে কখনও দেখেন নি তাঁরাও এই মহামানবকে একবার দেখার জন্য …….. এলেন।
ঙ. …….. ময়দান থেকে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠে ধ্বনিত হল, ‘হ্যাঁ, আপনি পেরেছেন।’
চ. কোনো …….. যদি নিজের যোগ্যতায় আমির হয়, তবে তাকে মেনে চলবে।
উত্তর :
ক. দশম হিজরি হজের সময় এসে গেল।
খ. তাঁদের ইচ্ছা নবিজির (স) সঙ্গে হজ পালন করবেন।
গ. মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) প্রথমেই আল্লাহর প্রশংসা করলেন।
ঘ. যাঁরা তাঁকে কখনও দেখেন নি তাঁরাও এই মহামনবকে একবার দেখার জন্য কাবাশরিফ এলেন।
ঙ. আরাফাত ময়দান থেকে লক্ষ লক্ষ কণ্ঠে ধ্বনিত হল, ‘হ্যাঁ, আপনি পেরেছেন।’
চ. কোনো ক্রীতদাস যদি নিজের যোগ্যতায় আমির হয়, তবে তাকে মেনে চলবে।
৩. প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
প্রশ্ন-ক. হিজরি কোন সালে বিদায় হজ অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর : দশম হিজরিতে বিদায় হজ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন-খ. আরাফাত-ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখে নবিজির (স) মনের অবস্থা কেমন হয়েছিল?
উত্তর : আরাফাতের ময়দানে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ দেখে মহানবির (স) মন আনন্দে ভরে গেলো। এতো মানুষ! এরা সবাই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। জাবালে রাহমাত নামক পাহাড়ে দাঁড়িয়ে তিনি সমবেত মানুষের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। হজ উপলক্ষে আরাফাত ময়দানে নবিজির (স) এটিই শেষ ভাষণ। বস্তুত, আরাফাতে লাখো অনুসারীর ঢল দেখে মহানবি (স) ভীষণ খুশি হয়েছিলেন।
প্রশ্ন-গ. মহানবি (স) তাঁর ভাষণে ক্রীতদাস-ক্রীতদাসী সম্পর্কে কী বলেছেন?
উত্তর : এ সম্পর্কে মহানবি (স) বলেন, তোমাদের ক্রীতদাস-ক্রীতদাসীরাও আল্লাহর বান্দা। তাদের প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করো না। তোমরা নিজেরা যা খাবে, তাদেরকেও তাই খেতে দেবে। নিজেরা যে কাপড় পরবে, তাদেরও তাই পরতে দেবে। কোনো ক্রীতদাস যদি নিজের যোগ্যতায় আমির হয়, তবে তাকে মেনে চলবে। তখন বংশ-মর্যাদার কথা বলবে না।
প্রশ্ন-ঘ. ধর্ম সম্পর্কে মহানবি (স) কী উপদেশ দিয়েছেন?
উত্তর : ধর্ম সম্পর্কে মহানবি (স) উপদেশ দিতে গিয়ে বলেন, ‘তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না। নিজের ধর্ম পালন করবে। যারা অন্য ধর্ম পালন করে তাদের ওপর তোমাদের ধর্ম চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা কর না।;
প্রশ্ন-ঙ. কোন চারটি কথা নবিজি (স) বিশেষভাবে মনে রাখতে বলেছেন?
উত্তর : মহানবি (স) নিচের চারটি কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে বলছেন –
১। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপাসরা করো না।
২। অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করো না।
৩। পরের সম্পদ অপহরণ করো না।
৪। কারো ওপর অত্যাচার করো না।
প্রশ্ন-চ. তিনি আমাদের কাছে কোন দুইটি জিনিস রেখে গেছেন?
উত্তর : মহানবি (স) সম্মিলিত লাখো জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমাদের কাছে আমি দুটি জিনিষ রেখে যাচ্ছি-
এক. আল্লাহর বাণী অর্থাৎ কুরআন।
দুই. আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ রাসুলের জীবনের আদর্শ।
এই দুটি তোমাদের পথ দেখাবে।
পঞ্চম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন উত্তর
৪. ঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দিই।
ক. বিদায় হজ কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল?
১. মদিনায়
২. মক্কায়
৩. আরাফাতের ময়ানে
৪. জেদ্দায়
খ. আরাফাতের ময়দানে কত লক্ষ মানুষ হজ পালন করতে আসেন?
১. প্রায় এক লক্ষ
২. প্রায় দুই লক্ষ
৩. প্রায় তিন লক্ষ
৪. প্রায় চার লক্ষ
গ. হযরত মুহাম্মদ (স) কাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করতে নিষেধ করেছেন?
১. সৈন্যদের
২. সাহাবিদের
৩. আলেমদের
৪. ক্রীতদাস-ক্রীতদাসীদের
ঘ. মহানবি (স) কয়টি কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে বললেন?
১. দুইটি
২. চারটি
৩. ছয়টি
৪. আটটি
ঙ. মহানবির (স) চোখ-মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল কেন?
১. মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়ার জন্য
২. মক্কা জয়ের আনন্দে
৩. সাহাবিদের নিয়ে হজ পালন করতে পারায়
৪. বিদায় হজের ভাষণে বিপুল সংখ্যক মানুষ দেখে
উত্তর : ক. ২. মক্কায়; খ. ২. প্রায় দুই লক্ষ; গ. ৪. ক্রীতদাস-ক্রীতদাসীদের; ঘ. ২. চারটি; ঙ. ৪. বিদায় হজের ভাষণে বিপুল সংখ্যক মানুষ দেখে।
৫. নিচের বাক্যগুলো এককথায় প্রকাশ করি।
যার তুলনা হয় না—অনুলনীয়
যার শত্রু জন্মায় নি—অজাতশত্রু
আকাশে যে উড়ে বেড়ায়—খেচর
বিদেশে থাকে যে—প্রবাসী
যা কষ্টে লাভ করা যায়—দুর্লভ
যা জলে চরে—জলচর
৭. কর্ম-অনুশীলন
‘বিদায় হজ’ গল্পটি থেকে শিক্ষণীয় বিষয়গুলো লিখ।
উত্তর : মহানবি (স) এর বিদায় হজের ভাষণের প্রতিটি বাক্যেই শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। তিনি সম্মিলিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে যা বলেছেন মূলত তা সমগ্র মানবজাতির জন্য মহামূল্যবান উপদেশ। তিনি বলেছেন, প্রতি মানুষের জীবন ও সম্পত্তি একে অপরের কাছে পবিত্র। আর পৃথিবীতে যারা ভালো কাজ করবে তার প্রতিদান দেয়া হবে পরকালে, আর মন্দ কাজের জন্য শাস্তি পেতে হবে। ক্রীতদাস-ক্রীতদাসীরাও অন্য সবার মতোই মানুষ। তাদের সমান অধিকার দিতে হবে। এদের সাথে দুর্ব্যবহার করা যাবে না। আর ধর্ম নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি চলবে না। আল্লাহ ছাড়া কারো উপসনা করা যাবে না। অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা যাবে না। মানুষের সম্পদ অপহরণ করা যাবে না। কারো ওপর অত্যাচার করা যাবে না।
বস্তুত, এসব বিষয় মেনে চলার মাঝেই নিহিত রয়েছে পরকালীন কল্যাণ। তার এ বিষয়গুলো আমাদের কাছে শিক্ষণীয়।
আরও দেখো—পঞ্চম শ্রেণির বাংলা সকল গল্প-কবিতার প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা বই থেকে বিদায় হজ প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও বাংলা বইয়ের বহুনির্বাচনি, শূন্যস্থান, মিলকরণ ইত্যাদি প্রশ্নোত্তরের জন্য উপরের লিংকটি অনুসরণ করো।
Discussion about this post