বিদ্রোহী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | কাজী নজরুল ইসলাম রচিত “বিদ্রোহী” কবিতাটি কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ “অগ্নিবীণা” (১৯২২) থেকে সংকলিত হয়েছে। অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের দ্বিতীয় কবিতা “বিদ্রোহী”। “বিদ্রোহী” বাংলা সাহিত্যের একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা । রবীন্দ্রমুগে এ কবিতার মধ্য দিয়ে এক প্রাতিস্বিক কবিকণ্ঠের আত্মপ্রকাশ ঘটে- যা বাংলা কবিতার ইতিহাসে এক বিরল স্মরণীয় ঘটনা ।
এ কবিতায় সংযুক্ত রয়েছে উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে কবির ক্ষোভ ও বিদ্রোহ । কবি সকল অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে গিয়ে বিভিন্ন ধর্ম, এতিহ্য, ইতিহাস ও পুরাণের শক্তি উৎস থেকে উপকরণ উপাদান সমীকৃত করে নিজের বিদ্রোহী সত্তার অবয়ব রচনা করেন।
কবিতার শেষে ধ্বনিত হয় অত্যাচারীর অত্যাচারের অবসান কাম্য । বিদ্রোহী কৰি উৎকণ্ঠ ঘোষণায় জানিয়ে দেন যে, উৎপীড়িত জনতার ক্রন্দনরোল যতদিন পর্যন্ত প্রশমিত না হবে ততদিন এই বিদ্রোহী কবি আত্মা শান্ত হবে না। এই চির বিদ্রোহী অভ্রভেদী চির উন্নত শিররূপে বিরাজ করবে ।
বিদ্রোহী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ :
আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুনঃ মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!
সাত-সাতশ নরক-জ্বালা জলে মম ললাটে।
মম ধূম-কুণ্ডলী করেছে শিবের ব্রিনয়ন ঘন ঘোলাটে ।
আমি সুষ্টার বুকে সৃষ্টি পাপের অনুতাপ-তাপ হাহাকার
আর মর্ত্যে শাহারা- গোবী-ছাপ
আমি অশিব তিক্ত অভিশাপ ।
ক. কবি কী মানেন না?
খ. “যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না’- একথা বলার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকের সাথে “বিদ্রোহী’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি “বিদ্রোহী’ কবিতার সমগ্রভাব ধারন করেনা*- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : পিচ্চিরা এমনি ঘুরে বেড়ায়, কোথাও ৭/৮ জনের একটি গ্রুপ, কোথাও ৫/৬ জনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের মিছিল। মিছিলে স্লোগান দিচ্ছে, ‘আইয়ুব শাহী, মোনেম শাহী— ধ্বংস হোক, ধ্বংস হোক’, ‘আইয়ুব মোনেম ভাই ভাই– এক দড়িতে ফাঁসি চাই।” আবার মাঝে মাঝে স্লোগান ভুলভাল হয়ে যায়। যেমন— ‘আইয়ুব শাহী, জালেম শাহী’- এর জবাবে বলছে, ‘বৃথা যেতে দেবো না।’ কিংবা ‘শহীদের রক্ত’— এর জবাবে বলছে, ‘আগুন জ্বালো আগুন জ্বালো।’
ক. ‘কুর্নিশ’ কথাটির মানে কী?
খ. ‘আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল। – ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের কোন দিকটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মূলভাবের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেছে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ :
বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহ চারিদিকে,
আমি যাই তারি দিন-পঞ্জিকা লিখে,
এত বিদ্রোহ কখনো দেখে নি কেউ,
দিকে দিকে ওঠে অবাধ্যতার ঢেউ;
স্বপ্ন-চূড়ার থেকে নেমে এসো সব—
শুনেছ? শুনছ উদ্দাম কলরব? নয়া ইতিহাস লিখছে ধর্মঘট;
রক্তে রক্তে আঁকা প্রচ্ছদপট।
প্রত্যহ যারা ঘৃণিত ও পদানত, দেখ আজ তারা সবেগে সমুদ্যত;
ক. ‘নতশির’ মানে কী?
খ. বীরের শির চির-উন্নত কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি কোন দিক থেকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দিকে দিকে ওঠা অবাধ্যতার ঢেউ কি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কবির বিদ্রোহী চেতনার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : আমরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করতাম। সব সময় মনে হতো কেউ যেন দরজায় কড়া নাড়ছে। ঘুমের ভেতর চিৎকার করে উঠতাম কোনো কোনো রাত। বধ্যভূমির ধারে বেঁধে রাখা জীবজন্তুর অনুরূপ আমরা আতঙ্ককে জেনেছি নিত্যসঙ্গী বলে । এমন কোনো দিনের কথা মনে করতে পারি না, যেদিন হত্যা কিংবা ধর-পাকড়ের কোনো না কোনো খবর কানে না আসত।
ক. ‘সুত’ অর্থ কী?
খ. “আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাত্রীর।”— ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সঙ্গে কোন দিক থেকে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার একটি বিশেষ দিকের বৈপরীত্য লক্ষ করা যায়, সামগ্রিক বিষয়ের নয়।” -মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ :
রক্তে জ্বলছে লক্ষ সূর্যশিখা;
পশুরা ছিঁড়েছে আমার মাতৃভূমি।
এ দুঃসময়ে পেছনে ডেকো না কাউকে ভুলেও তুমি। একদিকে জ্বলে চেতনা অন্যদিকে জ্বলে জনপদ
সোনার বাংলা জ্বলছে আগুনে চারদিকে শুধু হিংস্র শ্বাপদ
পথে প্রান্তরে মাংসাশী নেকড়েরা;
ধর্মের নামে পাশবিকতায় উন্মত্ত যে পঙ্গপালেরা—
এখন এদেশে এইসব পশু হত্যার মওসুমী
এ দুঃসময়ে কাউকে পেছনে কখনো ডেকো না তুমি।
ক. ‘মহা-বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত’-এর পরের লাইন কী?
খ. কবি কখন শান্ত হওয়ার কথা বলেছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কোন দিককে নির্দেশ করেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মিল থাকলেও উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার চেতনার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি। মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : ‘দুর্বাসা হে! রুদ্র তড়িৎ হান্ছিলে বৈশাখে,
হঠাৎ সে কার শুনলে বেণু কদম্বের ঐ শাখে।
বজ্রে তোমার বাজলে বাঁশি, বহ্নি হলো কান্না, হাসি
সুরের ব্যথায় প্রাণ উদাসী-
মন সরে না কাজে।
তোমার নয়ন-ঝুরা অগ্নি-সুরেও রক্ত-শিখা বাজে!’
ক. কবি নিজেকে কার শিষ্য বলে ঘোষণা করেছেন?
খ. ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ-তূর্য’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে? আলোচনা করো।
ঘ. উদ্দীপকের দুর্বাসা ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ক্ষ্যাপা দুর্বাসার স্বরূপ উন্মোচনে সহায়ক কি? যৌক্তিক বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : যাহারা পদে পদে আনিয়া দিল লাঞ্ছনা, অপমান, অত্যাচার, নির্যাতন, প্রত্যেক সুযোগে যাহারা হানিল বৈরিতার বিষাক্ত বাণ, হযরত তাঁহাদের সহিত কী ব্যবহার করিলেন? জয়ীর আসনে বসিয়া ন্যায়ের তুলাদণ্ড হাতে লইয়া বলিলেন : ভাইসব, তোমাদের সম্বন্ধে আমার আর কোনো অভিযোগ নাই, আজ তোমরা সবাই স্বাধীন, সবাই মুক্ত। মানুষের প্রতি প্রেমপুণ্যে উদ্ভাসিত এই সুমহান প্রতিশোধ সম্ভব করিয়াছিল হযরতের বিরাট মনুষ্যত্ব।
ক. কবি নিজেকে কাদের মরম বেদনা বলেছেন?
খ. ‘আমি দুর্বার/ আমি ভেঙে করি সব চুরমার’– ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার বৈসাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের হযরত মুহম্মদ (স.) ও “বিদ্রোহী’ কবিতার কবির মধ্যে পার্থক্য থাকলেও তাঁদের মূলচেতনা একই”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : “মুক্তি আলোকে ঝলমল করে আঁধারের যবনিকা
দু’শ বছরের নিঠুর শাসনে গড়া যে পাষাণবেদি
নতুন প্রাণের অঙ্কুর জাগে তারই অন্তর ভেদী।
নব ইতিহাস রচিব আমরা মুছি কলঙ্ক লেখা।”
ক. ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
খ. কবি নিজেকে ‘অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল’ বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের কবিতাংশটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মূলভাবকে কতটুকু প্রতিফলিত করতে পেরেছে? যৌক্তিক বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : ‘তুমিই আমার মাঝে আসি’
অসিতে মোর বাজাও বাঁশি,
আমার পূজার যা আয়োজন
তোমার প্রাণের হবি।’
ক. অর্ফিয়াসের পিতা এ্যাপোলো ছাড়া অন্য কে হতে পারে বলে মত পাওয়া যায়?
খ. ‘আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সূত বিশ্ব-বিধাতৃর’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা বিদ্রোহের বীজ ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সাথে কীভাবে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “প্রেম ও দ্রোহের সমন্বয় উদ্দীপক ও ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় সমান্তরালরূপে প্রকাশিত হয়েছে”— বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : “আমার এ কূল ভাঙিয়াছে যেবা আমি তার কূল বাঁধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি।
যে মোরে দিয়েছে বিষে-ভরা বাণ,
আমি দেই তারে বুকভরা গান;
কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম-ভর,-
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।”
ক. কাকে ঘৃনটি বলা হয়?
খ. কবি নিজেকে ‘অর্ফিয়াসের বাঁশরী’ বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার বৈসাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের কবিতাংশে প্রতিফলিত চেতনা যেন ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কবির চেতনার প্রতিরূপ।”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
বিদ্রোহী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১১ : যে ব্যক্তির হৃদয় অভাবী, অসহায়, নিঃস্ব, এতিম ও দুর্বলকে দেখে আপ্লুত হয় না, কষ্টে চিত্ত ব্যথিত হয় না; তার মনে প্রেম নেই, মায়া নেই, কোনো মমতা নেই। যার মনে মানবপ্রেম নেই, মসজিদ কিংবা মন্দিরে গিয়ে যতই ফ্রন্দনরত অবস্থায় থাকুক; সৃষ্টিকর্তার প্রেম সে পাবে না, পেতে পারে না, সৃষ্টিকর্তা সবার প্রতিই করুণা করেন কিন্তু প্রেম সবার ললাটে জোটে না।
ক. কবি নিজেকে কার মরম বেদনা বলেছেন?
খ. ‘আমি চেঙ্গিস’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত চেতনা ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ক্ষেত্রে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে? বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১২ : কারবালা ময়দানে ইমাম হোসেন তাঁর বাহাত্তরজন সঙ্গীসহ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। শত অনুরোধ ও ভয-ভীতি উপেক্ষা করে তিনি সত্য ও সুন্দরের প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করেছেন। মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন, কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। সকলেই যখন অর্থলোভে, রাজ্যলোভে বা মৃত্যুভয়ে ইয়াজিদের বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে, তখন তিনি একাই ইয়াজিদি শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন।
ক. কাজী নজরুল ইসলাম কোথা থেকে নিম্ন প্রাইমারি পাস করেন?
খ. কবি নিজেকে ‘মহা-প্রলয়ের নটরাজ’ বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার সাদৃশ্য কোন দিক থেকে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “চির-উন্নত মম শির’— উদ্ভিটিতে প্রকাশিত আদর্শবোধই উদ্দীপকের ইমাম হোসেনের মাঝে প্রতিফলিত হয়েছে- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১৩ : আরাফ ছোটবেলা থেকেই একরোখা। সে যা ভাবে, তাই করে। মা-বাবার শাসন-বারণ মানে না। লেখাপড়ায় মনোযোগ নেই; কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশীর যেকোনো সমস্যায় সে সবার আগে এগিয়ে আসে। সেবার পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে কিশোর বয়সি আরাফের প্রচেষ্টায় আগুন লাগা ঘরে আটকে পড়া তিন বছর বয়সি শিশু অমিতের জীবন রক্ষা পায়। আরাফ কোনোকিছুকেই পরোয়া করে না।
ক. ডমরু কী?
খ. “শির নেহারি’ আমারি, নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির” ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “আরাফ যেন ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কবির মানসপুত্র”- উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১৪ : (i) “দুই হাত কাটা তবু শের-নর আব্বাস,
পানি আনে মুখে, হাঁকে দুশমনও সাব্বাস!”
(ii) “দ্রিম দ্রিম্ বাজে ঘন দুন্দুভি দামামা,
হাঁকে বীর “শির দেগা, নেহি দেগা আমামা।”
ক. কবিকে রুষে উঠতে দেখে কী ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে নিভে যায়?
খ. কবি নিজেকে পৃথিবীর অভিশাপ বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপক (i)-এ ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপক (ii)-এর কবিতাংশটি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কবির আপসহীন মনোভাবের সমার্থক” বিশ্লেষণ করো।
কঠিন অংশের ব্যাখ্যা
১. বল বীর—
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি, নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
‘নেহারি’ শব্দের অর্থ— প্রত্যক্ষ করে আর ‘হিমাদ্রি’ হলো হিমালয়। এ অংশে কবির বীরোচিত আত্মদম্ভ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি মনে করেন, তাঁর এই উন্নত ও গর্বিত শির প্রত্যক্ষ করে হিমালয় চূড়াও মাথা নত করবে।
২. মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
নটরাজ মহাদেব শিবের আরেক নাম। এই রূপে তিনি নৃত্যের ছন্দে সবকিছু ধ্বংস করেন। এ অংশে বিদ্রোহী কবি নিজেকে প্রলয় সৃষ্টিকারী দেবতা শিবের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৩. আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
কবির বিদ্রোহ পরাধীনতা, অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে। আর তাই অসাম্য সৃষ্টিকারী সকল আইন বা নিয়ম-কানুন-শৃঙ্খলের বেড়াজালকে তিনি অতিক্রম করে চলেন।
বিদ্রোহী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
৪. আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
জটাধারী শিবের অপর নাম ধূর্জটি আর এলোকেশ হলো যার কেশ বা চুল এলানো। এখানে এলানো চুলের সাথে অকাল বৈশাখীর ঝড়ের তুলনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় চরণটিতে উল্লেখিত ‘সুত’ শব্দের অর্থ— পুত্র। কবি এখানে নিজেকে বিশ্ববিধাতার বিদ্রোহী পুত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন।
৫. মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ-তূর্য;
‘তূর্য’ হলো— প্রাচীন রণবাদ্য বিশেষ। এখানে ‘বাঁকা বাঁশের বাঁশরী’ কবির প্রেম ও সাম্যবাদী মনোভাবের ইঙ্গিতবহ আর ‘রণ-তৃষ’ তাঁর বিদ্রোহী সত্তার। অর্থাৎ কবি এখানে একইসঙ্গে প্রেম ও দ্রোহের প্রতিমূর্তি।
৬. আমি ইস্রাফিলের শিঙার মহা হুঙ্কার,
ইস্রাফিল হলেন পবিত্র কোরআনে উল্লিখিত বিশিষ্ট ফেরেশতা। তাঁর শিঙার ফুঁকেই প্রলয় সংঘটিত হয়। প্রলয় সৃষ্টিকারী ফেরেশতার শিঙার প্রতীকে কবি এখানে তাঁর বিধবংসী রূপটিকে উন্মোচন করেছেন।
৭. আমি চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচণ্ড!
দেবতা বিষ্ণুর চার হাত। তাঁর এই চার হাতে থাকে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম। এখানে শঙ্খ মঙ্গলের প্রতীক। চক্র ও গদা বিধ্বংসী ক্ষমতার প্রতীক। এসকল অস্ত্র দিয়ে তিনি অপশক্তির বিনাশ ঘটিয়ে মঙ্গল প্রতিষ্ঠা করেন। আলোচ্য কবিতায় শঙ্খ ও চক্রের সঙ্গে নিজের তুলনা করে কবি শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থানকে স্পষ্ট করেছেন।
৮. আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য,
দুর্বাসা ও বিশ্বামিত্র প্রাচীন ভারতের দুই বিশিষ্ট মুনি ও ঋষি। ঋষি বিশ্বামিত্রের শিষ্য দুর্বাসা ছিলেন প্রচণ্ড রাগী। আলোচ্য কবিতায় দুর্বাসার সঙ্গে নিজের তুলনা করে কবি অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের ক্রোধের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন।
৯. আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
হিন্দু পুরাণের এক বিশিষ্ট চরিত্র পরশুরাম। তিনি বহুবার তাঁর কুঠার দিয়ে অত্যাচারী ক্ষত্রিয় রাজাদের ধ্বংস করেন। আলোচ্য অংশে পরশুরামের প্রতীকে অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে কবি তাঁর ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
১০. আমি হল বলরাম-স্কন্ধে
আমি উপাড়ি ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।
‘হল’ শব্দের অর্থ— লাঙল। মহাভারতের অন্যতম চরিত্র বলরাম তাঁর হল বা লাঙলের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। এই লাঙল ছিল বিধ্বংসী ক্ষমতার অধিকারী। এ কবিতায় বলরামের হলের সঙ্গে নিজের তুলনা করে কবি অন্যায়ের ধ্বংস কামনা করেছেন। অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটিয়েই বৈষম্যমুক্ত নতুন পৃথিবী গড়তে চান তিনি।
বাংলা প্রথম পত্রের অন্যান্য গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো নিচে দেয়া লাল লিংকে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নাও।
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : বায়ান্নর দিনগুলো
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : তাহারেই পড়ে মনে
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : অপরিচিতা
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : সাম্যবাদী
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : মাসি-পিসি
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : ঐকতান
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : আহ্বান
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : আঠারো বছর বয়স
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : সোনার তরী
►► সৃজনশীল ডাউনলোড : মহাজাগতিক কিউরিটের
এইচএসসি শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে এখানে ক্লিক করো। নতুন সাজেশন পেতে জয়েন করো HSC Candidates, Bangladesh ফেসবুক গ্রুপে। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post