বিভিন্ন পেশা তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ১১শ অধ্যায়

বিভিন্ন পেশা : মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকে। কেউ ফসল ফলায়, কেউ মাছ চাষ করে, আবার কেউ গৃহপালিত পশু ও পাখি পালন করে। কৃষক মাঠে ফসল উৎপাদন করেন, জেলে মাছ ধরেন, আর খামারি মুরগি ও অন্যান্য প্রাণী পালন করেন।

এসব উৎপাদিত পণ্য মানুষের খাদ্য ও জীবনের অন্যান্য চাহিদা পূরণ করে। অন্যদিকে, কিছু মানুষ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করেন। কাঠমিস্ত্রি কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করেন, কুমোর মাটি দিয়ে হাঁড়ি-পাতিল ও খেলনা বানান, তাঁতি সুতা দিয়ে কাপড় বোনেন এবং দর্জি কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরি করেন।

বিভিন্ন পেশা

কৃষক : আমি মাঠে কাজ করি। আমি ধান, পাট, আখ, আলু, টমেটো ইত্যাদি উৎপাদন করি। আমার উৎপাদিত ফসল মানুষ নানাভাবে ব্যবহার করে।

জেলে : আমরা মাছ চাষ করি, মাছ ধরি ও বিক্রি করি। আমার উৎপাদিত মাছ মানুষ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে।

খামারি : আমি খামারে মুরগি উৎপাদন করি। আমার উৎপাদিত মুরগি থেকে মানুষ ডিম ও মাংস পায়।

কৃষক, জেলে ও খামারি সকলেই নানা জিনিস উৎপাদন করেন। তাঁরা সবাই নিজ নিজ কাজের মাধ্যমে সবার প্রয়োজন মেটান এবং অর্থ উপার্জন করেন। এ কাজগুলোই তাঁদের পেশা। এ পেশার নাম কৃষিকাজ।

যাঁরা তৈরি করেন

কাঠমিস্ত্রি : আমি কাঠ দিয়ে আলমারি, চেয়ার, টেবিল, খাট, ঘর ইত্যাদি তৈরি করি। আমার তৈরি জিনিস মানুষকে সুবিধা দেয়। জীবনকে সুন্দর করে। মানুষকে নিরাপত্তাও দেয়।

কুমোর : আমি মাটি দিয়ে কলস, হাঁড়ি, পাতিল, সানকি, ফুলের টব, ফুলদানি, খেলনা ইত্যাদি তৈরি করি। আমার তৈরি পণ্য মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করে। গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও মানুষ আমার তৈরি জিনিস ব্যবহার করে।

তাঁতি : আমি বিভিন্ন রং দিয়ে সুতা রং করি। সেই সুতা দিয়ে তাঁতে কাপড় বুনি। নানা রকমের শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি করি। মানুষের খুব প্রয়োজনীয় একটি জিনিস হলো কাপড়। বহুকাল ধরে মানুষ এটি ব্যবহার করে আসছে। আমি মানুষের এ চাহিদা পূরণ করি।

দর্জি : আমি কাপড় দিয়ে শার্ট, প্যান্ট, সালোয়ার-কামিজ, ফ্রক-স্কার্ট ইত্যাদি তৈরি করি। ছেলে-মেয়ে, ছোটো-বড়ো সকলের জন্যই পোশাক বানাই। আমার তৈরি নানা ধরনের পোশাক মানুষ ব্যবহার করে। পোশাক ছাড়াও কাপড়ের তৈরি নানা জিনিস মানুষ ব্যবহার করে।

কাঠমিস্ত্রি, তাঁতি, কুমোর ও দর্জি নানা জিনিস তৈরি করেন। তাঁরা তৈরি জিনিস বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। এ কাজগুলোই তাঁদের পেশা।

যাঁরা সেবা দেন | বিভিন্ন পেশা

শিক্ষক : আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়ে থাকি। আমি পড়ালেখার পাশাপাশি সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশেও সাহায্য করি।

ডাক্তার : আমি অসুস্থ রোগীদের রোগ নির্ণয় করি। প্রয়োজনীয় ঔষধ সেবন ও পথ্য গ্রহণের পরামর্শ দিই।

নার্স : আমি রোগীদের দেখাশোনা করি, সময়মতো ঔষধ, পথ্য ইত্যাদি খাওয়াই। আমি ডাক্তারদের কাজে সহযোগিতা করি।

দোকানদার : আমি আমার দোকানে চাল, ডাল, তেল ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয় করি।

চালক : আমি রিকশা চালাই। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে মানুষকে সাহায্য করি। আমি মালামালও পরিবহণ করি।

শিক্ষক, ডাক্তার, নার্স, চালক ও দোকানদার মানুষকে সেবা দেন। তাঁরা মানুষকে সেবাদানের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন। এটাই তাঁদের পেশা।

এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজ

ক. সঠিক উত্তরের পাশে টিক (✓) চিহ্ন দিই।
১। কোন পেশাজীবী উৎপাদনের সাথে জড়িত?
ক) শিক্ষক
খ) কৃষক
গ) দর্জি
ঘ) কুমার

২। কোন পেশাজীবী সেবা প্রদান করেন?
ক) দোকানদার
খ) তাঁতি
গ) জেলে
ঘ) খামারি

৩। একজন দোকানদার আমাদের কীভাবে সেবা দিয়ে থাকেন?
ক) পণ্য উৎপাদন করে
খ) পণ্য পরিবহণ করে
গ) পণ্য বিক্রি করে
ঘ) পণ্য ব্যবহার করে

খ. সঠিক শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করি।
১. এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পণ্য নিয়ে যান _______।
২. হাঁস, মুরগি, ডিম উৎপাদন করেন _______।
৩. চেয়ার, টেবিল আলমারি ইত্যাদি তৈরি করেন _______।
৪. শ্রেণিতে আমাদের পাঠদান করেন _______।
৫. শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা তৈরি করেন _______।
৬. নদী থেকে মাছ ধরেন _______ ।

গ. সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন।
১. পেশা বলতে কী বোঝায়?
২. উৎপাদন করেন এমন কিছু পেশাজীবীর নাম লিখি।
৩. যাঁরা সেবা প্রদান করেন এমন কিছু পেশাজীবীর নাম লিখি।

উত্তরমালা

◉ আরও দেখো: তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সকল অধ্যায়ের সমাধান

শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় মূল বই থেকে ১১শ অধ্যায় বিভিন্ন পেশা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজগুলোর সমাধান পেতে উপরের উত্তরমালা অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত বেশকিছু প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে।