বিলাসী গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীকে বিয়ে করে সমাজ থেকে বিতাড়িত হয়। প্রচলিত প্রকারভেদ প্রথা সমাজে তার স্থান হয় না, কিন্তু বিলাসীর প্রতি সে ছিল একনিষ্ঠ। মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়েবৃত্তিকে গ্রহণ করেছিল। মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়ে হোক বিলাসি তা চাননি। সমাজ থেকে বিতাড়িত হয়ে এসে বিলাসীকে বিয়ে করে সাপুড়ে হয়। সাপ ধরা এবং পোষা তার পেশায় পরিণত হয়। অবশেষে এই সাপই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। গোয়ালার বাড়িতে সাপ ধরতে গিয়ে দংশিত হয় সে। ন্যাড়া এবং বিলাসীসহ সব সাপুড়ে তাদের সমস্ত বিদ্যার প্রয়োগ করেছে তাকে বাঁচানোর জন্য, কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি। তাই ন্যাড়া উল্লিখিত উক্তিটি করেছে।
বিলাসী গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর
১. “ইহা আর একটি শক্তি’—বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘ইহা আর একটি শক্তি’- কথাটি দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার প্রকৃত ভালোবাসার প্রসঙ্গকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
স্বামী-স্ত্রী বহুবছর একত্রে বসবাস করলেও সত্যিকারের ভালোবাসার সন্ধান খুব কম যুগলই পায়। আলোচ্য গল্পে প্রসঙ্গক্রমে গল্পকথক তাঁর এক আত্মীয়ার উদাহরণ টেনেছেন। সেই নারী স্বামীর সাথে পঁচিশ বছর ঘর করেছে। অথচ স্বামীর মৃতদেহ আগলে পাঁচ মিনিটও একাকী থাকার সাহস তার নেই। এর কারণ প্রকৃত ভালোবাসার সম্পর্কের অনুপস্থিতি। স্বামীর মৃতদেহের কাছে থাকার জন্য প্রয়োজন ছিল আর একটু শক্তি, অর্থাৎ খাঁটি ভালোবাসা। প্রশ্নোক্ত উদ্ভিটির মধ্য দিয়ে এ বিষয়টিই ইঙ্গিতময় হয়ে উঠেছে।
২. ‘ভয় পাইবার সময় পাইলাম না’—উক্তিটির প্রেক্ষাপট বর্ণনা কর।
উত্তর: বাল্যবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়কে দেখা শেষে বাড়ি ফেরার পথেই ‘বিলাসী’গল্পের কথক ন্যাড়া উদ্ধত উক্তিটি করেছেন।
সাপুড়ে কন্যা বিলাসী একদিন সন্ধ্যার অন্ধকারে ন্যাড়া মৃত্যুঞ্জয়কে দেখতে পোরোবাড়িতে গেল। গভীর বনের মধ্যে দিয়ে অন্ধকার রাতে ফেরার পথে কিছুটা হলেও ভয় পাচ্ছিল। কিন্তু বিলাসীর সাহসের কথা মনে পড়তেই তার ভয় দূর হয়ে গেল। কেবল ভারতে থাকল, একটা মৃত্যুকল্প রোগী নিয়ে এমন স্থানে একা একটা মেয়ের রাত্রি পাড়ি দেওয়া কত কঠিন কাজ। মৃত্যুঞ্জয় তো যে কোন মুহূর্তে মারা যেতে পারত। তখন নিশ্চয় মেয়েটিকে স্বামীর মৃতদেহের পাশে বসে একাকী রাত কাটাতে হতো। এ পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাড়া বিলাসীর সাহসের উৎস হিসেবে আবিষ্কার করল স্বামী মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি তার সীমাহীন ভালোবাসা। এ সত্য আবিষ্কারের ন্যাড়ার মন এমনই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল যে শ্বাপদসংকুল পথ পাড়ি দিতে গিয়ে সে ভয় পাওয়ার সময়ই পায়নি।
৩. ‘তাহার বয়স আঠারো কি আঠাশ ঠাহর করিতে পারিলাম না’—কেন? বুঝিয়ে বল।
উত্তর: অসুস্থ মৃত্যুঞ্জয়ের সেবায় বিলাসী নিজেকে বিসর্জন দিয়েছে। রাতদিন সেবা করে করে বিলাসীর শরীর একেবারে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। এ কারণেই ন্যাড়া তার বয়স ঠাহর করতে পারে নি। মৃত্যুঞ্জয় একবার কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে আত্মীয়স্বজন কিংবা পাড়া-প্রতিবেশীদের কেউ তার সেবায় এগিয়ে আসেনি। সাপুড়ে কন্যা বিদেশি মৃত্যুর কবল থেকে সে যাত্রায় মৃত্যুঞ্জয়কে রক্ষা করেছে। একদিন সন্ধ্যার অন্ধকারে ন্যাড়া মৃত্যুঞ্জয়কে দেখতেই পোরোবাড়িতে গেল। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পায় বিদেশি মৃত্যুঞ্জয়ের সেবা করতে করতে ফুলদানির ফুলের মধু শুকিয়ে গেছে। তার প্রকৃত বয়স আঠারো কিংবা আঠাশ কোনটাই বুঝার উপায় ছিল না। তাই মেয়েরা আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিল।
৪. বাঙালির মন্ত্রতন্ত্রের সাথে সাপের বিষের তুলনা প্রসঙ্গে ন্যাড়ার উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘বিলাসী’গল্পে ন্যাড়া বাঙালির মন্ত্র তন্ত্রের সাথে সাপের বিষের তুলনা করে প্রকৃত সত্যটি উপস্থাপন করেছেন এবং দেখিয়েছেন যে বাঙালির মন্ত্র সিদ্ধ মিথ্যা হতে পারে কিন্তু সাপের বিষ কখনোই অকার্যকর হয় না।
মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীকে বিয়ে করে সমাজ থেকে বিতাড়িত হয়। প্রচলিত প্রকারভেদ প্রথা সমাজে তার স্থান হয় না, কিন্তু বিলাসীর প্রতি সে ছিল একনিষ্ঠ। মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়েবৃত্তিকে গ্রহণ করেছিল। মৃত্যুঞ্জয় সাপুড়ে হোক বিলাসি তা চাননি। সমাজ থেকে বিতাড়িত হয়ে এসে বিলাসীকে বিয়ে করে সাপুড়ে হয়। সাপ ধরা এবং পোষা তার পেশায় পরিণত হয়। অবশেষে এই সাপই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। গোয়ালার বাড়িতে সাপ ধরতে গিয়ে দংশিত হয় সে। ন্যাড়া এবং বিলাসীসহ সব সাপুড়ে তাদের সমস্ত বিদ্যার প্রয়োগ করেছে তাকে বাঁচানোর জন্য, কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি। তাই ন্যাড়া উল্লিখিত উক্তিটি করেছে।
৫. মৃত্যুঞ্জয়ের ‘জাতবিসর্জনের’ কারণ বর্ণনা কর।
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের বিসর্জন এর কারণ হল বিলাসিতার অকৃত্রিম ভালোবাসা।
মৃত্যুঞ্জয় কায়স্থের ছেলে। তার বাপ মা বেঁচে নেই। গ্রামের আর দশটা ছেলের মত সেও লেখাপড়া করে। কিন্তু ছাত্র হিসেবে ভাল নয় বিধায় সে কখনো থার্ডক্লাস অতিক্রম করতে পারেনি। এদিকে মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়লে পাড়ার এক সাপুড়ের মেয়ে বিলাসী সেবা যতœ দিয়ে তাকে সারিয়ে তোলে, ফলে বিলাসী সঙ্গে তার ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু গ্রামের রক্ষণশীল হিন্দুসমাজ কিছুতেই সে সম্পর্ক মেনে নেয়নি। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় তার ভালোবাসার টানে সাপুড়ে কন্যা বিলাসীকে বিয়ে করার ভেতর দিয়ে তার ধর্ম বিসর্জন দেয়। মৃত্যুঞ্জয় বিলাসীর ভালোবাসা যেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অপূর্ব সৃষ্টি।
৬. কোন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে খুড়া মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘বিলাসী’গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় কায়স্থের ছেলে। তার মা-বাবা কিংবা ভাই-বোন কেউ বেঁচে নেই। এ পৃথিবীর বুকে বলতে গেলে সে একা। তাই খুড়া মৃত্যুঞ্জয়ের সম্পত্তি দখল করার উদ্দেশ্যে তার নামে কুৎসা রটনা করে বেড়াত।
মৃত্যুঞ্জয়ের ছিল গ্রামের এক প্রান্তে একটা প্রকা- আম-কাঁঠালের বাগান। আর তার মধ্যে একটা প্রকা- পোরোবাড়ি। তাছাড়া তার ছিল এক জাতি খুড়া। খুড়ার কাজ ছিল ভাইপোর বিরুদ্ধে বলে বেড়ানো- ‘সে গাঁজা খায়; সে গুলি খায়’ এমনকি আর কত কি! সে বাগানের অর্ধেক অংশের দাবিদার বলেও সমাজে প্রচার করে বেড়াত। বস্তুত সম্পত্তির লোভেই সে মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে বেড়াত।
৭. মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি খুড়োর বৈরী মনোভাবের কারণ কী?
উত্তর: ‘বিলাসী’গল্পে মৃত্যুঞ্জয় এর প্রতি বৈরী মনোভাব এর মূল কারণ মৃত্যুঞ্জয়ের বিশাল বাগানটি নিজের করে নেওয়ার লোভ।
মৃত্যুঞ্জয়ের জ্ঞাতি খুড়ো সবসময় ভাইপো মৃত্যুঞ্জয়ের অনিষ্ট করার কাজে লেগে থাকত। তাকে কিভাবে সমাজের কাছে হেয় করা যায়, নিন্দিত করা যায়, সে চেষ্টায় তার কোনো ত্রুটি ছিল না। ভাইপোকে গ্রামবাসীর কাছে কোণঠাসা করার জন্য মৃত্যুঞ্জয়ের অন্যপাপের কথা প্রচার করেছে। খুড়ো মৃত্যুঞ্জয়ের কুড়ি পঁচিশ বিঘা বাগান নিজের নামে প্রতিষ্ঠার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করত।
বিলাসী গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
৮. ‘গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের ছিল এমনি সুনাম।’—বিষয়টি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘গ্রামের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ের এমনি সুনাম।’এটি ‘বিলাসী’গল্পের লেখক এর ব্যাঙ্গাত্মক উক্তি।
আমরা জানি যে, সুনাম শব্দটি একটি আদর্শ অর্থ বহন করে, যা দিয়ে কারো প্রশংসা কে বোঝানো হয়। কিন্তু বিলাসী গল্পে উক্তিটি লেখক ব্যাঙ্গার্থে করেছেন। গল্পে পরোপকারী মৃত্যুঞ্জয়ের উপকার স্বীকার না করে নিচু মনের মানুষ যখন তাকে অবহেলা অবজ্ঞা করেছে, লেখক তখনই সার্থকভাবে উক্তিটি করেছেন। মৃত্যুঞ্জয় শিক্ষার্থীদেরকে খাওয়ানো, বই কিনে দেওয়া, বাচ্চাদের স্কুলের পাওনা মিটানো ইত্যাদি কাজের মধ্য দিয়ে মানবীয় গুণাবলীর পরিচয় দিয়েছিল। তৎকালীন সংকীর্ণমনারা তা মনে রাখেনি; বরং তার অসুস্থতার সময় তাকে সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার বিষয়কে পাপ হিসেবে দেখেছে, তাকে সমাজচ্যুত করে মৃত্যুর দিকেই ঠেলে দিয়েছে।
৯. ‘বদন দগ্ধ না হয়’—বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘বদন দন্ধ না হয়’- এর আভিধানিক অর্থ মুখ যেন না পোড়ে। কিন্তু এ কথাটি সুনাম যেন নষ্ট না হয় এই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ‘বিলাসী’গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় দেড় মাস প্রায় অচেতন অবস্থায় পড়েছিল জ্বরে। গ্রামের কেউ খবর নিতে আসেনি। সাপুড়ের মেয়ে বিলাসি তাকে সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ্য করে তুলেছে। কৃতজ্ঞ মৃত্যুঞ্জয় তাকে বিয়ে করেছে। এতে গ্রামের বদন দন্ধ হয়েছে অর্থাৎ সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। বিষয়টি যেন বাইরের কেউ জানতে না পারে এবং একই সাথে ঘুরার স্বার্থোদ্ধার হয়, সেজন্য খুরা অভিভাবক হয়ে বলেছেন ব্যবস্থা নিতে। আর সংঘের যুবক ছেলেরা চলেছে গ্রামের বদন যেন দগ্ধ না হয় তারই একটা মীমাংসা করতে।
১০. ‘বাঙালির বিষ’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘বাঙালির বিষ’বলতে বাঙালির ক্ষণস্থায়ী ক্রোধ বা বিদ্বেষকে বুঝানো হয়েছে।
বাঙালির রাগ আছে, হিংসা-বিদ্বেষ আছে। কিন্তু তা কখনো দিনের পর দিন বা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে না। মনের মধ্যে প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত পুষে রাখে না। রাগের বশে বা হিংসার বসে কারো কোন ক্ষতি বা খুন-খারাবি ও করে না। বাক বিত-া ও অকথ্য গালাগালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং ক্ষণস্থায়ী। সাপের বিষ যেমন অবাধ্যভাবে কার্যকর অর্থাৎ কমর দেওয়ার সাথে সাথেই তার মৃত্যুর ঘন্টা বাজিয়ে দেয়। বাঙালির কথার বিষ এমন অব্যর্থভাবে কার্যকর নয়।
১১. “চার ক্রোশ মানে আট মাইল নয়, ঢের বেশি’’—উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: গাণিতিকভাবে চার ক্রোশ মানে আট মাইল হলেও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে গল্পকথকদের যাতায়াতের পথ দীর্ঘতর হয়ে উঠত বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে। লেখক ও তার সহপাঠীদের প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের জন্য দীর্ঘ চার ক্রোশ পথ অতিক্রম করতে হতো। কিন্তু বর্ষার দিনে মেঘের জল, এক হাঁটু কাদা এবং গ্রীষ্মের দিনের খরতাপ ও ধুলার কারণে সেই চার ক্রোশ পথ আরও বেশি দীর্ঘ বলে মনে হতো। এ ব্যাপারটি স্পষ্ট করে তুলতেই লেখক উপরিউক্ত ব্যঙ্গাত্মক উক্তিটির আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।
১২. মা সরস্বতী খুশি হইয়া বর দিবেন কি, তাহাদের যন্ত্রণা দেখিয়া কোথায় যে তিনি লুকাইবেন, ভাবিয়া পান না’—উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: তৎকালীন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যার্জনের ক্লেশ প্রসঙ্গে প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে। ন্যাড়া, মৃত্যুঞ্জয়সহ শিক্ষার্থীদের তখন বহু কষ্টে দুই ক্রোশ পথ অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হতো। প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে এ পথ যেন আরও দুর্গম হয়ে উঠত। এত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করে শেষ পর্যন্ত গ্রামের ছেলেদের পরীক্ষার ফল আশানুরূপ হতো না। তৎকালীন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালাভের এই বিড়ম্বনাকে বোঝাতেই লেখক প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
১৩. “তারা বাস করিতে থাকিলে তো পল্লির এত দুর্দশা হয় না।”—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে সংগতিপূর্ণ ব্যক্তিরা পল্লির প্রতি মনোযোগী হলে সেখানকার দুর্দশা লাঘব হতো বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে। পল্লি অঞ্চলে ঋতুভেদে জল, কাদা এবং প্রখর সূর্যতাপ ও ধুলোর পথ পার হয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্তের স্কুলে যেত। লেখক মনে করেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা যদি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য শহরে পাড়ি না জমিয়ে পল্লি অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতেন এবং শহরে বসবাসকারী শিক্ষিত উঁচুতলার মানুষেরা যদি পল্লির দিকে সামান্য সুনজর দিতেন, তবে পল্লির এ দুর্দশা আর থাকত না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মধ্য দিয়ে লেখকের এমন মনোভাবই প্রকাশিত হয়েছে।
১৪. কোন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে খুড়া মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের সম্পত্তি দখল করার উদ্দেশ্যেই খুড়া তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে। এক জ্ঞাতি খুড়া ছাড়া মৃত্যুঞ্জয়ের মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ ছিল না। তবে গ্রামের এক প্রান্তে একটি প্রকা- আম-কাঁঠালের কুড়ি- পঁচিশ বিঘার বাগান ছিল তার। খুড়া দাবি করত ঐ বাগানের অর্ধেক অংশ তার প্রাপ্য। মৃত্যুঞ্জয়কে তাড়িয়ে সেই বাগানটি হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই সে তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করত।
১৫. মৃত্যুঞ্জয় নিজে রেধে খেত কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মা-বাবা বা পরিজন না থাকায় মৃত্যুঞ্জয় নিজের খাবার নিজেই রান্না করে খেতো। মৃত্যুঞ্জয় একটি বিশাল পুরনো বাড়িতে একা থাকতো। এক জ্ঞাতি খুড়া ছাড়া তার মা-বাবা বা পরিজন কেউ ছিল না। সেই খুড়াও আবার তার কুৎসা রটাত। ফলে তার দেখভালের মতো মানুষের অভাব ছিল। এ কারণে নিজের রান্নার দায়িত্ব মৃত্যুঞ্জয় নিজের কাঁধে তুলে নেয়। উত্তরের সারবস্তু: মা-বাবা বা পরিজন না থাকায় মৃত্যুঞ্জয় নিজের খাবার নিজেই রান্না করে খেতো।
◉ আরও দেখ: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল গল্প-কবিতার CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা বই থেকে বিলাসী গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করছি, এই প্রশ্নগুলো প্রাকটিস করলে তোমরা পরীক্ষার জন্য শতভাগ কমন পেয়ে যাবে। সবগুলো অনুধাবন প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post