ভাবুক ছেলেটি প্রশ্ন উত্তর : ছেলেটির বাবার বাড়ি বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে। তবে তার জন্ম ময়মনসিংহে- ১৮৫৮ সালের ৩০শে নভেম্বর। ওর পড়াশোনায় হাতেখড়ি হয়েছিল বাড়িতেই। তারপর ময়মনসিংহে স্কুল শিক্ষার ধাপ শেষ করে ভর্তি হয় কলকাতায়। ১৮৭৪ সালে সে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করে। ১৮৭৮ সালে সে এফএ পরীক্ষাতেও কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। তারপর ১৮৮০ সালে বিজ্ঞান শাখায় বিএস সি পাস করে বিলেতে যায় ডাক্তারি পড়তে।
ভাবুক ছেলেটি প্রশ্ন উত্তর
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থবলি।
পর্যবেক্ষণ, পাণ্ডিত্যপূর্ণ, বিজয়স্তম্ভ, গিরিডি, কল্পকাহিনি, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, প্রবেশিকা, এফ এ।
- পর্যবেক্ষণ—কোনো কিছু বা প্রাকৃতিক ঘটনা খেয়াল করে দেখা।
- পাণ্ডিত্যপূর্ণ—জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাপূর্ণ।
- বিজয়স্তম্ভ—কোনো কিছু জয় করার পর যে স্তম্ভ নির্মাণ করে বিজয় ঘোষণা করা হয়।
- গিরিডি—ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অবস্থিত, গিরিডি জেলার প্রধান শহর। ১৮৭২ সালের আগে স্থানটি হাজারিবাগ জেলার মধ্যে ছিল।
- কল্পকাহিনি—যে কাহিনি কল্পনা করে লেখা হয়।
- বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি—এক প্রকার কল্পকাহিনি, যা বিজ্ঞানকে প্রধান করে লেখা হয়।
- প্রবেশিকা—আজকের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা। সেটি পাস করলে কলেজে প্রবেশ করা যেত, তাই নাম হয়েছিল প্রবেশিকা।
- এফ এ—আজকের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
বিজয়স্তম্ভ, কল্পকাহিনি, আবিষ্কার, কল্যাণ, পাণ্ডিত্যপূর্ণ, দুরন্ত, বিজ্ঞানের, বিস্ময়ে, বাড়িতে, অতিক্ষুদ্র, কর্তব্য, প্রাণী জীবনের।
ক) তাঁর বক্তৃতা শুনে তাঁকে অধ্যাপনা করার আমন্ত্রণ জানানো হয়।
খ) দেশের করার জন্যই তিনি নিজ দেশে ফিরে আসেন।
গ) জগদীশচন্দ্র বসুর আশ্চর্য সব দেখে আইনস্টাইন মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।
ঘ) জগদীশচন্দ্র বসুর প্রত্যেক আবিষ্কার বিজ্ঞান জগতে এক একটি ।
ঙ) জগদীশচন্দ্র বসুর ‘নিরুদ্দেশের কাহিনী’ বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম ।
চ) ছেলেটি তেমন নয়।
ছ) মেঘ ডেকে আকাশে বিদ্যুৎ চমকে বাজ পড়লে অবাক ভাবে।
জ) ওর পড়াশোনার শুরু ।
ঝ) প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপক পদে যোগ দেন।
ঞ) প্রতিবাদে তিনি দীর্ঘ তিন বছর বেতন না নিয়ে পালন করেন।
ট) তিনি দেখিয়েছিলেন যে, উদ্ভিদ ও মধ্যে অনেক মিল আছে।
ঠ) তিনি তরঙ্গসৃষ্টি আবিষ্কার করেন।
উত্তর : ক) পাণ্ডিত্যপূর্ণ; খ) কল্যাণ; গ) আবিষ্কার; ঘ) বিজয়স্তম্ভ ; ঙ) কল্পকাহিনি; চ) দুরন্ত; ছ) বিস্ময়ে; জ) বাড়িতেই; ঝ) পদার্থবিজ্ঞানের; ঞ) কর্তব্য; ট) প্রাণীর; ঠ) অতিক্ষুদ্র;
৩. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখি ও বলি।
ক) ভাবুক ছেলেটি আসলে কে ছিল?
উত্তর : ভাবুক ছেলেটি আসলে ছিল বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু।
খ) সে ছোট বেলায় কী কী নিয়ে ভাবত?
উত্তর : জগদীশচন্দ্র বসু ছোটবেলায় গাছগাছালি নিয়ে গভীরভাবে ভাবত। গাছ ভেঙে গেলে বা তাদের কেটে ফেললে তারা ব্যথা পায় কি না এ প্রশ্ন ছিল ছেলেটির মনে। এছাড়া রোদ-বৃষ্টি, বাজ পড়ার কারণ ইত্যাদি বিষয় নিয়েও তার ভাবনা ছিল।
গ) সে কবে, কোথা থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল?
উত্তর : জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল।
ঘ) কখন থেকে তিনি ‘বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু’ হয়ে ওঠেন?
উত্তর : লন্ডন থেকে বিএসসি পাস করে জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এখানে বৈষম্য ও প্রাপ্য বেতন না দেওয়ার প্রতিবাদে দীর্ঘ তিন বছর তিনি বেতন না নিয়েই কর্তব্য পালন করেন। শেষ পর্যন্ত ইংরেজ সরকার তাঁকে স্বীকৃতি দিয়ে চাকরিতে স্থায়ী করে ও তাঁর সকল বকেয়া পরিশোধ করে। তখন থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন ‘বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু’।
ঙ) কোন সত্য প্রমাণ করে তিনি বেশি পরিচিতি লাভ করেন?
উত্তর : জগদীশচন্দ্র বসু সবচেয়ে বেশি পরিচিতি লাভ করেন ‘গাছেরও প্রাণ আছে’- এই সত্য প্রমাণ করে।
চ) তাঁর বক্তৃতার সফলতা সবচেয়ে বেশি ছিল কোন বিষয়ে?
উত্তর : প্রশ্নটি অধ্যায়-বহির্ভূত।
ছ) বিজ্ঞান শিক্ষা ও চর্চার ক্ষেত্রে তাঁর সফলতাকে কোন নামকরা বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর : বিজ্ঞান শিক্ষা ও চর্চার ক্ষেত্রে স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর সফলতাকে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক গ্যালিলিও ও নিউটনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
জ) ‘পলাতক তুফান’ নামে লেখাটির আগে কী নাম ছিল? তাঁর কোন বইয়ে এটি ছাপা হয়?
উত্তর : ‘পলাতক তুফান’ নামে লেখাটির আগের নাম ছিল ‘নিরুদ্দেশ কাহিনী’। লেখাটি স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর ‘অব্যক্ত’ নামক বইয়ে ছাপা হয়।
ঝ) অধ্যাপনা থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি কী প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : অধ্যাপনা থেকে অবসর গ্রহণের দুই বছর পর তিনি ‘জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানমন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন।
ঞ) ‘তাঁর প্রত্যেকটি আবিষ্কার বিজ্ঞান জগতে এক একটি বিজয়স্তম্ভ।’— এমন কথা কোন বিখ্যাত ব্যক্তি বলেছিলেন? কেন বলেছিলেন?
উত্তর : ‘তাঁর প্রত্যেকটি আবিষ্কার বিজ্ঞানজগতে এক একটি বিজয়স্তম্ভ’- জগদীশচন্দ্র বসু সম্বন্ধে এ কথা বলেছিলেন সুবিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর আবিষ্কারের কারণে আজকের বেতার, টেলিভিশন, রাডারসহ বিশ্বের অধিকাংশ তথ্য আদান প্রদান হয়। তাঁর আবিষ্কার সভ্যতার যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়। তাই তাঁর আবিষ্কারে মুগ্ধ হয়ে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন উক্ত কথা বলেছেন।
পঞ্চম শ্রেণির বাংলা প্রশ্ন উত্তর
৪. ঠিক উত্তরটিতে টিক () চিহ্ন দিই।
ক) কোন সত্যটি প্রমাণ করে জগদীশচন্দ্র বসু বেশি পরিচিতি লাভ করেন?
১. গাছের প্রাণ আছে
২. অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টি করে
৩. মহাকাশে যোগাযোগের ক্ষেত্রে
৪. বেতার এবং টেলিভিশন আবিষ্কারের মাধ্যমে
খ) জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে কোন বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন?
১. বাংলা
২. পদার্থবিজ্ঞান
৩. ইংরেজি
৪. গণিত
গ) জগদীশচন্দ্র বসু কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
১. ময়মনসিংহ
২. ঢাকা
৩. কুমিল্লা
৪. ফরিদপুর
ঘ) ‘জগদীশচন্দ্র বসুর প্রত্যেকটি আবিষ্কার বিজ্ঞান জগতে এক একটি বিজয়স্তম্ভ’ কথাটি কে বলেছিলেন?
১. বিজ্ঞানী অলিভার লজ
২. বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন
৩. বিজ্ঞানী আইনস্টাইন
৪. বিজ্ঞানী গ্যালিলিও
৫. কথাগুলো বুঝে নিই।
- শিক্ষার ধাপ পার—প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এই সব হলো শিক্ষার একটার পর একটা ধাপ।
- বকেয়া পরিশোধ করে—কারো নিকট কোনো টাকা-পয়সা পাওনা থাকলে যদি সময়মতো দেওয়া না হয় তখন তা বকেয়া হয়ে যায়। পরে যদি আগের পাওনা দিয়ে দেওয়া হয় তবে তাকে বলে বকেয়া পরিশোধ।
- অন্যতম—বহুর মধ্যে এক হলে তাকে বলা হয় অন্যতম। কোনো কিছুকে বিশেষভাবে বোঝানোর জন্য ‘অন্যতম’ শব্দটি ব্যবহার করা যায়।
তথ্যের - আদান-প্রদান—তথ্য বলতে আসল কথা বা সত্যকে বোঝাতো। কিন্তু আজকের দিনে লিখে, ছাপিয়ে অথবা বেতার-টেলিভিশন-ফোন-ইন্টারনেট দ্বারা যত রকম কিছু পাওয়া যায়, পাঠানো যায় তার সবই তথ্যের আদান-প্রদান।
- নাইট উপাধি—নাইট উপাধি ব্রিটিশরাজের অত্যন্ত সম্মানজনক উপাধি। এঁদেরকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতে হতো।
৬. কর্ম-অনুশীলন।
‘বিজ্ঞান শিক্ষাই সভ্যতা বিনির্মাণের একমাত্র হাতিয়ার’Ñ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকের সহায়তায় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি।
উত্তর : শিক্ষকের সহায়তায় নিজেরা চেষ্টা কর।
৭. আমার জানা যেকোনো একজন বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কে ২০টি বাক্য লিখি।
উত্তর : কুদরাত-এ-খুদা ১৯০০ সালের ১লা ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের মাড়গ্রামে। তাঁর পিতা খোন্দকার আব্দুল মুকিদ এবং মাতা ফাসিহা খাতুন। ড. কুদরাত-এ-খুদার শিক্ষাজীবন শুরু হয় মাড়গ্রাম এম.ই. স্কুলে। পরবর্তীতে তিনি চলে আসেন কলকাতায়। ভর্তি হন উডবার্ন এম.ই. স্কুলে। কলকাতা মাদ্রাসা থেকে তিনি ১৯১৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। তারপর তিনি ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেখান থেকেই তিনি ১৯২৫ সালে রসায়নে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এম.এস.সি. পাস করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড পাড়ি জমান।
১৯৩১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষক হিসাবে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। ড. কুদরাত-এ-খুদা স্টেরিও রসায়ন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। পরবর্তীতে তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল বনৌষধি, গাছগাছড়ার গুণাগুণ, পাট, লবণ, কাঠকয়লা, মৃত্তিকা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। বিজ্ঞানী হিসাবে তাঁর ও তাঁর সহকর্মীদের ১৮টি আবিষ্কারের পেটেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি পাটসংক্রান্ত। এর মধ্যে পাট ও পাটকাঠি থেকে রেয়ন, পাটকাঠি থেকে কাগজ এবং রস ও গুড় থেকে মল্ট ভিনেগার আবিষ্কার উল্লেখযোগ্য। দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন বিখ্যাত গবেষণামূলক পত্রিকায় তাঁর রচিত প্রায় ১০২টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বিজ্ঞানের সরস কাহিনী, বিজ্ঞানের বিচিত্র কাহিনী, বিজ্ঞানের সূচনা, পরমাণু পরিচিতি ইত্যাদি। তিনি একুশে পদক ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। ড. কুদরাত-এ-খুদা ১৯৭৭ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। বিজ্ঞান গবেষণায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়।
আরও দেখো—পঞ্চম শ্রেণির বাংলা সকল গল্প-কবিতার প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা বই থেকে ভাবুক ছেলেটি প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও বাংলা বইয়ের বহুনির্বাচনি, শূন্যস্থান, মিলকরণ ইত্যাদি প্রশ্নোত্তরের জন্য উপরের লিংকটি অনুসরণ করো।
Discussion about this post