ভাব ও কাজ অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : উত্তর: লোকের কোমল জায়গায় স্পর্শ করে কার্যসিদ্ধি করা বলতে বোঝায়নো হয়েছে—মানুষকে উদ্দীপ্ত করে তার চেতনা পরিবর্তনের মাধ্যমে সফলতা সৃষ্টি করা ।
প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটা অনুভব আছে। তার নিজস্ব একটা চিন্তা ও চেতনা আছে। ব্যক্তির চিন্তার জায়গাটা তার নিজস্ব একটি কোমল জায়গা। মানুষ কোমল জায়গায় অর্থাৎ তার অনুভূতিকে জাগিয়ে তার মাধ্যমে কঠিন কাজও সহজে করা যায়।
ভাব ও কাজ অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. লেখক ‘স্পিরিট’ বা আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে বলেছেন কেন?
উত্তর: কর্মে শক্তি আনার জন্য লেখক ‘স্পিরিট’ বা আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে বলেছেন।
কর্মের মাধ্যমে সফলতা মানব জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করে। এক্ষেত্রে কর্ম-পরিকল্পনা সঠিক ও নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। তার জন্য কর্মশক্তি এবং সঠিক উদ্যোগের দরকার হয়। ভাবের দ্বারা মানুষ এগিয়ে গেলেও কর্মে শক্তি আনার জন্য আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তোলা অপরিহার্য।
২. ভাব আর কাজের সম্বন্ধটা কেমন? বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: ভাব ও কাজের মধ্যে সম্বন্ধটা খুব নিকট মনে হলেও এদের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে।
বস্তুজগতে ভাবের কোনো অস্তিত্ব নেই। তাই এটা পুষ্পবিহীন সৌরভের মতো। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ভাবের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু শুধু ভাব দিয়ে কোনোকিছু অর্জন করা যায় না। ভাব হলো কাজের প্রেরণা। ভাবকে কাজে রূপান্তর করার মধ্য দিয়েই ভাব পূর্ণতা পায়।
৩. মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হলে তার কোমল জায়গায় ছোঁয়া দেওয়া প্রয়োজন কেন?
উত্তর: মানুষের কোমল জায়গায় স্পর্শ করলে সে দ্রুত জেগে ওঠে এবং তাকে দিয়ে অধিক কাজ করানো যায়।
মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হলে তার কোমল জায়গায় ছোঁয়া দেয়া প্রয়োজন। কোমল জায়গায় ছোঁয়া দিয়ে তাকে জাগিয়ে তুলতে না পারলে তার দ্বারা কোনো কাজ করানো যায় না। আমাদের এই ভাব পাগল দেশে এটি খুবই অপরিহার্য।
৪. ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’—কথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ বলতে দশজনের চক্রান্তে সাধুও অসাধু প্রতিপন্ন হতে পারে- সে কথাই বোঝানো হয়েছে।
যখন কোনো বিষয়ে বহুলোক ষড়যন্ত্র করে তখন অসম্ভবও সম্ভব হয়ে যায়। দশজন যখন মিথ্যাচার করে তখন মিথ্যাটাই সত্যের মতো প্রচারিত হতে থাকে। তখন দশজনের চক্রান্ত সাধুও অসাধু ব্যক্তিতে প্রতিপন্ন হতে পারে।
৫. লোকের কোমল জায়গায় স্পর্শ করে কার্যসিদ্ধি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: লোকের কোমল জায়গায় স্পর্শ করে কার্যসিদ্ধি করা বলতে বোঝায়নো হয়েছে—মানুষকে উদ্দীপ্ত করে তার চেতনা পরিবর্তনের মাধ্যমে সফলতা সৃষ্টি করা ।
প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটা অনুভব আছে। তার নিজস্ব একটা চিন্তা ও চেতনা আছে। ব্যক্তির চিন্তার জায়গাটা তার নিজস্ব একটি কোমল জায়গা। মানুষ কোমল জায়গায় অর্থাৎ তার অনুভূতিকে জাগিয়ে তার মাধ্যমে কঠিন কাজও সহজে করা যায়।
৬. ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ‘পুষ্পবিহীন সৌরভ’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?
উত্তর: ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ‘পুষ্পবিহীন সৌরভ’ বলতে বোঝানো হয়েছে—ভাব আবেগনির্ভর অবাস্তব উচ্ছ্বাসমাত্র।
মানুষকে জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ভাবের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে তা যদি কাজের সঙ্গে গেঁথে দেওয়া না যায় তাহলে তা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। আবার কোনো কাজের জন্য যে যে পরিমাণ ভাব প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি হলেও তা বিফলে যায়। তাই কেবল ভাবে আচ্ছন্ন হলেই চলবে না, তাকে কাজের সঙ্গেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আত্মশক্তি অর্জনে ভাব ও কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন অপরিহার্য। অর্থাৎ ভাব হলো এমন জিনিস যা চোখে দেখা যাবে না কিন্তু তার সৌরভ অনুভব করা যাবে। সুতরাং ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে পুষ্পবিহীন সৌরভ বলতে ভাবের এই আবেগনির্ভর অবাস্তব উচ্ছ্বাসকেই বোঝানো হয়েছে।
৭. ভাবকে ‘অবাস্তব উচ্ছ্বাস’ বলার কারণ কী?
উত্তর: মনের কল্পনা থেকে সাময়িক উত্তেজনা প্রকাশ করে বলেই ভাবকে অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলা হয়েছে। মানুষের মন স্বভাবতই কল্পনাপ্রবণ ও স্বপ্নবিলাসী। এই কল্পনা মানুষের মধ্যে সাময়িক একটি প্রণোদনা সৃষ্টি করে। লেখক এই প্রণোদনাকেই বলেছেন ভাব; যা পরিপূর্ণ হয় কাজের মাধ্যমে। কাজ বিহীন ভাবের কোনো বাস্তবিক স্থান নেই। সে কারণে লেখক একে অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলেছেন ।
৮. ‘গরমাগরম কার্যসিদ্ধি’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: গরমাগরম কার্যসিদ্ধি বলতে লেখক তাৎক্ষণিকভাবে কাজ আদায় করে নেওয়াকে বুঝিয়েছেন। ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে নজরুল ভাব ও কাজে সমান তৎপরতার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে ভাব আত্মশক্তি হিসেবে কাজ করে, তাই ভাবকে কাজের দাসরূপে নিয়োগ করতে বলেছেন। তাছাড়া শুধু ভাব দিয়ে কাজ আদায় করতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কারণ বিলম্ব হলে সে কাজ পরে আদায় নাও হতে পারে।
৯. ‘সাপ লইয়া খেলা করিতে গেলে তাহাকে দস্তুরমতো সাপুরে হওয়া চাই।’—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: যে কোনো কাজে সফলতা অর্জনের জন্য প্রচুর দক্ষতা প্রয়োজন—এ বিষয়টির ইঙ্গিত করে আলোচ্য উক্তিটি করা
হয়েছে। ভাব ও কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন প্রয়োজন। শুধু আবেগ আর ভাবনায় কোনো কাজ সমাধান করা যায় না। বাস্তব পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞতায় ভাবকে কাজে পরিণত করতে হয়। এজন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলন। সাপুড়ে না হয়ে সাপ নিয়ে খেলা করা যেমন বিপজ্জনক, তেমনি অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন ছাড়া কাজে সফলতার চিন্তা অবান্তর। সমাজ সংগঠন বা সমাজ উন্নয়নে নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তির প্রচুর অভিজ্ঞতা, আন্তরিকতা ও প্রাণশক্তি থাকলেই তার আহ্বানে তরুণ সমাজ অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য আত্মনিয়োগ করবে। এমন চেতনা বিকাশের লক্ষ্যেই আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
১০. কর্মশক্তি মানুষের জন্য তাৎপর্যময় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কর্মশক্তি ছাড়া মানুষের ভাবাবেগ বাস্তবিকরূপ পায় না বলেই তা এতো তাৎপর্যময়। ভাব মানুষকে যেকোনো বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে। কিন্তু ভাবের মধ্যে নিমজ্জিত থেকে বাস্তবিক কোনো ফললাভ হয় না। তাই প্রয়োজন হয় কর্মশক্তির; কারণ কর্ম না করলে ভাবের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। একারণে ভাবের সঙ্গে মানুষকে কর্মের সমন্বয় ঘটাতে হয়। তাই কর্মশক্তি এতো তাৎপর্যময়।
আরও দেখো—অষ্টম শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা বই থেকে ভাব ও কাজ অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখানে দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও বাংলা বইয়ের গল্প-কবিতার সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, বর্ণনামূলক এবং বহুনির্বাচনি সমাধানের জন্য উপরের লিংকটি অনুসরণ করো।
Discussion about this post