ভূগোল ১ম পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয়ুবাষ্প থাকে, তাতে বায়ু সম্পৃক্ত হয় না। যদি – কোনো স্থানের বায়ুকে ধীরে ধীরে শীতল করা যায় তাতে উষ্ণতা একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌছালে বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে, তাতেই ঐ স্থানের বায়ু পরিপূক্ত হয়।
এতে শিশিরের সৃষ্টি হয় এবং এ অবস্থাকে শিশিরাঙ্ক বলে। আর্দ্র বায়ুতে ২-৫ শতাংশ জলীয়বাষ্প থাকে। এটি তাপ বিকিরণ করে ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে শিশির আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। তাই বলা যায়, আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে শিশির পড়ে।
ভূগোল ১ম পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. ফেরেলের সূত্র বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : সমুদ্রস্রোত এবং বায়ুপ্রবাহ উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। এ বেঁকে যাওয়াই ফেরেলের সূত্র নামে পরিচিত।
ফেরেলের সূত্র দ্বারা প্রমাণ করে যে, আহ্নিক গতিতে পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে। এ সূত্র অনুসারে অয়ন বায়ু উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। নিরক্ষরেখা অতিক্রম করলে ফেরেলের সূত্র অনুসারে দক্ষিণ-পূর্ব অয়ন বায়ুর গতি বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।
২. বায়ুর তাপমাত্রা জলবায়ুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বায়ুর উষ্ণ ও শীতল অবস্থাকে বায়ুর তাপমাত্রা বলে।
তাপমাত্রার পরিমাপের উপর কোনো স্থানের জলবায়ু বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাপমাত্রা বেশি হলে অলটিতে উষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে। আবার তাপমাত্রা খুব কম বা মধ্যম হলে অঞ্চলটিতে যথাক্রমে মেরুদেশীয় অথবা নাতিশীতোষ্ণ বায়র সৃষ্টি হয়। এজন্য তাপমাত্রা জলবায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত।
৩. সমুদ্র বায়ু সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : স্থলভাগ ও জলভাগের তাপ গ্রহণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতার তারতম্যের ফলেই সমুদ্র বায়ুর উৎপত্তি হয়।
দিনের বেলায় সৌরতাপে তীরবর্তী স্থলভাগ সমুদ্রের পানি অপেক্ষা শীঘ্র ও অধিক উত্তপ্ত হয়। উত্তপ্ত স্থলভাগের সংস্পর্শে বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে উপরে ওঠে এবং তথায় নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এ সময় বায়ুচাপের সমতা রক্ষার্থে সমুদ্র হতে শীতল ও উচ্চচাপ বিশিষ্ট বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রভাবিত হয়ে সমুদ্রবায়ুর সৃষ্টি হয়।
৪. বায়ুর আর্দ্রতা কী বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : বায়ুতে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে।
বায়ু নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। কিন্তু বায়র উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তার জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় বায়ু যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। সে পরিমাণ জলীয়বাষ্প বায়ুতে থাকলে বায়ু আর অধিক জলীয়বাষ্প গ্রহণ করতে পারে না। আবায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ থাকে প্রায় শতকরা ২ ভাগ থেকে ৫ ভাগ।
৫. আবহাওয়ার উপাদান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত ও বায়ু প্রবাহের দৈনন্দিন সামগ্রিক অবস্থাকে সেই দিনের আবহাওয়া বলে। আবহাওয়ার উপাদান বলতে বায়ুর তাপ, বায়ুর চাপ, বায়ু প্রবাহ, বায়ুর আর্দ্রতা, বারিপাত ইত্যাদিকে বোঝায়। কোনো স্থানের আবহাওয়ার উপাদানগুলো সব সময় পরিবর্তনশীল।
৬. নিম্নচাপ সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোনো স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। সাগরে বৃষ্টিপাতের ফলে তা সুপ্ততাপ ছেড়ে দেয়। যা বাস্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। আবার এই সুপ্ততাপের প্রভাবে বায়ুম-লের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং নিম্নচাপের সৃষ্টি করে।
৭. আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে কোন অবস্থার সৃষ্টি হয় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে শিশির পড়ে।
বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয়ুবাষ্প থাকে, তাতে বায়ু সম্পৃক্ত হয় না। যদি – কোনো স্থানের বায়ুকে ধীরে ধীরে শীতল করা যায় তাতে উষ্ণতা একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌছালে বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে, তাতেই ঐ স্থানের বায়ু পরিপূক্ত হয়। এতে শিশিরের সৃষ্টি হয় এবং এ অবস্থাকে শিশিরাঙ্ক বলে। আর্দ্র বায়ুতে ২-৫ শতাংশ জলীয়বাষ্প থাকে। এটি তাপ বিকিরণ করে ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে শিশির আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। তাই বলা যায়, আর্দ্র বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কে নেমে গেলে শিশির পড়ে।
৮. আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্য লেখ।
উত্তর : আবহাওয়া হলো কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের নির্দিষ্ট সময়ের। বায়ুম-লের তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, বায়ুর প্রবাহ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি অবস্থা।
অপরদিকে, জলবায়ু বলতে একটি বৃহৎ অঞ্চল জুড়ে আবহাওয়ার উপাদানগুলো যেমন- বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির অন্তত ৩০-৩৫ বছরের যে গড় অবস্থা দেখা যায় তাকে বোঝায়।
৯. বায়ুপ্রবাহ কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের তাপ ও চাপের তারতম্যই বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টির কারণ।
সাধারণত নিম্নচাপ অঞ্চলের বায়ু সর্বদাই উষ্ণ ও. লঘু হয়ে উপরে উঠে যায়। আর উচ্চচাপবিশিষ্ট অঞ্চলের বায়ু সর্বদাই উষ্ণ শূন্যস্থান পূরণার্থে সেদিকে ধাবিত হয়। ভূপৃষ্ঠে বায়ুর চাপের শূন্যস্থান পূরণে তখন, আশপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল হতে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে। আবার উষ্ণতার তারতম্যের জন্য বায়ুচাপে এ তারতম্য সৃষ্টি হয় এবং এ কারণে বায়ু প্রবাহের সৃষ্টি হয়।
১০. উষ্ণমণ্ডল বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নিরক্ষরেখার দুদিকে অর্থাৎ উত্তরে ২৩ ১০২ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩ ১০২ দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত স্থানকে উষ্ণম-ল বলা হয়।
এ অঞ্চলে বছরের অধিকাংশ সময় সূর্যরশ্মি প্রায় খাড়াভাবে পড়ে এবং কোনো সময়ই দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্যরে মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য হয় না।
এ অঞ্চলটির উত্তর সীমায় কর্কটক্রান্তি রেখা এবং দক্ষিণ সীমায় মকরক্রান্তি রেখায় অবস্থিত। অঞ্চলটির বার্ষিক গয় উষ্ণতার পরিমাণ হলো ২৪° সে.।
►► আরো দেখো: ভূগোল ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ভূগোল ১ম পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post