ভূগোল ১ম পত্র ৮ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : প্রবল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রের উপরের স্তরের পানিরাশিকে একই দিকে চালিত করে। অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। এভাবেই বিভিন্ন প্রকার বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে প্রবাহিত করে।
ভূগোল ১ম পত্র ৮ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. পৃথিবীর আবর্তন কীভাবে সমুদ্রস্রোতকে প্রভাবিত করে?
উত্তর : পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি। আহ্নিক গতির জন্য পৃথিবী নিজ অক্ষের উপর সর্বদা পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে। পৃথিবীর এ আবর্তনের জন্য সমুদ্রের উপরিভাগের তরল পানি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে।
২. ল্যাব্রাডর কী ধরনের স্রোত? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ল্যাব্রাডর এক ধরনের শীতল স্রোত।
সুমেরু মহাসাগর হতে মেরু বায়ুর প্রভাবে একটি স্রোত দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে বাফিন উপসাগরে প্রবেশ করেছে। এ শীতল স্রোতটি সেখান থেকে ড্যাভিস প্রণালির মধ্য দিয়ে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর আমেরিকার ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের উত্তর পার্শ্বে পৌছায় এবং শীতল পূর্ব গ্রিনল্যান্ড স্রোতের সাথে মিলিত হয়। এ মিলিত স্রোতটি ল্যাব্রাডর স্রোত নামে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়েছে। তাই বলা যায়, ল্যাব্রাডর স্রোত এক ধরণের শীতল স্রোত।
৩. বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে কীভাবে প্রভাবিত করে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সমুদ্রস্রোত উৎপত্তির জন্য প্রধান কারণ হলো বায়ুপ্রবাহ।
প্রবল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রের উপরের স্তরের পানিরাশিকে একই দিকে চালিত করে। অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। এভাবেই বিভিন্ন প্রকার বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে প্রবাহিত করে।
৪. বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ার-ভাটার প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশে উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ার ভাটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। জোয়ারভাটার মাধ্যমে ভূখণ্ড হতে আবর্জনাসমূহ নদীর মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়। নদীর মোহনা পরিষ্কার থাকে। দৈনিক দুবার জোয়ারভাটা হওয়ার ফলে ভাটার টানে নদীর মোহনায় পলি ও আবর্জনা জমতে পারে না। জোয়ারভাটার ফলে সৃষ্ট স্রোতের সাহায্যে নদীখাত গভীর হয়। বহু নদীতে ভাটার স্রোতের বিপরীত বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
৫. চন্দ্রের আকর্ষণে যে জোয়ার সংঘটিত হয় তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : চন্দ্রের আকর্ষণে মুখ্য জোয়ার সংঘটিত হয়।
চন্দ্রের আবর্তনের সময় পৃথিবীর যে অংশ চন্দ্রের সবচেয়ে সম্মুখে উপস্থিত হয় সেখানে চন্দ্রের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়। স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগের ওপর এ আকর্ষণ শক্তির কার্যকারিতা অনেক বেশি। ফলে চারদিক হতে পানিরাশি ঐ আকর্ষণ স্থলের দিকে ধাবিত হয়। ফলে চন্দ্রের নিকটবর্তী অংশের পানিরাশি স্ফীত হয়ে ওঠে যা মুখ্য জোয়ার নামে পরিচিত।
৬. জোয়ারের পানি নদীর মোহনা দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জোয়ারের পানি নদীর মোহনা দিয়ে ভ-ভাগে প্রবেশ করলে ভূ-ভাগের ভূমিক্ষয় ও লবণাক্ত হয়।
পানি উপরের দিকে ফুলে ফেপে ওঠাকে জোয়ার বলে। এ সময় লবণাক্ত পানি নদীর মোহনা দিয়ে ভূ-ভাগে প্রবেশ করে ভূমিকে লবণাক্ত করে। এছাড়া জোয়ারে নদীর পানির স্রোতের গতি বেশি হওয়ায় ভূমির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়।
৮. শৈবাল সাগর বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আটলান্টিক মহাসাগরের ক্যানারি স্রোতটি ডিম্বাকারে ঘুরার কারণে এর মধ্যবর্তী পানিরাশি একেবারে স্রোতহীন থাকে। এই স্রোতহীন পানিতে ভাসমান আগাছা ও শৈবাল সঞ্চিত হয় বলে একে ও শৈবাল সাগর বলে।
৯. হিমপ্রাচীর কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত ও ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের নীল পানি উত্তর-পূর্ব দিকে এবং তার পার্শ্ব দিয়ে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের সবুজ পানি দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। এ দুইটি বিপরীত স্রোত পরস্পর বিপরীত দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় তাদের স্রোতের মধ্যবর্তী সীমারেখায় হিমপ্রাচীর সৃষ্টি হয়।
১০. ভরা কটাল বলতে কী বোঝ?
উত্তর : অমাবস্যায় চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর একই দিকে এক সঙ্গে সমসূত্রে অবস্থান করে। আবার পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর একদিকে সূর্য ও অপরদিকে চাঁদ থাকে এবং সমসূত্রে অবস্থান করে। এর ফলে চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণশক্তি একই সঙ্গে কার্যকরী হয়।
সূর্যের আকর্ষণ চাঁদের আকর্ষণের তুলনায় কম হলেও উভয়ের মিলিত আকর্ষণ প্রবল হয়। ফলে এ দু’সময় জোয়ারের পানি খুব বেশি ফুলে ওঠে। একে ভরা কটাল বলে।
১১. গৌণ জোয়ার কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : গৌণ জোয়ার চন্দ্রের আকর্ষণস্থলের ঠিক বিপরীত দিকে অর্থাৎ প্রতিপাদ স্থানে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তির প্রভাবে যে জোয়ার হয়, তাকে গৌণ জোয়ার বলে। পৃথিবী ও চন্দ্র একটি সাধারণ ভারকেন্দ্রের চারদিকে আবর্তন করে। পৃথিবীর ব্যাসার্ধ চার হাজার মাইল বলে পৃথিবীর কেন্দ্র অপেক্ষা ঐ ভারকেন্দ্র চন্দ্রের তিন হাজার মাইল নিকটে অবস্থিত। এ জন্য চন্দ্রের আকর্ষণস্থলের স্থানে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব অনেক কম। এ কারণে চন্দ্রের আকর্ষণস্থলের বিপরীত দিকে পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে গৌণ জোয়ার হয়।
►► আরো দেখো: ভূগোল ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ভূগোল ১ম পত্র ৮ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post