ভূগোল ১ম পত্র ৯ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ লক্ষ করা যায়। একই প্রজাতির উদ্ভিদ কিংবা প্রাণী ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বসবাস করার কারণে তাদের মধ্যে নানা ধরনের বৈচিত্র্য দেখা যায়। আবার, জীনের মাধ্যমে জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলি বংশানুক্রমে ধারাবাহিকভাবে স্থানান্তর হয়। জীনের গঠন এবং বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটলে একই প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।
ভূগোল ১ম পত্র ৯ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. কার্বন চক্র ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রকৃতির কার্বন যে প্রক্রিয়ায় CO2, গ্যাসরূপে পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয়ে প্রকৃতিতে কার্বনের সমতা বজায় রাখে তাই কার্বনচক্র। যেমন- উদ্ভিজ্জাত পদার্থ (কাঠ, কয়লা, পেট্রোল ইত্যাদি) দহন ক্রিয়ায় কার্বন যৌগ ভেসে CO2, গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ুম-লে মিশে যায়।
৩. স্রোতজ বনভূমি গড়ে ওঠার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বনভূমি হলো স্রোতজ বনভূমি বা সুন্দরবন।
নদীবাহিত উর্বর পলল মৃত্তিকা, সমুদ্রের জোয়ারভাটা ও লোনা পানি এ এলাকার বৃক্ষের উপযোগী। পরিমিত তাপমাত্রা, প্রচুর বৃষ্টিপাত, বিরল জনবসতি প্রভৃতির প্রভাবে স্রোতজ বনভূমি গড়ে উঠেছে।
৪. নাইট্রোজেন চক্রের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যে চক্রাকার পথে বায়ুম-লের নাইট্রোজেন জীবদেহে এবং সেখান থেকে পুনরায় বায়ুম-লে আবর্তিত হয় এবং পরিবেশে নাইট্রোজেনের সমতা বজায় থাকে তাকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।
সবুজ উদ্ভিদ মাটি থেকে নাইট্রাইট, নাইট্রেট এবং কোনো ক্ষেত্রে অ্যামোনিয়াম আকারে অজৈব নাইট্রোজেন গ্রহণ করে। এ নাইট্রোজেন পরবর্তীতে নাইট্রোজেন জাতীয় জৈব যৌগে রূপান্তরিত হয়। উদ্ভিদ থেকে এ নাইট্রোজেন গৃহীত খাদ্যের মাধ্যমে প্রাণিদেহে প্রবেশ করে। আর কৃষিকাজে প্রাকৃতিক নাইট্রোজেন ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে। এভাবে নাইট্রোজেন চক্র জীবকূলের অস্তিত্ব রক্ষায় ভূমিকা পালন করে।
৫. উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক ভিন্নতার ক্ষেত্রে প্রভাববিস্তারকারী কারণসমূহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পৃথিবীর কোনো স্থানে উদ্ভিদ ও প্রাণী খুবই সমৃদ্ধ আবার কোনো কোনো স্থানে উদ্ভিদ ও প্রাণী খুবই কম।
উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক ভিন্নতার কারণ হিসেবে সর্বপ্রথম ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখযোগ্য। পর্বত, উপদ্বীপ, উঁচুভূমি ইত্যাদি অবস্থানে উদ্ভিদ ও প্রাণীর ভিন্নতা দেখা যায়। এক্ষেত্রে ভৌগোলিক সীমা ও আয়তনও উক্ত স্থানের উদ্ভিদ ও প্রাণীর ভিন্নতার প্রভাবক। সর্বোপরি বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন জলবায়ুর প্রভাব উদ্ভিদ ও প্রাণীর স্থানিক ভিন্নতার মূল কারণ।
৬. জীববৈচিত্র্যের স্থানিক বিভিন্নতার কারণ কী ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জীববৈচিত্র্যের স্থানিক বিভিন্নতার কারণ হলো পরিবেশগত ও বংশগত।
পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ লক্ষ করা যায়। একই প্রজাতির উদ্ভিদ কিংবা প্রাণী ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বসবাস করার কারণে তাদের মধ্যে নানা ধরনের বৈচিত্র্য দেখা যায়। আবার, জীনের মাধ্যমে জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলি বংশানুক্রমে ধারাবাহিকভাবে স্থানান্তর হয়। জীনের গঠন এবং বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটলে একই প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।
৬. বায়োম বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বায়োম হলো পরিবেশ প্রণালির মধ্যে বৃহত্তম একক। উদ্ভিদ, প্রাণিজগৎ, মাটি ও জলবায়ুর সাথে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে বাস্তুতান্ত্রিক বা ইকোসিস্টেম একক গড়ে ওঠে তাকে বায়োম বলে।
যেকোনো অঞ্চলের জলবায়ুর প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে সে অঞ্চলে বসবাসকারী জীবকুল ও উদ্ভিদকুলের প্রজাতি বিন্যাসের ধরন। একটি নির্দিষ্ট বায়োম অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত সব ধরনের জীবকুল ও উদ্ভিদকুলের অভিযোজন নির্ভর করে সে অঞ্চলের জলবায়ু বিশেষ করে বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার ওপর।
৭. পরভোজী জীব বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যেসব জীব বেঁচে থাকার জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল তাদেরকে পরভোজী জীব বলে। সকল প্রাণী গোষ্ঠী, ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া নিজেরা নিজেদের খাদ্য তৈরি করতে পারে না। যে কারণে এ সকল জীব বেঁচে থাকার জন্য। স্বভােজী জীবের উৎপাদিত খাদ্যের মাধ্যমে আহরণ করে। কিছু পরভোজী জীব আবার পরোক্ষভাবে স্বভোজী উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল।
৮. চিরসবুজ বৃক্ষের অরণ্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে বনভূমির বৃক্ষের সকল পাতা এক সাথে ঝরে যায় না সে বনভূমিকে চিরসবুজ বৃক্ষের অরণ্য বলা হয়। অধিক বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে এ বনভূমি পরিলক্ষিত হয়। যেমন- গর্জন, মেহগনি ইত্যাদি।
৯. কেন আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন?
উত্তর : যোগাযোগের উন্নয়নের ওপর দেশের উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভরশীল।
কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে যোগাযোগ। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে সবকিছুতেই এর প্রভাব পড়ে। যুগোপযোগী, সুসংগঠিত ও আধুনিক পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন অতীব প্রয়োজন।
১০. বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে বনভূমি কীভাবে ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বনভূমি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে ও মাটির উর্বরতাশক্তি বৃদ্ধি করে কৃষি উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
বনভূমি দেশের আবহাওয়াকে আর্দ্র রাখে। ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে। যা কৃষি উন্নয়নে সহায়ক। কারণ কৃষিকাজে বিভিন্ন পর্যায়ে বৃষ্টিপাতের বা পানির প্রয়োজন হয়। এছাড়া বনভূমি মাটির ক্ষয়রোধ ও উর্বরতাশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
►► আরো দেখো: ভূগোল ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ভূগোল ১ম পত্র ৯ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post