ভূগোল ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : খনিজ তেল উত্তোলনে ভারত তেমন প্রসিদ্ধ না হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় মোটামুটি প্রসিদ্ধ। ভারতের আসাম ও গুজরাট রাজ্যে প্রচুর তেল উত্তোলিত হয়। ১৯৫০-৫১ সালে ভারতে খনিজ তেলের উৎপাদন ছিল মাত্র ২ লাখ মেট্রিক টন। নতুন নতুন খনি আবিষ্কারের ফলে ভারতের উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯১-৯২ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৩ লাখ মেট্রিক টন। ২০১১-১২ সালে এর পরিমাণ আরও হ্রাস পেয়ে – ২ কোটি মেট্রিক টনের মতো দাঁড়িয়েছে।
ভূগোল ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. কয়লা কীভাবে গঠিত হয়?
উত্তর : উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে কয়লার সৃষ্টি হয়। উদ্ভিদের কাণ্ড, পুঁড়ি, শাখা-প্রশাখা, পাতা, প্রাণীর দেহাবশেষ সবকিছু ভূঅভ্যন্তরে তাপ, চাপ ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পরিবর্তিত হয়ে কয়লায় পরিণত হয়।
২. খনিজ এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : খনিজ এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণ খুবই জরুরি। খনিজ এলাকা পরিবেশ দূষণ বা বিপর্যযের মধ্যে থাকলে খনিজ উত্তোলন ব্যাহত হয়। অন্যদিকে পরিবেশ দূষণের ফলে খনি শ্রমিকদের নানাবিধ রোগব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই খনিজ এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণ প্রয়োজন।
৩. “উদ্ভিদের দেহাবশেষ হতে কয়লার উৎপত্তি হয়” ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শক্তির অন্যতম উৎস হলো কয়লা।
উদ্ভিদের দেহাবশেষ হতে কয়লার উৎপত্তি। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে উদ্ভিদের দেহাবশেষ মাটির নিচে চাপা পড়ে সমড়ের বিবর্তনে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় কয়লায় পরিণত হয়েছে। তাই বলা যায় উদ্ভিদের দেহাবশেষ হতে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় কয়লার উৎপত্তি।
৪. শক্তিসম্পদ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রকৃতি প্রদত্ত যে সকল পদার্থ হতে শক্তি পাওয়া যায় তাদের শক্তিসম্পদ বলে। বিভিন্ন প্রকার কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার কাজ সম্পন্ন করা হয় বলে এদেরকে শক্তিসম্পদের উৎস বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের কথা বলা যায়, এটি পুড়িয়ে তাপবিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয় এবং বিদ্যুৎশক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
৫. পিট কয়লা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : কয়লা গঠনের প্রথম অবস্থা হলো পিট। মাটির তলায় বনভূমি চাপা পড়ে প্রাথমিকভাবে পিট কয়লার সৃষ্টি হয়। এ কয়লা বাদামি রঙের এবং নিকৃষ্ট শ্রেণির হয়। এতে কার্বনের পরিমাণ থাকে ৩০-৩৫ ভাগ।
৬. তেল উৎপাদনে ভারতের অবস্থা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : খনিজ তেল উত্তোলনে ভারত তেমন প্রসিদ্ধ না হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় মোটামুটি প্রসিদ্ধ। ভারতের আসাম ও গুজরাট রাজ্যে প্রচুর তেল উত্তোলিত হয়। ১৯৫০-৫১ সালে ভারতে খনিজ তেলের উৎপাদন ছিল মাত্র ২ লাখ মেট্রিক টন। নতুন নতুন খনি আবিষ্কারের ফলে ভারতের উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯১-৯২ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৩ লাখ মেট্রিক টন। ২০১১-১২ সালে এর পরিমাণ আরও হ্রাস পেয়ে – ২ কোটি মেট্রিক টনের মতো দাঁড়িয়েছে।
৭. শিল্প উৎপাদনে শক্তি সম্পদের ভূমিকাই প্রধান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শক্তি সম্পদ ব্যতীত শিল্প অচল বিধায় শিল্পের উৎপাদনে শক্তি সম্পদের ভূমিকাই প্রধান। শক্তিসম্পদ ব্যতীত শিল্পকারখানা চালনা করা সম্ভব নয়। বর্তমানে বড় বড় কারখানা চালানোর জন্য কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, পানিবিদ্যুৎ শক্তি, পারমাণবিক শক্তি প্রভৃতি ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই যেসব অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে শক্তিসম্পদ সরবরাহের ব্যবস্থা আছে, সেসব অঞ্চলেই সাধারণত বিভিন্ন ধরনের শিল্প কেন্দ্রীভূত হয়। তাই বলা যায়, শিল্প উৎপাদনে শক্তি সম্পদের ভূমিকাই প্রধান।
৮. অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কোন কোন দেশ হতে আকরিক লোহা আমদানি করে?
উত্তর : আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র লোহা ও ইস্পাত শিল্পে খুবই উন্নত। দেশে প্রচুর আকরিক লোহা থাকা সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। তাই প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে আকরিক লোহা আমদানি করে।
প্রচুর আকরিক লোহা উত্তোলন হওয়া সত্ত্বেও দেশের শিল্প চাহিদা মেটানোর জন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর চিলি, ব্রাজিল, ভেনেজুয়েলা, সুইডেন, কানাডা এবং উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশসমূহ থেকে প্রচুর আকরিক লোহা আমদানি করে।
৯. শিল্পকারখানায় কয়লার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শিল্প পরিচালনায় কয়লা কাঁচামাল ও শক্তি উভয় হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
শিল্প স্থাপন ও স্থানীয়করণের ওপর কয়লার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। কয়লা পুড়িয়ে তাপশক্তি উৎপাদন করে শিল্পে ব্যবহার করা হয়। একটি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কয়লা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেসব শিল্পের নিকটস্থ অঞ্চলে কোনো প্রাকৃতিক গ্যাস নেই সেখানে কয়লার পর্যাপ্ততা থাকলে ঐ সকল শিল্পে কয়লা দিয়ে শক্তি উৎপন্ন করা হয়। কয়লার মূল্য কম হওয়ায় তা শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য সুবিধাজনক। তাছাড়া বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে কয়লার ব্যাপক ব্যবহার লক্ষণীয়।
১০. বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা যাচ্ছে না কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনের দিক দিয়ে তেমন অগ্রসর নয় বলে খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু এসব খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য উন্নতমানের আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রয়োজন যা বাংলাদেশে নেই। এমনকি বাংলাদেশে দক্ষ শ্রমিক ও মূলধনের অনেক অভাব রয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তি জ্ঞানের অভাব এবং বৈদেশিক সাহায্য ছাড়া উত্তোলন করা সম্ভব নয় বলে অনেক স্থানে খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা যাচ্ছে না।
►► আরো দেখো: ভূগোল ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ভূগোল ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post