ভূগোল ২য় পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশে কৃষিকাজের জন্য প্রচুর পার প্রয়োজন। কিন্তু সার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, মূলধনের স্বল্পতা, অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভৃতি কারণে চাহিদামাফিক সার উৎপাদন করতে পারে না। যেটুকু সার উৎপাদন হয় তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই বাংলাদেশ সার শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
ভূগোল ২য় পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. বিনিয়োগ ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়।-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বিনিয়োগ ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়। শিল্প স্থাপনের অন্যতম নিয়ামক হলো মূলধন। মূলধন বিনিয়োগ না হলে শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ প্রভৃতি যোগান দেওয়া যাবে না। এছাড়া মূলধন শিল্প স্থাপনের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের হাতিয়ার। পর্যাপ্ত অর্থায়ন ছাড়া শিল্পকার্য চরমভাবে ব্যাহত হবে।
২. শিল্প ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝ?
উত্তর : শিল্প ব্যবস্থাপনা বলতে শিল্পের কর্ম পরিবেশ, বাজারে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পণ্য বা সেবার উন্নয়ন, মূল্য নির্ধারণ, বণ্টন ও প্রসারের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নসংক্রান্ত প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ শিল্পের সার্বিক উন্নতি করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মপ্রক্রিয়াই শিল্প ব্যবস্থাপনা।
৩. শিল্পায়নের সাথে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ঐ দেশের শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করে। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা কোনা দেশের উন্নয়ন বয়ে আনতে পারে না।
শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা, দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐ স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন।
৪. লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের চারটি ব্যবহার লেখ।
উত্তর : বর্তমানে যন্ত্রসভ্যতার এ যুগে লৌহ ও ইস্পাতের ব্যবহার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। লৌহ ও ইস্পাত শিল্পের চারটি ব্যবহার নিম্নরূপÑ
১. যেকোনো ধরনের যন্ত্রপাতি নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাতের প্রয়োজন হয়।
২. ঘরবাড়ির জানালা, দরজা, ছাদ ইত্যাদি নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাত ব্যবহৃত হয়।
৩. জাহাজ, রেলগাড়ি, মোটরগাড়ি এবং লঞ্চ ইত্যাদি পরিবহন সামগ্রী নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাত ব্যবহৃত হয়।
৪. গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- থালাবাটি, দা, কুড়াল ইত্যাদি নির্মাণে লৌহ ও ইস্পাত ব্যবহৃত হয়।
৫. ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কার্পাস বয়নশিল্পকেন্দ্র্রগুলো কোথায় অবস্থিত? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কার্পাস বয়নশিল্পকেন্দ্রগুলো পশ্চিমাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চল, উত্তরাঞ্জল এবং পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত।
বস্ত্র বয়নশিল্প ভারতের বৃহত্তম শিল্প। ভারতের প্রায় প্রতি রাজ্যেই বস্তু বয়নশিল্প আছে। ভারতের বস্ত্র বয়নশিল্পের অবস্থান অনুসারে একে চারটি বিশেষ অঞ্চলে বিভক্ত করা যায়। যথা : (ক) পূর্বাঞ্চল, (খ) পশ্চিমাঞ্চল, (গ) উত্তরাঞ্চল ও (ঘ) দক্ষিণাঞ্চল।
৬. শিল্পের জন্য বাজার প্রয়োজন কেন?
উত্তর : শিল্পের জন্য বাজার প্রয়োজন। কারণ শিল্পজাত দ্রব্যের চাহিদার ওপর শিল্পের উন্নয়ন নির্ভর করে।
শিল্পজাত দ্রব্যের জন্য বাজার আবশ্যক। এজন্য বাজারের কাছে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গয়ে ওঠে। শীতপ্রধান দেশে পশমি বস্ত্রের চাহিদা বেশি বলে সেখানে পশম বয়নশিল্প বেশি এবং গ্রীষ্মপ্রধান দেশে কার্পাস বয়নশিল্পের চাহিদা বেশি বলে সেখানে কার্পাস বয়নশিল্প বেশি গড়ে উঠেছে।
৭. বাংলাদেশ সার শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশে কৃষিকাজের জন্য প্রচুর পার প্রয়োজন। কিন্তু সার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, মূলধনের স্বল্পতা, অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভৃতি কারণে চাহিদামাফিক সার উৎপাদন করতে পারে না। যেটুকু সার উৎপাদন হয় তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই বাংলাদেশ সার শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
৮. ওসাকাকে জাপানের ম্যানচেস্টার বলা হয় কেন?
উত্তর : ব্রিটেনের ল্যাঙ্কাশায়ার এলাকায় ম্যানচেস্টার হলো প্রধান কার্পাস কেন্দ্র। এখানে সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধা থাকায় উন্নতমানের বস্ত্র তৈরি হয়। যে কারণে এ অঞ্চলের উৎপাদিত বস্ত্রের প্রায় ৮০ ভাগ রপ্তানি হয়।
অপরদিকে, ওসাকা হলো জাপানের শ্রেষ্ঠ কার্পাস বয়নশিল্প কেন্দ্র। ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার অধিকাংশই জাপানের ওসাকাতেও বিদ্যমান। ওসাকা অঞ্চলে উৎপাদিত বস্ত্রের সিংহভাগই রপ্তানি করা হয়। এজন্য ওসাকাকে জাপানের ম্যানচেস্টার বলা হয়।
৯. পাট শিল্প গড়ে ওঠার একটি কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পাট শিল্প গড়ে ওঠার একটি অন্যতম কারণ হলো জলবায়ুগত কারণ।
পাট উষ্ণ অঞ্চলের ফসল। পাট চাষের জন্য ২০° থেকে ৩৫° সেলসিয়াম তাপমাত্রা এবং ১৫০ থেকে ২৫০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত। যে সমস্ত অঞ্চলে এ ধরনের জলবায়ু বিদ্যমান সেখানে পাট শিল্প গড়ে উঠেছে।
১০. শিল্পায়নের জন্য একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন?
উত্তর : যেকোনো দেশের দ্রুত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন।
শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন অব্যাহত রাখা, প্রস্তুতকৃত মালামাল যথাসময়ে ভোক্তার নিকট পৌঁছানো, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, দেশীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ উৎসাহিত করার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। আর এ অবস্থা সৃষ্টির জন্য চাই একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার।
►► আরো দেখো: ভূগোল ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ভূগোল ২য় পত্র ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post