মামার বিয়ের বরযাত্রী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর : দশ বছরের ছেলে আবুর খুব ইচ্ছে বর্ষার বৃষ্টিঝরা রাতে বড়ো ভাইদের সঙ্গে বিলে মাছ ধরতে যাবে। কিন্তু ছোটো বলে তারা আবুকে সঙ্গে নিতে চায় না। তাই মাছ ধরতে যাওয়ার দিন আবু আগেই নৌকার খোলে লুকিয়ে রইল। একপর্যায়ে আবু ধরা পড়লেও তাকে শেষপর্যন্ত সঙ্গে নেওয়া হয়। দেখা যায়, সে মাছ ধরার জন্য অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে তেলাপোকাও নিয়ে এসেছে।
এ নিয়ে বড়োরা বেশ হাসি-তামাশা করে। বিলে গিয়ে আবুকে নৌকায় রেখে সবাই মাছ ধরতে চলে গেলে সে বড়শি ফেলে অপেক্ষা করতে থাকে। অবশেষে নানা কৌশলে আবু বড়ো একটা মাছ ধরে ফেলে। বড়ো ভাইয়েরা অবশ্য সে-রাতে পুঁটিমাছ ছাড়া আর কোনো মাছই ধরতে পারেনি। তারা নৌকায় বিশাল আকৃতির বোয়াল মাছ দেখে অবাক হয়ে যায়। বয়সে ছোটো বলে কাউকে অবহেলা করতে নেই, কিংবা বয়সে বড়ো হলেই কোনো কাজে কেউ সফলতা লাভকরবে, তাও নয়- গল্পটিতে এই সত্য ধরা পড়েছে।
মামার বিয়ের বরযাত্রী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন—১: নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
অনিক, নয়ন ও শিমুল তিন বন্ধু পরামর্শ করে পরিরারের কাউকে না জানিয়ে তারা ট্রেনে করে দূরে কোথাও ঘুরে আসবে। যেই কথা সেই কাজ, যার কাছে যা টাকা-পয়সা জমা ছিল তা নিয়ে কাউকে না জানিয়ে খুব ভোরেই সবাই ট্রেন স্টেশনে উপস্থিত হলো। ট্রেনে উঠে বেশ আয়েশ করে বসতেই আধা ঘণ্টার মধ্যে চেকার এলে বেশ গচ্ছা দিয়েই তাদের আসন নিতে হলো। পাঁচ-সাতটা স্টেশনের পরেই তারা নেমে পড়ল। খিদেয় সবারই অবস্থা নাকাল। অচেনা জায়গা, অপরিচিত মানুষ কে তাদের খাবার দিবে, কে নিরাপত্তা দেবে। শেষ পর্যন্ত নিরূপায় হয়ে তারা পুলিশের আশ্রয় নিল। পুলিশের নানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিদ্যালয়ের আইডি কার্ড জমা রেখে শেষ পর্যন্ত তারা নিরাপদে বাড়িতে পৌছাল। ঝোঁকের বশে যে তাদের এমন অচেনা পথে যাত্রা করা উচিত হয়নি, তা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারল।
ক. মামার বিয়ে ঠিক হয়েছিল কত তারিখে?
খ. চৌধুরী বাড়িতে মামা কেন ভাগনেকে চিনতে পারল না? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের কিশোরদের ট্রেনে গচ্ছা দেওয়ার বিষয়টি ‘মামার বিয়ের বরযাত্রী’ গল্পের যে দিকটি নির্দেশ করে তা তুলে ধর।
ঘ. ঝোঁকের বশে ট্রেনে যাত্রা করার কারণে উদ্দীপকের কিশোররা ও গল্পের কিশোর ফোকলা যে বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে, তা থেকে তুমি কী শিক্ষা লাভ কর? উপস্থাপন কর।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মামার বিয়ে ঠিক হয়েছিল সতেরো তারিখে।
খ. ভাগনে অর্থাৎ কিশোর ছেলেটি ভুল লাইনের ট্রেনে উঠে অন্য চৌধুরী বাড়ির বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় মামা ভাগনেকে চিনতে পারেনি।
কিশোর ছেলেটি পরীক্ষার কারণে মেজো মামার বিয়েতে যেতে পারবে না বলে সরাসরি কনের বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু তাড়াহুড়োর কারণে ঝোঁকের বশে ভুল লাইনের ট্রেনে উঠে যায়। কনের বাড়ির স্টেশনের নাম ও ঠিকানা না জানায় কাকতালীয়ভাবে মিলে যাওয়া অন্য চৌধুরী বাড়ির বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। কিন্তু বরযাত্রী এলে মামা ভাগনেকে চিনতে পারে না।
গ. উদ্দীপকের কিশোরদের ট্রেনে গচ্ছা দেওয়ার বিষয়টি ‘মামার বিয়ের বরযাত্রী’ গল্পের মেজো মামার বিয়েতে অংশগ্রহণের জন্য যাত্রারত ভাগনের ট্রেনের চেকারকে আট আনা ফাইন দেওয়ার বিষয়টিকে নির্দেশ করে।
ট্রেনে ভ্রমণের পূর্বে টিকিট না করলে জরিমানা দিতে হয়। এ বিষয়টি যাদের জানা নেই তাদের টিকিটের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হয়। তাই ট্রেনে ভ্রমণের পরিকল্পনা করলে যাত্রার পূর্বে টিকিট কেটে নেওয়া উচিত।
উদ্দীপকে দেখা যায়, তিনজন কিশোর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ট্রেনে করে দূরে কোথাও ভ্রমণের পরিকল্পনা করে। ট্রেনে উঠে চেকার তাদের কাছে টিকিট না পাওয়ায় জরিমানা আদায় করে। কিশোরদের টিকিটের টাকার অধিক পরিমাণে টাকা গচ্ছা দিতে হয়। ‘মামার বিয়ের বরযাত্রী’ গল্পে কিশোরটি টিকিট না করেই ট্রেনে উঠে যায়। টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠলে ফাইন দিতে হয় তার জানা ছিল না। তাই ট্রেনে উঠে তাকে আট আনা ফাইন দিতে হয়। গল্পের এই দিকটি উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. ঝোঁকের বশে ট্রেনে যাত্রা করার ফলে উদ্দীপকের কিশোররা ও গল্পের কিশোর ফোকলা যে বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে, আমি তা থেকে বুঝেছি যে বুঝে-শুনে কাজ করব; ঝোঁকের বশে নয়।
কোনো কাজই ঝোঁকের বশে করা উচিত নয়। না জেনে অপরিকল্পিত যাত্রায় অনেক সময় অধিক পরিমাণে অর্থ গুনতে হয়। আবার নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়।
উদ্দীপকের কিশোর তিন বন্ধু পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ট্রেনে করে দূরে কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। না জানার কারণে প্রথমেই তাদের ট্রেনের চেকারকে অধিক পরিমাণ টাকা গচ্ছা দিতে হয়। এরপর তারা ক্ষুধায় নাকাল হয়ে যায়, নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে, অবশেষে পুলিশের সহায়তায় বাড়িতে ফিরে নিজেদের ভুল বুঝতে পারে।
‘মামার বিয়ের বরযাত্রী’ গল্পের কিশোরটি ঝোঁকের বশে তাড়াহুড়ো করে ভুল লাইনের ট্রেনে উঠে যায়। আগে থেকে টিকিট না কাটায় তাকে আট আনা ফাইন দিতে হয়। ঠিকানা না জেনে তাড়াহুড়ো করে যাত্রা শুরু করায় সে ভুল বিয়েবাড়িতে চলে যায়। পরে চৌধুরী সাহেবের সহযোগিতায় নিরাপদে বাড়ি ফেরে।
গল্পের কিশোর ফোকলা ও উদ্দীপকের কিশোররা ঝোঁকের বশে ভুল করে নানা বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হয়। তাই তাদের পরিস্থিতি থেকে এই শিক্ষা লাভ করেছি যে ঝোঁকের বশে কোনো কাজ করব না।
আরও দেখো—ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের আনন্দপাঠ বই থেকে মামার বিয়ের বরযাত্রী গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে উত্তরগুলো সংগ্রহ করে নাও। এছাড়াও অধ্যায়ভিত্তিক অনুধাবনমূলক, জ্ঞানমূলক এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্নের সমাধান পেতে উপরে দেওয়া লিংকে ভিজিট করো।
Discussion about this post