চলে এলাম আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল নিয়ে। যা আপনার ফ্রিল্যান্সিং জগতকে আরো অর্থবহ করে তুলে। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হতে চলেছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট কিভাবে হবেন এবং কেন করবেন ও কোথায় শিখবেন সম্পর্কিত বিশদ আলোচনা। আশা করি পুরোটাই আপনাকে উপকৃত করবে। আসুন মূল আলোচনায় যাওয়া যা এবং জানা যাক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়ে উঠার টিপস সম্পর্কে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
আজ কাল সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে সবারই কম বেশি ধারণা রয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া হলো ইন্টারনেটে সামাজিকভাবে একে ওপরের সাথে যুক্ত থাকার একটি মাধ্যম, যা আপনাকে যুক্ত করবে লোকালি অথবা ইন্টারন্যাশনালি। আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার কাছের দূরের সকল মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন, এবং বর্তমানে ব্যবসায়ের মার্কেটিংয়ের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং সেলিব্রেটিরাও তাদের প্রতিদিনের কাযক্রম সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার অনুসারীদের জানিয়ে দিয়ে থাকে, সর্বোপরি সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবন ধারাতে অনেক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা আমরা একটু হলেও টের পাচ্ছি। সোশ্যাল মিডিয়ার কয়েকটি প্লাটফর্ম রয়েছে, চলুন এক নজরে দেখে নিউ যাক:
ফেসবুক: বর্তমান সময়ে পৃথিবীর প্রাই প্রতিটা দেশেই ফেসবুকের জনপ্রিয়তা অনেক বেশী। পৃথিবীতে প্রায় ২০ বিলিয়নের উপরে মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। বাংলাদেশেই ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৬ কোটির কাছাকাছি, তাই আপনি যদি কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা ফেসবুকে করেন, তা নিমিষেই কোটি কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে, এবং আপনার পণ্যের বা সেবার সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে। তাই সোশ্যাল মিডিয়া বলতে মানুষ ফেসবুককে সবার উপরেই রাখে। ফেসবুকে দুই ধরণের মার্কেটিং হয়ে থাকে, ১: ফ্রী/অর্গানিক মার্কেটিং ২: পেইড মার্কেটিং, এই দুই ধরণের মার্কেটিং নিয়ে আরেকদিন বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ইউটিউব: এই ভিডিওতে শেয়ারিং প্লাটফর্ম সম্পর্কে আমাদের সবারই ধারণা রয়েছে, ইউটিউবকে সোশ্যাল ভিডিওতে শেয়ারিং প্লাটফর্ম বলতে পারেন। ইউটিউবের মূল কোম্পানি হলো গুগল। সারা পৃথিবীতে ৩৫ বিলিয়নের উপরে ইউটিউব ভিসিটর রয়েছে, তাই এই প্লাটফর্ম হলো ভিডিও মার্কেটিং ও ভিডিও এডের প্রধান মাধ্যম।
পিন্টারেস্ট: এই সোশ্যাল মিডিয়ায় মূলত ছবি শেয়ার করা হয়, পৃথিবীতে প্রায় ৪৩১ মিলিয়নের উপরে মানুষ পিন্টারেস্ট ব্যবহার করে। তাই আপনি সহজেই আপনার পণ্য অথবা সেবার তথ্য দিয়ে ছবি শেয়ার করে কোটি কোটি মানুষের কাছে মার্কেটিং করতে পারেন, এবং আপনি আপনার কাঙ্খিত ফল নিয়ে আসতে পারেন।
ইন্সটাগ্রাম: বর্তমান সময়ের অন্যতম আরেকটি জনপ্রিয় ছবি শেয়ারিং এর মাধ্যমের নাম হলো ইন্সটাগ্রাম। বর্তমানে ৬ বিলিয়নের উপরে ইনিস্টাগ্রামের একটিভ ইউজার আছে। এখানে ইউজার তাদের স্টোরি মানে ছবি প্রতিদিন ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করে থাকে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার মার্কেটিংয়ের জন্য আপনি এই মাধ্যমকে বেঁচে নিতেই পারেন।
►► আরো দেখুন: ফ্রিল্যান্সিং শেখার পরিপূর্ণ গাইডলাইন
►► আরো দেখুন: কীভাবে একজন এসইও এক্সপার্ট হয়ে উঠবেন?
লিংকডইন: লিংকডইন হলো প্রফেশনাল মানুষদের জায়গা। যারা বিভিন্ন কাদের সাথে জড়িত তারাই মূলত লিংকডইন ইউসার। সারা পৃথিবীতে ১.৫ বিলিয়ন মানুষ লিংকডইন ব্যবহার করে থাকে। এখানে ইউসার নিজেকে বা তার সেবাকে সবার সামনে উপস্থাপন করে, যাতে করে ইউসার প্রফেশনালী আরো ভালো করতে পারে কিংবা সেবা বিক্রি করতে পারে।
টুইটার: টুইটার মূলত ছোট আকারের ব্লগিং সিস্টেম, যাকে মাইক্রোব্লগিং বলা হয়। মাইক্রোব্লগিং হলো অল্প কথায় খুব দ্রুত অনেক মানুষের কাছে মনের ভাব প্রকাশ করা যায়। যেটাকে টুইট বলে সম্বোধন করা হয়। এখানে মূলত হ্যাশট্যাগের ব্যবহার বেশি। টুইটারে একে অপরকে ফলো এবং আনফলো করার সিস্টেম আছে। এখানেও ৬ বিলিয়নের উপরে ইউসার রয়েছে, তাই এই বিশাল ইউসারের কাছে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারেন।
ইত্যাদি এই রকম আরো অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে যা ইন্টারনেটে অনেক জনপ্রিয়, সেগুলো আপনি নিজেই অনুসন্ধান করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন করবেন?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার প্রধান কারণ হলো এর উপকারিতা। বর্তমানে আমরা সকলেই যেহেতু ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি সেহেতু আমাদের প্রতিদিনকার রুটিনের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ার মতো প্ল্যাটফর্মগুলি। এখানে যেমন ক্রেতাসাধারণ রয়েছে তেমনই রয়েছে বিক্রতা টিম। সুতরাং মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হতে পারে পারফেক্ট সিদ্ধান্ত।
আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে যাবেন ঠিক তখনই দেখবেন বায়ারের বাড়তি পরিমাণ! কেননা আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না এমন কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাদের সামনে বারবার প্রয়োজনী পণ্যের প্রচারণা আপনার সেল জেনারেট করতে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়াগুলির এলগরিদ বুঝতে হবে আপনাকে। ফলে দরকার পড়বে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কিত কোর্সে জয়েন করা।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট কিভাবে হবেন?
এবার আসি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট কিভাবে হবেন সে সম্পর্কে। কোনো একটি কাজে এক্সপার্ট হতে গেলে কাজটি শিখে নিতে হয়। সেই সাথে বারবার প্র্যাকটিস চালিয়ে যাওয়ারও মন-মানসিকতা থাকতে হয়। এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট হওয়ার বেলাতেও আপনাকে সেই উপায়টি গ্রহণ করতে হবে। কোর্স, প্র্যাকটিসই পারে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে। তবে মূলত ৩ টি ধাপ আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। ধাপগুলি হলো:
সিদ্ধান্ত গ্রহণ: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেনো করবেন, আপনার ক্যারিয়ার কি এর উপর নির্ভর করছে কিনা, আপনি কি এই সেক্টরটিকে পার্ট-টাইম কাজ হিসেবে চালাবেন, নাকি ফুল টাইমই সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করবে তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকে। এটি মূলত আপনার প্রথম ধাপ।
প্রশিক্ষণ গ্রহণ: যখন আপনি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারবেন তখনই আপনাকে চলে যেতে হবে ২য় ধাপে। যেখানে আপনাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার ব্যবস্থা করে নিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের উপর সঠিক গাইডলাইন দিতে পারে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তির শরণাপন্ন হতে হবে আপনাকে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আমাদের বঙ্গীয় এর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোর্সে অংশ নিতে পারেন।
চর্চা চালিয়ে যাওয়া: কোর্স আপনাকে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করতে হবে। বিভিন্ন প্রজেক্টে অংশ নিতে হবে। যা আপনার চর্চাকে চলতি রূপ দিতে সাহায্য করবে। লোকাল মার্কেটপ্লেসের কাজ শুরুর দিকে করতে পারলে রিভিউ-সম্পর্কিত কোনো ঝামেলার সৃষ্টি হবে না আশা করি।
কোথায় শিখবেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সঠিকভাবে শিখতে হলে চাই সঠিক ক্ষেত্র। যে ক্ষেত্রটি আপনাকে সঠিক গাইডলাইন দ্বারা একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলবে। তবে অনেক সময় পরিস্থিতির কারণে কিংবা সময়ের কারণে এই ক্ষেত্রের ভিন্নতা ঘটতে পারে। আপনি চাইলে ৩ টি ক্ষেত্র ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে পারেন। ক্ষেত্রগুলি হলো:
ফ্রি রিসোর্স: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার ক্ষেত্রে আপনি চাইলে ফ্রি রিসোর্সের সাহায্য নিতে পারেন। বিশেষ করে যারা প্রাথমিকভাবে এই ক্ষেত্রটি সম্পর্কে জানতে চাইছেন কিংবা আর্থিকভাবে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তাদের জন্য এই ফ্রি রিসোর্স!
পেইড কোর্স: এডভান্স লেভেলের ফিউচার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারদের জন্য পেইড কোর্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রিতে যে জিনিস পাচ্ছেন পেইড ওয়েতে তার চাইতে আরো ভালো জিনিস পাবেন। সুতরাং অনলাইন কিংবা অফলাইন পেইড কোর্স আপনার জন্য খুবই জরুরি।
শেষ কথা
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট কিভাবে হবেন তার কিছু কার্যকরী টিপস শেয়ার করলাম। আশা করি পুরো ব্যাপারটি সহজেই বুঝতে পেরেছেন। নতুন এই সেক্টরে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো।
Discussion about this post