নির্ধারিত সময়ের থেকে অর্থাৎ ঠিক ২৮ দিনের গ্যাপে যদি মাসিক না হয়, অনেক নারীই মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম খুঁজে খুঁজে হয়রান হন। কারণ সত্যিকার অর্থেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাসিক না হওয়া আতঙ্কিত হওয়ার মত একটি গুরুতর বিষয়। সময়মত মাসিক না হলে এর জন্য প্রয়োজনীয় মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম কি এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে আজ আমরা জানবো।
দেরিতে মাসিক হওয়ার কারণ কি?
মাসিক দেরিতে হওয়া নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন। কিন্তু জানেন কি পিরিয়ডস বা মাসিকের সঙ্গে অনেকগুলি ব্যাপার জড়িত। মানসিক চাপ থেকে আবহাওয়া এই সবই প্রভাব ফেলতে পারে আপনার মাসিক চক্রে। সাধারণত প্রতি ২৮ থেকে ৩৫ দিন অন্তর একজন সুস্থ্য ও স্বাভাবিত নারীর পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে।
১২ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর নিয়মিত ও সময়মতো মাসিক হওয়াটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। তবে তা যদি অনিয়মিত হয়ে পড়ে, তার মানে হয়তো শারীরিক কোনো সমস্যা আছে।
এ ক্ষেত্রে শরীরে কোনো অসুস্থতা সৃষ্টি হয়েছে কিনা বা জীবন-যাপনে কোনো ক্ষতিকর অভ্যাস যুক্ত হয়েছে কিনা, তার দিকে নজর দেয়া উচিত।
পিরিয়ড দেরি হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে গর্ভাবস্থা, বয়স, মানসিক চাপ, অকাল গর্ভপাত, কম ওজন ফাইব্রয়েডস, এবং হরমন জনিত সমস্যা অন্যতম। কিন্তু আপনার মাসিক দেরিতে হওয়ার ক্ষেত্রে যদি এর একটা কারণও না থাকে, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব একজন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
মাসিক হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম
মাসিক সম্পূর্ণরূপে একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। ঔষধ সেবন বা কোন কৃত্রিম উপায়ে মাসিক ঘটানো স্থায়ী কোন সমাধান না। তবে একেবারেই কোন উপায় না থাকলে আপনি মাসিক হওয়ার বিশেষ ঔষদ গ্রহণ করতে পারেন। মাসিক নিয়মিতকরণে Renata Limited কোম্পানির বহুল প্রচলিত একটি মেডিসিন হচ্ছে Normens। 5MG এই ট্যাবলেটগুলো শরীরের ন্যাচারাল হরমোনের ওপর কাজ করে থাকে এবং অনিয়মিত মাসিক থেকে মুক্তি দেয়।
Normens ট্যাবলেট কোন কোন ক্ষেত্রে কাজ করে?
- অনিয়মিত মাসিক হলে
- খুব বেশি রক্তপাত হলে
- ব্রেস্ট পেইন, মাথা ব্যাথা বা মুড স্যুইং হলে
- ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে
এই ট্যাবলেটগুলোর প্রতি পিস খুচরা মূল্য ৫ টাকা। প্রতি পাতায় মোট ১০ টি ট্যাবলেট থাকে। সম্পূর্ণ এক পাতা ঔষধ আপনি ৫০ টাকায় কিনতে পারবেন। চিকিৎসকরা এই ট্যাবলেট প্রতিদিন ১ টি করে ৩ বেলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারো ক্ষেত্রে ৫ দিন আবার কারো ক্ষেত্রে অথবা ১ সপ্তাহ পর্যন্ত এটি খাওয়ার পরামর্শ থাকে। তবে এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
মাসিক না হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম
মাসিক না হওয়া যেমন সমস্যা, একইবাবে হওয়াও অনেকটা বিরক্তিকর। বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গেছে শীতকালে নারীদের মাসিকের নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়। কারণ, শীত মানেই উৎসব। আর তাই বছরশেষের এই সময়টায় প্রায় অনেকেরই বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকে। বিয়ে এবং পিকনিকের পাশাপাশি অন্যান্য উৎসবে কারণে নারীরা এসময়টিতে মাসিক এড়িয়ে চলতে চায়।
আর তাই এই দিনগুলোতে মাসিকের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই মাসিক পিছিয়ে দেয়ার ঔষধ খান। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই ঔষধকে Period Delaying Tablets বলে। বিশেষত বিয়ের আগে সব মেয়ের মধ্যেই দেখা যায় এই প্রবণতা।
সামান্য মাসিকের জন্য নিজের ঘুরতে যাওয়া, আনন্দের সঙ্গে কেউই আপোষ করতে চায় না। আপনিও প্রয়োজনে এই ঔষধ অবশ্যই সেবন করতে পারেন। কিন্তু এক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। তাই একান্ত প্রয়োজন থাকলে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন, তিনি যা উপদেশ দেবেন সেইমতো ওষুধ কিনবেন।
Phasic Pill: এই ঔষধগুলো দুই বা তিনটি ভাগে ভাগ করা থাকে এবং প্রতিটি ভাগের আলাদা আলাদা রঙ হয় যা ভিন্ন-ভিন্ন হরমোনের জন্য কাজ করে। এটি সাধারণত ২১ দিনের কোর্স হয় যা একটি একটি করো ৭ দিন পরপর খেতে হয়। বাকি ঔষধগুলোর নিয়মও ঠিক একই রকম হয়ে থাকে।
Mini Pill: এই ট্যাবলেটগুলোিতে Norethisterone থাকে এবং একটি পাতা খাওয়ার পর কোনও গ্যাপ না দিয়েই পরদিন থেকে আপনি আবার অন্য এক পাতা ওষুধ খেতে পারেন। মাসিক পেছানোর জন্য এটি বেশ ফলদায়ক।
গর্ভনিরোধক ঔষধের সাথে পার্থক্য
পিরিয়ড পিছিয়ে দেওয়ার ঔষধ আর গর্ভনিরোধক ঔষধ এক নয়। এই পিছিয়ে দেওয়ার ঔষধ শুধুমাত্র ১৭ দিনের জন্য পিরিয়ড পিছিয়ে দেয়। আর গর্ভনিরোধক ট্যাবলেটে ডিম্বাশয় থেকে ডিম নির্গত হতেও দেয় না। আর তাই যদি মনে করেন যে, সুরক্ষা ছাড়াই সহবাস করে মাসিক পেছানোর ঔষধ খাবেন, এরকম ধারণা রাখবেন না। এই ঔষধ কিন্তু গর্ভবতী হওয়া থেকে আপনাকে আটকাবে না।
কখন খাবেন?
আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে তবেই এই ঔষধ কিনুন। যারা প্রতিদিন হরমোন, থাইরয়েডের ওষুধ খান তাদের ক্ষেত্রে এই পিল কতটা কাজ করবে তাও চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন। সাধারণত মাসিকের নির্ধারিত দিনের তিনদিন আগে তিনবার ট্যাবলেট খেতে হয়। একটা সকালে, একটা দুপুরে এবং অপরটি রাতে খাওয়ার পর। তবে একসঙ্গে দুটো কখনই নয়। কোনও ট্যাবলেট সকালে ভুলে গিয়েছেন বলে পরে বা বিকেলে খাবেন না।
►► আরো দেখো: গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণগুলো কি?
►► আরো দেখো: সিজারের পরে সহবাস কিভাবে করবেন?
►► আরো দেখো: গর্ভবতী হওয়ার আগে ভুলেও যা করা যাবে না
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরো টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে একটি লাইক দিয়ে রাখুন। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post