করোনাকালীন সংকটময় সময়ের পর অনলাইন জব বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছেলে হোক বা মেয়ে, উভয়ের টিকে থাকার জন্যই কাজেই প্রয়োজন। আজ কোর্সটিকায় আমরা মেয়েদের জন্য অনলাইন জব নিয়ে আলোচনা করব।
অনলাইন দুনিয়ার বিশাল ক্রেতা সমাগমকে কাজে লাগিয়ে অনেক মেয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কেউ ফ্রিল্যান্সিং করছে, কেউ বিউটি প্রোডাক্ট কিংবা ড্রেস সেল দিচ্ছে। আবার কেউ বা কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে জনপ্রিয়তা এবং প্রতিষ্ঠা দুটোই পেয়েছে।
ইন্টারনেটে সবার জন্যই রয়েছে উন্মুক্ত এ সম্ভাবনা। তাই অনলাইনকে কেন্দ্র করে আপনি শুরু করতে পারেন আপনার স্বপ্নের জব বা বিজনেস। আজ কোর্সটিকায় আমরা এমন ৮ টি গুরত্বপূর্ণ জব এবং বিজনেসের কথা তুলে ধরবো, যা যেকোন মেয়েরা ঘরে বসেই করতে পারবেন।
এই কাজগুলো তুলনামূলক সহজ।পাশাপাশি এগুলোর করার জন্য বাইরে যেতে হবে না। ফলে মেয়েদের জন্য কাজগুলো করা অনেক সুবিধাজনক হবে। পাশাপাশি শুধু অর্থ উপার্জনই না, এ কাজগুলোর সাথে লেগে থাকলে আপনার স্কিল ডেভেলপ হবে। যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। তাহলে চলুন, শুরু করি।
মেয়েদের জন্য ৮ টি অনলাইন জব
১. ছবি আঁকতে পারেন
আপনি ভালো ছবি আঁকতে পারেন? তাহলে ছবি আঁকার এ নেশাই আপনার পেশা হয়ে উঠতে পারে। আপনার আঁকা ছবিগুলো অনলাইনে বিভিন্ন প্লাটফর্মে সেল করতে পারেন। অথবা চাইলে বিশ্বের নামীদামী সব প্রতিষ্ঠানের হয়েও কাজ করতে পারেন।
ছবি আঁকার এ কাজের জন্য অবশ্যই আপনাকে বিশেষায়িত কিছু সফটওয়্যারে অভিজ্ঞ হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে Adobe Photoshop এবং Adobe Illustrator সহ আরো বেশকিছু সফটওয়্যার। এ সফটওয়্যারগুলো প্রোডাক্টিভ কাজে ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটারের বেসিক স্কিলের মধ্যে এ সফটওয়্যার দুটির কাজ শেখা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোতে অভিজ্ঞ হয়ে আপনি আপনার আঁকা ছবিগুলো অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। অনলাইনে ছবি বিক্রি করা যায়, এমন কিছু জনপ্রিয় প্লাটফরম হচ্ছে:
- Fiverr
- Upwork
- Freepik
- ShutterStock
আপনার আঁকা ছবিগুলো যদি মানসম্মত হয়, তাহলে উল্লেখিত প্রতিটি প্লাটফরমেই বেশ ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এই ছবি যখন অন্যরা কিনবে, তখন প্রতি সেল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন জেনারেট করতে পারবেন।
২. ডেটা এন্ট্রি
মেয়েদের জন্য তুলনামূলক সহজ একটি কাজ হচ্ছে ডেটা এন্ট্রি। কম্পিউটারের বেসিক লেভেলের কিছু কাজ জানলেই আপনি ডেটা এন্ট্রি করতে পারবেন। ডেটা এন্ট্রির মধ্যে রয়েছে ডকুমেন্ট টাইপিং, PDF বা JPG ফাইলের লেখা ডকুমেন্টে কনভার্ট করা এবং ক্ষেত্র বিশেষে হিসাব-নিকাশ করা।
Fiverr, Upwork এবং Freelancer এর মত বেশ কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে আপনি ডেটা এন্ট্রি করে প্রতিদিন $100-$500 বা তার বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। আর এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার দক্ষতার ওপরে। বহির্বিশ্বেই শুধু নয়, এসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি অনেক মেয়েরা সফলতার সাথে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
ডেটা এন্ট্রিতে কি করতে বলা হয়?
- বিভিন্ন লেখা টাইপ করা
- কোন কাগজের লেখা ডকুমেন্টে কনভার্ট করা
- ছবির লেখা ডকুমেন্টে কনভার্ট করা
- গাণিতিক হিসাব-নিকাশ করা
মাইক্রোসফটের বেশকিছু সফটওয়্যার রয়েছে যা দিয়ে আপনি উল্লেখিত কাজগুলো শিখতে পারেন। যেমন MS Word, MS Excell, Acrobat Reader ইত্যাদি। তাই অনলাইনে কোন মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরুর পূর্বে এই সফটওয়্যারগুলোর ওপর বেসিক কিছু ধারণা রাখা জরুরি।
৩. টিকটক
ভিডিও শেয়ারিং জগতে টিকটক এখন বেশ পরিচিত একটি প্লাটফর্ম। এমন কেউই নেই যে কখনো টিকটকের নাম শোনেনি কিংবা একবারের জন্য হলেও টিকটক অ্যাপটি ব্যবহার করেনি। মজার বিষয় হচ্ছে, টিকটক এখন কেবল বিনোদনই নয়, বরং উপার্জনেরও বড় একটি উৎস। আর বিশ্বের বড় বড় কনটেন্ট ক্রিয়েটরারা ঠিক তাই করছেন।
TikTok App থেকে ইনকাম করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে টিকটক এড মনিটাজেশন করে আয়। এটি এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে আপনি ইউনিক ভিডিও তৈরি করে আপনার অ্যাকাউন্টটি মনিটাইজ করাতে পারেন। ফলে কেউ যদি আপনার ভিডিও দেখতে আসে, তখন ভিডিওর শুরুতে, মধ্যে বা ডিসপ্লের উপরে নিচে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন হবে। আর এই বিজ্ঞাপনগুলোর মাধ্যমেই আপনি যথেষ্ট পরিমাণে উপার্জন করতে পারবেন।
টিকটক থেকে উপার্জনের দ্বিতীয় উপায়টি হল ডোনেশন। এটি হলো একটি built-in মনিটাইজেশন সুবিধা। এটি এমন এক প্রকার মনিটাইজেশন, যেখানে আপনাকে আপনার অডিয়েন্স টাকা ডোনেট করতে পারবে। যদি আপনি একজন টিকটক ইউজার হন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানেন নিজের প্রোফাইলে গিয়ে আপনি চাইলে কয়েন কিনতে পারবেন। এই কয়েনগুলোর প্রতিহাজারের মূল্য দাঁড়ায় 1.39 ডলার।
যখন কেউ কয়েন ব্যবহার করে কাউকে স্টিকার পাঠায় তখন টিকটকার সেই কয়েন গ্রহণ করতে পারে। এই কয়েনের মাধ্যমে ডায়মন্ড ক্রয় করতে হয়, যা সবশেষে নগদ অর্থে পরিণত করা যায়। এই অর্থ পেপালের মাধ্যমে উইথড্র করে নেয়া যায়।
৪. গল্প লেখা
মেয়েরা গল্প পড়তে ভালোবাসে। আবার অনেক মেয়েরা গল্প লিখতেও ভালোবাসে। নিঃসন্দেহে এটি একটি সৃজনশীল কাজ। আপনার মধ্যেও যদি এই প্রতিভা থেকে থাকে, তবে এ প্রতিভাকে কর্মে রূপ দিতে পারেন। নিজের মেধাশক্তি ও কল্পনাকে কাজে লাগিয়ে চমৎকার সব গল্প রচনা করুন। এরপর একটি ব্লগ ভিত্তিক ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনার গল্পগুলো প্রকাশ করুন।
কিন্তু আয় হবে কীভাবে? অ্যাড নেটওয়ার্ক থেকে। যখন আপনার লেখাগুলো বেশ জনপ্রিয় হতে শুরু করবে এবং লোকে পড়বে, তখন আপনি বিভিন্ন অ্যাড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটকে মনিটাইজ করাতে পারবেন। বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লাভজনক অ্যাড নেটওয়ার্ক হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স।
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল অ্যাডসেন্স দ্বারা মনিটাইজ করাতে পারেন, তখন আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবা বা পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন শুরু হবে। যার মাধ্যমে আপনি মাস শেষে একটি ভাল পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। বিশ্বের বিভিন্ন লেখাররা এভাবেই লিখে মাস শেষে লাখ টাকা উপার্জন করছেন। সময়, মেধা এবং পরিশ্রম দিলে তা আপনাকে দিয়েও সম্ভব।
৫. অনলাইন টিউশন
করোনাকালীন সময়ে অনলাইন টিউশন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে। শিক্ষার্থীরা এখন আগের মত স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে পারছে না। পারছে না কোচিং থেকেও ক্লাস করতে। তাই এখন তাদের একমাত্র নির্ভরতা অনলাইন ক্লাসে।
উচ্চ মাধ্যমিক থেকে অনার্স পড়ুয়া অনেক কলেজ শিক্ষার্থী এটিকে বেছে নিয়েছে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে। বিশেষ করে মেয়েরা চাইলে এ সময়টিতে অনলাইন ক্লাস নিয়ে ভালো সম্মানি উপার্জন করতে পারেন। আর এটি খুব কঠিন কিছুই নয়।
কীভাবে নেবেন অলাইন ক্লাস?
- জুম অ্যাপের মাধ্যমে নিতে পারেন।
- নিতে পারেন গুগল মিটিংয়ের মাধ্যমে
- ফেসবুক পেজ খুলে প্রচারণা চালাতে পারেন।
মেয়ে হিসেবে আপনি যদি লাইভ ক্লাসে বিব্রতবোধ করেন, তবে আগে থেকে আপনার রেকর্ড করা লেকচারগুলো ফেসবুক পেজে পাবলিশ করতে পারেন। এতে করে হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে এবং গুছিয়ে ভিডিও তৈরি করা যাবে। ফলে ভুল কিংবা বিব্রত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
৬. বিউটি প্রোডাক্ট সেল
আপনি কি সাজতে ভালোবাসেন? কে না ভালোবাসে? মেয়ে মাত্রই সে সাজতে ভালোবাসে। পৃথিবীর প্রতিটি মেয়েই চায় নিজেকে অন্যের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে। আর এজন্য তাদের প্রধান উপকরণ হচ্ছে মেক-আপ এবং অন্যান্য বিউটি প্রোডাক্ট। আপনি চাইলে মেয়েদের এই প্রয়োজনীয়তাকে কাজে লাগিয়ে নিজের একটি ছোট খাট বিজনেস গড়ে তুলতে পারেন।
চমৎকার ও সম্ভাবনাময় এ কাজটি হতে পারে মেয়েদের জন্য অন্যতম অনলাইন জব। মেক-আপ ইনস্ট্রুমেন্ট বিক্রির জন্য আপনার একজন মডেলের প্রয়োজন পড়বে, যার ওপর মেকাপ এপ্লাই করে আপনি সবাইকে দেখাবেন। এখনকার সময়ে বেশিরভাগ মেয়েরা অন্য কোন মডেল নয়, বরং নিজেই নিজের মডেল হিসেবে কাজ করে।
ফোসবুকে এমনই এক জনপ্রিয় উদ্যোক্তা হচ্ছেন ইমরোজ। তিনি নিজেই বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করেন এবং সেই ভিডিওগুলো তার পেজে প্রকাশ করেন। এই প্রসাধনীর ভালো ফলাফল দেখে প্রচুর কাস্টোমার তাকে অর্ডারের জন্য নক করেন। আর এভাবেই তিনি এগিয়ে চলছেন তার বিজনেসটিকে আরো বড় করার পথে।
কি লাগবে এই ব্যবসার জন্য?
- স্মার্টফোন
- ইন্টারনেট সংযোগ
- স্মার্টফোন রাখার ট্রাইপড বা স্ট্যান্ড
- অল্প কিছু পুজি
- অসীম আগ্রহ
এ ব্যবসার সবথেকে ভালো দিক হচ্ছে, আপনি ঘরে বসেই এটি শুরু করতে পারবেন। আপনাকে না অফিস ভাড়া করতে হবে, না রাস্তায় রাস্তায় হাটতে হবে। ঘরে বসে প্রোডাক্টগুলোর প্রোমশন তৈরি করুন, অর্ডার নিন এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে ডেলিভারি করুন।
৭. ফাস্টফুড
গত করোনাকালীন সময়ে চাকরি হারিয়ে একেবারেই অসহায় হয়ে পড়েছিলেন জামালপুরের শরীফ উদ্দিন। কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। স্ত্রী, চার ছেলেমেয়ে এবং বৃদ্ধা মা-বাবার ভরণ-পোষণে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি।
এমতাবস্থায় তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে তার তিন কন্যা। বড় মেয়ে সাহিদা আগে থেকেই ভালো রান্না জানতো। পাশাপাশি ইউটিউব এবং অনলাইন ঘাটাঘাটি করে শিখে নিলে ফাস্টফুড তৈরির দারুণ সব রেসিপি। এরপর বাড়িতে বসেই শুরু করলেন ফাস্টফুড আইটেম বিক্রি।
বড় বোন রান্না করতেন মজার সব আইটেম, মেজোবোন খাবারের ছবি তুলতেন এবং এডিট করতেন আর ছোটবোন ছবিগুলো ফেসবুকে পোস্ট করে প্রচারণা চালাতেন। এমন করতে করতে একটা সময় তাদের এ ছোট বিজনেস প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এরপর আর তাদের পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
আপনিও কি পারবেন এমন সফলতা অর্জন করতে? কেন নয়? শুধু একটু প্রচেষ্টা, আত্মনিষ্ঠা এবং লেগে থাকার মত ধৈর্য প্রয়োজন। ইউটিউব ঘাটাঘাটি করলে নতুন নতুন খাবার তৈরির হাজারো রেসিপি পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি কোর্সটিকায় রয়েছে ফুড বিজনেসের লাভজনক সব আইডিয়া। যা দেখে আপনি অনেক অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
এই ব্যবসাটিও আপনি ঘরে বসেই শুরু করতে পারেন। পরিচিত একজন স্টাফ রাখতে পারেন খাবারগুলো ডেলিভারি দেওয়ার জন্য। তবে হ্যাঁ, খাবার তৈরির ক্ষেত্রে খাবারের গুণগত মান এবং পরিচ্ছন্নতার দিকে অবশ্যই গভীর নজর দিতে হবে।
৮. ছবি বিক্রি
আপনি কি মোবাইল দিয়ে খুব সুন্দর ছবি তুলতে পারেন? আপনি কি আপনার তোলা ছবিগুলো দিয়ে বন্ধুদের মুগ্ধ করতে পারেন? তাহলে আপনা এ প্রতিভা অনলাইনে টাকা ইনকামের পথ তৈরি করে দিতে পারে। হ্যাঁ, আপনি এখন ছবি তুলেও টাকা ইনকাম করতে পারেন।
বিশ্বের জনপ্রিয় কিছু অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে, যারা ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে ছবি ক্রয় করে। আপনি যদি মানসম্মত ছবি তুলতে পারেন, তাহলে এসকল প্লাটফর্মে আপনিও ছবি বিক্রি করতে পারেন। এমনই কিছু জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত অনলাইন প্লাটফর্ম হচ্ছে:
- Alamy.
- 500px.
- SmugMug Pro.
- Shutterstock.
- iStock Photo.
- Etsy.
- Getty Images.
- Stocksy.
এই প্লাটফর্মগুলোতে যেকেউ চাইলে তাদের তোলা যেকোন ক্যাটাগরির ছবি বিক্রি করতে পারে। আর এই প্লাটফর্মগুলোর নিয়ম অনুযায়ী আপনার থেকে ছবিগুলো প্রতিবার বিক্রি হওয়ার মূল্য থেকে আপনি একটি কমিশন পাবেন। যা আপনি পেপাল বা ওয়ার ট্রান্সফার পেমেন্ট মেথড ব্যবহারের মাধ্যমে হাতে পেতে পারেন।
কি ভাবছেন? ভালোমানের একজন ফটোগ্রাফার হওয়ার জন্য মূল্যবান ক্যামেরা লাগবে? এখনো অনেকেই এই ধারণা পোষণ করেন, যা সঠিক নয়। বর্তমান স্মার্টফোনগুলোতে অনেক আধুনিক ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা দিয়ে দারুণ সব ছবি তোলা সম্ভব। তাই আপনার প্রিয় স্মাটফোনটি দিয়ে আজই নেমে পড়ুন চমৎকার সব ছবি তোলার কাজে।
মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রশ্নগুলো
- আমি একটি মেয়ে। আমার কি এ কাজ মানায়? লোকে কি বলবে?
হ্যাঁ, মানায়। একবিংশ শতাব্দিতে এখন আর ছেলেদের কাজ – মেয়েদের কাজ বলতে কিছু নেই। এখন সব কাজ সবাই পারে, পারতে হয়। - আমি যদি বিজনেস শুরু করি লোকে কি বলবে?
অনেক কিছুই বলবে। কিন্তু আপনার কাজ হচ্ছে কথাগুলো এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করে দেওয়া। আপনি না খেয়ে থাকলে বাইরের কেউ এসে আপনাকে খাবার দিয়ে যাবে না। সুতরাং আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে কে কি বললো তা গুরুত্বহীন। - পারিবারিকভাবে আমার আর্থিক অবস্থা ভালো। আমার কি এগুলো করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?
হ্যাঁ, প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আপনি যতই ধনী হোন না কেন জীবনে নিজের থেকে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে আপনাকেও কাজ করতে হবে। জীবন কখন কোন দিকে মোড় নেয়, তা কেউ জানে না। সুতরাং যেকোন উৎপাদনশীল কাজে নিজেকে যোগ্য করে তোলা বুদ্ধিমানের কাজ। - আমার কাছে পুজি নেই। কীভাবে শুরু করবো?
পুজি নেই, পুজি তৈরি করুন। হাত খরচ বাঁচিয়ে কিংবা টিউশন করিয়ে যেভাবেই হোক কিছু পুজি তৈরি করুন। আপনার কষ্টার্জিত এ পুজিই আপনাবে বড় লাভের দিকে নিয়ে যাবে।
কখন শুরু করবো?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষেই তার ক্যারিয়ার নিয়া চিন্তা-ভাবনা করা উচিত। আর অনার্স শেষ হওয়ার পরে চাকরীর জন্য অপেক্ষা না করে মধ্যবর্তী সময়ে নিজের ক্যারিয়ারের পথ আরো সুগম করা উচিত। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে প্রায় ৩ মাস ছুটি পাওয়া যায়। অনার্স ভর্তির পূর্বের এই সময়টিতে নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করুন।
শেষ কথা
কেমন হয় যদি পড়াশোনা শেষ করার আগেই নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন? একদমই মন্দ নয়। আপনি হয়তো ভাবছেন, এখনই নয়, কিছুদিন পরে শুরু করবো। অন্যরা কিন্তু বসে থাকবে না। আপনি যখন অলসতায় সময় কাটাবেন, ঠিক তখনই অন্যরা এগিয়ে যাবে।
আজকের এই দীর্ঘ আলোচনায় আমরা মেয়েদের জন্য অনলাইন জব নিয় কথা বলেছি। উপরে উল্লেখিত টপিকগুলোর ওপর বেসিক কিছু ধারণা নিয়ে দ্রুতই নেমে পড়ুন আপনার অনলাইন জব বা বিজনেসে। হয়তো প্রথমে সফলতা পাবেন না। কিন্তু লেগে থাকলে অবশ্যই ভালো কিছু হবে।
Discussion about this post