যাব আমি তোমার দেশে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : গ্রামের আঁকাবাঁকা সরু পথকে গ্রামের হাবা মেয়ের এলোমেলো সিঁথির সাথে তুলনা করা হয়েছে। হাবা মেয়ে পরিপাটি সাজে সাজতে পারে না। এজন্য তার মাথার সিঁথি সোজা থাকে না। পল্লিগ্রামের ধানখেতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা সরু আঁকাবাঁকা পথগুলো তেমনি হাবা মেয়ের মাথার সিঁথির মতো এলোমেলো।
যাব আমি তোমার দেশে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রাম্য মেয়ে কেমন করে চলে?
উত্তর: ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রাম্য মেয়ের চলার দৃশ্য স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা। কবি বলেছেন, ‘তাহার পরে মুঠি ছড়িয়ে দিয়ে কদম-কলি, কোথাও মেলে বনে পাতা গ্রাম্য মেয়ে যায় যে চলি।’ অর্থাৎ, সে যখন হাঁটে, তখন তার পথচলায় কদম ফুলের কলি ছড়িয়ে পড়ে এবং বনঝোপের পাতা যেন আপনিই মেলে যায়। এতে তার চলার মধ্যে এক ধরনের মাধুর্য, কোমলতা ও সহজাত গ্রাম্য সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
২. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রামকে কীভাবে বর্ণনা করা হয়েছে?
উত্তর: ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রামকে এক মনোমুগ্ধকর, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এবং শান্তিময় স্থান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
কবিতায় গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠ, সরু আঁকাবাঁকা পথ, বন-বনানী, নদী-নালা, দীঘি, শাপলা-ফুল, ধানের ক্ষেত, পাখির ডাক ইত্যাদির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গ্রামের মেয়েদের চলাফেরা, শিশুদের দুরন্তপনা, গাছের ছায়ায় বিশ্রাম, দীঘির জলে পদ্ম-শাপলার খেলাÑএসবই কবিতায় প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ও পল্লিজীবনের চিত্রকে জীবন্ত করে তুলেছে। শহরের কোলাহলপূর্ণ জীবনের বিপরীতে কবিতায় গ্রামকে এক শান্ত, নির্মল ও স্বর্গসম পরিবেশ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেখানে প্রকৃতি ও মানুষের মাঝে এক গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান।
৩. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় পাড়ার দস্যি ছেলেরা কী করে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় পাড়ার দস্যি ছেলেরা খুব আনন্দে, উল্লাসে এবং উদ্দীপনায় খেলে।
কবিতায় বলা হয়েছে, তারা একত্রিত হয়ে দল বাঁধে এবং সারা গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। তাদের দুরন্তপনা, খেলাধুলা এবং গ্রামীণ জীবনের স্বাধীনতা কবিতার মধ্যে খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। তারা যেভাবে নিজেদের আনন্দের জন্য খেলে, তাতে গ্রামের প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঙ্গে একটি নির্ভেজাল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
এখানে পাড়ার দস্যি ছেলেরা তাদের দুরন্তপনায় নিমজ্জিত, মাঠে-ঘাটে ছোটাছুটি করে, মুক্ত পরিবেশে প্রকৃতির মধ্যে এক অভূতপূর্ব আনন্দ উপভোগ করে। তারা একত্রিত হয়ে আনন্দের মুহূর্তগুলি কাটায়, যা তাদের গ্রামের সরল জীবনযাত্রার অংশ।
৪. কবি কেন পল্লি-দুলালের দেশে যেতে চান? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কবি পল্লি-দুলালের দেশে যেতে চান কারণ সেখানে রয়েছে নিস্তব্ধতা, প্রকৃতির সৌন্দর্য, এবং শাশ্বত সুখ।
কবি তার শহুরে জীবনের কোলাহল থেকে দূরে, গ্রামীণ পরিবেশে মুক্তি খুঁজছেন। সেখানে আছে দীঘির জলে শাপলার সৌন্দর্য, পাখির ডাক, ফুলের সুবাস, এবং মেঠো পথে ছেলেমেয়েদের দুরন্তপনাÑসব কিছুই তাকে আকর্ষণ করছে। কবি চাচ্ছেন, পল্লি-দুলালের দেশের এই নির্জন ও সুন্দর পরিবেশে তিনি কিছু সময় কাটান, যেন মনকে শান্তি এবং আনন্দ দিয়ে পূর্ণ করতে পারেন।
৫. ‘হাবা মেয়ের এলো মাথার সিঁথির মত’—বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: পল্লিগ্রামের আঁকাবাঁকা সরু পথ বোঝানো হয়েছে।
‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রামের আঁকাবাঁকা সরু পথকে গ্রামের হাবা মেয়ের এলোমেলো সিঁথির সাথে তুলনা করা হয়েছে। হাবা মেয়ে পরিপাটি সাজে সাজতে পারে না। এজন্য তার মাথার সিঁথি সোজা থাকে না। পল্লিগ্রামের ধানখেতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা সরু আঁকাবাঁকা পথগুলো তেমনি হাবা মেয়ের মাথার সিঁথির মতো এলোমেলো।
৬. ‘ধল-দিঘিতে সাঁতার কেটে আনব তুলে রক্ত-কমল’—ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কবিতার এই অংশের মাধ্যমে কবি জসীমউদ্দীন তাঁর কৈশোরের দুরন্তপনাকে তুলে ধরেছেন।
গ্রামের দস্যি ছেলেরা সারা দিন ঘুরে ঘুরে গ্রামকে মাতিয়ে রাখে। কবি দস্যি ছেলেদের সাথে খেলাধুলা করতে চান। গ্রামের প্রকা- দিঘির পানিতে দাপিয়ে বেড়াতে চান। সাঁতার কেটে তুলে আনতে চান লাল পদ্মফুল। কবির খুব ইচ্ছা, এই অকৃত্রিম প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করা।
৭. ফুল দিয়ে কবি কীরূপ খেলা খেলবেন?
উত্তর: জসীমউদ্দীন তাঁর ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় পল্লিগাঁয়ে গিয়ে পাড়ার দস্যি ছেলেদের সাথে, পল্লি-দুলালের সাথে নানা রকম খেলায় মেতে ওঠার কথা বলেছেন।
কবি গাছের শাখা দুলিয়ে বনফুল কুড়িয়ে মালা গাঁথবেন। মালা গাঁথা শেষ হলে তা গাঁয়ের দিঘির ঘাটে রেখে আসবেন। পল্লিবালারা ঘাটে পানি নিতে এসে তা দেখবে এবং কুড়িয়ে নিয়ে ভাববে, না-জানি কে ভুল করে ফেলে গেছে। এরপর তারা সে মালা গলায় পরবে।
৮. পল্লির রাস্তাকে হাবা মেয়ের সিঁথির সাথে তুলনা করার কারণ কী? বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: পল্লির রাস্তা তথা পথ যেন গ্রামের হাবা মেয়ের এলো মাথার সিঁথির মতো কোথাও বাঁকা, কোথাও সোজা। তাই কবি পল্লির রাস্তাকে হাবা মেয়ের সিঁথির সাথে তুলনা করেছেন।
‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রামের আঁকাবাঁকা সরু পথকে গ্রামের হাবা মেয়ের এলোমেলো সিঁথির সাথে তুলনা করা হয়েছে। হাবা মেয়ে পরিপাটি সাজে সাজতে পারে না। এজন্য তার মাথার সিঁথি সোজা থাকে না। পল্লিগ্রামের ধানখেতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা সরু আঁকাবাঁকা পথগুলো তেমনি হাবা মেয়ের মাথার সিঁথির মতো এলোমেলো।
আরও দেখো— নবম দশম শ্রেণির বাংলা সকল গল্প-কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা মূল বই থেকে যাব আমি তোমার দেশে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post