যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : পদের ব্যক্ত্যর্থ ও জাত্যর্থের বিপরীতমুখী হ্রাস বৃদ্ধি সকল ক্ষেত্রে ঠিক থাকে না। যে সব ক্ষেত্রে কোনো পদকে জাতি-উপজাতি, শ্রেণি- উপশ্রেণি আকারে ক্রমিক ভাবে সাজানো যায় না, সে ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হয় না।
কিছু পদের ব্যক্ত্যর্থ সুনির্দিষ্ট থাকে। তাদের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম কার্যকর নয়। তাই কোনো পদের ব্যক্ত্যর্থ বাড়লেই যে জাত্যৰ্থ কমে যাবে এমনটি অপরিহার্য নয়।
যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. একটি পদ কেন অব্যাপ্য হয়?
উত্তর : একটি পদ আংশিক ব্যক্ত্যর্থে কোনো যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে অব্যাপ্য হয়।
কোনো পদ একটি যুক্তিবাক্যে কতটুকু ব্যক্ত্যর্থের ভিত্তিতে প্রকাশিত হলো তার ওপর নির্ভর করে পদটির ব্যাপ্যতা নির্ধারিত হয়। যখন একটি পদ তার সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থের ভিত্তিতে কোনো যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন পদটি ব্যাপ্য হয়। আর যখন একটি পদ কোনো যুক্তিবাক্যে আংশিক ব্যক্তার্থে প্রকাশিত হয় তখন সেটিকে অব্যাপ্য পদ বলে। সুতরাং আংশিক ব্যক্ত্যর্থে কোনো যুক্তিবাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে একটি পদ অব্যাপ্য হয়।
২. যুক্তিবাক্য ও অবধারণের মধ্যে পার্থক্য আছে কি?
উত্তর : যুক্তিবাক্য (Proposition) এবং অবধারণের (Judgement) মধ্যে পার্থক্য আছে।
দুটি ধারণার মধ্যকার কোনো সম্পর্কের স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি অথবা সংযোগমূলক মানসিক অবস্থা হলো অবধারণ। পক্ষান্তরে, দুটো পদের মধ্যে সম্পর্ক জ্ঞাপক ভাষায় প্রকাশিত রূপ হলো যুক্তিবাক্য। আবার, অবধারণ যুক্তির অংশ হতে পারে না। কেননা, তার অবস্থান মনে। সেটি অনুমানের বিষয় হতে পারে। কিন্তু যুক্তিবাক্য যুক্তির অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৩. বিশেষ যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য কেন?
উত্তর : বিশেষ যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ আংশিক ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হয় তাই এটি অব্যাপ্য।
কোনো যুক্তিবাক্যে একটি পদ তার আংশিক ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হলে তাকে অব্যাপ্য পদ বলে। আবার, যে যুক্তিবাক্যে বিধেয় পদকে উদ্দেশ্য পদের আংশিক ব্যক্ত্যর্থ সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাকে বিশেষ যুক্তিবাক্য বলে। সুতরাং, আংশিক ব্যক্ত্যর্থ নির্দেশক পদকে যেহেতু অব্যাপ্য বলা হয়, সেহেতু বিশেষ যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য অব্যাপ্য।
৪. কোন ধরনের বাক্যকে অ যুক্তিবাক্যে রূপান্তর করা হয়?
উত্তর : যেসকল বাক্যে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে সদর্থক সংযোজক দ্বারা সংযুক্ত করা যায় এবং যাদের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে থাকে না তাদের অ বাক্য বা সার্বিক সদর্থক যুক্তিবাক্যে রূপান্তর করা যায়।
এমন অনেক বাক্য আছে যেগুলোতে উদ্দেশ্য ও বিধেয় থাকলেও পৃথকভাবে কোনো সংযোজক থাকে না এবং পরিমাণের বিষয়টিও নির্দিষ্ট থাকে না। এক্ষেত্রে সংযোজক স্থাপনের মাধ্যমে এদের A বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন- সব মানুষ মরণশীল।
A বাক্য: সব মানুষ হয় মরণশীল। (রূপান্তরিত)
৫. বস্তুবাচক ও গুণবাচক পদ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : যে পদ দ্বারা কোন অস্তিত্বশীল বস্তুকে নির্দেশ করা হয় তাকে বস্তুবাচক পদ বলে। পক্ষান্তরে যে পদ দ্বারা কোন গুণকে নির্দেশ করা. হয় তাকে গুণবাচক পদ বলে।
বস্তুবাচক পদ হল একটি নাম যা একটি বস্তুর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন: মানুষ, গরু, বই, খাতা ইত্যাদি পদগুলো বস্তুবাচক পদ। অন্যদিকে গুণবাচক পদ হল একটি নাম যা একটি বস্তুর কোনো গুণের নির্দেশ প্রদানে ব্যবহৃত হয়। যেমন- সততা, সাদার, মিষ্টত্ব ইত্যাদি পদগুলো গুণবাচক পদ।
৬. সকল ক্ষেত্রে কি পদের ব্যক্তর্থ্য বাড়লে জাত্যর্থ কমে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : না, সকল ক্ষেত্রেই পদের ব্যক্তার্থ বাড়লে জ্ঞাতার্থ কমে না।
পদের ব্যক্ত্যর্থ ও জাত্যর্থের বিপরীতমুখী হ্রাস বৃদ্ধি সকল ক্ষেত্রে ঠিক থাকে না। যে সব ক্ষেত্রে কোনো পদকে জাতি-উপজাতি, শ্রেণি- উপশ্রেণি আকারে ক্রমিক ভাবে সাজানো যায় না, সে ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হয় না। কিছু পদের ব্যক্ত্যর্থ সুনির্দিষ্ট থাকে। তাদের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম কার্যকর নয়। তাই কোনো পদের ব্যক্ত্যর্থ বাড়লেই যে জাত্যৰ্থ কমে যাবে এমনটি অপরিহার্য নয়।
৭. বাক্যকে যুক্তিবাক্যে রূপান্তরের সময় কোন দুটি বিষয় স্পষ্ট করতে হবে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : ভাষায় প্রকাশিত যে কোনো বাক্যকে যুক্তিবাক্যের আকারে রূপান্তর করাকে যুক্তিবাক্যে রূপান্তর বলে।
বাক্যকে যুক্তিবাক্যে রূপান্তরের সময় দুটি বিষয় স্পষ্ট করতে হবে। প্রথমত, যুক্তিবাক্যে রূপান্তরের পর যেন তার অর্থের কোনো পরিবর্তন না হয়। এবং দ্বিতীয়ত, সদর্থক বা নঞর্থক গুণ আরোপের ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য এবং বিধেয়ের মাঝখানে সংযোজক বসাতে হবে। অর্থাৎ যৌক্তিক আকারের জন্য উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয় আকারে সাজাতে হবে।
৮. সকল শব্দই পদ নয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সব পদ শব্দ হলেও সব শব্দ পদ নয়।
শব্দ হলো অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টি। কিন্তু পদ হলো কোনো যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য বা বিধেয় হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন শব্দ বা শব্দ সমষ্টি। শব্দের সংখ্যা অসংখ্য। অসংখ্য শব্দের মধ্যে যেসব শব্দ কোনো যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য বা বিধেয় হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে কেবল ঐসব শব্দকে পদ বলে। যেহেতু সব শব্দ যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য বা বিধেয় হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে না, তাই সব শব্দ পদ নয়।
৯. সব বাক্য যুক্তিবাক্য নয় কেন?
উত্তর : যুক্তিবাক্যের নিয়ম অনুযায়ী গঠিত না হওয়ার কারণে সকল বাক্যকে যুক্তিবাক্য বলা যায় না।
একটি যুক্তিবাক্যে দুটি পদ থাকে। যথা- ১. উদ্দেশ্য পদ ও ২. বিধেয় পদ। উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ সংযোজকের দ্বারা যুক্ত হয়ে যুক্তিবাক্য গঠন করে। তাই যুক্তিবাক্য সবসময় উদ্দেশ্য সংযোজক-বিধেয়’ আকারে প্রকাশিত হয়। যেহেতু সকল বাক্য উদ্দেশ্য সংযোজক-বিধেয়’ আকারে প্রকাশিত হয় না, তাই সকল বাক্য যুক্তিবাক্য নয়।
১০. সার্বিক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য কেন?
উত্তর : সার্বিক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্যপদ সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হয়, তাই এটি ব্যাপ্য।
কোনো যুক্তিবাক্যে একটি পদ তার সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নিয়ে ব্যবহৃত হলে তাকে ব্যাপ্য পদ বলে। আবার, যে যুক্তিবাক্যে বিধেয় পদকে উদ্দেশ্য পদের সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাকে সার্বিক যুক্তিবাক্য বলে। সুতরাং সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ নির্দেশক পদকে যেহেতু ব্যাপ্য বলা হয়, সেহেতু সার্বিক যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য।
►► আরো দেখো: যুক্তিবিদ্যা ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ৩য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post