যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : যৌক্তিক সংজ্ঞার দ্বিতীয় নিয়মানুসারে, ‘কোনো পদের সংজ্ঞায় রূপক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না”। এই নিয়ম লঙ্ঘন করে কোনো পদের সংজ্ঞায় রূপক শব্দ ব্যবহার করলে সংজ্ঞাটি ত্রুটিপূর্ণ হবে। যেমন- ‘উট হচ্ছে মরুভূমির জাহাজ’। এখানে ‘উট’ পদের সংজ্ঞায় ‘মরুভূমির জাহাজ’ নামক রূপকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাই এখানে রূপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটেছে।
যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. বৃহত্তম জাতির সংজ্ঞা দেওয়া যায় না কেন?
উত্তর : পরতম বা সর্বোচ্চ পদ হওয়ার কারণে বৃহত্তম জাতির সংজ্ঞা দেওয়া যায় না।
বৃহত্তম জাতি হচ্ছে সর্বোচ্চ জাতি, যা অন্য কোনো জাতির উপজাতি নয়। এ কারণে এরূপ জাতির কোনো আসন্নতম জাতি থাকে না। আর সংজ্ঞায় যেহেতু আসন্নতম জাতির উল্লেখ থাকা অপরিহার্য, তাই আসন্নতম জাতি না থাকার কারণে বৃহত্তম জাতির সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব নয়।
২. মৌলিক গুণের সংজ্ঞা দেওয়া যায় না কেন?
উত্তর : মৌলিক গুণের অপরিহার্য অর্থ প্রকাশ করা যায় না বলে এ বিষয়ের কোনো সংজ্ঞাও দেওয়া যায় না।
ব্যক্তি বা বস্তুর বিভিন্ন মৌলিক গুণ রয়েছে। যেমন: তিক্ততা, মিষ্টতা, আনন্দ, বেদনা ইত্যাদি। এসব মৌলিক গুণের আসন্নতম জাতি ও বিভেদক লক্ষণ না থাকার কারণে অপরিহার্য অর্থ প্রকাশ করা যায় না। তাই এসব পদের যৌক্তিক সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব নয় ।
৩. ‘দ্রব্য’ পদটির কি যৌক্তিক সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব?
উত্তর : না, দ্রব্য পদটির সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব নয়।
আমরা জানি, দ্রব্য হলো সর্বোচ্চ জাতি। এর চেয়ে ব্যাপকতর জাতি নেই। পাশাপাশি এর কোনো আসন্নতম জাতিও নেই। তাই এ পদের সংজ্ঞা দেওয়া যায় না।
৪. যৌক্তিক সংজ্ঞার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : যৌক্তিক সংজ্ঞার দুটি বৈশিষ্ট্য হলো—
১. সংজ্ঞায় কোনো শ্রেণিবাচক পদের সমগ্র জাত্যর্থ বা মৌলিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয় ।
২. যৌক্তিক সংজ্ঞা সর্বদা একটি সমীকরণের নির্দেশনা দান করে। যথার্থ সংজ্ঞা সংজ্ঞেয় এবং সংজ্ঞার্থ পদের পরিধির সমান থাকে।
৫. ‘চেতনা’ পদের যৌক্তিক সংজ্ঞা দেওয়া যায় না কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সরলতম গুণ হওয়ার কারণে চেতনা পদের সংজ্ঞা দেওয়া যায় না।
সরল ও মৌলিক মানসিক প্রক্রিয়া হচ্ছে চেতনা, সুখ, দুঃখ ইত্যাদি । এগুলো হচ্ছে সরলতম গুণ। এদের যেমন বিশ্লেষণ করা যায় না তেমনি আবার অন্য কোনো গুণের সাথে মিশানোও যায় না বা তুলনাও করা যায় না। যে কারণে এদের সংজ্ঞা প্রদান করা যায় না।
৬. অবান্তর সংজ্ঞা অনুপপত্তি কখন ঘটে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : সংজ্ঞায় জাত্যর্থের অতিরিক্ত গুণ থাকলে এবং তা অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ (Inseparable Accident) হলে অবান্তর লক্ষণজনিত সংজ্ঞা অনুপপত্তি (Fallacy of Accidental Definition) ঘটে।
অবান্তর সংজ্ঞা এক প্রকার ভ্রান্ত সংজ্ঞা। এরূপ সংজ্ঞায় অতিরিক্ত গুণ হিসেবে অবান্তর লক্ষণ উল্লেখ করা হয়। যথা— মানুষ একটা হাস্যপ্রিয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব ৷ এ দৃষ্টান্তে ‘হাস্যপ্রিয়’ গুণটা মানুষের অবান্তর লক্ষণ। কাজেই এটি অবান্তর সংজ্ঞার দৃষ্টান্ত।
৭. ‘আলো নয় অন্ধকার’ – সংজ্ঞাটি সঠিক নয় কেন?
উত্তর : ‘আলো নয় অন্ধকার’ এই সংজ্ঞাটিতে যৌক্তিক সংজ্ঞার চতুর্থ নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে এটি সঠিক নয়।
যৌক্তিক সংজ্ঞার চতুর্থ নিয়মানুযায়ী, কোনো পদের সংজ্ঞায় নঞর্থক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। যেহেতু সংজ্ঞাটিতে যৌক্তিক সংজ্ঞার নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে, তাই সংজ্ঞাটি সঠিক নয়।
৮. রূপক সংজ্ঞা অনুপপত্তি কখন ঘটে?
উত্তর : কোনো পদের সংজ্ঞায় রূপক শব্দ ব্যবহার করলে রূপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটে ।
যৌক্তিক সংজ্ঞার দ্বিতীয় নিয়মানুসারে, ‘কোনো পদের সংজ্ঞায় রূপক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না”। এই নিয়ম লঙ্ঘন করে কোনো পদের সংজ্ঞায় রূপক শব্দ ব্যবহার করলে সংজ্ঞাটি ত্রুটিপূর্ণ হবে। যেমন- ‘উট হচ্ছে মরুভূমির জাহাজ’। এখানে ‘উট’ পদের সংজ্ঞায় ‘মরুভূমির জাহাজ’ নামক রূপকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাই এখানে রূপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটেছে।
৯. পাপ নয় পুণ্য— সংজ্ঞাটি সঠিক নয় কেন?
উত্তর : পাপ নয় পুণ্য— সংজ্ঞাটিতে নঞর্থক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণেই সংজ্ঞাটি সঠিক নয়।
আমরা জানি, যৌক্তিক সংজ্ঞার চতুর্থ নিয়মানুযায়ী কোনো পদের সংজ্ঞা সদর্থকভাবে দেওয়া সম্ভব হলে তাতে নঞর্থক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।’ এ নিয়মটি লঙ্ঘন করে কোনো পদের সংজ্ঞায় নঞর্থক ভাষা ব্যবহার করা হলে নঞর্থক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটে। যেমন- পাপ নয় পুণ্য। এখানে নেতিবাচক শব্দের ব্যবহারের ফলে নঞর্থক সংজ্ঞার উদ্ভব হয়েছে। এ কারণেই সংজ্ঞাটি সঠিক নয় ।
১০. ‘মানুষ একটা জীব’— সংজ্ঞাটিতে কোন দোষ ঘটেছে?
উত্তর : ‘মানুষ একটা জীব’- সংজ্ঞাটিতে অতিব্যাপক সংজ্ঞা দোষ ঘটেছে।
যৌক্তিক সংজ্ঞার প্রথম নিয়ম অনুসারে- ‘কোনো পদের সংজ্ঞায় পূর্ণ জাত্যর্থ উল্লেখ করতে হবে। এই নিয়ম অমান্য করে কোনো পদের সংজ্ঞায় আংশিক জাত্যর্থ উল্লেখ করলে সে পদের ব্যক্ত্যর্থ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে অতিব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটবে। যেমন- ‘মানুষ একটা জীব।
এখানে ‘মানুষ’ পদের সংজ্ঞায় ‘বুদ্ধিবৃত্তি’ গুণটি বাদ পড়েছে। ফলে মানুষ পদের জাত্যর্থ হ্রাস পাওয়ার বিপরীতে ব্যক্ত্যর্থ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে অতিব্যাপক সংজ্ঞাজনিত অনুপপত্তি ঘটেছে।
►► আরো দেখো: যুক্তিবিদ্যা ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ১ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post