যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : একটি ঘটনা যথাযথভাবে নিরীক্ষণ না করে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে যে ভ্রান্তি ঘটে, তাকে অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি বলে। যেমন- কয়েকজন লম্বা লোককে নিরীক্ষণ করে দেখা গেল যে, তাদের বুদ্ধি কম। এ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো যে, সব লম্বা লোকের বুদ্ধি কম। এরূপ দৃষ্টান্তে অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি ঘটবে। কারণ যেসব লম্বা লোক বুদ্ধিমান তাদের অনিরীক্ষিত রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয় কেন?
উত্তর : ব্যতিরেকী পদ্ধতির দৃষ্টান্তসমূহ পরীক্ষণের সাহায্যে সংগৃহীত বলে একে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলে।
ব্যতিরেকী পদ্ধতিতে যে দৃষ্টান্তের প্রয়োজন তা কেবল পরীক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া যায়। আমরা জানি, ব্যতিরেকী পদ্ধতিতে দুটি দৃষ্টান্ত থাকে। যথা- সদর্থক দৃষ্টান্ত ও নঞর্থক দৃষ্টান্ত। সদর্থক দৃষ্টান্তে আলোচ্য ঘটনাটির মূল বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকে এবং নঞর্থক দৃষ্টান্তে তা অনুপস্থিত থাকে। উভয় দৃষ্টান্ত পরীক্ষণের সাহায্যে সংগ্রহ করা হয়। এ কারণে বলা হয়, ব্যতিরেকী পদ্ধতি হলো পরীক্ষণের পদ্ধতি।
২. দৃষ্টান্তের অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি ঘটে কেন?
উত্তর : কোনো বিষয় নিরীক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় সকল অবস্থা নিরীক্ষণ না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে দৃষ্টান্তের অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি ঘটে।
একটি ঘটনা যথাযথভাবে নিরীক্ষণ না করে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে যে ভ্রান্তি ঘটে, তাকে অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি বলে। যেমন- কয়েকজন লম্বা লোককে নিরীক্ষণ করে দেখা গেল যে, তাদের বুদ্ধি কম। এ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো যে, সব লম্বা লোকের বুদ্ধি কম। এরূপ দৃষ্টান্তে অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি ঘটবে। কারণ যেসব লম্বা লোক বুদ্ধিমান তাদের অনিরীক্ষিত রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
৩. পরিশেষ পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।
উত্তর : পরিশেষ পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হলো-
১. পরিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। যার এ পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, সে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারে না।
২. পরিশেষ পদ্ধতিকে কোনো একক কার্য বা কারণের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না। এই পদ্ধতি জটিল বা মিশ্র ঘটনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও কোনো একক ঘটনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না।
৪. অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি কখন ঘটে?
উত্তর : কোন একটি বিষয় নিরীক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় সকল অবস্থা নিরীক্ষা না করে, বিশেষ করে প্রতিকূল দৃষ্টান্ত নিরীক্ষণ না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি ঘটে।
কোনো ঘটনা যথাযথভাবে নিরীক্ষণ না করে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে যে ভ্রান্তি ঘটে, তাকে অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি বলে। যেমন- কয়েকজন লম্বা লোককে নিরীক্ষণ করে দেখা গেল যে, তাদের বুদ্ধি কম। এ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো যে, সব লম্বা লোকের বুদ্ধি কম। এক্ষেত্রে দৃষ্টান্তের অনিরীক্ষণ অনুপপত্তি ঘটবে। কারণ যেসব লম্বা লোক বুদ্ধিমান তাদেরকে অনিরীক্ষিত রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
৫. সহ-কার্যকারণজনিত অনুপপত্তি কখন ঘটে?
উত্তর : কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন দুটি কার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সহ-কার্যকারণজনিত অনুপপত্তি ঘটে।
কার্যকারণ নিয়ম অনুযায়ী কারণ ও কার্যের মধ্যে অপরিহার্য সম্পর্ক বিদ্যমান। আর কারণ থাকে আগে এবং কার্য থাকে কারণের পরে। কিন্তু অনেক সময় দুটি সহকার্যকে ঘটতে দেখে একটিকে অন্যটির কারণ মনে করা হয়। এভাবে কার্যকারণ সম্পর্কবিহীন দুটি কার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা ত্রুটিপূর্ণ হয় । এই ত্রুটিকেই সহকার্যকে কারণ হিসেবে গ্রহণ সংক্রান্ত অনুপপত্তি বলে।
৬. কারণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো ঘটনার পূর্ববর্তী অবস্থাকে কারণ বলে।
প্রত্যেক কার্য সংগঠনের পিছনে সুনির্দিষ্ট কারণের উপস্থিতি লক্ষণীয়। তাই কারণ হলো কার্যের অপরিবর্তনীয় শর্ত নিরপেক্ষ ও সাক্ষাৎ পূববর্তী ঘটনাবলির সমষ্টি। এক কথায়, প্রকৃতিগত দিক থেকে কারণ হলো সদর্থক ও নঞর্থক শর্তসমূহের সমষ্টি। পাশাপাশি পরিমাণগত দিক থেকে কারণ ও কার্য সমান।
৭. অন্বয়ী পদ্ধতিকে নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয় কেন?
উত্তর : ‘অন্বয়’ শব্দের অর্থ মিল। আমরা জানি, অন্বয়ী পদ্ধতি অনুযায়ী মিলের বা সাদৃশ্যের ভিত্তিতে নিরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। অর্থাৎ এ পদ্ধতির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত দৃষ্টান্তসমূহ প্রাকৃতিক পরিবেশে বিদ্যমান থাকে এবং এই দৃষ্টান্তসমূহ নিরীক্ষণ করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ কারণেই অন্বয়ী পদ্ধতিকে নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।
৮. সহকার্যে কারণ হিসেবে গ্রহণজনিত অনুপপত্তি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : হিসেবে বিবেচিত হয়। যদি কোনো ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে পূর্ববর্তী বিষয়টি কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয় তাহলে সহকার্যকে কারণ হিসেবে গ্রহণজনিত অনুপপত্তি সৃষ্টি হয়। যেমন- রাতের পর দিন আসে, এটি একটি অপরিবর্তনীয় পূর্ববর্তী ঘটনা। এক্ষেত্রে যদি সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, রাত হলো দিনের কারণ তবে সেক্ষেত্রে সহকার্যকে কারণ হিসেবে গ্রহণজনিত অনুপপত্তি ঘটতে পারে।
৯. কাকতালীয় অনুপপত্তি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : কাকতালীয় অনুপপত্তি হলো ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়োগের ফল।
কোনো পরিবর্তনশীল দৃষ্টান্তকে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনার কারণ হিসেবে অনুমান করলে যে ভ্রান্তি হয়, তাকে কাকতালীয় অনুপপত্তি বলে। যেমন- আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাবের পর রাজার মৃত্যু হওয়ায় মনে করা হলো, ধূমকেতুর আবির্ভাবই রাজার মৃত্যুর কারণ। কিন্তু বাস্তবে ধূমকেতুর আবির্ভাবের সাথে পৃথিবীর বুকে রাজার মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো কার্যের নিছক একটি পূর্ববর্তী ঘটনাকেই এর কারণ বলে মনে করায়। যুক্তিটিতে কাকতালীয় অনুপপত্তি ঘটেছে।
১০. সার্বিক সত্য প্রতিষ্ঠায় কার্যকারণ নীতি দরকার হয় কেন?
উত্তর : কার্যকারণ হচ্ছে কারণ ও কার্যের মধ্যে একটি অনিবার্য সম্পর্ক যার মাধ্যমে কোনো ঘটনা বা বিষয়ের সত্যতা যাচাই করা হয়। যেমন- একটি লোক বিষপান করেছে এবং বিষের প্রভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং বিষপান হচ্ছে লোকটির মৃত্যুর কারণ। এখানে বিষপান ও মৃত্যুর ঘটনার সাথে যে অপরিহার্য সম্পর্ক প্রকাশ পেয়েছে তা-ই কার্যকারণ সম্পর্ক। এভাবে কোনো সার্বিক সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকারণ নীতি দরকার হয়।
►► আরো দেখো: যুক্তিবিদ্যা ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post