যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৭ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : যৌক্তিক বিভাগের প্রথম নিয়মানুযায়ী, শ্রেণিবাচক পদকে বিভক্ত করা গেলেও কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বিভক্ত করা যায় না। কিন্তু এ নিয়ম অমান্য করে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে তার বিভিন্ন গুণে বিভক্ত করা হলে গুণগত বিভাগ নামক অনুপপত্তি ঘটে। যেমন- আমকে বর্ণ, আকৃতি, গন্ধ ও স্বাদে বিভক্ত করলে গুণগত বিভাগ নামক অনুপপত্তি ঘটে। এই কারণে বলা হয়, গুণগত বিভাগ যৌক্তিক বিভাগ নয় ।
যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৭ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. পরিবর্তনশীল বস্তুর শ্রেণিকরণ করা যায় না কেন?
উত্তর : পরিবর্তনশীল বস্তুর গুণ অস্থায়ী বলে তার শ্রেণিকরণ করা যায় না।
সাধারণত কোনো বস্তু বা ঘটনাসমূহের শ্রেণিকরণ করার সময় স্থায়ী ও আবশ্যিক গুণ বিবেচনা করা হয়। কিন্তু যেসব বস্তুর গুণ নিয়ত পরিবর্তনশীল এবং এক বস্তুর গুণ অন্য বস্তুর মধ্যে নিহিত থাকে তাদের শ্রেণিকরণ করা যায় না।
২. ক্রমিক শ্রেণিকরণ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : গুণের মাত্রার ভিত্তিতে কোনো বস্তু বা ঘটনাবলির শ্রেণিকরণ প্রক্রিয়াকে বলে ক্রমিক শ্রেণিকরণ ।
ক্রমিক শ্রেণিকরণে বিভক্ত শ্রেণির মধ্যে একই গুণ ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় বিদ্যমান থাকে। যেমন- মানুষ, অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদ সবার মধ্যেই জীবন আছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে জীবনের প্রকাশ সবচেয়ে বেশি, অন্যান্য প্রাণীতে জীবনের প্রকাশ কিছুটা কম এবং ‘নিশ্চল’, উদ্ভিদে জীবনের প্রকাশ সবচেয়ে কম। সুতরাং ‘জীবনের মাত্রা অনুসারে উক্ত উপাদানগুলোকে ক্রমানুসারে সাজালে প্রথমে মানুষ, মাঝখানে প্রাণী এবং শেষে থাকে উদ্ভিদ। এভাবেই ক্রমিক শ্রেণিকরণে একই গুণবিশিষ্ট কোনো বিষয়কে কেবল ‘গুণের মাত্রা’ অনুসারে শ্রেণিকরণ করা হয়।
৩. দূরবর্তী কোনো ঘটনাকে কারণ বলা যায় না কেন?
উত্তর : দূরবর্তী কোনো ঘটনার মধ্যে কারণের মূল বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত থাকে। এ কারণে দূরবর্তী ঘটনাকে কার্যের কারণ বলা যায় না।
কারণ হচ্ছে কোনো কার্যের অব্যবহিত পূর্ববর্তী সংশ্লিষ্ট ঘটনা। কিন্তু অনেক সময় আমরা কোন দূরবর্তী শর্তকে কারণ বলে গ্রহণ করে থাকি। আর এর ফলে অনুপপত্তি ঘটে। বস্তুত কারণ কার্যকে সংঘটিত করে। তাই কারণ হলো পূর্ববর্তী ঘটনা, আর কার্য হলো পরবর্তী ঘটনা। কোন কার্য সংঘটিত হওয়ার পূর্বে অনেকগুলো শর্ত থাকতে পারে। কিন্তু কার্য সংঘটিত হওয়ার পূর্বের অব্যবহিত ঘটনাই হবে কারণ। দূরবর্তী ঘটনা কোনো কার্যের শর্ত হতে পারে না।
৪. পরিবর্তনশীল বস্তুর শ্রেণিকরণ সম্ভব নয় কেন?
উত্তর : পরিবর্তনশীল বস্তুর গুণ অস্থায়ী। তাই এরূপ বস্তুর শ্রেণিকরণ করা যায় না।
সাধারণত কোনো বস্তু বা ঘটনাসমূহের শ্রেণিকরণ করার সময় স্থায়ী ও আবশ্যিক গুণ বিবেচনা করা হয়। কিন্তু যেসব বস্তুর গুণ নিয়ত পরিবর্তনশীল এবং এক বস্তুর গুণ অন্য বস্তুর মধ্যে নিহিত থাকে, তাদের শ্রেণিকরণ করা যায় না।
৫. ‘গুণগত বিভাগ যৌক্তিক বিভাগ নয়’– কেন?
উত্তর : গুণগত বিভাগে যৌক্তিক বিভাগের নিয়ম অনুসরণ করা হয় না বলে তা যৌক্তিক বিভাগ নয় ।
যৌক্তিক বিভাগের প্রথম নিয়মানুযায়ী, শ্রেণিবাচক পদকে বিভক্ত করা গেলেও কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বিভক্ত করা যায় না। কিন্তু এ নিয়ম অমান্য করে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে তার বিভিন্ন গুণে বিভক্ত করা হলে গুণগত বিভাগ নামক অনুপপত্তি ঘটে। যেমন- আমকে বর্ণ, আকৃতি, গন্ধ ও স্বাদে বিভক্ত করলে গুণগত বিভাগ নামক অনুপপত্তি ঘটে। এই কারণে বলা হয়, গুণগত বিভাগ যৌক্তিক বিভাগ নয় ।
৬. শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্য উল্লেখ করো।
উত্তর : শ্রেণিকরণের দুটি উদ্দেশ্য আছে ।
যুক্তিবিদরা শ্রেণিকরণের দুটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করেন। যথা— সাধারণ বা বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য এবং বিশেষ বা ব্যবহারিক উদ্দেশ্য। যে কোনো ব্যক্তি এই দুটি উদ্দেশ্যের মাধ্যমে শ্রেণিকরণ করে থাকে।
৭. পরতম জাতির শ্রেণিকরণ করা যায় না কেন?
উত্তর : পরতম জাতি থেকে ব্যাপকতর অন্য কোনো জাতি নেই বলে এরূপ জাতির শ্রেণিকরণ করা যায় না।
পরতম জাতি হচ্ছে সর্বোচ্চ জাতি, যাকে অন্তর্ভুক্ত করার মতো ব্যাপক অন্য কোনো জাতি বা স্তর নেই। এ কারণে সর্বোচ্চ জাতি হিসেবে পরতম জাতির শ্রেণিকরণ করা সম্ভব হয় না। যেমন: দ্রব্য হচ্ছে একটি পরতম জাতি। দ্রব্যকে আর অন্য কোনো জাতির অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। সুতরাং এর শ্রেণিকরণ করাও অসম্ভব।
৮. শ্রেণিকরণ একটি মানসিক প্রক্রিয়া— ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : শ্রেণিকরণ প্রক্রিয়াটি ব্যক্তি কাল্পনিকভাবে সম্পন্ন করে বলে একে মানসিক প্রক্রিয়া বলা হয়।
শ্রেণিকরণের মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো, এটি একটি মানসিক প্রক্রিয়া যেমন- পদার্থ কঠিন, তরল ও বায়বীয় এই তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত। এ বিভক্তকরণ প্রক্রিয়া মানসিক চিন্তার ফল। যেমন- একজন ছাত্র তার সমস্ত বই গুরুত্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন তাকে () সাজিয়ে রাখে। তার এই সাজিয়ে রাখার প্রক্রিয়া মানসিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য বলা হয় শ্রেণিকরণ একটি মানসিক প্রক্রিয়া।
৯. বৃহত্তম বা পরতম জাতিকে কি শ্রেণিকরণ করা যায়?
উত্তর : বৃহত্তম বা পরতম জাতি থেকে ব্যাপকতর অন্য কোনো জাতি নেই বলে এরূপ জাতির শ্রেণিকরণ করা যায় না
পরতম জাতি হচ্ছে সর্বোচ্চ জাতি। এই জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করার মতো অন্য কোনো জাতি বা স্তর নেই। এ কারণে সর্বোচ্চ জাতি হিসেবে পরতম জাতির শ্রেণিকরণ করা সম্ভব হয় না।
১০. আরোহের আকারগত ভিত্তি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : যে সব বিষয়ের ওপর নির্ভর করে আরোহের আকারগত দিক গড়ে ওঠে তাকে আরোহের আকারগত ভিত্তি বলে।
আরোহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ দৃষ্টান্তের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি সার্বিক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়। অর্থাৎ, আরোহ অনুমান হলো বিশেষ থেকে সার্বিকে গমনের একটি প্রক্রিয়া। আর আরোহ অনুমানে বিশেষ থেকে সার্বিকে গমন করা হয় প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতে। তাই এই দুটি বিষয় আরোহের আকারগত ভিত্তি।
►► আরো দেখো: যুক্তিবিদ্যা ১ম ও ২য় পত্রের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরের Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র ৭ম অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসহ সংগ্রহ করে নাও।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post