কোন রোগ হলে চিকিৎসা নেওয়া যেমন নবী (সাঃ) এর সুন্নত। তেমনই চিকিৎসার পাশাপাশি কোরআন ও হাদিসে অনেক রোগ মুক্তির দোয়া দেওয়া রয়েছে। নবীজি (সাঃ) এর যুগ হতে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি সেসব দোয়া পড়ার নিয়ম রয়েছে।
রোগ থেকে মুক্তির জন্য কিংবা অন্য কোন ধরনের দোয়া করার উত্তর সময় হচ্ছে দোয়া কবুলের সময়গুলোতে দোয়া করা। বিশেষ করে বৃষ্টির সময়, ইফতারের সময় বা নামাজ পড়ে দোয়া কুনুত সহকারে আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া। উক্ত সময়গুলো হচ্ছে দোয়া কবুলের উত্তম সময়।
বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের দোয়া রয়েছে। তা হতে পারে পেট ব্যথা বা মাথা ব্যথা কমানোর দোয়া। আবার এমনও কিছু দোয়া রয়েছে যে দোয়াগুলো যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে পাঠ করে আল্লাহর কাছে সুস্থতা প্রার্থনা করা হয়।
রোগ মুক্তির দোয়া
তাফসির আল কুরতুবিতে বলা হয়েছে, “সে ব্যক্তির শেফা নেই, যে ব্যক্তি কোরআনের মাধ্যমে আরোগ্য লাভের উপায় খোঁজ করে না” (১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা ২৩৫)।
রোগ হলে ইসলামে রোগ থেকে মুক্তির জন্য চিকিৎসা নেওয়া কথা বলা হয়েছে। শুধু চিকিৎসা নেওয়ায় না, যে কোন ধরনের বিপদ আপদ বা রোগ হলে আল্লাহর কাছে দোয়ার কথাও বলা হয়েছে। চলুন সেগুলো জেনে আসা যাক।
১. সূরা ফাতিহা পাঠ করা
রোগমুক্তির জন্য সবচেয়ে উপকারী আমল হচ্ছে সূরা ফাতিহা পাঠ করা। সূরা ফাতিহাকে কোরআনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রোগমুক্তি সহ বিভিন্ন কাজে সূরা ফাতিহার ব্যবহার রয়েছে।
২. সূরা হা-মীম আয়াত নং ৪৪ পাঠ করা
আরবি: قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ
উচ্চারণ: কুল হুওয়া লিল্লাযিনা আমানূ হুদাও ওয়া শিফাউন।
অর্থ: বলুন, এটা যারা বিশ্বাস করে এটা তাদের জন্য জন্য রোগের প্রতিকার ও হেদায়েত।
৩. সূরা আশ-শেফা এর ৮০ নং আয়াত পাঠ করা
আরবি: وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
উচ্চারণ: ওয়া ইজা মারিদতু ফা হুয়া ইয়াশফি-নি।
অর্থ: এবং, যখন আমি রোগে আক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
৪. সূরা বনী ইসরাইল এর আয়াত নং ৮২ পাঠ করা
আরবি: وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ: ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল ক্বুরআ’নি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতিুল লিলমু’মিনি-ন।
অর্থ: আমি (আল্লাহ তায়ালা বলেছেন) কোরআনে এমন বিষয়সমূহ নাযিল করি তা মুমিনের জন্য রহমত ও রোগের সুচিকিৎসা।
৫. সূরা ইউনুসের আয়াত নং ৫৭ পাঠ করা
আরবি: وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ: ওয়া শিফাউ’ল লিমা- ফিচ্ছুদু-রি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল মু’মিনি-ন।
অর্থ: হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য এবং অন্তরের রোগের নিরাময়।
৬. সুরা তাওবার ১৪ নম্বর আয়াত
আরবি: وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ: ওয়া ইয়াশফি ছুদু-রা ক্বাওমিম মু’মিনিন।
অর্থ: আল্লাহ মুমিনদের অন্তরসমূহ শান্ত করে দেন।
৭. সূরা শুয়ারার আয়াত নং ৮০ পাঠ করা
আরবি: وَاِذَا مَرِضۡتُ فَهُوَ يَشۡفِيۡنِ ۙ
উচ্চারণ: ওয়া ইজা মারিদতু ফা হুয়া ইয়াশফি-নি
অর্থ: আর আমি যখন রোগাক্রান্ত হয়ে থাকি তখন তিনিই আমাকে আরোগ্য দান করেন।
শেষ কথা
কোরআন ও হাদিসে রোগ মুক্তির দোয়া অনেকগুলোই রয়েছে। তবে আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়ার জন্য, দোয়া কবুলের সময়গুলোতে দু’রাকআত সুন্নত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে হয়। কিংবা তাহাজ্জুদে একান্তে আল্লাহর দরকারে দোয়া চাইতে হয়।
Discussion about this post