রোজ শব্দের অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা। সুবহে সাদিকে রোজার নিয়ত করে সেহেরি করার মাধ্যমে রোজার শুরু হয়। সারাদিন পানাহার হতে বিরত থেকে ইফতারের দোয়া বলে ইফতার করার মাধ্যমে একটি রোজা শেষ হয়। শুধু পানাহার হতে বিরত থাকলেই যে রোজা হয়ে গেলো এমনটা নয়। রোজা ভঙ্গের কারণ অনেকগুলো রয়েছে। যেই কাজগুলো করলে পানাহার হতে বিরত থাকা সত্বেও আপনার রোজা হবে না।
নতুন বছরে রোজার মাস শুরু হওয়ার পরপরই মুসলিম ধর্মের মানুষেরা রোজা দেওয়া শুরু করে। রোজা শুরুর আগে হতে রোজা দেওয়ার সকল নিয়ম কানুন জেনে নিতে হয়। সকল নিয়ম কানুন না জানলে অনেক সময় রোজা ভঙ্গ হলেও অনেকে বুঝতেও পারবেন না যে তার রোজা ভঙ্গ হয়েছে।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিনা কারণে একটি রোজা নষ্ট করলো সে ব্যক্তি যদি তারা পুরো জীবন রোজা রাখে তাও সে ঐ একটি রোজার ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না। তাই রোজা রাখলে কি কি কারণে রোজা নষ্ট হয় তা জানার পরে সেগুলো হতে বিরত থাকাই উত্তম।
রোজা ভঙ্গের কারণ
কোরআন ও হাদিসে রোজা ভঙ্গ করার জন্য অনেক কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আজকে আমরা সেগুলোর মধ্যে হতে কিছু কারণের কথা বলবো যে কারণে মানুষের রোজা সাধারণত বেশী ভেঙ্গে থাকে।
রোজা ভঙ্গ হওয়ার কারণসমূহ হচ্ছে:
১. কোন খাদ্য বা পানীয় মুখে গিয়েছে এই ধারণা পোষণ করে ইচ্ছে করে কোনকিছু খেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
২. সিগারেট, বিড়ি কিংবা হুঁকা সেবন করলে রোজা ভেঙে যায়।
৩. ইচ্ছা করে বমি করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
৪. মুখে বমি আসার পর তা গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায়।
৫. মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাব হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
৬. শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কিংবা গ্লুকোজ জাতীয় ইনজেকশন দিলে রোজা ভেঙ্গে গিয়ে থাকে।
৭. প্রস্রাব কিংবা পায়খানার কোন ধরনের ঔষধ কিংবা কোন কিছু প্রবেশ করালে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
৮. ইফতার এর সময় হওয়ার আগে ইফতার এর সময় হয়েছে এই ভেবে সূর্যাস্ত হওয়ার আগে ইফতার করলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
৯. বৃষ্টির পানি কিংবা বরফের টুকরা মুখের পড়ার পরে তা খাদ্যনালীর মাধ্যমে ভীতরে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
১০. নাক কিংবা কানের মাধ্যমে শরীরে কোন ঔষধ প্রবেশ করালে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
১১. দাঁতের ফাকা অংশ হতে জিহ্বার মাধ্যমে কোন খাবার খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
১২. রোজা আছেন মনে থাকা অবস্থায়, অযু করার সময় কুলি কিংবা নাকে পানি দেওয়ার মাধ্যমে পানি কণ্ঠনালীতে চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
১৩. দাঁত হতে রক্ত বের হওয়ার পর যদি রক্তের চেয়ে থুথুর পরিমাণ কম হয় এবং সেই থুথু ও রক্ত মুখের ভীতরে চলে যায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
১৪. সুবহের সাদিকের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর সুবহে সাদিক মনে করে সেহরি খাওয়া করলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
১৫. রোজা রেখে সহবাস করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
শেষ কথা
রোজা রাখলে রোজার নিয়ম-কানুন ও রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো জানার পরেই রোজা দেওয়া উচিত। যদি রোজার নিয়ম কানুন না জানেন তাহলে এমনও হতে পারে যে, আপনার রোজা নষ্ট হয়ে গেছে কিন্তু রোজা আছে মনে করে আপনি রোজা চালিয়ে গেলেন। যার কারণে আপনি কাজাও আদায় করবেন না। তাই রোজা রাখার আগে রোজার সকল নিয়ম ও রোজা ভঙ্গ হওয়ার কারণগুলো জেনেই রোজা দেওয়া উচিত।
Discussion about this post