লালসালু উপন্যাসের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : মজিদ সচ্ছলভাবে বেঁচে থাকার জন্য মধুপুর ছেড়ে নতুন আশায় মহব্বতনগর গ্রামে এসেছে। তার মূল সিদ্ধান্ত হলো টিকে থাকা ও সচ্ছলভাবে বেঁচে থাকার জন্য যা করা প্রয়োজন, তাই তাকে করতে হবে। ন্যায়-অন্যায়, সুনীতি, দুর্নীতি হলো মানুষেরই সৃষ্টি, কিন্তু সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিতে তারও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তাই সে মিথ্যা প্রতারণার কথা জেনেও এই কঠিন দুঃসাহসী কাজে নেমে পড়ে।
আওয়ালপুর গ্রামে হঠাৎ একজন পীরের আগমন ঘটে। কৌতূহলবশত মজিদও সেখানে যায়। সেখানে গিয়ে মজিদ পীর সাহেবের জনপ্রিয়তা দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। তাকে কেউ সেখানে গ্রাহ্য করে না। এমনকি যারা তাকে চেনে ভক্তি করে তারাও সেদিন তার দিকে ফিরে তাকায় না। পীরের নানা কেরামতির কথা সে শুনতে পায় তারপর যখন সে দেখে অসময়ে নামাজ পড়তে পীর সাহেব হুকুম দিয়েছে তখন সে সুযোগ কাজে লাগায়। সে পীরের কেরামতির অসারতা প্রমাণের জন্যে উক্ত উক্তিটি করে।
লালসালু উপন্যাসের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন-১: ওয়াসিকা গ্রামের এক দুরন্ত মেয়ে। বন্ধুদের সঙ্গে ছুটোছুটি করা, অবাধে সাঁতার কাটা তার আনন্দের কাজ। তার বাবা অভাবের তাড়নায় ওয়াসিকাকে পাশের গ্রামের এক বুড়ো লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন। লোকটি গ্রামের মাতব্বর। তাকে সবাই একাব্বর মুন্সি বলে ডাকে। মুন্সির কথা গ্রামের সবাই মানলেও চঞ্চল ও স্বাধীনচেতা ওয়াসিকা তার কথা মানে না।
ক. ধলা মিয়া কেমন ধরনের মানুষ ছিল?
খ. ‘সজোরে নড়তে থাকা পাখাটার পানে তাকিয়ে সে মূর্তিবৎ বসে থাকে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ওয়াসিকা ‘লালসালু’ উপন্যাসের জমিলার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের একাব্বর মুন্সি ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদ চরিত্রের সামগ্রিক দিক ধারণ করেনি-মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-২: মফিজ আলীর কোনো স্থির পেশা ছিল না। তার বাবা আরজ আলী ভূমিহীন কৃষক ছিল। ছেলেকে তিনি কলেজে পড়ানোর জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন। ঢাকায় গিয়ে মফিজ পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। কথায় কথায় বলে আল্লাহ বলে কেউ নেই। এক সময় তার বাবা টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। দেখতে দেখতে তার চাকরির বয়সও শেষ হয়ে যায়। তারপর সে ফিরে আসে তার গ্রামে। মফিজ আলীর বর্তমান নাম হযরত শাহ সুফী মফীজ আলী ফরিদপুরী (র.)। কামেল পীর হিসেবে তার খ্যাতি এখনও দেশ জোড়া।
ক. সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. ‘তাই তারা ছোটে, ছোটে।’ কেন ছোটে?
গ. উদ্দীপকের মফিজ আলীর সাথে মজিদের তুলনামূলক আলোচনা কর।
ঘ. সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ‘লালসালু’ উপন্যাসে মজিদ চরিত্রের মধ্য দিয়ে কী ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তা ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-৩: কাশেম মুন্সি মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে যখন চাকরি নিয়েছিল পনেরো বছর আগে, তখনও সে বিয়ে করেনি। ইতোমধ্যে সে বিয়ে করেছে, তিন কন্যা এবং দুটি পুত্রের পিতা হয়েছে কিন্তু বেতন বেড়ে মাত্র দুই হাজার টাকা হয়েছে। সামান্য টাকায় তার সংসার চলে না। কাশেম মুন্সি তাই বাড়তি আয়ের জন্যে গরিব মানুষকে ‘পানিপড়া’ দেয়, যদিও সে জানে এতে কোনো কাজ হয় না এবং এটা অনৈসলামিক কাজ; তবু সে এটা করে। কাজটা করতে তার খারাপ লাগে, তবু সে করে।
ক. মতলুব খাঁ কে?
খ. ‘মজিদ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। যোগসূত্র হচ্ছে রহিমা।’Ñ কেন?
গ. উদ্দীপকের কাশেম মুন্সি চরিত্রটির সাথে মজিদ চরিত্রের মিল-অমিল কোথায়?
ঘ. ‘লালসালু’ উপন্যাস পাঠ করে মজিদ চরিত্রটি সম্পর্কে তোমার কি ধরনের প্রতিক্রিয়া জেগেছে?
সৃজনশীল প্রশ্ন-৪: বিধবা, নিঃসন্তান জয়তুন বেগমের সংসার আর চলছিল না। একদিন মাঝরাতে তিনি চিৎকার করে ঘুম থেকে জেগে উঠলেন এবং তারপর থেকেই তার সব আচরণ অস্বাভাবিক। দয়ারামপুর গ্রামের মানুষ বলাবলি করছে, স্বপ্নে তিনি এক বুজুর্গ ব্যক্তির কামিয়াবি হাসিল করেছেন। সবাই তার কাছে পানিপড়া আনতে যায়। জয়তুন বেগমের আয় রোজগার মাশাল্লা মন্দ নয়।
ক. ‘সালু’ শব্দের অর্থ কী?
খ. হাসুনির মা দ্বিতীয় বিয়ে করতে অনাগ্রহী কেন?
গ. মজিদ এবং উদ্দীপকের জয়তুন বেগমের তুলনামূলক আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত জয়তুন বেগম চরিত্রটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-৫: প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা ফজিলাতুন নেসা বড্ড ঘুমকাতুরে। নয়টা পাঁচটা অফিস করে বাসায় ফিরলেই তার ঘুম পায়। পনেরো বছর যাবৎ তিনি সংসারের ঘানি টানছেন। স্বামী আবিদুর রহমান এম.এসসি পাস হলেও ঘরে বসে থাকেন। চাকরি নাকি পরের গোলামি। তার কাজ সারাদিন টেলিভিশনে হিন্দি নাচগান দেখা। গতকাল এশার নামাজ না পড়েই ফজিলাতুন নেসা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলে আবিদুর রহমান তাকে অনেক গালমন্দ করেন। ভদ্রমহিলা সারারাত নফল নামাজ পড়ে পরের দিন অফিসে গেছেন।
ক. মহব্বতনগর গ্রামে মজিদকে সবার আগে কে দেখেছিল?
খ. আমেনা বিবির পা দেখে মজিদের গলার কারুকার্য আরো সূক্ষ্ম হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের ফজিলাতুন নেসার সাথে ‘লালসালু’ উপন্যাসের রহিমা চরিত্রটির তুলনামূলক আলোচনা কর।
ঘ. ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর ‘লালসালু’ উপন্যাসে রহিমা চরিত্রটি কীভাবে উপস্থাপন করেছেন তা বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-৬: শামীমা সুলতানা একজন গৃহিণী। তার স্বামী আলমাস আলী কৃষিকাজ করে। এই দম্পতির কোনো সন্তানাদি নেই। বিয়ের বারো বছরের পরেও শামীমা সুলতানার গর্ভে কোনো সন্তানাদি না হওয়ায় আলমাস আলী স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করে। দ্বিতীয় স্ত্রী কুলসুম একটি পুত্র সন্তান জন্ম দিলে সংসারে অশান্তি দেখা দেয়।
ক. সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’র পিতার নাম কী?
খ. মজিদের দ্বিতীয় বিবাহে আগ্রহের কারণ কী?
গ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের রহিমা এবং উদ্দীপকের শামীমা সুলতানা চরিত্র দুটির মধ্যে মিল ও অমিল কী?
ঘ. উদ্দীপকের মধ্যে বাঙালি সমাজের কী ধরনের ছাড়াপতা ঘটেছে। বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-৭: সিএনজি ড্রাইভার আবুল মিয়া তার স্ত্রী হাসনা বানুকে নিয়ে কালাচানপুরে থাকে। বিয়ে করার সাত বছর পরেও তাদের যখন ছেলেপুলে হয় না, তখন আবুল মিয়া দ্বিতীয় বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। হাসনা বানু বেঁকে বসে। সে চায়, আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করে দেখা হোক, সমস্যাটা কার, তার নিজের নাকি তার স্বামী আবুল মিয়ার। এই নিয়ে প্রবল পারিবারিক বিবাদ চলে।
ক. হাসপাতালটি কোথায় অবস্থিত?
খ. ধলা মিঞা আওয়ালপুরের পীরের কাছে পানিপড়া আনতে অনিচ্ছুক কেন?
গ. রহিমা এবং উদ্দীপকের হাসনা বানু চরিত্রটির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।
ঘ. ‘লালসালু’ উপন্যাসের সামাজিক বাস্তবতা এবং উদ্দীপকের সামাজিক বাস্তবতার ভিন্নতার প্রেক্ষাপট কী?
সৃজনশীল প্রশ্ন-৮: আমার ধারণা-দুই দলের এই বিরোধের প্রধান কারণ দুইটি : তার একটি মোল্লাদের মধ্যে নিহিত, আর একটি তরুণদের মধ্যে। মোল্লাদের দোষ এই-তাহারা নূতনের বিরোধী; তরুণ-দলের দোষ এই- তাহারা পুরাতনের বিরোধী। মোল্লা-দল ভাবে : নূতন যাহা সমস্তই অনৈসলামিক। তাহাদের বিশ্বাস : নূতন-কিছু আসিলেই ইসলামকে কিছু-না-কিছু ক্ষতি না করিয়াই যাইবে না। এই উদ্ভট সজাগ বুদ্ধি তাহাদের মনের এক মস্তবড় দুর্বলতা। উদ্দেশ্য সাধু ও মহৎ হইতে পারে, কিন্তু এর মধ্যে একটা কাপুরুষতা লুক্কাইয়া আছে।
ক. গ্রামে স্কুল বসাতে চায় কে?
খ. ‘তোমার দাড়ি কই মিয়া’ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘লালসালু’ উপন্যাসের কোন বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের মোল্লাদের এবং ‘লালসালু’ উপন্যাসের মজিদের চেতনাগত বৈশিষ্ট্য একই।” মন্তব্যটি বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন-৯: পীর সাহেব তাঁর প্রধান খলিফার রুহে শেষ পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদের রুহ-মোবারক নাযেল করিবার জন্য ঠিক তাঁর সামনে বসিলেন।শাগরেদরা চারিদিক ঘিরিয়া বসিয়া মিলিত কণ্ঠে সুর করিয়া দরুদ পাঠ করিতে লাগিলেন। পীর সাহেব কখনও জোরে কখনও বা আস্তে নানা প্রকার দোয়া-কালাম পড়িয়া সুফী সাহেবের চোখে-মুখে ফুঁকিতে লাগিলেন। কিছুক্ষণ ফুঁকিবার পর শাগরেদগণকে চুপ করিতে ইঙ্গিত করিয়া পীর সাহেব বুকে হাত বাঁধিয়া একদৃষ্টে সুফী সাহেবের বুকের দিকে চাহিয়া রহিলেন।
ক. পীর সাহেবের আগমন ঘটে কোন গ্রামে?
খ. ‘যত সব শয়তানি বেদাতি কারবার’- কে, কেন বলেছে কথাটি?
গ. উদ্দীপকটি ‘লালসালু’ উপন্যাসের কোন বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছে? – ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘লালসালু’ উপন্যাসের সমগ্র ভাব ধারণ করে কি? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন-১০: গত শীতে মিরা তার বান্ধবী রোজির গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়াছিল। বান্ধবীর বাবা খোনকার সাব। এলাকার ছোট হুজুর হিসেবে পরিচিত। একদিন গ্রামের এক তরুণীর দুষ্ট জিনের আছর ছাড়াতে খোনকার সাব বাড়িতে দরবার বসান। প্রথমে বেশ কিছুক্ষণ দুর্বোধ্য আরবি-ফার্সি বা উর্দু জবানে নানা ছন্দময় বুলির জেকের হলো। নতুন বলে মিরার কাছে পুরো ব্যাপারটা অস্বস্তিকর ও বিভ্রান্তিকর মনে হয়। দিশেহারা মিরা বান্ধবীর মায়ের দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকায়। কিন্তু স্বামীর প্রতি মহিলার আনুগত্য ধ্রুবতারার মতো অনড়, বিশ্বাস পর্বতের মতো অটল।
ক. কীসের পর জিকির শুরু হয়?
খ. জমিলা এশার নামাজ পড়তে এবং রাতের খাবার খেতে পারে না কেন?
গ. উদ্দীপকের মিরা ‘লালসালু’ উপন্যাসের কোন চরিত্রের অনুরূপ তা নিরূপণ কর।
ঘ. “স্বামীর প্রতি মহিলার আনুগত্য ধ্রুবতারার মতো অনড়, বিশ্বাস পর্বতের মতো অটল”-‘লালসালু’ উপন্যাসের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
◉ আরও দেখ: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল গল্প-কবিতার CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা মূল বই থেকে লালসালু উপন্যাসের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হয়েছে। একই সাথে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য আরও অতিরিক্ত ৯টি প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। সবগুলো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ আকারে সংগ্রহের জন্য উপরে ‘ANSWER SHEET’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post