শিকার কবিতার প্রশ্ন উত্তর : জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার‘ কবিতায় একটি হরিণ শিকারের ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। কবিতাটির দ্বিতীয় স্তবকে দেখা যায় যে একদল টেরিকাটা শহুরে মানুষ প্রকৃতির কোল থেকে একটি নিষ্পাপ হরিণের প্রান ছিনিয়ে নিয়েছে। শুধু নির্বিচারে হরিণ হত্যা নয়- তাকে রান্না করে রসনার তৃপ্তি করেছে।
কথায় আছে ‘আপনা মাংসে হরিণী জগতের শত্রু‘। আদিম মানুষ তাদের ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য হরিণ শিকার করত। কিন্তু এই কবিতায় হরিণের শিকারীরা আদিম মানুষ নয়- শুধু তাদের প্রবৃত্তিটা আদিম। আসলে, এইসব শহুরে মানুষের শিকার-বাসনার কারণ লুকিয়ে আছে তাদের মনস্তত্বে।
শিকার কবিতার প্রশ্ন উত্তর
১. ” শিকার ” কবিতায় ভোরবেলায় আকাশের রং – কে কবি যার সঙ্গে তুলনা করেছেন ?
ক. ঘাস ফড়িংএর দেহ
খ. সুমদ্রের জল
গ. বিকেলের রোদ
ঘ. মোমের আলো
২. “টিয়া পালকের মতো সবুজ” ছিল ?
ক. মানুষের হৃদ়য়
খ. মানুষের স্বপ্ন
গ. পেয়ারা ও নোনার গাছ
ঘ. পেয়ারা ও সজিনার গাছ
৩. ” এক্ষণ আকাশে রয়েছে ” – যার কথা বলা হয়েছে ?
ক. একটি তারা
খ. একটি পাখি
গ. দিনের আলো
ঘ. গোধূলির রং
৪. ” শিকার ” কবিতায় যে মেয়ে টিকে কবি পারাগায়ে লক্ষ্য করেছিলেন সে ছিল ।
ক. সাহসী সুন্দরী
খ. গোধুলিমদির
গ. মায়াবিনী
ঘ. বিষণ্ন সুন্দর
৫. সারা রাত মাঠে / আগুন জ্বেলেছে কারা আগুন জ্বেলেছে ?
ক. প্রবাসীরা
খ. অতিথিবৃন্দ
গ. দেশোয়ালিরা
ঘ. বনবাসিরা
৬. ” সূর্যের আলোয় তার রং ––– মতো নেই আর …”
ক. কুসুমের
খ. বারুদের মতো
গ. কুঙ্কুমের
ঘ. মুক্তার
৭. ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছিল
ক. চারিদিকের বন ও আকাশ
খ. জোনাকির দল
গ. মনের আকাশ
ঘ. হৃদয়ের কবিতামালা
৮. সারারাত হরিণ নিজেকে বাঁচিয়েছিল যার হাত থেকে
ক. শিকারির
খ. চিতাবাঘিনির
গ. হৃদয়হিনের
ঘ. পশুদের
৯. সারা রাত হরিণটি ঘুরেছিল
ক. শাল – পিয়ালের বনে
খ. অর্জুন – সুন্দরীর বনে
গ. মহুয়ার বনে
ঘ. জাম – জারুলের বনে
১০. সুন্দর বাদামি হরিণ যার জন্য অপেক্ষা করেছিল
ক. অন্ধকারের জন্য
খ. সবুজ ঘাসের জন্য
গ. ঝরনার জলের জন্য
ঘ. ভোরের জন্য
১১. সবুজ সুগন্ধি ঘাস কে কবি যার সঙ্গে তুলনা করেছেন
ক. নতুন ধানের সঙ্গে
খ. শরতের সকালের সঙ্গে
গ. কচি বাতাবি লেবুর সঙ্গে
ঘ. রূপসী মেয়ের সঙ্গে
১২. হরিণ টি ভোরের আলোয় যেখানে নেমেছিল
ক. জলে
খ. নদীর জলে
গ. অন্ধকারের সমুদ্রে
ঘ. অর্জুন – সুন্দরীর বনে
১৩. ” নদীর জল –– মতো লাল ।”
ক. মোরগ ফুলেরপাপরির
খ. জবা ফুলেরপাপরির
গ. মচকাফুলের ফুলেরপাপরির
১৪. ” শিকার ” কবিতাটি শুরু হয়েছে যে শব্দ দিয়ে
ক. সকাল
খ. ভোর
গ. বিকাল
ঘ. সন্ধ্যা
১৫. টেরিকাটা মানুষেরা খায়
ক. বিড়ি
খ. আঙ্গুর
গ. পেয়ারা
ঘ. সিগারেট
১৬.” শিকার ” কবিতায় মোট পংক্তিসংখ্যা
ক. ৩০
খ. ৩৭
গ. ৩৫
ঘ. ৩৯
১৮. নদীর জলে নামা হরিণের শরীর ছিল
ক. ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল
খ. বিহ্বল ক্লান্ত ঘুমহীন
গ বিহ্বল ক্লান্ত
ঘ. ক্লান্ত ঘুমহীন বিহ্বল
১৯. ” হিমের রাতে শরীর’ উম ‘ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারা রাত মাঠে
ক. গান করেছে
খ. নাচ করেছে
গ. খেলায় মেতেছে
ঘ. আগুন জ্বেলেছে
২০. ‘ এক্ষণ ও আকাশে রয়েছে ‘ ক-টি তারা ?
ক. একটি
খ. দুটি
গ. তিনটি
ঘ. বহু
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘শিকার’ কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর: শিকার কবিতাটি বাংলার কবি ‘জীবনানন্দ দাশ’ এর লেখা ।
২. ‘শিকার’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ‘শিকার’ কবিতাটি বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
৩. ‘একটি তারা এখন ঘাসে রয়েছে’ – তারাটিকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তর: তারাটিকে কবি পাড়াগাঁর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৪. ‘তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও’ – তারাটিকে দেখে কবির কী কী মনে হয়েছে?
উত্তর: তারাটিকে দেখে কবির মনে হয়েছে পাড়াগাঁর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো কিংবা হাজার হাজার বছর আগের মিশরীয় মানুষী যে তার বুকের থেকে কবির নীল মদের গ্লাসে মুক্ত রেখেছিল তার মতো।
৫. “নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম ” বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তর: হরিণটা বন্দুকের গুলিতে প্রাণ হারানোর পর তার নিথর দেহটাকে বোঝানোর জন্য ‘ নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম ‘ উপমা ব্যবহৃত হয়েছে ।
৬. “এখনও আগুন জ্বলছে তাদের ; ” – কারা , কেন আগুন জ্বালিয়েছে ?
উত্তর: দেশোয়ালিরা শীতের রাতে শরীর উয় রাখার জন্য সারারাত মাঠে আগুন জ্বালিয়েছে ।
৭. “রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ” ইচ্ছা বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তর: দেশোয়ালিদের প্রজ্বলিত আগুন ভোরের আলোয় ক্রমশ বিবর্ণ হয়ে আসছে । মুমুর্মু ও অসুস্থ শালিক পাখির শীর্ণকায় চেহারা এবং তার নৈরাশ্যের মতোই বিবর্ণ ।
৮. ভোরের আকাশের তারার জন্য কবি কোন কোন উপমা ব্যবহার করেছেন ?
উত্তর: পল্লিগ্রামের লজ্জাশীলা বাসরঘরের ‘ গোধূলি – মদির ’ মেয়েটির কুণ্ঠার সঙ্গে নীল মদের গ্লাসে রাখা হাজার হাজার বছর আগে মিশর মানুষীর বুকের মুক্তার দ্যুতিহীনতার তুলনা করা হয়েছে ।
৯. “তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও । ” – একটি তারা আকাশে কীসের মতো জ্বলছে ?
উত্তর: হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে যে মুক্তা কবির নীল মদের গ্লাসে রেখেছিল , ঠিক সেভাবে একটি তারা এখনো আকাশে জ্বলছে ।
১০. “মোরগফুলের মতো লাল আগুন” – এখানে কোন আগুনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: প্রশ্নে প্রদত্ত অংশে “মোরগফুলের মতো লাল আগুন” বলে দেশোয়ালিরা হিমের রাতে মাঠে যে আগুন জ্বলেছিল, তার কথা বলা হয়েছে।
১১. ‘সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে’ – খাওয়ার কারণ কী বলে মনে হয়?
উত্তর: ‘শিকার’ কবিতায় বর্ণিত হরিণটি সারারাত চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ছুটে বেরিয়ে ভীষণ ক্লান্ত এবং ক্ষুদার্থ হয়ে পড়েছিল। সেই ক্লান্তি ও ক্ষুদা মেটানোর জন্য হরিণটি সবুজ ঘাস খাচ্ছিল।
১২. ‘সোনার বর্ষার মতো জেগে উঠে’ হরিণটি কী করতে চেয়েছিল?
উত্তর: সারারাত চিতাবাঘটির হাত থেকে আত্মরক্ষা করার চেষ্টায় সফল হয়ে হরিণটি বিজয়ীর উল্লাসে সোনার বর্ষার মতো জেগে উঠে সাহসে সাধে সৌন্দর্যে একের পর এক হরিণীকে চমক লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল।
১৩. ‘শিকার’ কবিতায় কোন দুটি ফুলের উল্লেখ আমরা পাই?
উত্তর: ‘শিকার’ কবিতায় আমার যে দুটি ফুলের উল্লেখ পাই সেগুলি হল – ‘মোরগফুল’ ও ‘মচকাফুল’।
১৪. “সোনার বর্ষার মতো জেগে ওঠে ” – জেগে উঠে কে , কী করতে চেয়েছিল ?
উত্তর: ভোরের নতুন সূর্যের আলোয় হরিণীটা সোনার বর্ষার মতো জেগে ওঠে ‘ সাহসে সাধে সৌন্দর্যে ’ একের পর এক হরিণীকে চমক লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল ।
১৫. হরিণের শরীরটা ‘ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল ’ ছিল কেন ?
উত্তর: সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে হরিণটা বন থেকে উত্তর বনাস্তরে ঘুরে বেড়িয়েছে । সারারাত পরিশ্রমের কারণে হরিণের শরীরটা ‘ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহুল ‘।
১৬. ‘ সুন্দর বাদামী হরিণ ‘ চিতাবাঘিনীর হাত থেকে বাঁচতে কোন কোন বনে ঘুরেছিল ?
উত্তর: সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে নক্ষত্রহীন , মেহগনির বনের মতো অন্ধকারে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে বেড়িয়েছিল হরিণটা ।
১৭. “একটা অদ্ভুত শব্দ’– শব্দকে ‘ অদ্ভুত ’ বলার কারণ কী ?
উত্তর: প্রাকৃতিক অরণ্য পরিবেশে বিসদৃশ বেমানান বন্দুকের গুলির শব্দকে এখানে ‘ অদ্ভুত ’ বলা হয়েছে । বনের মধ্যে বন্যেরাই যেখানে সুন্দর সেখানে বন্দুকের গুলির শব্দ নৃশংসতার পরিচয়বাহী বলেই তা অদ্ভুত ।
১৮. “আগুন জ্বলল আবার ” — কেমন আগুন , কখন জ্বলেছিল ?
উত্তর: হিমের রাতে শরীর ‘ উম ‘ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারা রাত আগুন জ্বালিয়েছিল । সে আগুন ছিল মোরগফুলের মতো লাল৷
১৯. “নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল ” — সে কেন নেমেছিল ?
উত্তর: সুন্দরী বাদামি হরিণ ঘুমহীন ক্লান্ত শরীরকে আবেশ দেওয়ার জন্য নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে নেমেছিল ।
২০. ‘টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা’ -এই মানুষ কারা?
উত্তর: ‘টেরিকাটা’ মানুষগুলো নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত ভোগী মানুষদের প্রতীক। তারা নির্বিচারে সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠে।
২১. ‘নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল’ -সে নদীতে কেন নামল?
উত্তর: চিতাবাঘিনির অতর্কিত আক্রমন থেকে বাঁচার জন্য ক্রমাগত ছুটে বেড়ানোর হরিণটি তার ক্লান্ত বিহ্বল শরীরটাকে প্রাণবন্ত আবেশ দেওয়ার জন্য নদীতে নামল।
২২. ‘এখনও আগুন জ্বলছে তাদের’ -কাদের আগুন কেন জ্বলছে?
উত্তর: হিমের রাতে শরীর ‘উম’ রাখার জন্য দেশোয়ালিরা যে আগুন জ্বেলেছিল, তা এখনও জ্বলছে। শুকনো অশ্বথপাতাগুলি এখনও পুড়ে ছাই হয়নি তাই আগুন ”এখনও” জ্বলছে।
২৩. “এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল ! ” – কে , কেন ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল ?
উত্তর: সুন্দরী বাদামি হরিণ অরণ্য প্রকৃতিতে চিতাবাঘিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভোরের অপেক্ষায় ছিল ।
২৪. ‘শিকার’ কবিতায় প্রদত্ত দুটি গাছের নাম লেখ ?
উত্তর: শিকার কবিতায় প্রদত্ত দুটি গাছ হল পেয়ারা ও নোনার ।
২৫. ‘শিকার’ কবিতায় ভােরবেলার আকাশ ও গাছপালা দেখে কবির কেমন মনে হয়েছিল ?
উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা শিকার কবিতায় ভােরবেলার আকাশ ও গাছপালা দেখে কবির ভােরের আকাশকে ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল এবং গাছপালাকে টিয়ার পালকের মতাে সবুজ মনে হয়েছিল।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘শিকার’ কবিতার শিকারীদের মনস্তত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার‘ কবিতায় একটি হরিণ শিকারের ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। কবিতাটির দ্বিতীয় স্তবকে দেখা যায় যে একদল টেরিকাটা শহুরে মানুষ প্রকৃতির কোল থেকে একটি নিষ্পাপ হরিণের প্রান ছিনিয়ে নিয়েছে। শুধু নির্বিচারে হরিণ হত্যা নয়- তাকে রান্না করে রসনার তৃপ্তি করেছে।
কথায় আছে ‘আপনা মাংসে হরিণী জগতের শত্রু‘। আদিম মানুষ তাদের ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য হরিণ শিকার করত। কিন্তু এই কবিতায় হরিণের শিকারীরা আদিম মানুষ নয়- শুধু তাদের প্রবৃত্তিটা আদিম। আসলে, এইসব শহুরে মানুষের শিকার-বাসনার কারণ লুকিয়ে আছে তাদের মনস্তত্বে।
মনবিদ্যায় একটি কথা আছে- Sadistic Pleasure, যার অর্থ অপরকে যন্ত্রণা পেতে দেখে আনন্দ অনুভব করা। এই কবিতার শিকারীরা সেই পাশবিক Sadistic Pleasure পাওয়ার জন্যই নিষ্পাপ হরিণটিকে হত্যা করেছিল।
দ্বিতীয়ত বলা যায়, নগর জীবনের একঘেয়েমি, নিস্তরঙ্গতা শহুরে মানুষদের তিলে তিলে শেষ করে দেয়। তাই নিথর জলের বুকে ঢিল মেরে একটুখানি প্রান ফিরে পেতে শিকারের নামে এই নিষ্ঠুর নিধনযজ্ঞের আয়োজন করে তারা।
২. শিকার কবিতায় প্রথম ভোরের বর্ণনায় কবি যে উপমার সাহায্যে নিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখ?
উত্তর: জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘শিকার’ কবিতায় কবি দুটি ভোরের বর্ণনা দিয়েছেন। প্রথম ভোরের বর্ণনায় আমরা প্রকৃতির নির্মল রূপটির ছবি দেখতে পাই। বিভিন্ন পরিচিত বস্তু ও প্রাণীর উপমা টেনে কবি প্রথম ভোরের দৃশ্যপট রচনা করেছেন এইভাবে –
ক. নীল আকাশ – ভোরের আকাশ যেন ঘাস ফড়িং-এর দেহের মতো কোমল নীল ।
খ. সবুজ প্রকৃতি – চারিদিকে পেয়ারা ও নোনার গাছের সবুজিমা যেন টিয়ার পালকের মতো সবুজ।
গ. একটি তারা এখনো আকাশে – ভোরের আলোতেও উজ্জ্বল এই তারাটিকে কবি তুলনা করেছেন পাড়াগাঁর বাসর ঘরে সবচেয়ে গোধূলি-মদির মেয়েটির মতো। আবার, বহু হাজার বছর আগে মিশরের এক রমণী কবির নীল মদের গেলাসে যে মুক্তা রেখেছিল তার সঙ্গে কবি তারাটির মিল খুঁজে পেয়েছেন।
ঘ. শরীর উষ্ণ রাখার জন্য দেশোয়ালীরা আগুন জ্বেলেছিল- মোরগফুলের মতো লাল সেই আগুন তার জাফরান রং হারিয়ে একসময় রোগা শালিখের হৃদয়ের বিবর্ন ইচ্ছার মতো মলিন হয়ে গিয়েছিল।
ঙ. ঝলমলে দিনের সূচনা- সকালের রোদে উজ্জ্বল চারিদিকের বন ও আকাশ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো শোভা পাচ্ছিল।
এইভাবে বিভিন্ন উপমা ও উপমেয়ের সাহায্যে কবি প্রথম ভোরের সৌন্দর্য্যময় রূপটি তুলে ধরেছেন
রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘হিম- নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম’- কার ঘুমের কথা বলা হয়েছে? ‘নিস্পন্দ নিরপরাধ’ ঘুমের তাৎপর্য লেখ।
২. ‘শিকার’ কবিতায় ভোরের পরিবেশ যেভাবে চিত্রিত হয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো। সেই পরিবেশ কোন ঘটনায় করুণ হয়ে উঠল?
৩. ‘এসেছে সে ভােরের আলােয় নেমে’ – সেই ভােরের বর্ণনা দাও। ‘সে’ ভােরের আলােয় নেমে আসার পর কী কী ঘটল, লেখাে।
৪. “এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।” কে অপেক্ষা করছিল? তার পরিণতি কী হয়েছিল?
৫. “এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে”- কে, কীভাবে ভোরের আলোয় নেমে এসেছিল? ‘ভোরের আলোয়’ তার কী পরিণতি হয়েছিল নিজের ভাষায় লেখ।
৬. শিকার কবিতায় যে দুটি ভোরের উল্লেখ রয়েছে সেগুলির বর্ণনা দাও।
৭. “আগুন জ্বলল আবার” —প্রথমবার আগুন জ্বলার সঙ্গে দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলার বৈপরীত্যটি তুলে ধরো।
৮. “একটা অদ্ভুত শব্দ। / নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল।” – শব্দটা কীসের এবং কেন তার জন্য নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে ওঠে?
৯.‘শিকার’ কবিতা আসলে কবির মনোজগতের প্রতিফলন–কবিতাটি বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও।
১০. .নাগরিক লালসায় নীল অমলিন প্রকৃতির মাঝে পবিত্র জীবন হারিয়ে যায় হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে— ‘শিকার’ কবিতাসূত্রে উদ্ধৃত অংশটির নিহিতার্থ লেখো।
১১. “সুন্দর বাদামি হরিণ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।”—হরিণটি কী কারণে ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল? কবিতার অস্তিমে তার যে পরিণতির চিত্রটি ফুটে উঠেছে তা উল্লেখ করো।
১২. “মোরগফুলের মতো লাল আগুন”–কোথাকার কোন্ আগুনের কথা এখানে বলা হয়েছে? উদ্ধৃতিটির মর্মার্থ বিশ্লেষণ করো।
১৩. “নাগরিক লালসায় নীল অমলিন প্রকৃতির মাঝে পবিত্র জীবন হারিয়ে যায় হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে” – শিকার কবিতার আলোকে এই লাইনটি কতখানি যুক্তিযুক্ত তা আলোচনা করো।
১৪. “রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো” – উপমাটি কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ? কবিতার নিরিখে উপমাটি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা লেখ ।
১৫. ” আগুন জ্বলল আবার …” – আবার শব্দটির প্রয়োগ এর তাৎপর্য কি ? দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলার কারণ কি ছিল?
►► উচ্চ মাধ্যমিক: বাংলা সাজেশন সকল প্রশ্নের উত্তর
উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে শিকার কবিতার প্রশ্ন উত্তর pdf ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post