শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা : সোহরাব হোসেন ও সুবর্ণা আক্তারের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা জন্মের পরে ছেলের নাম ইহান ও মেয়ের নাম নুসাফা রাখেন। মা-বাবা ইহান ও নুসাফাকে শিশুকালে বাড়ির পাশের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে টিকা দেন। পাঁচ বছর বয়সে ইহান ও নুসাফাকে বাবা-মা ভর্তির জন্য স্কুলে নিয়ে যান।
স্কুলের শিক্ষক তাদেরকে ভর্তি করান। স্কুলে তারা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাও করতে পারে। বাবা-মা দুজনকে খুব আদর করেন। বাড়িতে তারা পড়ার সময় পড়ে, খেলার সময় খেলে ও ঘুমানোর সময় ঘুমায়। বাবা-মা তাদের পুষ্টিকর খাবার দেন।
শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা
একদিন ইহান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবা-মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল থেকে তাকে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়। সে সুস্থ হয়। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে অপরিচিত এক লোক তাদেরকে চকলেট দিতে চায়।
তারা নিতে চায় না। কিন্তু লোকটি আরও লোভ দেখায়। একটু দূরে থাকা একজন পুলিশ সদস্য বিষয়টি খেয়াল করেন। তিনি দ্রুত সেখানে আসেন। অপরিচিত লোকটি দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পৃথিবীর সকল দেশের শিশুদের কতগুলো অধিকার আছে। শিশুদের প্রধান অধিকারগুলো হলো:
◇ নাম পাওয়ার অধিকার
◇ জন্ম নিবন্ধনের অধিকার
◇ শিক্ষার অধিকার
◇ স্নেহ ও ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার
◇ পুষ্টি ও চিকিৎসার অধিকার
◇ মেয়ে ও ছেলে শিশুর সমান সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার
◇ খেলাধুলা, বিনোদন ও বিশ্রামের অধিকার
◇ নিরাপত্তা লাভের অধিকার
◇ কথা বলার অধিকার
শিশুদের সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এ অধিকারগুলো পূরণ হওয়া খুবই প্রয়োজন। শিশু হিসেবে আমাদের যে অধিকারগুলো আছে তা পাওয়ার জন্য মা-বাবা, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভূমিকা পালন করেন:
মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা
◇ ছেলে ও মেয়ের নাম রাখা
◇ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো
◇ পুষ্টি, পোশাক ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা
◇ খেলাধুলা ও বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া
◇ স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে লালনপালন করা
◇ মতপ্রকাশের সুযোগ দেওয়া
◇ নিরাপত্তা দিয়ে নিজের কাছে রাখা
◇ ছেলে ও মেয়েকে সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া
এসো নিরাপদে পথ চলি
বাংলাদেশে প্রতিবছর অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ আহত ও নিহত হন। এদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত অনেক শিশুকে পঙ্গু হয়ে সারাজীবন কষ্ট ভোগ করতে হয়।
শিশু ও অভিভাবকের সড়ক চলাচলের নিয়ম সম্পর্কে ধারণার অভাব এবং গাড়িচালকের অসচেতনতা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের পাশাপাশি মানুষও চলাচল করে। এজন্য অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
ছোটোরা সড়কে বা রাস্তায় বের হলে পিতা-মাতা বা অভিভাবকের হাত ধরে থাকতে হবে। কখনোই একা রাস্তায় বের হওয়া যাবে না। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুটওভার ব্রিজ আছে, সেখান দিয়ে রাস্তা পার হতে হবে। আর যেখানে জেব্রা ক্রসিং নেই, সে সকল রাস্তায় ডানে ও বামে তাকিয়ে সাবধানে রাস্তা পার হতে হবে।
এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজ
ক. সঠিক উত্তরের পাশে টিক (✓) চিহ্ন দিই।
১। রাস্তায় জেব্রা ক্রসিং কেন দেওয়া হয়?
ক) পথচারী পারাপারে জন্য
খ) সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য
গ) গাড়ি থামানোর জন্য
ঘ) গাড়ি ধীরে চলার জন্য
২। শিশুর পুষ্টি, পোশাক ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা কার দায়িত্ব?
ক) ডাক্তারের
খ) শিক্ষকের
গ) অভিভাকের
ঘ) প্রতিবেশীর
৩) কোনো অপরিচিত লোক আমাকে কিছু দিতে চাইলে কী করব?
ক) নেব না
খ) নিয়ে নেব
গ) পরে দিতে বলব
ঘ) লুকিয়ে নেব
খ. বাম পাশের সাথে ডান পাশের মিল করি।
বাম পাশ | ডান পাশ |
অভিভাবক | চিকিৎসার অধিকার |
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | নাম পাওয়ার অধিকার |
হাসপাতাল | নিরাপত্তা লাভের অধিকার |
পুলিশ বাহিনী | শিক্ষার অধিকার |
গ. সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন।
১. শিশু অধিকার অর্জনে সাহায্য করে এমন দুইটি প্রতিষ্ঠানের নাম লিখি।
২. বিদ্যালয়ে পূরণ হয় এমন দুইটি অধিকার লিখি।
৩. বিশ্ব শিশু দিবস কত তারিখে পালন করা হয়?
৪. রাস্তায় জেব্রাক্রসিং ও ফুট ওভার ব্রিজ না থাকলে কীভাবে রাস্তা পার হব?
৫. সড়ক দুর্ঘটনার দুইটি কারণ লিখি।
◉ আরও দেখো: তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সকল অধ্যায়ের সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় মূল বই থেকে ৮ম অধ্যায় শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়ের অনুশীলনীমূলক কাজগুলোর সমাধান পেতে উপরের উত্তরমালা অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত বেশকিছু প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে।
Discussion about this post