সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ১১শ অধ্যায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা : বিশ্বের সকল স্বাধীন রাষ্ট্রই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। প্রতিটি দেশের সরকারের দায়িত্ব হলো দেশকে সুন্দর ও সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে দেশ ও জনগণের কল্যাণ, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন সাধন করা।
এজন্য বিভিন্ন দেশের সরকার বিভিন্নমুখী কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে। কিন্তু এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা কোনো সরকারের পক্ষে এককভাবে করা সম্ভব হয় না। প্রয়োজন হয় অন্য কোনো দেশ বা সংস্থার সহযোগিতা।
এ প্রয়োজনীয়তা থেকেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ধারণার উদ্ভব হয়েছে। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সহযোগিতা সংস্থা। এদের মধ্যে অন্যতম হলো জাতিসংঘ। এ অধ্যায়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ১১শ অধ্যায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
বিশ্বের প্রত্যেক রাষ্ট্রই তাদের নিজেদের কল্যাণে বা স্বার্থে বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন করে। বৈদেশিক নীতির মূলে রয়েছে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে নিজ দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে এক রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে।
দেশগুলো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সাতটি মহাদেশে ছড়িয়ে আছে। দেশগুলো স্বাধীন ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হলেও অনেক দেশই সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয়। এছাড়া দেশগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। এ সমস্যাগুলো দূর করতে পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।
একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের সরকারের পক্ষে এককভাবে এ সমস্যা গুলো পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব নয়। ফলে এ সমস্যাগুলো দূরীকরণে বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশ বা সংস্থার সহযোগিতা নিতে হয়।
আবার মধ্যপ্রাচ্যসহ আফ্রিকার অনেক দেশে রয়েছে জাতিগত সংঘাত, যুদ্ধ ও অস্থিরতা। ফলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মাধ্যমে সেখানে শান্তি রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এভাবেই বিশ্বের দেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সুন্দরভাবে টিকে আছে।
উপরের আলোচনায় দেখা যাচ্ছে বিশ্বের দেশগুলো স্বাধীন হলেও তাদের মধ্যে রয়েছে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা ও বন্ধুত্বের মনোভাব। কেবল একই অঞ্চলের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যেই নয়, বিশ্বের দূরদূরান্তে অবস্থিত দেশগুলোর মধ্যেও এ ধরনের সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে পারে।
সহযোগিতার এ গুরুত্ব থেকে তাই পৃথিবীতে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা, যেমন-জাতিসংঘ, ওআইসি, কমনওয়েলথ ইত্যাদি। এসব আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন দেশকে সহযোগিতা দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব বর্তমান যুগ পরস্পর নির্ভরশীলতার যুগ। আর পারস্পরিক নির্ভরশীলতার এ যুগে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা গড়ে উঠেছে।
একটি দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি, পরিবেশ, আবহাওয়া, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় একটি দেশ সরাসরি বা দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে অন্য দেশকে সাহায্য করে।
আবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমেও সহযোগিতা করে থাকে। মূলত নিজস্ব প্রচেষ্টার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে। আবার এমন অনেক সমস্যা আছে যেগুলোর সাথে এক বা একাধিক দেশের স্বার্থ জড়িত।
ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব হয় না। এ জন্য বর্তমান বিশ্বে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
জাতিসংঘ ও এর গঠন
আমরা জানি বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মাত্র ২৫ বছরের ব্যবধানে পৃথিবীতে দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। প্রথমটি হয় ১৯১৪ সালে এবং দ্বিতীয়টি শুরু হয় ১৯৩৯ সালে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এসব যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। এ যুদ্ধ ছিল মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রায় বিরাট বাধা। সেজন্য যুদ্ধের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী চলেছে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টা।
তাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯২০ সালে গঠিত হয়েছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা লীগ অব নেশনস। কিন্তু বিভিন্ন দেশের স্বার্থপরতার কারণে এ সংস্থাটি স্থায়িত্ব লাভকরেনি। ফলে ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীকে গ্রাস করে। এ যুদ্ধে বিভিন্ন দেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। জাপান আণবিক বোমার আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়।
মারা যায় লাখ লাখ মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলা দেখে বিশ্ববাসী শংকিত ও হতবাক হয়ে যায়। তাদের মনে দানা বাঁধে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। এছাড়া তারা অনুভব করে মানব কল্যাণের জন্য যুদ্ধকে পরিহার করতে হবে। দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসতে হবে।
ফলে ১৯৪১ সাল থেকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হাতে নেয়। তৎকালীন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বুজভেল্ট-এর উদ্যোগে এবং বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে দীর্ঘদিন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ১৯৪৫ সালের ২৪-এ অক্টোবর তারিখে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ন্যায় অন্য কোনো যুদ্ধের ধ্বংসলীলা থেকে মুক্তির জন্য জাতিসংঘের জন্ম হয়।
শুরুতে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ছিল ৫১। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯৩। জাতিসংঘের মহাসচিব হচ্ছে এর প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। নরওয়ের অধিবাসী ট্রিগভেলি ছিলেন জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। বর্তমান (জানু-২০১৭ হতে) মহাসচিবের নাম অ্যান্টনিও গুতেরেস (Antonio Guterres)।
তিনি পর্তুগালের অধিবাসী। জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।
জাতিসংঘের নিজস্ব পতাকা আছে। পতাকাটি হালকা নীল রঙের। মাঝখানে সাদার ভিতরে বিশ্বের বৃত্তাকার মানচিত্র রয়েছে। এর দুইপাশ দুটি জলপাই পাতার ঝাড় দিয়ে বেষ্টিত।
জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা ছয়টি। এগুলো হলো: আরবি, চাইনিজ, ইংরেজি, ফরাসি, রাশিয়ান ও স্পেনিশ। জাতিসংঘের যেকোনো সভায় এই ছয়টি ভাষার যেকোনো একটি ব্যবহার করা হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাকি ভাষাগুলোতে অনুবাদ হয়ে যায়। তবে ইংরেজি ভাষার উপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়ে থাকে।
জাতিসংঘ গঠনের উদ্দেশ্য ও মৌলিক নীতি
বিশ্বশান্তি ও সহযোগিতার মহান লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপ-
● শান্তির প্রতি হুমকি ও আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করে বিশ্ব শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা;
● জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা;
● অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানব সেবামূলক সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলা; এবং
● সকল উপনিবেশিক রাষ্ট্র ও জনগণকে স্বাধীনতা প্রদান করা।
জাতিসংঘের মৌলিক নীতি | সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ১১শ অধ্যায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
জাতিসংঘের সাতটি মৌলিক নীতি আছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলো এগুলো মেনে চলার শর্তে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে থাকে। এ মূলনীতিগুলো-
● জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র সমান মর্যাদা ও সমান সার্বভৌমত্বের অধিকারী হবে:
● সকল সদস্য রাষ্ট্রকে পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সাথে জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে;
● সকল সদস্য রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করতে হবে;
● কোনো সদস্য রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করতে বা বল প্রয়োগের হুমকি দিতে পারবে না;
● সকল সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা মেনে নেবে এবং কোনো রাষ্ট্র এর বিরোধিতা করতে পারবে না:
● সদস্য নয় এমন কোনো রাষ্ট্র জাতিসংঘের মূলনীতির বিরোধিতা করলে সে বিষয়ে জাতিসংঘ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে:
● কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করবে না। তবে কোনো রাষ্ট্র যদি আগ্রাসী তৎপরতা চালায় তাহলে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সৃজনশীল প্রশ্ন
১. ২০১২ সালে ‘ক’ উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একত্রিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে পরিষদের সভাপতি করে প্রত্যেকটি ইউনিয়নের শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য কিছু নীতিমালা করে তা মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।
প্রতিটি ইউনিয়নের বিরোধ মীমাংসা, উন্নয়ন এবং এলাকার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ শুরু করে। এতে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এলাকার মানুষ নিরাপদ জীবনযাপন করতে সক্ষম হয়। দুটি ইউনিয়নের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে ‘ক’ উপজেলা চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে তা সমাধান হয়। ‘ক’ উপজেলার সাফল্যে অন্যান্য উপজেলাও এ ধরনের নীতিমালা গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
ক. কত সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করে?
খ. ‘জাতিসংঘে সকল সদস্য রাষ্ট্র সমান মর্যাদা ও সমান সার্বভৌমত্বের অধিকারী হবে’- জাতিসংঘের এ মৌলিক নীতিটির ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের দুই ইউনিয়নের বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াটি জাতিসংঘের কোন নীতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘ক’ উপজেলার শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জাতিসংঘের বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টার অনুরূপ’-মতামত দাও।
২. চিত্রভিত্তিক উদ্দীপক
সিয়েরালিয়ন জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছেন।
ক. জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিবের নাম কী?
খ. ‘আঞ্চলিক সংস্থাসমূহের সহযোগিতা গ্রহণ করা-জাতিসংঘের একটি কাজ’-ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের চিত্রে কর্মরত বাহিনী বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তায় কী ভূমিকা পালন করছে-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্রে প্রদর্শিত বাহিনীর ভূমিকার কারণেই বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে-তুমি কী এ বক্তব্যের সাথে একমত? মতামত দাও।
◉ আরও দেখুন: সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সকল অধ্যায়ের CQ-MCQ সমাধান
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ১১শ অধ্যায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আলোচনা করা হয়েছে। এই বইয়ের যে সৃজনশীল প্রশ্নগুলো রয়েছে, তার উত্তরও তোমরা কোর্সটিকায় পেয়ে যাবে। সৃজনশীল প্রশ্নের সমাধানের জন্য উপরের ‘সৃজনশীল সমাধান’ অপশনে ক্লিক করো।
Discussion about this post