সমাজবিজ্ঞান ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় : ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি যে বিজয় অর্জন করে তার প্রেক্ষাপট রচিত হয় মূলত ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই। প্রায় দুইশো বছরের ব্রিটিশ শাসনের পর ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় যেখানে পূর্ববাংলাকে পাকিস্তানের একটি অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
দেশ বিভাগের পর পরই পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী প্রথম আক্রমণ করে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষার উপর। বাংলার বদলে উর্দুকে এ অঞ্চলের রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে শাসক গোষ্ঠী বেশ তৎপর হয়ে উঠে। কিন্তু সাহসী বাঙালিদের ক্রমাগত প্রতিরোধ ও প্রতিকারের প্রতিফলন ঘটে যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ঘোষিত আন্দোলনের মাধ্যমে। নিরীহ আন্দোলনকারীদের জীবনের বিনিময়ে একপর্যায়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।
বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। মূলত ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ আরও বেশি শক্ত অবস্থানের উপর দাঁড়ায়। এরপর ১৯৫৪ এর সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফন্টের বিজয়, ১৯৬৬ এর ৬ দফা ও ১১ দফা দাবি, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান সব মিলিয়ে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর শোষণ নিপীড়ন, নির্যাতন ও অবজ্ঞার বিরুদ্ধে সমগ্র বাঙালি জাতি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ায়।
এর প্রতিফলন ঘটে ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় অর্জনের মাধ্যমে। অবশেষে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ এবং নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস ব্যাপী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
সমাজবিজ্ঞান ২য় পত্র ৫ম অধ্যায়
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রভাত ফেরিতে সহপাঠীদের সাথে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায় নিলয়। এরপর এ দিনটি উপলক্ষে কলেজে আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে একজন স্যার বলেন, আজ বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক গৌরবময় দিন। এই দিনটিতে বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়েছেন ছাত্র-শিক্ষকসহ বাংলার জনতা।
ক. যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন কত সালে হয়?
খ. ছয় দফা কর্মসূচি বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকটি কোন আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত আন্দোলনটির সফলতায় বাঙালির জাতীয়তাবাদের বীজ রোপিত হয়েছিল’— বিশ্লেষণ করো।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
খ. পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন লাভের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে যে দাবি উত্থাপন করেছিলেন তাই ‘ছয় দফা কর্মসূচি’ হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নানাভাবে নির্যাতিত ও নিপীড়িত হতে থাকে।
এ অবস্থার অবসান এবং পূর্ববাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর এক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে দাবিসমূহ পেশ করেন, তা ছয়দফা কর্মসূচি হিসেবে অভিহিত। ছয় দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতির ‘মুক্তির সনদ’ বা ‘ম্যাগনাকাটা’।
গ. উদ্দীপকটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ভাষা আন্দোলন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরই শাসকগোষ্ঠী ভাষার প্রশ্নে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর প্রবল আঘাত হানে। ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এবং ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল মুহম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন, ‘Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan.’
সাথে সাথে উপস্থিত ছাত্র-জনতা এ উক্তির তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ১৯৫০ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানও উর্দুকে গণপরিষদের ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। পাকিস্তান সরকারের এরূপ অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ কর্তৃক সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা আয়োজনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কর্মসূচি অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে সে মিছিলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। নিহত হন সালাম, বরকত, জব্বার প্রমুখ। মাতৃভাষার জন্য জীবনদানের এমন ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ২১ ফেব্রুয়ারিতে ছাত্র-জনতার জীবনদানকে স্মরণ করার জন্য ১৯৫৩ সাল থেকে ‘শহিদ দিবস’ পালন করা হয়। দিবসটিতে বাঙালি আপামর জনসাধারণ প্রভাত ফেরিতে অংশ নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার মাধ্যমে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়।
উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই, নিলয় ২১ ফেব্রুয়ারিতে সহপাঠীদের সাথে প্রভাত ফেরিতে অংশ নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়। পরবর্তীতে নিলয়দের একজন শিক্ষক দিবসটির ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। পূর্বে বর্ণিত ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং উদ্দীপকের তুলনামূলক পর্যালোচনা করে এটা স্পষ্ট যে, উদ্দীপকটি ভাষা আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
ঘ. উদ্দীপক দ্বারা ইঙ্গিতকৃত আন্দোলন তথা ভাষা আন্দোলনের সফলতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদের বীজ রোপিত হয়েছিল।- উক্তিটি ঐতিহাসিকভাবেই যথার্থ এবং প্রমাণিত। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কেননা ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই পূর্ব বাংলার জনগণ সর্বপ্রথম অধিকার সচেতন হয়ে ওঠে। পূর্ব পাকিস্তানিরা যে পশ্চিম পাকিস্তানদের থেকে স্বাতন্ত্র্য এবং তাদের দাবি যে স্বাতন্ত্র্য খাতে প্রবাহিত হতে পারে, এ শিক্ষা ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই অর্জিত হয়।
এ আন্দোলন পূর্ব বাংলার জনগণকে সর্বপ্রথম সংগ্রামের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত করে। সংগ্রাম ব্যতীত কোনো দাবি আদায় করা সম্ভব না, তা এ আন্দোলনের ফলাফলে স্পষ্ট হয়ে যায়। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার শিক্ষক, শ্রমিক, ছাত্র, জনতা, বুদ্ধিজীবী, কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হন এবং দাবি আদায়ের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ আন্দোলনের ফলে আপামর বাঙালির ভেতর এই চেতনা জাগ্রত হয় যে, ধর্মের দিক থেকে বিভিন্নতা থাকলেও সাংস্কৃতিক দিক থেকে বাঙালিরা একই জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
অর্থাৎ- ভাষা আন্দোলনের ফলেই ধর্মভিত্তিক জাতীয়তার পরিবর্তে ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক জাতীয়তাবোধের সৃষ্টি হয়। উপর্যুক্ত আলোচনার পরিসমাপ্তিতে বলা যায় যে, ভাষা আন্দোলনের ফলে সর্বপ্রথম পৃথক জাতিগোষ্ঠী হিসেবে বাঙালির চেতনা জাগ্রত হয়েছিল, আর এর ওপর ভিত্তি করেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের বীজ রোপিত হয়েছিল।
অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : যতিন বাবু এবং শফিক সাহেব একই অফিসে চাকরি করেন। যতিন বাবুর জন্ম ১৯৪৮ সালে এবং শফিক সাহেবের জন্ম ১৯৫২ সালে। বয়স এবং ধর্মের পার্থক্য থাকলেও তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে তারা এক সাথে না থাকলেও ঐ সময়কালে একই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা তারা নিজেদের মধ্যে মাঝে মাঝে শেয়ার করেন।
ক. ছয়-দফা কত সালে উত্থাপন করা হয়?
খ. জাতীয়তাবাদ বলতে কী বুঝো?
গ. যতিন বাবু এবং শফিক সাহেবের জন্ম সাল আমাদের কোন আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. যতিন বাবু ও শফিক সাহেবের একই অভিজ্ঞতার সময়কালটি ছিল আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তুমি কি একমত? যুক্তিসহ মূল্যায়ন করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : শ্যামলপুর ও কমলগঞ্জ একটি রাষ্ট্রের দুটি অঞ্চল। দুটি অঞ্চলের সকল অধিবাসী মুসলিম হলেও তাদের জীবনধারায় পার্থক্য সুস্পষ্ট। শ্যামলপুরে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে যে অর্থ উপার্জিত হয় তার সবটাই কমলগঞ্জের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় হয়। এমনকি ব্যাংক-বীমাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ কমলগঞ্জে গড়ে উঠে। চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কমলগঞ্জের মানুষকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় শ্যামলপুরের বঞ্চিত জনগোষ্ঠী একসময় বিক্ষুব্ধ হয়ে স্বাধিকারের দাবি জানায়।
ক. লাহোর প্রস্তাব পেশ করেন কে?
খ. ভাষা আন্দোলনে নারী সমাজের ভূমিকা উল্লেখ কর।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত শ্যামলপুর কমলগঞ্জের মধ্যকার বৈষম্যের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাসের কোন বৈষম্যের সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পিছনে উদ্দীপকের অনুরূপ পরিস্থিতি চালিকাশক্তি হিসেবে প্রেরণা যুগিয়েছিল’— উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : জনাব নজরুল উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান ক্লাসে একটি অধ্যায় পড়াতে গিয়ে বললেন, “আজকে আমি কতকগুলো সালের কথা বলব যার সাথে একজন নেতা ও একটি জাতির মুক্তি আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনা জড়িয়ে আছে।” এ সময় তিনি ১৯৫২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ও ১৯৭১ সালের কথা বলেন এবং সেগুলোকে ব্যাখ্যা করেন। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা বলল, “সত্যি! উক্ত জাতির মুক্তি ও উক্ত সালগুলো পরস্পর জড়িয়ে আছে।”
ক. কোনটিকে ‘বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ’ বলে অভিহিত করা হয়?
খ. বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি ভাষা আন্দোলনের মাঝে নিহিত ছিল— ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে কোন নেতার দিকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, উক্ত জাতির মুক্তি ও উক্ত সালগুলো পরস্পর জড়িয়ে আছে— বক্তব্যটি কতটুকু যৌক্তিক? বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : কাজল তার বন্ধুদের সাথে পাকিস্তান শাসনামলের একটি নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করার সময় জানায় যে, সে নির্বাচনে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৩০৯টি। মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ সমমনা দলগুলো নিয়ে গঠিত ‘যুক্তফ্রন্ট’ জয়লাভ করে। উক্ত নির্বাচনে জয়ী হয়ে একজন নেতা কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ভাষা আন্দোলনের পরে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন পূর্ব বাংলার নাগরিকদের রাজনৈতিক চেতনাকে আরও বৃদ্ধি করে।
ক. মুসলিম লীগ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
খ. ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফল বর্ণনা করো।
গ. কাজল যে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করছিল সে নির্বাচনে উদ্দীপকে বর্ণিত কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে কর, এই ধরনের নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জনের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল? মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : মুক্তিযোদ্ধা রহমান সাহেব একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। ছেলের সাথে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার আজ চাকরি জীবনের প্রথম দিকের কথা বেশ মনে পড়ছে। তখন দেশ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। অফিসের চিঠিপত্রগুলো বিদেশি ভাষাতেই লিখতে হতো। বিদেশি ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে তার স্কুল জীবনের সহপাঠী রফিক জীবনদান করেছিলেন। তিনি মনে করেন, রফিককে অনুসরণ করেই পরবর্তীতে তার বাল্যবন্ধু গফুর, আশীষ এবং নাম না জানা আরও অনেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন।
ক. পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
খ. যুক্তফ্রন্ট কী? ব্যাখ্যা করো।
গ. রফিকের জীবনদান বাংলাদেশের ইতিহাসের কোন ঘটনাকে নির্দেশ করেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের রহমান সাহেব, গফুর এবং আশীষ আমাদের গর্ব- বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : ২০১৭ সালের ৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের কর্মসূচি অনুযায়ী কার্জন হলে আচার্যের বক্তব্য প্রদানকালে সাব্বিরের একটি ঐতিহাসিক ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়। ঘটনাটি হচ্ছে, তৎকালীন সময়ে একজন অতিথি কার্জন হলে যে বক্তব্য রেখেছিলেন তার প্রতিবাদে ছাত্ররা ‘না-না-না’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছিল। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে যে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল, তাতে সর্বস্তরের বাঙালিরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ক. কখন পাকিস্তান রাষ্ট্রটির জন্ম হয়?
খ. শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে যে আন্দোলনের ইঙ্গিত করা হয়েছে তার পটভূমি বর্ণনা করো।
ঘ. উক্ত আন্দোলন থেকে বাঙালি জাতির অর্জন বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : ১৯৬০ সালে ভারতের আসামের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চালিহা ঘোষণা করেন যে, ‘অসমিয়া’ ভাষা হবে আসামের একমাত্র রাজ্য ভাষা। এ প্রস্তাবের বিপক্ষে আসামের বাংলাভাষীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলন পরিচালনার জন্যে গঠন করা হয় ‘কাছাড় জেলা গণসংগ্রাম পরিষদ’। এ পরিষদ ১৯৬১ সালের ১৯ মে হরতালের ডাক দেয়। রাজ্য সরকার এ দিন কারফিউ ঘোষণা করে। কারফিউ ভঙ্গ করে মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে, শহিদ হন ১ জন তরুণী ও ১০ জন তরুণ।
ক. ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের মোট ভোটারের সংখ্যা কত ছিল?
খ. ভাষা আন্দোলনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
গ. বিমলা প্রসাদ চালিহার ঘোষণার সাথে কোন পাকিস্তানি নেতার ঘোষণা সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের যে আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়, সে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : রহমতপুর উপজেলাটি ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। উপজেলার মধ্যদিয়ে একটি নদী প্রবাহিত হওয়ায় ৩টি ইউনিয়ন নদীর অন্য পাড়ে অবস্থিত। উপজেলা চেয়ারম্যান নদীর এ পাড়ের বাসিন্দা হওয়ায় সকল প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তার এ পাড়ের ৫টি ইউনিয়নে হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে অন্য পাড়ের লোকেরা নিয়মিত কর, খাজনা দিয়ে থাকে এবং নানা প্রকার ফসল উৎপাদন করে উপজেলার চাহিদা পূরণ করে। সে পাড়ে তেমন কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা হয় না। ফলে সে পাড়ের জননেতা খলিলুর রহমান এলাকাবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।
ক. জাতীয়তাবাদ কী?
খ. ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির কাছে কেন স্মরণীয়?
গ. উদ্দীপকের অন্য পাড়ের লোকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের সাথে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের আচরণের কী মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে খলিলুর রহমানের কী কী দাবি উত্থাপন করা উচিত বলে তুমি মনে কর?
সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : রাজু একটি গার্মেন্টস কোম্পানীতে চাকরি করে। সেখানে গিয়ে সে শ্রমিক আন্দোলন দেখতে পায়। শ্রমিক নেতার দেওয়া কয়েক দফার সাথে শ্রমিকরা আরো কয়েক দফা জুড়ে দিয়ে ১১ দফা দাবি করে। আন্দোলন চরম আকার ধারণ করলে মালিক শ্রেণি তাদের দাবি মেনে নয়।
ক. কত সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়?
খ. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা কীরূপ ছিল?
গ. উদ্দীপকে রাজুর কোম্পানির আন্দোলনের সাথে তোমার পঠিত কোন আন্দোলনের মিল খুঁজে পাও তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে উক্ত আন্দোলনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো।
শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান ২য় পত্র ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পেতে উপরের বাটনে ক্লিক করো। কোর্সটিকায় রয়েছে এইচএসসি সকল বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর। যা তোমরা পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। তাই নিয়মিত আমাদের শীট ও সাজেশনগুলাের আপডেট পেতে কোর্সটিকার YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করে নাও।
Discussion about this post