সুখী মানুষ গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর : মোড়ল হলো একজন অসৎ চরিত্রের লোক। সে সুবর্ণপুরের মোড়ল। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে অন্যের জমি কেড়ে নিয়েছে, অন্যের কষ্টে ফলানো ধান লুট করেছে। মানুষের সম্পদ কেড়ে নিয়ে নিজের সম্পদের বহর বৃদ্ধি করেছে। তাই মোড়লের প্রতি সুবর্ণপুরের মানুষের মনে জমা হয়েছে অসীম ঘৃণা। এসব কারণেই হাসু আলোচ্য কথাটি বলেছে।
সুখী মানুষ গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর
১. মোড়ল বিছানায় শুয়ে ছটফট করছিল কেন?
উত্তর: অসুখের যন্ত্রণায় মোড়ল বিছানায় শুয়ে ছটফট করছিল।
‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মোড়ল শোষকশ্রেণির প্রতিনিধি। সে গরিব ও অসহায় মানুষের সম্পদ শোষণ করেছে। মানুষকে ঠকিয়ে, মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে মোড়ল আজ এমন এক কঠিন রোগে আক্রান্ত যা থেকে মুক্তি লাভ অসম্ভব। তাই মোড়ল বিছানায় শুয়ে ছটফট করছে।
২. অমন ভয় দেখাবেন না—রহমতের একথা বলার কারণ কী?
উত্তর: প্রশ্নোক্ত উক্তিটি রহমত হাসুকে করেছিল মোড়লের রোগ নিরাময় সম্পর্কে।
পাপের ফলস্বরূপ মোড়ল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে ছটফট করছে। কবিরাজ মোড়লের নাড়ি পরীক্ষা করছে। মোড়লের বিশ্বস্ত চাকর রহমত এবং আত্মীয় হাসু মোড়লের অসুখ সম্পর্কে কথা বলছে। এমন সময় হাসু রহমতকে বলে, ভালো করে শোনো, ঐ কবিরাজ যতই নাড়ি দেখুক, তোমার মোড়লের নিস্তার নেই। তাই রহমত হাসুকে বলে, অমন ভয় দেখাবেন না।
৩. কাঠুরিয়া লোকটি নিজেকে সুখী মনে করে কেন?
উত্তর: কাঠুরিয়া লোকটির অধিক লোভও নেই। আবার অধিক চাহিদাও নেই। তাই কাঠুরিয়া লোকটি নিজেকে সুখী মনে করেন।
কাঠুরিয়া লোকটির চাওয়া এবং পাওয়া সবকিছুই তার সাধ্যের মধ্যে। কাঠুরিয়া লোকটির কোনো দুঃখ নেই। সে সারাদিন বনে কাঠ কেটে যা উপার্জন করে তা দিয়ে চাল, ডাল কিনে খায় এবং রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। তার কোনো চিন্তা নেই, চাহিদা নেই, কিছু হারানোর ভয় নেই, চুরি হওয়ারও ভয় নেই। তাই সে নিজেকে সুখী মনে করে।
৪. “তোমার মোড়লের নিস্তার নাই।”—হাসুর এ কথা বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘মোড়লের কৃতকর্ম ভালো না হওয়ায় হাসু আলোচ্য কথাটি বলেছে।
মোড়ল হলো একজন অসৎ চরিত্রের লোক। সে সুবর্ণপুরের মোড়ল। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে অন্যের জমি কেড়ে নিয়েছে, অন্যের কষ্টে ফলানো ধান লুট করেছে। মানুষের সম্পদ কেড়ে নিয়ে নিজের সম্পদের বহর বৃদ্ধি করেছে। তাই মোড়লের প্রতি সুবর্ণপুরের মানুষের মনে জমা হয়েছে অসীম ঘৃণা। এসব কারণেই হাসু আলোচ্য কথাটি বলেছে।
৫. ‘দুনিয়াতে আমার মতো সুখী কে? আমি সুখের রাজা।’—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘দুনিয়াতে আমার মতো সুখী কে? আমি সুখের রাজা।’—এটা সুখী মানুষের কথা।
মানুষের মনে যখন চাহিদার সৃষ্টি হয় তখন চাহিদা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে। আবার যখন কারও হাতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সম্পদ জমা হয় তখন সেসব সম্পদ রক্ষার একটা তাগিদ কাজ করে। কিন্তু যার কোনো চাহিদা নেই, তার সম্পদ আগলে রাখার তাড়াও নেই। তার মনে সুখ বিরাজ করে। এ কারণেই সুখী মানুষ আলোচ্য কথাটি বলেছে।
৬. রহমত কেন হাউমাউ করে কাঁদার কথা বলল?
উত্তর: অসুস্থ মোড়লের চাকর রহমত তার মনিব সম্পর্কে হাসুর সমবেদনাহীন কথা শুনে হাউমাউ কারে কাঁদার কথা বলে।
মোড়লের অসুখ নিয়ে কথা বলার সময় তার আত্মীয় হাসু তার বিশ্বাসী চাকর রহমতকে মোড়লের বর্তমান অবস্থা এবং অসুখ থেকে মোড়লের নিস্তার নেই বলে জানায়। হাসুর এ ধরনের কঠোর মন্তব্যে রহমত উক্ত কথাগুলো বলে।
৭. মোড়ল সুবর্ণপুরের মানুষদের ওপর কী রকম অত্যাচার করেছে?
উত্তর: মোড়ল সুবর্ণপুরের মানুষদের ঠকিয়ে, জোর করে তাদের জীবিকার মূলধন কেড়ে নিয়ে তাদের ওপর অত্যাচার করেছে।
মোড়ল একজন অত্যাচারী, কঠোর মানুষ। সে গ্রামের মানুষের গরু কেড়ে নিয়েছে। কারো ধান লুট করেছে। কারো বা মুরগি জবাই করে খেয়েছে। এসব মানুষদের সর্বস্বান্ত করে সে ধনী হয়েছে আবার তাদের দুঃখ দেখে হেসেছে। এভাবেই সে সবার ওপর অত্যাচার করেছে।
৮. রহমত এবং হাসুও নিজেদের অসুখী মনে করে কেন?
উত্তর: রহমত এবং হাসুও নিজেদের অসুখী মনে করে, কারণ তাদেরও মনের মধ্যে চাহিদা আছে।
সুখী মানুষের সন্ধানে গিয়ে হাসু এবং রহমত যখন সুখী মানুষ খুঁজে পায় না, তখন তারা সুখের কারণ সন্ধান করে। সবারই কোনো না কোনো চাওয়া থাকে, যার কারণে সে সুখী হতে পারে না। হাসু এবং রহমতেরও চাওয়া মোড়লের জন্য জামা বখশিশ। তাই তারা নিজেদের অসুখী মনে করে।
৯. মোড়লের সমস্যার সমাধান হলো না কেন?
উত্তর: সুখী মানুষের জামা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে মোড়লের সমস্যার সমাধান হয়নি।
অত্যাচারী নিষ্ঠুর মোড়লের রোগ সারাবার একমাত্র উপায় ছিল একজন সুখী মানুষের জামা তাকে পরানো। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজির পর সে সুখী মানুষ পাওয়া গেল কিন্তু তার কিছুই ছিল না। এমনকি গায়ের জামাও না। আর তাই মোড়লের সমস্যার সমাধান হলো না।
১০. হাসু মোড়লের মৃত্যু কামনা করে কেন?
উত্তর: মোড়ল অত্যাচারী ও পাপী বলে হাসু মোড়লের মৃত্যুকামনা করে।
‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মোড়ল একজন খারাপ লোক। কারো গরু কেড়ে নিয়ে, কারো ধান লুট করে মোড়ল আজ ধনী। মানুষের দুঃখকষ্ট দেখে মোড়ল হেসেছে। সে অত্যাচারী, পাপী। গ্রামের সব মানুষকে মোড়ল খুব জ্বালাতন করেছে। হাসুর মুরগি জবাই করে খেয়েছে মোড়ল। এসব অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে হাসু মোড়লের মৃত্যু কামনা করেছে।
আরও দেখো—অষ্টম শ্রেণির বাংলা গল্প-কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
শিক্ষার্থীরা, উপরে তোমাদের বাংলা বই থেকে সুখী মানুষ গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তোমাদের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখানে দেওয়া হয়েছে। এ প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে অনুশীলন করার পরামর্শ থাকবে। পিডিএফ ফরমেটে উত্তরমালা সংগ্রহের জন্য ‘Answer Sheet’ অপশনে ক্লিক করো। এছাড়াও বাংলা বইয়ের গল্প-কবিতার সৃজনশীল, জ্ঞানমূলক, বর্ণনামূলক এবং বহুনির্বাচনি সমাধানের জন্য উপরের লিংকটি অনুসরণ করো।
Discussion about this post