হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রশ্ন উত্তর : শ্রীপান্থ (১৯৩২ – ২০০৪) : লেখাপড়া ময়মনসিংহ আর কলকাতায়। প্রকৃত নাম নিখিল সরকার, শ্রীপান্থ তীর ছন্মনাম। তরুণ বয়স থেকেই সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। চাকরি করেছেন আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে । সাংবাদিকতার পাশাপাশি দীর্ঘদিন গভীর গবেষণা করেছেন। তার গবেষণার বিষয় সামাজিক ইতিহাস, বিশেষত কলকাতার সমাজ ও সংস্কৃতি।
“দেবদাসী” “ঠগী” “হারেম” ইত্যাদি বইয়ের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য কলকাতা বিষয়ক বইগুলিও-_ “আজব নগরী”, শ্রীপান্থের কলকাতা” “যখন ছাপাখানা এলো”, “মোহত্ত এলোকেশী সম্থাদ’ “কেয়াবাৎ মেয়ে” “মেটিয়াবুবুজের নবাব”, “বটতলা” “কলকাতা” বাংলা মুলুকে প্রথম ধাতব হরফে ছাপা বই হ্যালহেডের “আ গ্রামার অবদ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গোয়েজ’-এর সাম্প্রতিক একটি সংস্করণের দীর্ঘ ভূমিকা তিনি লিখেছেন।
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রশ্ন উত্তর
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর
১. “যা ইতিমধ্যে লেখা হয়েছে তাই-ই ফুটে উঠেছে—–।” (শূন্যস্থান পূরণ করো)
ক. কাগজের ওপর
খ. এক্সারসাইজ খাতায়
গ. পরদায়
ঘ. পাঠকের হৃদয়ে
২. ‘ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ।‘বিপদটি কী?
ক. লিখতে লিখতে ভোঁতা হয়ে যায়
খ. লেখককে নেশাগ্রস্ত করে তোলে
গ. অর্থবানরা ছাড়া μয় করতে পারে না
ঘ. প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় না।
৩. যারা ওস্তাদ কলমবাজ, তাদের বলা হয়-
ক. দার্শনিক
খ. পণ্ডিত
গ. লিপিকুশলী
ঘ. মাস্টার
৪. “সেই আঘাতেই পরিণতি নাকি তার মৃত্য”।-“তার’ বলতে বোঝানো হয়েছে যাকে-
ক. জীবনানন্দ দাসকে
খ. সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে
গ. তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে
ঘ. ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়কে।
৫. প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ-এর আসল নাম –
ক. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
খ. রাজশেখর বসু
গ. বিমল ঘোষ
ঘ. নিখিল সরকার
৬. লেখক তার অফিসে কোন্ জিনিসের কথা বলেছেন যা শুধু তারই আছে?
ক. একটা কম্পিউটার যন্ত্র
খ. একটা বাংলা অভিধান
গ. একটা টাইম ঘড়ি
ঘ. একটা কলম
৭. লেখক যেখানে কাজ করতেন সেটা ৃৃৃৃ. অফিস। (শূন্যস্থান পূরণ করো)
ক. প্রযুক্তি বিদ্যার
খ. শিক্ষা দপ্তরের
গ. সংবাদপত্রের
ঘ. আমদানি-রফতানির
৮. “এই নেশা পেয়েছি আমি শরৎদার কাছ থেকে।’ বক্তা কে?
ক. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খ. শ্রীপান্থ
গ. জীবনানন্দ দাস
ঘ. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৯. ‘কালি, কলম, মন লেখে তিনজন’–এটি হল—
ক. প্রবাদ
খ. ধাঁধা
গ. উপকথা
ঘ. রূপকথা
১০. “আমাদের মধ্যে যারা ওস্তাদ তারা ওই কালো জলে —— ঘষত”। (শূন্যস্থান পূরণ করো)।
ক. তেঁতুল
খ. হরিতকী
গ. আমলকি
ঘ. চন্দন।
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নের উত্তর
১. “নিবের কলমের মান মর্যাদা’ – শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন কোন্ বিখ্যাত ব্যক্তি?
উত্তর : লেখক শ্রীপান্থের মতে, সম্ভবত একমাত্র সত্যজিৎ রায়ই শেষপর্যন্ত নিবের কলমে লেখালেখি করে সেই কলমের মান মর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।
২. “বলে আমি মুনশি।’ – ‘মুনশি’ কাদের বলা হয়েছে?
উত্তর : আরবি ‘মুনশি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ বিদ্বান, পণ্ডিত, উর্দু শিক্ষক বা কেরানি। লেখালেখি যাদের পেশা তাদের মুনশি বলা হয়েছে।
৩. “কালযুগ বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই’ – ‘আমরাও তা-ই’ বলতে লেখক কী বলতে চেয়েছেন?
উত্তর : বাংলার এক প্রচলিত প্রবাদ অনুযায়ী লেখক বলতে চেয়েছেন, কালি ও কলম ছাড়াই এখন সবাই মুনশি।
৪. “সোরুকে অক্ষর খাওয়ানো নাকি পাপ”। সে কারণে লেখকরা শৈশবে কী করতেন?
উত্তর : শৈশবে লেখকরা মাস্টারমশাইয়ের ফেরত দেওয়া কলাপাতার অংশটি পুকুরে ফেলে দিতেন। কারণ সোরু সেটা খেলে অমঙ্গল হবে বলে মনে করা হত।
৫. “আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি।’ – সহজ পদ্ধতিটি কী ছিল?
উত্তর : কাঠের উনুনে ব্যবহার করা লোহার কড়াই-এর নীচে জমে থাকা কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে একটা পাথরের পাত্রে তুলে জলে গুলে নেওয়া হত। এটাই ছিল কালি তৈরির সহজ পদ্ধতি।
৬. লেখক ফিনিসীয় হলে কী করতেন?
উত্তর : লেখক ফিনিসীয় হলে তিনি বনপ্রান্ত থেকে হাড় কুড়িয়ে এনে কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন।
৭. স্টাইলাস কী?
উত্তর : ব্রোঞ্জের সরু শলাকার পোশাকি নাম স্টাইলাস। প্রাচীনকালে কলম হিসেবে ব্যবহৃত হত ব্রোঞ্জের এই সরু শলাকা।
৮. এমন দুটি চিত্রের নাম করো যাতে পালকের কলম দেখা যায় ?
উত্তর : যে দুটি চিত্রে পালকের কলম দেখা যায় সেই চিত্র দুটি হল – উইলিয়াম জোন্স ও ‘সু-মুনশি’ কেরিসাহেব।
৯. প্রথমে ফাউন্টেন পেনের নাম কী ছিল?
উত্তর : প্রথমে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল রিজার্ভার পেন।
১০. “এমন কী আমি যদি রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতাম।’ – কোন্ অধীশ্বরের নাম তুমি পেয়েছ?
উত্তর : পাঠ্যে যে রোমান অধীশ্বরের নাম আমি পেয়েছি, তার নাম হল জুলিয়াস সিজার।
রচনাধর্মী প্রশের উত্তর
১. “কালি, কলম, মন লেখে তিনজন’ কিন্তু কলম কোথায়’ – লেখকের এ ধরনের মন্তব্যের কারণ কী? অংশটির তাৎপর্য লেখ।
উত্তর : মন্তব্যের কারণ : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম শীর্ষক প্রবন্ধে শ্রীপান্থ ছদ্মনামে। লেখক নিখিল সরকার কালি কলমের অতীতের ছবি এবং বিবর্তনের পথ ধরে বর্তমানে তার অবস্থানের চমৎকার একটি দলিল পেশ করেছেন। আলোচ্য অংশে প্রচলিত বাংলা প্রবাদ বাক্যকে প্রারম্ভিক ব্যবহার করেছেন প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে।
লেখক একজন চাকুরিজীবী। তিনি যেখানে কাজ করেন সেটা একটা লেখালেখির অফিস। প্রাবন্ধিকের ভাষায় সবাই এখানে লেখক কিন্তু লেখকের চোখে ধরা পড়েছে অন্য ছবি। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি অফিসে কলম ব্যবহার করেন। বাকিরা সবাই কাজ করেন কম্পিউটারে। ফলে তাদের কলমের প্রয়োজন নেই। এই বৈপরিত্যের কারণে লেখক আলোচ্য মন্তব্যটি করেন।
তাৎপর্য : সাহিত্য হল সৃষ্টি ও নির্মাণ। সাহিত্যিকের মনের কথা যখন শব্দ বন্ধে প্রকাশ পায় তখন তা সাহিত্য হয়ে ওেঠ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন নীরব কবি। বলে কিছু হয় না। অর্থাৎ ভাব ও কল্পনাকে রূপ দিতে হয়। এর আবশ্যিক উপাদান হল—কালি, কলম ও মন যা একটি লেখার নির্মাণকে শিল্পে পরিণত করেন। এ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন – কালি, কলম মন লেখে তিনজন।
২. হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে লেখক কালি প্রস্তুতির কোন চিত্র অঙ্কন করেছেন। অথবা, কালি কীভাবে তৈরি হত ?
উত্তর : কালি প্রস্তুিতর : বিখ্যাত লেখক শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে লেখক জানিয়েছিলেন কীভাবে কালি ও কলম জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বর্তমানে কম্পিউটার আমাদের লেখালেখির মূল মাধ্যম হলেও একসময় কালি ও দোয়াত ছিল লেখার একমাত্র উপাদান। সেই দিনগুলির কথা লেখক স্মরণ করেছেন। লেখক বলেছেন—‘আমি গ্রামের ছেলে’ একথা বলার কারণ কলমের সঙ্গে তার জীবনের সম্পর্ক। এরপর তিনি জানিয়েছেন তাকে কালি তৈরি করতে মা পিসি, দিদিরা সাহায্য করতেন। তাদের কালি তৈরির পদ্ধতি ছিল অত্যন্ত সহজ। বাড়ির রান্না হত কাঠের উনুনে। তাতে কড়াইয়ের তলায় বেশ কালি জমত। লাউপাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে একটা পাথরের বাটিতে রেখে জলে গুলে নেওয়া হত। লেখক জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে যারা ওস্তাদ তারা সেই
কালো জলে হরিতকী ঘষতেন। কখনও কখনও মাকে দিয়ে আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে সেই তরলে মেশাতেন। সব ভালো করে মেশাবার পর একটা খুন্তির সোড়ার দিকটা পুড়িয়ে লাল টকটকে করে সেই জলে ডুবিয়ে দিতেন। অল্প জল হওয়ায় তা টগবগ করে ফুটত। তারপর ন্যাকড়ায় ছেকে দোয়াতে ঢেলে রাখা হত। দোয়াত মানে তখন ছিল মাটির দোয়াত। বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত ঘরে তৈরি কালি আর কলাপাতা এইসব নিয়ে লেখকদের প্রথম লেখালেখি শুরু। এভাবে কালি। তৈরির প্রসঙ্গ এনেছেন।
৩. ‘আমার মনে পড়ে প্রথম ফউন্টেন পেন কেনার কথা—লেখকের প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতা লেখ।
উত্তর : ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতা : বিখ্যাত লেখক শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কয়েক বছর পর লেখক কলেজ স্ট্রিটের এক দোকানে গিয়েছিলেন পেন কিনতে। দোকানি পেনের নাম জানতে চাইলে লেখক কিছুটা থতমত খেয়ে। গেলেন। দোকানদার লেখককে একে-একে পেনের দাম ও নাম বলতে থাকলেন। শেষে লেখকের পকেটের অবস্থা বুঝে নিয়ে সস্তার একটি জাপানি পাইলট পেন লেখকের সামনে ধরলেন। শুধু তাই নয় পেনটি কতটা শক্তপোক্ত, টেকশয় সেটা বোঝানোর জন্য লেখকের সামনে ছোটখাটো একটা ডেমাে দিলেন।
পেনের মুখ থেকে খাপটা সরিয়ে কলমটা ছুঁড়ে দিলেন টেবিলের পাশে রাখা কাঠের বোর্ডের। উপর। সার্কাসে যেমন ছুরির খেলা দেখায় ঠিক সেই রকম। বোর্ড থেকে পেনটা খুলে এনে দু-এক লাইন লিখে লেখককে দেখিয়ে দিলেন নিব ঠিক আছে। লেখক সেদিন জাপানি পাইলট নিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন। যা তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী হিসেবে ছিল।
আরো দেখো: মাধ্যমিক বাংলা সম্পূর্ণ সাজেশন উত্তরসহ
মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা, উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রশ্ন উত্তর pdf ডাউনলোড করে নাও। এছাড়াও মাধ্যমিক অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post