১ম অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা নবম দশম শ্রেণি : ইতিহাসের জনক গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস । তিনি তাঁর গবেষণাকর্মের নামকরণে সর্বপ্রথম Historia শব্দটি ব্যবহার করেন । Historia শব্দটি থেকেই History শব্দের উৎপত্তি, যার বাংলা প্রতিশব্দ হলো ইতিহাস।
১ম অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা নবম দশম শ্রেণি
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : রুমি, নাফিসা ওরা ওদের চাচার সাথে জাতীয় জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বেড়াতে যায় এবং অনেক পুরাতন নিদর্শন দেখে। সেখানে রুমি মসলিন শাড়ি, নবাবদের ব্যবহৃত তৈজসপত্র, আসবাবপত্র এবং গহনাপত্র দেখে মুগ্ধ হয়। অন্যদিকে নাফিসা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ পক্ষের আত্মসমর্পণ দলিল ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা সংবলিত পোস্টার, পুস্তক-পত্রিকা দেখে আবেগাপ্লুত হয়।
ক. আধুনিক ইতিহাসের জনক কে?
খ. ইতিহাস পাঠে কীভাবে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পায়?
গ. রুমি ইতিহাসের কোন ধরনের উপাদান দেখেছিল? পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
ঘ. “প্রাচীন বিশ্বসভ্যতা জানার জন্য নাফিসার দেখা ইতিহাসের উপাদানগুলো গুরুত্বপূর্ণ”- উক্তিটির ব্যাখ্যা দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : অন্ধিতা ও অর্পিতা বার্ষিক পরীক্ষা শেষে বেড়াতে গেল। অন্ধিতা তার মামার সাথে ময়মনসিংহ যাদুঘর পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে সে জমিদারদের ব্যবহার্য পাথরের ফুলদানি, কম্পাস ঘড়ি, অলঙ্কার, মৃৎপাত্র, লোহার সিন্দুক ইত্যাদি দেখে মুগ্ধ হলো। অপরদিকে অর্পিতা তার বাবার সাথে রংপুরের তাজহাট জমিদারদের সংস্কৃত ও আরবি ভাষায় লেখা পাণ্ডুলিপি দেখে অভিভূত হলো।
ক. বিষয়বস্তুগত ইতিহাস কাকে বলে?
খ. ইতিহাসকে শিক্ষণীয় দর্শন বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত অন্ধিতার দেখা দ্রব্যগুলো ইতিহাসের কোন ধরনের উপাদানের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে কর, অর্পিতার দেখা পাণ্ডুলিপি থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব? মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : রিমা ও সিমা দুই বোন এসএসসি পরীক্ষা শেষে চাচার বাসা ঢাকায় বেড়াতে যায়। তার চাচা নাজমুল সাহেব ওদের জাতীয় যাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে নিয়ে যান। রিমা সেখানে কিছু পুরনো বইপত্র দেখলো এবং একটি বই কিনলো। সিমা চাচাকে বললো, আমি বই কিনব না, যাদুঘরের পুরানো জিনিসপত্র দেখব। সিমা যাদুঘরে দেখতে পেল মুদ্রা, শিলালিপি, স্তম্ভলিপি, তাম্রলিপি, ইমারত ইত্যাদি।
ক. ‘সমাজ জীবনই ইতিহাস’— উক্তিটি কার?
খ. “ইতিহাস অতীত হলেও বর্তমানমুখী”— বুঝিয়ে লেখ।
গ. রিমা ইতিহাসের কোন ধরনের উপাদান ক্রয় করেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “কোনো স্থান বা বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস জানতে সিমার দেখা জিনিসগুলোই যথেষ্ট নয়”— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : জনাব ফয়সাল তার বাগান পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি পয়সা পেল । পয়সাটি সে চিনতে না পেরে স্থানীয় এক অভিজ্ঞ ব্যক্তির কাছে নিয়ে গেলে তিনি বললেন, এটি প্রাচীন কোনো রাজবংশের মুদ্রা। অন্যদিকে, সোনাবাড়ীয়ার মঠবাড়ী একটি প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক স্থান। এই স্থাপত্যটি সরকারি-বেসরকারি যে কোনো পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে।
ক. ইতিহাস কী?
খ. ইতিহাস অন্যান্য বিষয় থেকে আলাদা কেন?
গ. উদ্দীপকের ফয়সাল সাহেবের বাগানে পাওয়া দ্রব্যটি ইতিহাসের কোন ধরনের উপাদান? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের মঠবাড়ী যে প্রকারের ইতিহাসের প্রতি ইঙ্গিত করে তা সংরক্ষণ করলে আমাদের ইতিহাস সমৃদ্ধ হবে— বিশ্লেষণ করো?
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন হয়। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙ্গতে এদেশে বহু বিদ্রোহ, আন্দোলন সংঘটিত হয়। ঔপনিবেশিক যুগে এবং পাকিস্তানি শাসন আমলে বাঙালি বহুবার শোষণ নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছে। মাথা উঁচু করে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচার প্রচেষ্টা এদেশবাসীর শত শত বছরের। তাই তো তারা পরিচিতি পেয়েছে বীর বাঙালি বলে।
ক. ইতিহাসের বিষয়বস্তু কী?
খ. সমাজের জীবনই ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের বর্ণনা কোন প্রকারের ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের বর্ণনা ইতিহাস পাঠের ক্ষেত্রে কোনো গুরুত্ব বহন করে কি? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে মতামত দাও।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
ইতিহাসের উপাদান : যেসব তথ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ঐতিহাসিক সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব, তাকেই ইতিহাসের উপাদান বলা হয়। সঠিক ইতিহাস লিখতে ঐতিহাসিক উপাদানের গুরুত্ব অপরিসীম। ইতিহাসের উপাদানকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : লিখিত উপাদান ও অলিখিত উপাদান।
ইতিহাসের প্রকারভেদ : পঠন-পাঠন, আলোচনা ও গবেষণাকর্মের সুবিধার্থে ইতিহাসকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : ভৌগোলিক অবস্থানগত ইতিহাস ও বিষয়বস্তুগত ইতিহাস।
১. ভৌগোলিক অবস্থানগত ইতিহাস : অর্থাৎ যে বিষয়টি ইতিহাসে স্থান পেয়েছে তা কোন প্রেক্ষাপটে রচিত স্থানীয়, জাতীয় না আন্তর্জাতিক। এভাবে ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে শুধুমাত্র বোঝার সুবিধার্থে ইতিহাসকে আবার তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা : স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাস, জাতীয় ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক ইতিহাস।
২. বিষয়বস্তুগত ইতিহাস : যখন কোনো বিশেষ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে যে ইতিহাস রচিত হয় তাকে বিষয়বস্তুগত ইতিহাস বলা হয়। সাধারণভাবে একে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা : রাজনৈতিক ইতিহাস, সামাজিক ইতিহাস, অর্থনৈতিক ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ইতিহাস, কূটনৈতিক ও সাম্প্রতিক ইতিহাস।
ইতিহাসের স্বরূপ : প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের বিচারে ইতিহাস অন্যান্য বিষয় থেকে আলাদা। জ্ঞান অর্জনের অন্যান্য শাখা থেকে এর রচনা ও উপস্থাপনা পদ্ধতিও স্বতন্ত্র। যেমন : ইতিহাস অতীতমুখী। ইতিহাসের বিষয়বস্তু মানুষ, তার সমাজ-সভ্যতা। ইতিহাসে আবেগ ও অতি কথনের কোনো ঠাঁই নেই। ইতিহাস নিরন্তর প্রবহমান। সর্বোপরি বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতাই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য।
ইতিহাসের পরিসর : মানুষ কর্তৃক সম্পাদিত সকল বিষয় ইতিহাসের পরিসরের আওতাভুক্ত। মানুষের চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা, কার্যক্রম যত শাখা-প্রশাখায় বিস্তৃত, ইতিহাসের সীমাও ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে এ বিস্তৃতির সীমা স্থিতিশীল নয়। মানুষের চিন্তা-ভাবনা, কর্মধারা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের পরিসরও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা : মানবসমাজ ও সভ্যতার বিবর্তনের সত্যনির্ভর বিবরণ হচ্ছে ইতিহাস। যে কারণে জ্ঞানচর্চার শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব অসীম। ইতিহাস পাঠ মানুষকে অতীতের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান অবস্থা বুঝতে, ভবিষ্যৎ অনুধাবন করতে সাহায্য করে। ইতিহাস পাঠের ফলে মানুষের পক্ষে নিজের ও নিজ দেশ সম্পর্কে মঙ্গল-অমঙ্গলের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। সুতরাং দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ব্যক্তি প্রয়োজনে ইতিহাস পাঠ অত্যন্ত জরুরি।
SSC শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন সাজেশান্স ও নোট পেতে আমাদের Facebook Page এ Like দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post