বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা লাভের জন্য বাঙালিরা অনেক দুঃখকষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭০ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণের হাত থেকে মুক্তি লাভের আশায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আওয়ামী লীগকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়।
কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা প্রদানের ক্ষেত্রে নানারকম ষড়যন্ত্র শুরু করে। ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২রা মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণে জনগণকে মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
২৫শে মার্চ নিরত্র অনগণের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী আক্রমণ চালায়। ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ১০ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং স্বাধীনতার সাংবিধানিক ঘোষণাপত্র গ্রহণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ নয় মাস এক রক্রক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ৯৩ হাজার সদস্য ঐ দিন আত্মসমর্পণ করে। বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির অভ্যুদয় ঘটে।
স্বাধীনতা লাভের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারকে মোকাবিলা করতে হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে পরিবার-পরিজনসহ হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের উত্থান ও সামরিক শাসনের সূত্রপাত ঘটে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রের পুনর্যাত্রা শুরু হয়। দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যায়। এ অধ্যায়ে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট, অভ্যুদয়, পুনর্গঠন, সামরিক শাসনামল, গণতন্ত্রের পুনর্যাত্রা ও আর্থ-সামাজিক ও সাস্কৃতিক অগ্রযাত্রা সম্পর্কে অবহিত হব।
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : নিশিতের দাদা মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছিলেন। সে তার দাদার কাছে শুনেছে মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রই বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে এবং বিশ্ব জনমত | সৃষ্টির লক্ষ্যে নিশিতের দাদার মতো অনেকেই প্রবাসে থেকে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল।
ক. রেসকোর্স ময়দানের বর্তমান নাম কী?
খ. মুক্তিযুদ্ধের ঋণ কোনো দিন শোধ হবে না কেন?
গ. “মুক্তিযুদ্ধে নিশিতের দাদার মতো অনেক প্রবাসীই পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল” ব্যাখ্যা কর।
ঘ. স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় নিশিতের দাদা যে দেশে অবস্থান করছিল সে দেশের ভূমিকা মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : স্বাধীনতা অর্জনের পর “বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ” জারির মাধ্যমে ৩৪ জন সদস্য নিয়ে খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের পর খসড়া বিলটি গণপরিষদে উত্থাপিত হয়। বিভিন্ন পাঠ-পর্যালোচনা শেষে এটি গৃহীত হয় এবং ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে সংবিধানটি বলবৎ করা হয়।
ক. কারা মুক্তিফৌজ নামে পরিচিত ছিল?
খ. মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদান মূল্যায়ন কর।
গ. “১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল জনগণের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে”- তোমার মতামত ব্যক্ত কর।
ঘ. “বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে
বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান অনন্য”- সংবিধানের বৈশিষ্ট্যের আলোকে উক্তিটি মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : ১৯৭০ সালের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয় মুজিবনগর সরকার। যুদ্ধ পরিচালনা ও বিশ্বজনমত গড়ে তোলাই ছিল এ সরকারের উদ্দেশ্য। মুক্তিযুদ্ধে আপামর জনগোষ্ঠী ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিকটতম প্রতিবেশী দেশটির অবদান এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ৷
ক. মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
খ. মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের অবদান লেখ।
গ. যুদ্ধে নিকটতম প্রতিবেশী দেশটির অবদান মূল্যায়ন কর।
ঘ. মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম স্বাধীনতার পথ সুগম করে।— যুক্তি দেখাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : জনাব ‘ক’ ছিলেন ‘খ’ নামক দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। জনাব ‘ক’-এর নেতৃত্বে ‘খ’ দেশের জনগণ সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা হতে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকরণ, অর্থনীতি পুনর্গঠন, শরণার্থী পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দেন। তার অন্যতম সাফল্য ছিল অতি অল্প সময়ে তিনি একটি নতুন সংবিধান তৈরি করে তা কার্যকর করেন। তিনি একাধারে একাধিকবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে স্বাপো নামে একটি আঞ্চলিক সংগঠনের সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্বরত আছেন।
ক. ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান কে ছিলেন?
খ. অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের জনাব ‘ক’-এর সাথে বাংলাদেশের কোন নেতার সাদৃশ্য পাওয়া যায়? উক্ত বাঙালি নেতার হত্যার কারণগুলো ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত বাঙালি নেতার দেশ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : ২৪ বছর বয়সী এক যুবক। বুকে-পিঠে তার লেখা ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক।’ এ জন্যই সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশের ছোড়া সে গুলিতে তাকে জীবনও দিতে হয়েছে। বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতি কোনোভাবেই গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ দেয়নি।
ক. কখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
খ. তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকের যুবকের ত্যাগের (জীবন দান) কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে এই যুবকের মতো বহু লোককেই জীবন দিতে হয়— বিশ্লেষণ কর।
►► আরো দেখো: এসএসসি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (সকল অধ্যায়)
উপরের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও।শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন সাজেশান্স ও নোট পেতে আমাদের Facebook Page এ Like দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post