২য় অধ্যায় ইতিহাস সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : মানব সভ্যতা যেসব মহামনীষীর প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দ্বারা আলোকিত হয়েছে এরিস্টটল তাঁদের অন্যতম তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৪ অব্দে থারেস উপকূলবর্তী স্টাগিরাস নামক গ্রিক উপনিবেশে জন্মগ্রহণ করেন। এরিস্টটলকে ‘পশ্চিমা দর্শনের জনক’ বলা হয়। তিনি প্লেটোর ছাত্র ও আলেকজান্ডারের শিক্ষক ছিলেন। মহান এ দার্শনিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩২২ অব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
২য় অধ্যায় ইতিহাস সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। এখানে প্রায় প্রতি বছরই বন্যায় নদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়। বন্যার পানি নেমে গেলে তীরবর্তী এলাকায় পলি জমে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ঐ অঞ্চলে চাষাবাদ করে কৃষকরা প্রচুর ফসল উৎপাদন করে এবং সমৃদ্ধি লাভ করে।
ক. ‘ইলিয়াড’ ও ‘ওডিসি’ মহাকাব্যের রচয়িতা কে?
খ. সাহিত্যের ক্ষেত্রে গ্রিকদের অবদান ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত অবস্থার সাথে কোন সভ্যতার অববাহিকার মিল পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. লিখনপদ্ধতি ও কাগজ আবিষ্কারে উক্ত সভ্যতার অবদান পর্যালোচনা করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : রায়পুরা ইউনিয়নের অধিবাসীরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভোগান্তির শিকার হয়। এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সুবন্দোবস্ত না থাকায় অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে জনজীবন অতিষ্ঠ। এমনকি জলাবদ্ধতার কারণে ইউনিয়নের শাকসবজির চাষ ব্যাহত হয়। মিল কারখানার বর্জ্য পানিতে পড়ায় কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়।
ক. হায়ারোগ্লিফিক কী?
খ. মিশরীয়রা মৃতদেহকে মমি করে রাখত কেন?
গ. রায়পুরা ইউনিয়নের জনগণ কোন সভ্যতার জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রায়পুরা ইউনিয়নের কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়ার ঘটনা যেন মিশরীয় সভ্যতার বিপরীত চিত্র পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : রূপনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান সাহেব তার এলাকাবাসীর ব্যবহারের জন্য পানির ব্যবস্থা করেন। ব্যবহৃত পানি নিষ্কাশনের জন্য মাটির নিচ দিয়ে ড্রেনের ব্যবস্থা করেন। খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য একটি গুদাম ঘর তৈরি করেন। পৌরবাসীর জন্য তিনি একটি মসজিদ, একটি বিদ্যালয় ও একটি মিলনায়তন প্রতিষ্ঠা করেন।
ক. হায়ারোগ্লিফিক কী?
খ. হেলেনিস্টিক সংস্কৃতি বলতে কী বোঝায়?
গ. রূপনগর পৌরসভার চেয়ারম্যানের কর্মকাণ্ডে ইতিহাসের কোন সভ্যতার চিত্র ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. চেয়ারম্যান সাহেবের প্রতিষ্ঠিত স্থাপত্যসমূহ কি উক্ত সভ্যতার স্থাপত্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : কেরানীপাড়ায় প্রায় সারা বছর জলাবদ্ধতা বিরাজ করে। ফলে জনগণ নানা দুর্ভোগ ও দুর্দশার মধ্য দিন কাটায়। শফিক সাহেব চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এ অবস্থা দূর করার জন্য এলাকার পাশের মজা খালটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং ছোট ছোট নালা কেটে খালের সাথে সংযোগ করে দেন। তিনি স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা করেন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনগণের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলেন।
ক. কিউনিফর্ম কী?
খ. লৌহযুগ বলতে কী বোঝায়?
গ. শফিক সাহেবের কর্মকাণ্ডের সাথে সিন্ধু সভ্যতার কোন -বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত সভ্যতার অবদান কী নগর পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ মাতিছিল? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : পিয়াস একটি প্রাচীন সভ্যতা সম্পর্কে পড়ছিল। এ সভ্যতা সুশৃঙ্খল নগর সভ্যতা উপহার দিয়ে গেছে যা তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের পরাধীন জাতিকে বিশ্বাসী ও স্বাধীনচেতারূপে গড়ে উঠার প্রেরণা যুগিয়েছে। ব্যবসায় বাণিজ্যের মাধ্যমে এ সভ্যতার অর্থনীতি বেশ সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল। এ সভ্যতার কোন মন্দির বা মঠের চিহ্ন পাওয়া যায় নি।
ক. রোমান আইন প্রণীত হয় কত খ্রিষ্টাব্দে?
খ. ‘হায়ারোগ্লিফিক’ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে কোন সভ্যতার ইঙ্গিত বহন করে? উক্ত সভ্যতার স্থাপত্য ও ভাস্কর্য শিল্পের ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত সভ্যতার শিল্প ও নগর পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করো।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
সভ্যতায় মিশরীয়দের অবদান : প্রাচীন সভ্যতায় মিশরীয়দের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। তাদের ধর্মীয় চিন্তা, শিল্প, ভাস্কর্য, লিখন পদ্ধতি কাগজের আবিষ্কার, জ্ঞান বিজ্ঞানচর্চা-সবকিছুই তাদের অবদানে সমৃদ্ধ। মিশরীয়দের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে তাদের জীবনে এমন কোনো দিক নেই যা ধর্মীয় চিন্তা ও বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হয়নি।
সিন্ধু সভ্যতা : উপমহাদেশের প্রাচীনতম সভ্যতার নাম সিন্ধুসভ্যতা। সিন্ধু নদের অববাহিকায় গড়ে ওঠা এ সভ্যতার সংস্কৃতিকে অনেক সময় হরপ্পা সংস্কৃতি বা হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়। বাঙালি প্রতœতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুরাতত্ত্ব বিভাগের লোকেরা মহেঞ্জোদারো নামক স্থানে বৌদ্ধ স্তুপের ধ্বংসাবশেষ আছে ভেবে মাটি খুঁড়তে থাকে।
অপ্রত্যাশিতভাবে বেরিয়ে আসে তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগের নিদর্শন। একই সময়ে ১৯২২-২৩ খ্রিষ্টাব্দে দয়ারাম সাহানীর প্রচেষ্টায় পাঞ্জাবের পশ্চিম দিকে মন্টোগোমারী জেলার হরপ্পা নামক স্থানেও প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। জন মার্শালের নেতৃত্বে পুরাতত্ত্ব বিভাগ অনুসন্ধান চালিয়ে আরো বহু নিদর্শন আবিষ্কার করেন। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা উভয় অঞ্চল একই সভ্যতার উন্মেষস্থল এবং এটিই সিন্ধু সভ্যতা যা উপমহাদেশের প্রাচীনতম সভ্যতা।
সভ্যতায় সিন্ধু অধিবাসীদের অবদান : সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে তাদের নগর পরিকল্পনা। মূলত সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা উন্নত ধরনের নাগরিক সভ্যতায় অভ্যস্ত ছিল। এছাড়া তারা দ্রব্যের ওজন পরিমাপ পদ্ধতির উদ্ভাবক ছিল যা সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান বলে বিবেচিত। মৃৎশিল্প, বয়নশিল্প, অলংকার নির্মাণ শিল্পেও তারা পারদর্শী ছিল। তাদের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য শিল্পে অবদানও গুরুত্বপূর্ণ।
গ্রিক সভ্যতা : ক্রিট দ্বীপ, গ্রিস উপদ্বীপের মূল ভূখণ্ড, এশিয়া মাইনরের পশ্চিম উপকূল এবং ঈজিয়ান সাগরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছিল গ্রিক সভ্যতা। এই সভ্যতার অধিবাসীরা ছিল সমৃদ্ধশালী এক সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের অধিকারী। এই সভ্যতাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা :
১. মিনিয়ন সভ্যতা : ক্রিট দ্বীপে এ সভ্যতার উদ্ভব। এর স্থায়ীকাল ধরা হয়েছে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ অব্দ পর্যন্ত।
২. মাইসিনিয় বা এচিয়ান সভ্যতা : গ্রিসের মূল ভূখণ্ডে দক্ষিণ অঞ্চলে অবস্থিত মাইসিনি নগরের নাম অনুসারে এর নামকরণ হয়। এই সভ্যতার স্থায়িত্ব ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ অব্দ পর্যন্ত। ধারণা করা হয় বন্যা অথবা বিদেশি আক্রমণের ফলে এই সভ্যতার অবসান ঘটে।
সভ্যতায় গ্রিসের অবদান : ভৌগোলিক কারণে গ্রিক নগর রাষ্ট্রগুলো একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও তাদের সংস্কৃতি ছিল অভিন্ন। রাজনৈতিক অনৈক্য থাকা সত্ত্বেও তারা একই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী বলে মনে করত। তাদের ভাষা, ধর্ম, সাহিত্য, খেলাধুলা-সবকিছু তাদের এক সংস্কৃতির বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছিল। এই সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে মূল অবদান ছিল এথেন্সের। আর এই সংস্কৃতির নাম হচ্ছে হেলেনীয় সংস্কৃতি। বিশ্ব সভ্যতায় এ সংস্কৃতির প্রভাব আজও বিদ্যমান।
রোমান সভ্যতা : গ্রিসের সভ্যতার অবসানের আগেই ইতালিতে টাইবার নদীর তীরে একটি বিশাল সাম্রাজ্য ও সভ্যতা গড়ে উঠে। রোমকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এই সভ্যতা রোমীয় সভ্যতা নামে পরিচিত। প্রথম দিকে রোম একজন রাজার শাসনাধীন ছিল। এ সময় একটি সভা ও সিনেটও ছিল। রাজা স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৫১০ অব্দে রোমে একটি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। রোমান সভ্যতা প্রায় ছয়শত বছর স্থায়ী হয়েছিল।
সভ্যতায় রোমের অবদান : রোম শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, স্থাপত্য সর্বক্ষেত্রে গ্রিকদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা এসব বিষয়ে গ্রিকদের অনুসরণ ও অনুকরণ করেছে। তবে সামরিক সংগঠন, শাসন পরিচালনা, আইন ও প্রকৌশল বিদ্যায় তারা গ্রিক ও অন্যান্য জাতির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আধুনিক বিশ্ব রোমানদের কাছে বিপুলভাবে ঋণী।
SSC শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন সাজেশান্স ও নোট পেতে আমাদের Facebook Page এ Like দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post