ভূগোল ও পরিবেশ ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : পৃথিবী মানবজাতির আবাস্থল। পৃথিবীর চারদিকে ঘিরে রয়েছে অসীম মহাকাশ। সৌরজগতের কেন্দ্রে সূর্য রয়েছে। মহাকাশে এরূপ বহু নক্ষত্র রয়েছে। পাশাপাশি চন্দ্র (উপগ্রহ), পৃথিবী (গ্রহ), ধূমকেতু, উষ্কা, নীহারিকা প্রভৃতি রয়েছে। ক্ষুদ্র পোকামাকড় ও ধুলিকণা থেকে শুরু করে আমাদের এই পৃথিবী, দূর-দূরান্তের সকল জ্যোতিষ্ক এবং দেখা না দেখা সবকিছু নিয়েই মহাবিশ্ব। এ অধ্যায়ে আমরা মহাকাশ, মহাবিশ্ব, সৌরজগৎ, পৃথিবী ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব।
ভূগোল ও পরিবেশ ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : ভূগোল ক্লাসে মামুন অক্ষাংশ নির্ণয়ের এমন একটি পদ্ধতি শিখল যার সাহায্যে দিনের বেলা অক্ষাংশ নির্ণয় সম্ভব নয়। সহপাঠী দিদার বিষয়টি বুঝতে না পারায় মামুন তাকে একটি মানচিত্রের সাহায্যে বুঝানোর চেষ্টা করছিল। মানচিত্রটিতে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে কল্পিত রেখাগুলোর কৌণিক মান দেয়া ছিল।
ক. প্রতিপাদ স্থান কাকে বলে?
খ. শুক্র গ্রহের উপরিভাগ থেকে সূর্যকে দেখা যায় না কেন?
গ. মানচিত্রে প্রদর্শিত কোন রেখাগুলো সময়ের পার্থক্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মামুনের প্রদর্শিত পদ্ধতির সাহায্যে কীভাবে অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়? বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : ফিয়াদের ভাই ফাহমি সূর্যের অবস্থান দেখে সময় নির্ণয় করতে পারে। ফিয়াদ এটি শিখার জন্য আগ্রহ দেখালো। তাই ফাহমি তাকে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখা দেখিয়ে সময় সম্পর্কে ধারণা দিল।
ক. বাংলাদেশের প্রতিপাদ স্থান কোনটি?
খ. ১৮০° দ্রাঘিমারেখাকে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলা হয় কেন?
গ. ফাহমি কীভাবে সূর্যের অবস্থান দেখে সময় নির্ণয় করতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কোন রেখাটি নিরক্ষরেখার সমান্তরাল? বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : মিলি ও বিজয় প্রতিপাদ স্থান নিয়ে আলোচনা করছিল। মিলি বলল, ঢাকার প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করতে হলে পৃথিবীর কেন্দ্রকে ছেদ করে বিপরীত দিকে গেলেই পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে সেটি সম্ভব নয় । বিজয় বলল, আমরা যদি গাণিতিকভাবে ঢাকার বিপরীত স্থানটির অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ নির্ণয় করতে পারি তবে তা খুবই সহজ। কারণ আমরা জানি, ঢাকার অক্ষাংশ ২৩°৪৫′ উত্তর এবং দ্রাঘিমাংশ ৯০°২৬′ পূর্ব।
ক. দুটি প্রতিপাদ স্থানের মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত হয়?
খ. প্রতিপাদ স্থান কীভাবে নির্ণয় করা হয়?
গ. উদ্দীপকের আলোকে গাণিতিকভাবে ঢাকার প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় পদ্ধতিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : সাইফি কৌতূহলী চোখে রাতের আকাশ দেখে। আকাশে দৃশ্যমান সকল জ্যোতিষ্ককেই সে তারা বলে মনে করে। আবার সন্ধ্যাকাশে উদীয়মান তারার মতো জ্যোতিষ্কটি একটি গ্রহ, তা সে বিশ্বাস করতে চায় না।
ক. গ্যালাক্সি কাকে বলে?
খ. হ্যালির ধূমকেতু প্রতিবছর দেখা যায় না কেন?
গ. সাইফির দেখা জ্যোতিষ্কটির নিজ অক্ষে আবর্তনের ফলাফল আলোচনা করো।
ঘ. সাইফির দেখা জ্যোতিষ্কটি কি পৃথিবীর মতো একটি আদর্শ গ্রহ তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : ইকবাল ও ইমরান দুই ভাই। পেশাগত কারণে দুই ভাই দুই স্থানে অবস্থান করছে। ইকবাল দক্ষিণ গোলার্ধে ‘A’ স্থানে ৪০° পূর্ব দ্রাঘিমায় এবং ইমরান উত্তর গোলার্ধে ‘B’ স্থানে ১৩০° পূর্ব দ্রাঘিমায় বাস করছে।
ক. স্থানীয় সময় কাকে বলে?
খ. প্রমাণ সময় কেন ব্যবহার করা হয়? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘A’ স্থানের স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ৯টা হলে ‘B’ স্থানের স্থানীয় সময় কত?
ঘ. ‘A’ ও ‘B’ স্থানের মধ্যে তাপমাত্রার তারতম্য হয় কেন? যুক্তিসহকারে উপস্থাপন করো।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
মহাকাশ ও মহাবিশ্ব : পৃথিবীর চারদিকে ঘিরে আছে অসীম আকাশ। এই আকাশের শুরু ও শেষ নেই। আদি-অন্তহীন এ আকাশকে মহাকাশ বলে। মহাকাশে অসংখ্য জ্যোতিষ্ক রয়েছে। চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ধূমকেতু, উল্কা, নীহারিকা, পালসার, কৃষ্ণবামন, কৃষ্ণগহ্বর প্রভৃতি সবকিছুকেই জ্যোতিষ্ক বলে। এদের সবাইকে নিয়ে গঠিত হয়েছে মহাবিশ্ব।
নক্ষত্র : রাতের আকাশে অনেক আলোক বিন্দু মিট মিট করে জ্বলতে দেখা যায়। আলো দেওয়া এসব জ্যোতিষ্ক হলো নক্ষত্র। মহাকাশে অসংখ্য নক্ষত্র রয়েছে। খালি চোখে আমরা মাত্র কয়েক হাজার নক্ষত্র দেখতে পাই। এদের সকলের নিজের আলো ও উত্তাপ আছে। সূর্য এমন একটি নক্ষত্র।
আলোক বর্ষ : নক্ষত্র থেকে নক্ষত্র এবং পৃথিবী থেকে নক্ষত্রের দূরত্ব মাপতে যে একক ব্যবহার করা হয় তাকে আলোক বর্ষ বলে। আলো প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। আলো এই বেগে ১ বছরে যে পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ১ আলোক বর্ষ বলে।
প্রক্সিমা সেন্টোরাই : প্রক্সিমা সেন্টোরাই হলো সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪.২ আলোক বর্ষ, যা প্রায় ৮ লক্ষ কোটি কিলোমিটারের সমান।
গ্যালাক্সি : মহাকাশে গ্রহ, নক্ষত্র, ধূলিকণা, ধূমকেতু বাষ্পকুণ্ডের বিশাল সমাবেশকে গ্যালাক্সি বা নক্ষত্র জগৎ বলে। মহাকাশে একশত বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে। এদের অধিকাংশই সর্পিলাকার বা উপবৃত্তাকার।
নীহারিকা : মহাকাশে স্বল্পালোকিত তারকারাজির আস্তরণকে নীহারিকা বলে। নীহারিকাসমূহ গ্যাসীয় পদার্থে পূর্ণ।
ছায়াপথ : কোনো একটি গ্যালাক্সির ক্ষুদ্র অংশকে ছায়াপথ বা আকাশ গঙ্গা বলে। ছায়াপথ লক্ষ কোটি নক্ষত্রের সমষ্টি।
উল্কা : রাতের মেঘমুক্ত আকাশে অনেক সময় মনে হয় যেন নক্ষত্র ছুটে চলেছে বা কোনো নক্ষত্র যেন এই মাত্র খসে পড়ল। এই ঘটনাকে নক্ষত্রপতন বলে। এরা কিন্তু আসলে কোনো নক্ষত্র নয়। এগুলোকে উল্কা বলে।
ধূমকেতু : মহাকাশে মাঝে মাঝে এক প্রকার জ্যোতিষ্কের আবির্ভাব ঘটে। এদের একটি মাথা ও একটি লেজ আছে। এসব জ্যোতিষ্ককে ধূমকেতু বলে।
গ্রহ : সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে আটটি গ্রহ। সূর্য থেকে গ্রহগুলো দূরত্ব অনুযায়ী পরপর যেভাবে রয়েছে তা হলো বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন।
উপগ্রহ : কিছু কিছু জ্যোতিষ্ক গ্রহকে ঘিরে আবর্তিত হয়, এদের উপগ্রহ বা চাঁদ বলে। মহাকর্ষ বলের প্রভাবে এরা গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এদের নিজস্ব আলো বা তাপ নেই। এরা সূর্য বা নক্ষত্র থেকে আলো বা তাপ পায়। চাঁদ পৃথিবী গ্রহের একমাত্র উপগ্রহ।
সৌরজগৎ : সূর্য এবং তার গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ, অসংখ্য ধূমকেতু ও অগণিত উল্কা নিয়ে সৌরজগৎ গঠিত। সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। সৌরজগতের যাবতীয় গ্রহ উপগ্রহের নিয়ন্ত্রক হলো সূর্য।
অক্ষাংশ : পৃথিবীর কেন্দ্র দিয়ে উত্তর দক্ষিণে কল্পিত রেখাকে অক্ষ (অীরং) বা মেরুরেখা বলে। দুই মেরু থেকে সমান দূরত্বে পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে একটি রেখা কল্পনা করা হয়েছে। এ রেখাকে বলা হয় নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা। নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে অবস্থিত কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের অক্ষাংশ বলে।
বিষুবলম্ব : সূর্য যেদিন যে অক্ষাংশের উপর লম্বভাবে কিরণ দেয় সেটাই সেদিনের সূর্যের বিষুবলম্ব।
দ্রাঘিমারেখা : নিরক্ষরেখাকে ডিগ্রি, মিনিট ও সেকেন্ডে ভাগ করে প্রত্যেক ভাগ বিন্দুর উপর দিয়ে উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত যে রেখাগুলো কল্পনা করা হয়েছে তাকে দ্রাঘিমারেখা বলে। দ্রাঘিমারেখাকে মধ্যরেখাও বলা হয়।
মূল মধ্যরেখা : যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের উপকণ্ঠে গ্রিনিচ মান মন্দিরের উপর দিয়ে উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত যে মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে তাকে মূল মধ্যরেখা বলে।
স্থানীয় সময় : পৃথিবীর আবর্তনের ফলে কোনো স্থানে সূর্য যখন ঠিক মাথার উপর আসে বা সর্বোচ্চে অবস্থান করে তখন ঐ স্থানে মধ্যাহ্ন এবং ঐ স্থানের ঘড়িতে তখন দুপুর ১২টা ধরা হয়। এ মধ্যাহ্ন সময় থেকে দিনের অন্যান্য সময় স্থির করা হয়। একে ঐ স্থানের স্থানীয় সময় বলা হয়।
প্রমাণ সময় : প্রত্যেক দেশেই সেই দেশের মধ্যভাগের কোনো স্থানের দ্রাঘিমারেখা অনুযায়ী যে সময় নির্ণয় করা হয় সে সময়কে ঐ দেশের প্রমাণ সময় বলে।
প্রতিপাদ স্থান : ভূপৃষ্ঠের উপর অবস্থিত কোনো বিন্দুর ঠিক বিপরীত বিন্দুকে সেই বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান বলে।
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা : জলভাগের উপর মানচিত্রে ১৮০° দ্রাঘিমারেখাকে অবলম্বন করে একটি রেখা কল্পনা করা হয়েছে। এটিই আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা।
আহ্নিক গতি : পৃথিবীর একটি পূর্ণ আবর্তনের সময়কে সৌরদিন বলে। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর আহ্নিক গতির বেগ সবচেয়ে বেশি। এখানে পৃথিবীর আিহ্নক গতি ঘণ্টায় ১,৬১০ কিলোমিটারেরও বেশি।
বার্ষিক গতি : পৃথিবী সৌরজগতের অন্যতম গ্রহ বলে পৃথিবীও প্রতিনিয়ত উপবৃত্তাকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে পৃথিবীর এ পরিভ্রমণকে পরিক্রমণ গতি বা বার্ষিক গতি বলে।
দিবা-রাত্রি হ্রাস-বৃদ্ধির কারণ : পৃথিবীর দিবা-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ- ক. পৃথিবীর অভিগত গোলাকৃতি; খ. পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ; গ. পৃথিবীর অবিরাম আবর্তন ও পরিক্রমণ গতি; ঘ. পৃথিবীর মেরুরেখার সর্বদা একই মুখে অবস্থান; ঙ. পৃথিবীর কক্ষপথে কৌণিক অবস্থান।
এছাড়াও এসএসসি অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ভূগোল সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post