২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশী ও বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনে ভাষা শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেসব অনুষ্ঠানে অনেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে থাকে। সেসব অনুষ্ঠানে কীভাবে বক্তব্য দিতে হয় সে সম্পর্কে আজকে আলোচনা করবো।
১৯৫২সালের এই দিনটিতে মাতৃভাষা রক্ষার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে সেই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে বহু ছাত্র শহীদ হয়। সেই সকল শহীদদের স্মরণে প্রতি বছরের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।
২১ শে ফেব্রুয়ারিতে অনেক ছোট আকারে বক্তব্য দিলেও অনেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে বড় আকারের বক্তব্য দিতে চান। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়লে ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে খুব সহজ ও সাবলিলভাবে বক্তব্য দিতে পারবেন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য
মাননীয় সভাপতি, সম্মানীয় প্রধান অতিথি ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ সকলকে জানাই সালাম – আসসালামু আলাইকুম, আদাব ও শুভেচ্ছা।
আজকের এই অনুষ্ঠানে ২১ শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাংলাদেশী ও বাংলা ভাষাভাষী সকল জনগোষ্ঠীর জাতীয় ২১ শে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব অপরিসীম।
১৯৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর যখন ঘোষণা দেয় উর্দু ও উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা তখন দেশের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণার প্রতিবাদে দেশের মানুষ আন্দোলন বিক্ষোভ শুরু করে।
১৯৪৮থেকে ১৯৫২পর্যন্ত এটি বিষয়টি আলোচনায় থাকে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে দেশের ছাত্রজনতা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। সেই বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অসংখ্য ছাত্র শহীদ হয়।
ছাত্রদের শহীদ হওয়ার পরে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। একপর্যায়ে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এই দিনে বাংলার সাহসী ছেলেরা শহীদ হয়েছিলো। তারা আমাদের শিক্ষা দেয় নিজের সংস্কৃতি ও নিজের অধিকারের অধিকারের আদায়ের জন্য কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের আরও শেখায় যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি এখন শুধু বাংলাদেশের ঐতিহ্য নয়। ১৯৯৯ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২১ শে ফেব্রুয়ারি ২০০০সালে প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে পৃথিবীর প্রতিটি ভাষারই সমান মর্যাদা রয়েছে। ২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের এটাও শেখায় যে ভাষার মাধ্যমেই আমরা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বহন করি।
পরিশেষে বলতে চাই, এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের জন্য গর্বের। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশ্বের সকল মাতৃভাষার গুরুত্ব ও মর্যাদার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
২১শে ফেব্রুয়ারি হতে আমরা শিক্ষা পাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার করার।নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়ার।
সবাইকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি আসসালামু আলাইকুম।
উপসংহার
উপরে ২১ শে ফেব্রুয়ারি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই বক্তব্যটি পড়ার পরে আপনি খুব সহজে গুছিয়ে ও সাবলীল ভাবে দিতে পারবেন। যারা বক্তব্য দিতে অনভিজ্ঞ, এর আগে কখনো বক্তব্য দেননি তাদের ক্ষেত্রে তারা কয়েকবার চেষ্টা করলেই পেরে যাবেন। আশা করি উক্ত বক্তব্যটি পড়ার পরে সাবলীল ভাবে বক্তব্য দিতে পারবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
আমরা আছি ফেসবুক ও ইউটিউবেও। এই লিংকে ক্লিক করে চলে আসতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেইজে।
Discussion about this post