ভূগোল ও পরিবেশ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : মানচিত্র একজন ভূগোলবিদের জন্য একটি জতি প্রয়োজনীয় উপকরণ। এর সাহায্যে সমগ্র পৃথিবী বা কোলো অঞ্চল সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান লাভ করা যায়। একটি মানচিত্রের মধ্যে আমরা সমগ্র পৃথিবীকে অথবা এর কোনো এক অঞ্চলকে দেখাতে পারি। আমরা কোনো একটি কাগজের মধ্যে মানচিত্র এঁকে সেখানে চিহ্ন দিয়ে সেই অঞ্চলের অবস্থা সম্বন্ধে বুঝাতে পারি।
একটি মানচিত্র যে কেবল ভূগোলবিদের প্রয়োজন হয় তা নয়। এটি প্রায় সকল মানুষের বিশেষ করে পর্যটক, প্রশাসক, পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, আবহাওয়াবিদ এমনকি সাধারণ মানুষেরও বিশেষ প্ররোজনে লাগে। এ অধ্যায়ে মানচিত্র, এর প্রকারভেদ, গুরুত্ব, ব্যবহার, স্থানীয় সময় ও প্রমাণ সময় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব।
ভূগোল ও পরিবেশ ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : দৃশ্যকল্প-১: মন্টি মানচিত্রের সাহায্যে এশিয়ার পাহাড়, পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি সম্পর্কে জানতে পারল। দৃশ্যকল্প-২: মন্টি দেখল কিছু মানচিত্রে বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রের সীমানা, ঐতিহাসিক স্থান দেখানো হয়েছে।
ক. প্রাকৃতিক মানচিত্র কাকে বলে?
খ. মানচিত্রের মাধ্যমে কীভাবে বিশ্বকে জানা যায়?
গ. দৃশ্যকল্প-১ এ মন্টি কোন ধরনের মানচিত্র দেখেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. দৃশ্যকল্প-২ এ মন্টির দেখা মানচিত্রের ধরন বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : দোয়েল ও কোয়েল জিপিএস যন্ত্র দ্বারা পৃথিবীতে তাদের নিজ নিজে অবস্থান জানতে পারল। দোয়েল রয়েছে ৩০° পূর্ব দ্রাঘিমায় এবং কোয়েল রয়েছে ৫০° পূর্ব দ্রাঘিমায়।
ক. ১° দ্রাঘিমার ব্যবধানে সময়ের পার্থক্য কত?
খ. মানচিত্রের জন্য সূচক গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. দোয়েলের অবস্থান যখন সকাল ৯টা তখন কোয়েলের অবস্থানে স্থানীয় সময় কত?
ঘ. তাদের ব্যবহৃত যন্ত্রের সুবিধা ও অসুবিধা বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : রফিক সাহেব পৈতৃকসূত্রে বহু জায়গা জমি পেয়েছেন। কিন্তু তার জমির কিছু অংশ বেদখল হয়ে যাওয়ায় তিনি এক ধরনের মানচিত্রের সাহায্যে তার জমিগুলোর সীমানা সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে চান।
ক. ‘GPS’ এর পূর্ণরূপ কী?
খ. মানচিত্রে স্কেলের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
গ. রফিক সাহেবের জন্য কোন ধরনের মানচিত্র প্রয়োজন আলোচনা কর ।
ঘ. রফিক সাহেব উক্ত কাজের জন্য প্রাকৃতিক বিষয়ক মানচিত্র ব্যবহার করতে পারবেন কি? তোমার মতামত ব্যক্ত কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : মীম ও মিথিলার জন্ম বাংলাদেশে। জীবিকার প্রয়োজনে বর্তমানে তারা দুটি ভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। মীম ও মিথিলার অবস্থানকৃত দেশ দুইটির দ্রাঘিমা যথাক্রমে ৫০° এবং ৭৫° পূর্ব।
ক. সূর্যের উন্নতি কোণ পরিমাপক যন্ত্রের নাম কী?
খ. জিপিএস এর সুবিধা লিখ?
গ. মীমের অবস্থানে সময় সকাল ১০ টা হলে মিথিলার অবস্থানে স্থানীয় সময় নির্ণয় করো।
ঘ. মীম ও মিথিলার জন্মভূমির সাথে উদ্দীপকের স্থান দুটির সময়ের পার্থক্য আছে কি? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : জাওয়াদ সাহেব রাত ১০.৩০ এ বি.বি.সি এর খবর শুনেন। লন্ডনে তখন বিকাল ৪.৩০ বাজে।
ক. পৃথিবীর কেন্দ্রে কোণের পরিমাপ কত?
খ. চাঁদের নিজস্ব আলো নেই কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শহরটির দ্রাঘিমা ০° হলে ঢাকার দ্রাঘিমা কত?
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত স্থানের সময়ের সঙ্গে ঢাকার সময়ের তারতম্য হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
মানচিত্র : সমগ্র পৃথিবী অথবা এর কোনো অংশের প্রতিকৃতি নির্দিষ্ট স্কেলে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার সাহায্যে সমতল কাগজের ওপর আঁকা হলে তাকে মানচিত্র বলে। ইংরেজি ‘Map’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ মানচিত্র। ল্যাটিন ভাষায় ‘Mappa’ থেকে ‘Map’ শব্দটি এসেছে। ল্যাটিন ভাষায় কাপড়ের টুকরাকে ‘Mappa’ বলে।
মানচিত্রে স্কেল নির্দেশের পদ্ধতি : মানচিত্রে তিনটি পদ্ধতিতে স্কেল নির্দেশ করা হয়। যথা : বর্ণনার সাহায্যে, রেখাচিত্রের সাহায্যে ও প্রতিভূ অনুপাতের সাহায্যে।
মানচিত্রের প্রকারভেদ : সাধারণত মানচিত্রকে স্কেল অনুসারে এবং বিষয়বস্তু অনুসারে এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। স্কেল অনুসারে মানচিত্রকে আবার ক. বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র এবং খ. ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
বিষয়বস্তু অনুসারে মানচিত্রকে আবার ক. গুণগত মানচিত্র এবং খ. পরিমাণগত মানচিত্র এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
ক্যাডাস্ট্রাল বা মৌজা মানচিত্র : এই মানচিত্র তৈরি করা হয় সাধারণত কোনো রেজিস্ট্রিকৃত ভূমি অথবা বিল্ডিং-এর মালিকানার সীমানা চিহ্নিত করার জন্য। আমাদের দেশে আমরা যে মৌজা মানচিত্রগুলো দেখতে পাই সেগুলো আসলে ক্যাডাস্ট্রাল মানচিত্র। মানচিত্রের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে আমাদের গ্রামের মানচিত্রগুলো।
ভূসংস্থানিক মানচিত্র : ভূসংস্থানিক মানচিত্রের আরেক নাম হচ্ছে স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র। এই মানচিত্রগুলো প্রকৃত জরিপকার্যের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়। সাধারণত এর মধ্যে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক দুই ধরনের উপাদান দেখতে পাওয়া যায়।
দেয়াল মানচিত্র : দেওয়াল মানচিত্র তৈরি করা হয় সাধারণত শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার করার জন্য। সারাবিশ্বকে অথবা কোনো গোলার্ধকে এই মানচিত্রের মধ্যে প্রকাশ করা হয়। দেয়াল মানচিত্রে আমাদের চাহিদামতো একটি দেশ অথবা একেকটি মহাদেশকে আলাদাভাবে প্রকাশ করা হয় বড় অথবা ছোট স্কেলে।
ভূচিত্রাবলি বা এটলাস মানচিত্র : মানচিত্রের সমষ্টিকে ভূচিত্রাবলি (এটলাস) বলে। এই মানচিত্রকে সাধারণত খুব ছোট স্কেলে করা হয়। এটি প্রাকৃতিক, জলবায়ুগত এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করে তৈরি করা হয়।
প্রাকৃতিক মানচিত্র : যে মানচিত্রে কোনো দেশ বা অঞ্চলের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ভূমিরূপ যেমন পর্বত, মালভূমি, মরুভূমি, নদী, হ্রদ ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য থাকে তাকে প্রাকৃতিক মানচিত্র বলে।
সাংস্কৃতিক মানচিত্র : বিভিন্ন স্থানের অর্থনৈতিক অবস্থা, বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রের সীমা, ঐতিহাসিক কোনো স্থান বা স্থাপত্য, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে যে মানচিত্র তৈরি হয় তাকে সাংস্কৃতিক মানচিত্র বলে।
স্থানীয় সময় : পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে। পৃথিবীর যে অংশটি পূর্ব দিকে সেই অংশটিতে আগে সূর্যোদয় বা সকাল হয়। পৃথিবীর আবর্তনের ফলে কোনো একটি স্থানে সূর্য যখন ঠিক মাথার উপর আসে অর্থাৎ সূর্য এবং সেই স্থানের কোণ যদি হয় ০ তখন ঐ স্থানে মধ্যাহ্ন। ঐ স্থানের ঘড়িতে তখন দুপুর ১২টা ধরা হয়। এই মধ্যাহ্ন থেকেই দিনের অন্যান্য সময়গুলো ঠিক করা হয়। এভাবে আকাশে সূর্যের অবস্থান থেকে যে সময় স্থির করা হয় তাকে স্থানীয় সময় বলে।
প্রমাণ সময় : দ্রাঘিমারেখার ওপর সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে আমরা সময় ঠিক করি। এভাবে মধ্যাহ্ন সূর্যের অবস্থানকে সেই স্থানের দুপুর ১২টা ধরে স্থানীয় সময় নির্ধারণ করলে সাধারণত একটি বড় দেশের মধ্যে সময়ের গণনার বিভ্রাট হয়। এই সময়ের বিভ্রাট থেকে বাঁচার জন্য প্রত্যেক দেশে একটি প্রমাণ সময় নির্ধারণ করা হয়।
মানচিত্রে জিপিএস : বর্তমানে মানচিত্র তৈরি, পঠন এবং ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে আধুনিক ব্যবহার হচ্ছে জিপিএস এবং জিআইএস। কোনো জিপিএস দ্বারা কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, উচ্চতা ও দূরত্ব জানা যায়। এছাড়া ঐ স্থানের উত্তর দিক, তারিখ ও সময় জানা যায়।
জিআইএস : ভৌগোলিক তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থাকে সংক্ষেপে জিআইএস বলে। জিআইএস-এ কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা হয়। বর্তমানে ভূমি ব্যবস্থাপনাসহ নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা, জনসংখ্যা বিশ্লেষণসহ প্রায় অধিকাংশ কাজেই এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে।
এছাড়াও এসএসসি অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ভূগোল সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post