SSC অর্থনীতি ৩য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর: এ অধ্যায়ে ধনতান্ত্রিক বা বাজার ব্যবস্থার অধীনে উপযোগ, ভোগ, মোট উপযোগ ও প্রান্তিক উপযোগ, ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধি, চাহিদা, যোগান, বাজার চাহিদ, বাজার যোগান রেখা ও ভারসাম্য দাম নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
SSC অর্থনীতি ৩য় অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. প্রান্তিক উপযোগ রেখা ডানদিকে নিম্নগামী হয় কেন?
উত্তর: দ্রব্য ভোগের সাথে প্রান্তিক উপযোগের বিপরীত সম্পর্ক থাকার কারণে প্রান্তিক উপযোগ রেখা ডানদিকে নিম্নগামী হয়। প্রান্তিক উপযোগ রেখা মূলত দ্রব্য ভোগের একক এবং প্রান্তিক উপযোগের মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে। আর কোনো দ্রব্য ক্রমাগত ভোগ করতে থাকলে ভোক্তার নিকট ঐ দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ ক্রমশ কমতে থাকে। অর্থাৎ দ্রব্য ভোগের সাথে প্রান্তিক উপযোগের সম্পর্ক বিপরীতমুখী আর এ বিপরীতমুখী সম্পর্কের কারণে প্রান্তিক উপযোগ রেখা ডানদিকে নিম্নগামী হয়।
২. দাম বাড়লে যোগান বাড়ে কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: দাম বাড়লে বিক্রেতা বর্ধিত দামে পূর্বের তুলনায় বেশি দ্রব্য বিক্রি করতে চায় বলে দাম বাড়লে যোগান বাড়ে। সাধারণত কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে বিক্রেতার মুনাফার পরিমাণ বাড়ে অর্থাৎ দাম যত বেশি বাড়ে বিক্রেতার মুনাফার পরিমাণ তত বাড়ে তাই সে দাম যত বাড়ে তত বেশি দ্রব্য বিক্রয় করতে চায়। আর এ কারণেই দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগান বাড়ে।
৩. চাহিদা রেখা ডানদিকে নিম্নগামী কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: দামের সাথে চাহিদার বিপরীত সম্পর্ক থাকার কারণে চাহিদা রেখা বাম থেকে ডানদিকে নিম্নগামী হয়। চাহিদা রেখা মূলত দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক প্রকাশ করে। আর দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে বিপরীতমুখী সম্পর্ক বিদ্যমান অর্থাৎ দাম বাৎলে চাহিদার পমিাণ কমে আর দাম কমলে চাহিদার পরিমাণ বাড়ে। দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার এরূপ বিপরীত সম্পর্কের কারণে অঙ্কিত চাহিদা রেখা বাম থেকে ডানদিকে নিম্নগামী হয়।
৪. যোগান সূচি ও যোগান রেখার মধ্যে দুটি পার্থক্য উল্লেখ কর।
উত্তর: কোনো দ্রব্যের বিভিন্ন দামে যোগানের বিভিন্ন পরিমাণকে একটি ছকে উপস্থাপন করলে তাকে যোগান সূচি বলে। আর যে রেখার প্রতিটি বিন্দুতে বিভিন্ন দামে বিভিন্ন পরিমাণে যোগান নির্দেশ করে তাকে যোগান রেখা বলে। যোগান সূচিতে যোগান বিধি গাণিতিকভাবে প্রদর্শিত হয়। তথাপি যোগান রেখা যোগান বিধির জ্যামিতিক বহিঃপ্রকাশ।
৫. উপযোগ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অনেক দ্রব্যসামগ্রীর প্রয়োজন পড়ে। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বইপত্র, ডাক্তারের সেবা প্রভৃতি দ্রব্য মানুষের অভাব মেটায়। এসব দ্রব্য না থাকলে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। অতএব, অর্থনীতিতে উপযোগ বলতে কোনো দ্রব্যের মধ্যে মানুষের অভাব মোচনের বা পূরণের ক্ষমতাকে বোঝানো হয়।
৬. চাহিদা বিধি কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: দামের সাথে চাহিদার বিপরীত সম্পর্ককে চাহিদা বিধি বলে। অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থেকে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে পণ্যের দাম কমলে চাহিদা বাড়ে এবং পণ্যের দাম বাড়লে চাহিদার পরিমাণ কমে। চাহিদার সাথে দামের এ বিপরীত সম্পর্ককেই চাহিদা বিধি বলে।
৭. যোগান রেখা ডানদিকে ঊর্ধ্বমুখী হয় কেন?
উত্তর: দাম ও যোগানের মধ্যে সমমুখী সম্পর্ক থাকার কারণে যোগান রেখা ডানদিকে ঊধ্বমুখী হয়। সাধারণত কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগান বাড়ে এবং দাম কমলে যোগান কমে। অর্থাৎ দাম ও যোগানের মধ্যে এরূপ সমমুখী সম্পর্ক থাকার কারণে এই দাম ও যোগানের পরিমাণ নিয়ে গঠিত যোগান রেখা ডানদিকে ঊর্ধ্বগামী হয়।
৮. দামের সাথে যোগানের সম্পর্ক কীরূপ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: দামের সাথে যোগানের সম্পর্ক সমমুখী। সাধারণত কোনো দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগানের পরিমাণ বাড়ে এবং দাম কমলে যোগানের পরিমাণ কমে। তাই দাম ও যোগানের মধ্যে সম্পর্ক সমমুখী বলা হয়।
৯. ভারসাম্য দাম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: চাহিদা ও যোগানের সমতাস্থলে নির্ধারিত দামকে ভারসাম্য দাম বলা হয়। বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতা একটি দ্রব্যের দাম নিয়ে দর কষাকষি করে। ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষির ফলে এমন একটি দামে দ্রব্যটি ক্রয়-বিক্রয় হয় খোনে তার চাহিদা ও যোগান সমান হয়। যে দামে চাহিদা ও যোগান সমান হয় তাকে ভারসাম্য দাম বলে।
১০. অর্থনীতিতে শুধুমাত্র উপযোগ নিঃশেষ করাকেই ভোগ বলে না- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: হ্যাঁ, শুধুমাত্র উপযোগ নিঃশেষ করাই ভোগ। ভোগ বলতে কোনো কিছু নিঃশেষ করাকে বোঝায় না। কেননা আমরা কোনো জিনিস ধ্বংস বা নিঃশেষ করতে পারি না। আমরা শুধুমাত্র দ্রব্যগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে এর উপযোগ গ্রহণ করতে পারি মাত্র। অতএব, অর্থনীতিতে মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করাকে ভোগ বলা হয়।
১১. ভোগ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: অর্থনীতিতে মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করাকে ভোগ বলে। আমরা প্রতিদিন নানা ধরনের পণ্য ভোগ করি। এখানে ভোগ বলতে এগুলোর নিঃশেষ করাকে বোঝায় না, আমরা শুধু দ্রব্যগুলো ব্যভহারের মাধ্যমে এর উপযোগ গ্রহণ করতে পারি। অভাব মোচন দ্বারা দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হলে তাকে ভোগ বলে।
১২. বাজার চাহিদা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বাজারে সব ভোক্তার ব্যক্তিগত চাহিদার সমষ্টিকে বলা হয় বাজার চাহিদা। একজন ব্যক্তির চাহিদাসূচি থেকে ব্যক্তিগত চাহিদা রেখা অঙ্কন করা যায়। তেমনি সমস্ত ক্রেতার ব্যক্তিগত চাহিদা যোগ করে বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বাজারে যদি দুই জন ক্রেতা থাকে এবং পণ্যের দাম ২ টাকা হলে তাদের চাহিদা যদি যথাক্রমে ১৫ ও ২০ একক হয় তাহলে বাজার চাহিদা হবে (১৫+২০) = ৩৫ একক। এভাবে বাজার চাহিদাসূচি তৈরি করা সম্ভব এবং সেই সূচি থেকে অঙ্কিত রেখাকে বাজার চাহিদা রেখা বলা হয়।
১৩. ভোগ ও ভোক্তা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: অর্থনীতির পরিভাষায় মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করাকে ভোগ বলা হয়। আর কোনো অবাধ ও সহজলভ্য দ্রব্য ছাড়া অন্য সব দ্রব্য ভোগ করার জন্য যে ব্যক্তি অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত থাকে তাকে ভোক্তা বলা হয়। আরও সহজভাবে বললে, যে ব্যক্তি ভোগ করে তাকে ভোক্তা বলে।
১৪. চাহিদার অনুমতি শর্তগুলো কী কী?
উত্তর: একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট দামে ভোক্তা একটি দ্রব্য বা সেবার যে পরিমাণ ক্রয় করতে ইচ্ছুক তাকে চাহিদা বলে। চাহিদা কতগুলো অনুমুতি শর্তের উপরে নির্ভর করে থাকে। যথা- ১. দ্রবেল দাম, ২. বিকল্প দ্রব্যের দাম, ৩. পরিপূরক দ্রব্যের দাম, ৪. ক্রেতার রুচি ও অভ্যাস, ৫. ক্রেতার আয়, ৬. ঋতু পরিবর্তন, ৭. সঞ্চয় প্রবণতা। উপরিক্ত বিষয়গুলো চাহিদার অনুমতি শর্ত হিসেবে বিবেচ্য।
১৫. কীভাবে বাজার চাহিদা রেখা পাওয়া যায়?
উত্তর: বাজারে সব ভোক্তার ক্যক্তিগত চাহিদার সমষ্টিকে বলা হয় বাজার চাহিদা। একজন ব্যক্তির চাহিদা সূচি থেকে ব্যক্তিগত চাহিদা রেখা অঙ্কন করা যায়। সমস্ত ক্রেতার ব্যক্তিগত চাহিদা যোগ করে বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, কোনো বাজারে যদি দুজন ক্রেতা থাকে এবং পণ্যের দাম ২ টাকা হলে তাদের চাহিদা যথাক্রমে ১৫ ও ২০ একক হয় তাহলে বাজার চাহিদা হবে (১৫+২০) = ৩৫ একক। এভাবে বাজার চাহিদা সূচি তৈরি করা সম্ভব এবং তা দ্বারা বাজার চাহিদা রেখা অঙ্কন করা যায়।
১৬. ভোগ ও ভোক্তার দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর: ভোগ হলো অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ কাজ। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভোগ করে সেই ভোক্তা। ভোগ ও ভোক্তার দুটি পার্থক্য নিম্নরূপ-
- অর্থনীতিতে ভোগ বলতে বোঝায় মানুষের অভাব পূরণের জন্য কোনো দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা। অপরদিকে যে ব্যক্তি ভোগ করে তাকে ভোক্তা বলে।
- ভোগ হলো মানুষকে অভাব পরিতৃপ্তির জন্য দ্রব্যসামগ্রীর সেবা কর্মের প্রত্যক্ষ ও চূড়ান্ত ব্যবহার। অপরদিকে ভোক্তা হলো অকাধ সহজলভ্য দ্রব্য ছাড়া অন্য সব দ্রব্য ভোগ করা জন্য যে ব্যক্তি অর্থ ব্যয় করতে প্রস্তুত থাকে।
এসএসসি শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন সাজেশান্স ও নোট পেতে আমাদের Facebook Page এ Like দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post