ভূগোল ও পরিবেশ ৬ষ্ঠ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : বারিমণ্ডল ভূপৃষ্ঠের শতকরা ৭১ ভাগ দখল করে আছে। পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে। এর মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগর সবচেয়ে বড় এবং গভীরতম। মহাসাগরে পানির নির্দিষ্ট ও নিয়মিত প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলা হয়। বিভিন্ন নিয়ামকের প্রভাবে মহাসাগরীয় স্রোতের সৃষ্টি হয়।
প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার ভাটা হয়। এগুলো হলো- চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব এবং পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি। মানব জীবনে জোয়ার ভাটার যথেষ্ট প্রভাব আছে। জোয়ার ভাটার মাধ্যমে স্রোতের বিপরীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এছাড়াও ভূখণ্ড থেকে আবর্জনা নদীর মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়।
ভূগোল ও পরিবেশ ৬ষ্ঠ অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : মিনা ও রিমা টিভিতে একটি ডকুমেন্টারি দেখছিল। সেখানে। তারা দেখল সমুদ্রে স্রোত সৃষ্টি হচ্ছে। কোনো কোনো স্রোতের মধ্যে দিয়ে বড় বড় বরফ ভেসে যাচ্ছে। আবার কিছু স্রোত দেখাচ্ছে বেশ উষ্ণ। অহনা বলল, সমুদ্র স্রোতের অনেক কারণ রয়েছে।
ক. সাগর কাকে বলে?
খ. মানবজীবনে জোয়ার-ভাটার প্রভাব রয়েছে- ব্যাখ্যা করো
গ. মিনা ও রিমা যে স্রোতগুলো দেখল তাদের বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মিনার বলা উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : মামুন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জাহাজে চাকরি নিল। সে সাগরে দেখলো পানি স্থির নয়। সর্বদা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির এই চলাচলকে সমুদ্রস্রোত বলে।
ক. জোয়ার ভাটা কাকে বলে?
খ. জোয়ার ভাটার ফলে ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত ঘটনাটি সৃষ্টি হওয়ার প্রধান কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত ঘটনাটি পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে সমুদ্র স্রোতের ভিডিও চিত্র দেখে এ নিয়ে স্যারের সাথে আলোচনা করছিল। শিক্ষার্থীরা কৌতুহলের সাথে ভিডিওটি দেখে উষ্ণ ও শীতল সমুদ্র স্রোত সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জন করে।
ক. হিমশৈল কী?
খ. সমুদ্রস্রোত বলতে কী বোঝ?
গ. উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোত কতগুলো নিয়ামকের দ্বারা সংঘটিত হয় তা আলোচনা কর।
ঘ. ব্যবসা ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উষ্ণ ও শীতল সমুদ্র স্রোতের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : রাশেদ গ্রীষ্মকালে রংপুর থেকে কুয়াকাটা বেড়াতে গেল। সে অনুভব করল কুয়াকাটার তাপমাত্রা রংপুর থেকে কম। বিশেষ করে সমুদ্র সৈকতের আরামদায়ক আবহাওয়া রংপুর থেকে ভিন্ন ।
ক. ঋতু আশ্রয়ী বায়ু কাকে বলে?
খ. জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ উল্লেখ করো।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত জেলা দুইটির তাপমাত্রার পার্থক্যের পিছনে জলবায়ুর কোন নিয়ামকটি কাজ করে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত বিষয়টির সাথে সমুদ্রস্রোতের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজ ফ্রিডম সিজ অস্ট্রেলিয়া থেকে দক্ষিণ আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাহাজটি পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগর অতিক্রম করে আমেরিকায় পৌছায়। এ বিশাল মহাসাগর অতিক্রমকালে জাহাজের নাবিককে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। গভীরতার তারতম্যের দরুণ সৃষ্ট বিভিন্ন সমুদ্রস্রোতের কারণে জাহাজের নাবিককে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়েছে।
ক. পৃথিবীর শতকরা কতভাগ পানি সমুদ্রে রয়েছে?
খ. সমুদ্রের গভীরতার তারতম্য কীভাবে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি করে?
গ. উদ্দীপকের ফ্রিডম সিজ জাহাজের পাড়ি দেওয়া মহাসাগরের অবস্থান চিত্র এঁকে দেখাও।
ঘ. উদ্দীপকে নির্দেশিত মণ্ডলের সার্বিক পরিচিতি বিশ্লেষণ করো।
এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো
বারিমণ্ডলের ধারণা : বারিমণ্ডলে পানি কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় রয়েছে। পৃথিবীর শতকরা ৯৭ ভাগ পানি রয়েছে সমুদ্রে। মাত্র ৩ ভাগ পানি আছে নদী, হিমবাহ, ভূগর্ভস্থ, হ্রদ, মৃত্তিকা, বায়ুমণ্ডল ও জীবমণ্ডলে।
মহাসাগর : বায়ুমণ্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল লবণাক্ত জলরাশিকে মহাসাগর বলে। পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে। এগুলো হলো- প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, উত্তর মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগর।
সাগর : মহাসাগর অপেক্ষা স্বল্প আয়তন বিশিষ্ট জলরাশিকে সাগর বলে।
উপসাগর : একদিকে জল এবং তিনদিক স্থল দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্র ভাগকে বলে উপসাগর।
দ : চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে হ্রদ বলে।
সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপ : সমুদ্র তলদেশের ভূমিরূপকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়-
১. মহীসোপান : সমুদ্রের উপকূলরেখা থেকে তলদেশের দিকে ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।
২. মহীঢাল : মহীঢালের শেষ সীমা থেকে ভূভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সাথে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে।
৩. গভীর সমুদ্রের সমভূমি : মহীঢালের শেষ থেকে গভীর সমুদ্রের বিস্তৃত সমভূমি দেখা যায়। এখানে বহু শৈলশিরা অবস্থান করে।
৪. নিমজ্জিত শৈলাশিরা : সমুদ্র তলদেশের আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা সঞ্চিত হয়ে নিমজ্জিত শৈলশিরা গঠিত হয়।
৫. গভীর সমুদ্রখাত : গভীর সমুদ্রের সমভূমিতে গভীর খাত দেখা যায়। ম্যারিয়ান খাত পৃথিবীর গভীরতম খাত।
সমুদ্রস্রোত : সমুদ্রের পানির একটি নির্দিষ্ট দিকে চলাচলকে সমুদ্রস্রোত বলে। এটি দুই প্রকার- উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত।
সমুদ্রস্রোতের কারণ : সমুদ্রস্রোতের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. নিয়ত বায়ুপ্রবাহ
২. পৃথিবীর আিহ্নক গতি
৩. সমুদ্রজলের তাপমাত্রার পার্থক্য
৪. মেরু অঞ্চলে সমুদ্রে বরফের গলন
৫. সমুদ্রের গভীরতার তারতম্য
৬. সমুদ্রজলের লবণাক্ততার পার্থক্য
৭. ভূখণ্ডের অবস্থান।
সমুদ্রস্রোতের প্রভাব : সমুদ্রস্রোতের প্রভাব মানবজীবনের নানাক্ষেত্রে বিস্তৃত, যেমন-
১. পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর প্রভাব
২. আবহাওয়ার উপর প্রভাব
৩. কুয়াশা ও ঝড়ঝঞ্ঝা সৃষ্টি
৪. মৎস্য ব্যবসায় সুবিধা
৫. হিমশৈলের আঘাতে বিপদ
৬. সমুদ্রে অগভীর মগ্নচড়ার সৃষ্টি।
জোয়ার ভাটার কারণ : প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি হয় যথা-
১. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব
২. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি।
জোয়ার ভাটার প্রভাব : মানবজীবনে জোয়ার ভাটার অনেক প্রভাব দেখা যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে নদীর মোহনা পরিষ্কার থাকে, জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয় ইত্যাদি।
জ্ঞানমমূলক প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন ॥ ১ ॥ পৃথিবীর পানিরাশির শতকরা কতভাগ সমুদ্রে রয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীর পানিরাশির শতকরা ৯৭ ভাগ সমুদ্রে রয়েছে।
প্রশ্ন ॥ ২ ॥ পৃথিবীর পানিকে কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীর পানিকে লবণাক্ত ও মিঠা পানি এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ মহাসাগর কাকে বলে?
উত্তর : বারিমণ্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল পানিরাশিকে মহাসাগর বলে।
প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ পৃথিবীতে কতটি মহাসাগর রয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে।
প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর কোনটি?
উত্তর : পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর হলো প্রশান্ত মহাসাগর।
প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ দক্ষিণ মহাসাগরের অবস্থান লিখ।
উত্তর : ৬০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে এন্টার্কটিকার হিমভাগ পর্যন্ত দক্ষিণ মহাসাগরের অবস্থান।
প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ পৃথিবীর উত্তর মেরু কোন মহাসাগরে অবস্থান করছে?
উত্তর : পৃথিবীর উত্তর মেরু উত্তর মহাসাগরে অবস্থান করছে।
প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত কোন মহাসাগর?
উত্তর : এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত ভারত মহাসাগর।
প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ হ্রদ কাকে বলে?
উত্তর : চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত পানি রাশিকে হ্রদ বলে।
প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ পানির মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে শব্দ তরঙ্গের গতিবেগ কত?
উত্তর : প্রতি সেকেন্ডে শব্দ তরঙ্গ পানির মধ্য দিয়ে প্রায় ১,৪৭৫ মিটার নিচে যায় এবং আবার ফিরে আসে।
প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ সমুদ্রের তলদেশের ভূমিরূপকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তর : সমুদ্রের তলদেশের ভূমিরূপকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা কত?
উত্তর : মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার।
প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ সমুদ্রে মহীঢালের গভীরতা কত?
উত্তর : সমুদ্রে মহীঢালের গভীরতা ২০০ থেকে ৩,০০০ মিটার।
প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ গভীর সমুদ্রের গড় গভীরতা কত মিটার?
উত্তর : গভীর সমুদ্রের গড় গভীরতা ৫,৪০০ মিটারের অধিক।
প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ পৃথিবীর গভীরতম খাত কোনটি?
উত্তর : পৃথিবীর গভীরতম খাত গুয়াম দ্বীপের ৩২২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ম্যারিয়ানা খাত।
প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ ম্যারিয়ানা খাতের গভীরতা কত?
উত্তর : ম্যারিয়ানা খাতের গভীরতা প্রায় ১০,৮৭০ মিটার।
প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ আটলান্টিক মহাসাগরের পোর্টোরিকো খাতের গভীরতা কত?
উত্তর : আটলান্টিক মহাসাগরের পোর্টোরিকো খাতের গভীরতা ৮,৫৩৮ মিটার।
প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ কী?
উত্তর : সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ বায়ুপ্রবাহ।
প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোতকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোতকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে- উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত।
প্রশ্ন ॥ ২০ ॥ বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর : বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য ৭১৬ কিলোমিটার।
এছাড়াও এসএসসি অন্যান্য বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ সাজেশন রয়েছে কোর্সটিকায়। যা তোমরা বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলে ডাউনলোড করতে পারবে। উপরে দেয়া ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ভূগোল সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরগুলো ডাউনলোড করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post