SSC অর্থনীতি ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর : একটি দেশের জাতীয় আয়ের ধারণা থেকে সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বোঝা যায়। অর্থাৎ দেশটি কী উন্নত, উন্নয়নশীল, না অনুন্নত এ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। কোলো দেশের জাতীয় আয় কত,হা জানার জন্য জাতীয় আয় পরিমাপ করতে হয়। এ অধ্যায়ে বাংলাদেশে জাতীয় আয় গণনার পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
SSC অর্থনীতি ৬ষ্ঠ অধ্যায় অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. প্রযুক্তি কীভাবে উৎপাদন উপকরণের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়?
উত্তর: প্রযুক্তি নতুন যন্ত্রপাতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে উৎপাদনের উপকরণের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়। প্রযুক্তির উপর মোট দেশজ উৎপাদন বহুলাংশে নির্ভর করে। প্রযুক্তির উন্নয়ন নানাভাবে হতে পারে। যেমন- নতুন আবিষ্কার, যন্ত্রপাতির ডিজাইন ও দক্ষতার উন্নতি, নতুন মালামালের আবিষ্কার ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ, কৃষি খাতে চিরায়ত বীজের পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বীজ ব্যবহার করে ধানের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে প্রযুক্তি উৎপাদনের উপকরণের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়।
২. NNP কীভাবে হিসাব করা হয়?
উত্তর: কোনো জাতির মোট জাতীয় উৎপাদন থেকে মূলধন ব্যবহারজনিত অবচয় পূরণের ব্যয় বাদ দিয়ে তাকে নিট জাতীয় উৎপাদন বা NNP হিসাব করা হয়। মূলধন ব্যবহারজনিত অবচয় ব্যয় বলতে উৎপাদন ব্যবস্থায় মূলধনের ব্যবহারজনিত যে ক্ষয় হয়, তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে ব্যয় বহন করতে হয়, তাকে বোঝায়। অর্থাৎ NNP = GNP-CCA
৩. GNI, CCA- এর মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তর: মোট দেশজ উৎপাদনের সাথে নিট উপাদান আয় যোগ করে মোট জাতীয় আয় বা GNI পাওয়া যায়। কোনো জাতির মোট জাতীয় আয় বা GNI থেকে মূলধন ব্যবহারজনিত অবচয় পূরণের ব্যয় বা CCA বাদ দিলে যা থাকে তাকে নিট জাতীয় আয় বলে। অর্থাৎ নিট জাতীয় আয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে GNI, CCA সম্পর্কিত হয়।
৪. মোট জাতীয় আয় ও নিট জাতীয় আয়ের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত আর্থিক বছরে দেশের নাগরিকগণ কর্তৃক যে পরিমাণ চূঢ়ান্ত দ্রব্য ও সেবা উৎপন্ন হয় তার বাজার মূল্যের সমষ্টিকে মোট জাতীয় আয় বলে (GNI)। অন্যদিকে, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো অর্থনীতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবার আর্থিক মূল্য থেকে মূলধন ব্যবহারজনিত অবচয় ব্যয় বাদ দিয়ে যা থাকে তাকে নিট জাতীয় আয় বলে।
৫. জিডিপি নির্ণয়ে কোন মাধ্যমিক দ্রব্যকে বিবেচনায় আনা হয় না? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জাতীয় আয় গণনায় শুধু চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচিত হয়। কারণ চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্যের ভেতরেই মাধ্যমিক পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচনা করলে জাতীয় আয় গণনার ক্ষেত্রে দ্বৈত গণনা দেখা দেয়। এজন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবাকে জিডিপি গণনার সময় বিবেচনা করা হয় না।
৬. মোট জাতীয় আয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো নির্দিষ।ট সময়ে সাধারণত আর্থিক বছরে কোনো দেশের নাগরিকগণ কর্তৃক যে পরিমাণ চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবা উৎপন্ন হয় তার কাজার মূল্যের সমষ্টিকে মোট জাতীয় আয় বলে। মোট দেশজ উৎপাদনের সাথে নিট উৎপাদন আয় যোগ করে মোট জাতীয় আয় পাওয়া যায়।
৭. নিট জাতীয় আয় বলতে কী বুঝ?
উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনোা অর্থনীতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবার আর্থিক মূল্য থেকে মূলধনের ব্যবহারজনিত অবচয় ব্যয় বাদ দিলে যা থাকে তাকে নিট জাতীয় আয় বলে। উৎপাদন কাজে যন্ত্রপাতি, ঘরবাড়ি প্রভৃতি ব্যবহার করার ফলে ধীরে ধীরে তাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাই তাদের সংস্কার ও মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। মোট জাতীয় আয় থেকে মূলধনের বা যন্ত্রপাতির ক্ষক্ষতিজনিত ব্যয় বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাই হলো নিট জাতীয় আয়।
৮. উৎপাদন পদ্ধতিতে কীভাবে জাতীয় আয় পরিমাণ করা যায়?
উত্তর: উৎপাদন পদ্ধতিতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন খাতে এক বছরে উৎপাদিত চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার মূল্য যোগ করে মোট দেশজ উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশে অর্থনীতিকে ১৫টি খাতে বিভক্ত করা হয় এবং খাতওয়ারি উৎপাদনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পরিশেষে ১৫টি খাতের উৎপাদনের মূল্য যোগ করে জাতীয় আয় পরিমাণ করা হয়।
৯. সকল দেশের জিডিপি ব্রদ্ধির জন্যই মূলধন আবশ্যক কেন?
উত্তর: সকল দেশের জিডিপি বৃদ্ধির জন্যই মূলধন আবশ্যক। মূলধন জিডিপি অর্থাৎ মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক নির্ধারক। উন্নত দেশসমূহে মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির মূলে মূলধন কাজ করে। আবার অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহ মূলধনের অভাবের কারণে মোট জাতীয় আয় ও মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে না। সুতরাং মূলধন সকল দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক।
১০. জাতীয় আয় গণনার ক্ষেত্রে শুধু চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচনা করা হয় কেন?
উত্তর: জাতীয় আয় গণনায় শুধু চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচিত হয়। কারণ চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্যের ভিতরেই মাধ্যমিক পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবার মূল্য অন্তর্ভুক্ত হয়। চূড়ান্ত দ্রব্যের পরে আবার মাধ্যমিক পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচনা করলে জাতীয় আয় গণনার ক্ষেত্রে দ্বৈত গণনা সমস্যা দেখা দেয়। তাই জাতীয় আয় গণনার ক্ষেত্রে শুধু চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচনা করা হয়।
১১. আয় পদ্ধতিতে কীভাবে জাতীয় আয় নির্ণয় করা হয়?
উত্তর: আয় পদ্ধতিতে জাতীয় আয় হলো উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত উপকরণসমূহের প্রাপ্ত আয়ের সমষ্টি। উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মৌলিক উপকরণ হচ্ছে ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন। এগুলোতে প্রাপ্ত আয় যথাক্রমে খাজনা, মজুরি, সুদ ও মুনাফা। সুতরায় এ পদ্ধতিতে এক বছরের মোট খাজনা, মোট মজুরি, মোট সুদ ও মোট মুনাফার যোগফলকে জাতীয় আয় বলা হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আয়ের মধ্যে যদি হস্তান্তর পাওনা অন্তর্ভুক্ত থাকে, তবে তবে তা জাতীয় আয় পরিমাপ হতে বাদ দেওয়া হয়।
১২. উৎপাদন পদ্ধতিতে কীভাবে জাতীয় আয় পরিমাপ করা হয়?
উত্তর: একটি দেশের অর্থনীতি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিভক্ত। এসব খাতে একবছরে চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার মূল্য যোগ করে মোট দেশজ উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়। বাংলাদেশে অর্থনীতিকে ১৫টি খাতে বিভক্ত করা হয় এবং খাতওয়ারি উৎপাদনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পরিশেষে ১৫টি খাতের উৎপাদনের মূল্য যোগ করে মোট দেশজ উৎপাদন নির্ধারণের মাধ্যমে জাতীয় আয় পরিমাপ করা হয়।
১৩. আয় পদ্ধতিতে কীভাবে জাতীয় আয় পরিমাপ করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: আয় পদ্ধতিতে জাতীয় আয় হলো উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত উপকরণসমূহের প্রাপ্ত আয়ের সমষ্টি। উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মৌলিক উপকরণ হচ্ছে ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন। এগুলোতে প্রাপ্ত আয়যথাক্রমে খাজনা, মজুরি, সুদ ও মুনাফা। সুতরাং, এ পদ্ধীততে এক বছরের মোট খাজনা, মোট মজুরি, মোট সুদ ও মোট মুনাফার যোগফলকে জাতীয় আয় বলে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আয়ের দশ্যে যদি হস্তান্তর পাওনা অন্তর্ভুক্ত থাকে, তবে তা জাতীয় আয় পরিমাপ হতে বাদ দেওয়া হয়।
১৪. কখন দ্বিত্ব গণনা সমস্যা দেখা দেয়?
উত্তর: জাতীয় আয় গণনায় শুধুমাত্র চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্য সেবা বিবেচিত হয়। কারণ চূড়ান্ত পর্যায়ের দ্রব্যের ভেতরেই মাধ্যমিক পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবা বিবেচনা করলে জাতীয় আয় গণনার ক্ষেত্রে দ্বিত্ব গণনা সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের দ্রব্য ও সেবাকে জাতীয় আয় গণনার সময় বিবেচনা করা হয়।
১৫. জাতীয় আয় পরিমাপের ব্যয় পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতিসমূহের মধ্যে ব্যয় পদ্ধতি অন্যতম। এ পদ্ধতিতে জাতীয় আয় হলো কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সমাজের সব ধরনের ব্যয়ের যোগফল। সমাজের মোট ব্যয় বলতে ব্যক্তি খাতের ভোগ ও বিনিয়োগ ব্যয় এবং সরকারি ব্যয় ও নিট রপ্তানিকে বোঝায়। অতএব, ভোগ + বিনিয়োগ + সরকারি ব্যয় + নিট রপ্তানি = (রপ্তানি-আমদানি) = মোট দেশজ উৎপাদন।
১৬. মোট জাতীয় উৎপাদন ও মোট দেশজ উৎপাদনের মধ্যে একটি পার্থক্য দেখাও?
উত্তর: একটি নির্দষ্ট সময়ে সাধারনত একটি আর্থিক বছরে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত দেশের নাগরিকদের দ্বারা যে পরিমাণ চূরান্ত দ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপাদিত হয় তার বাজার মূল্যের সমষ্টিকে মোট জাতীয় আয় বলে। পক্ষান্তরে, একটি নির্দিষ্ট সাধারণত এক বছরের একটি দেশের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে মোট যে পরিমাণ চূরান্ত দ্রব্যও সেবা উৎপাদন হয় তার বাজার মূল্যের সমষ্টিকে মোট দেশজ উৎপাদন বলে।
১৭. জাতীয় আয় পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দাও?
উত্তর: এ পদ্ধতিতে জাতীয় আয় হলো উৎপাদন কার্যে ব্যবহৃত উপকরণসমুহের প্রাপ্ত আয়ের সমষ্টি। উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মৌলিক উপকরণ হচ্ছে- ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন। এদের প্রাপ্ত আয় যথাক্রমে খাজনা, মজুরি, সুদ ও মুনাফা। অতএব, জাতীয় আয় = খাজনা+ মজুরি+ সুদ+ মুনাফা।
১৮. চূরান্ত দ্রব্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যেসব দ্রব্য ও সেবা পুনরায় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় না সেগুলোকে চূরান্ত দ্রব্যও সেবা বলে। যেমনÑ উৎপাদিত চিনির যে অংশ সরাসরি ভোগ তথা চা, শরবত ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় তাকে চূরান্ত পর্যায়ের দ্রব্য বলে।
এসএসসি শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন সাজেশান্স ও নোট পেতে আমাদের Facebook Page এ Like দিয়ে রাখো। আমরা আছি ইউটিউবেও। আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post