৬ষ্ঠ শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ৬ষ্ঠ অধ্যায় : আমাদের বিদ্যালয় আমাদের সবার কাছে খুব প্রিয়। আমাদের প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে খুব ভালো লাগে, তাই না? কিন্তু ২০২০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত করোনা মহামারির কারণে আমরা অনেক দিন বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি।
তখন আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমরা যেন পড়ালেখা চালিয়ে নিতে পারি, সেজন্য বিভিন্নভাবে আমাদের অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। এখনো বিভিন্ন কারণে আমাদের অভিভাবকদের সাথে শিক্ষকরা যোগাযোগ করে থাকেন।
৬ষ্ঠ শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ৬ষ্ঠ অধ্যায়
কিন্তু আমাদের অনেক সহপাঠী ছিল বা আছে, যাদের সাথে যোগাযোগ মাধ্যম না থাকার কারণে শিক্ষকরা মহামারির সময় যোগাযোগ করতে পারেননি বা এখনো পারেন না। তাই এবারে আমরা এমন কিছু একটা বানাব যেন কখনও কোনো কারণে আমাদের কোনো সহপাঠী পিছিয়ে না পড়ে।
এ শিখন অভিজ্ঞতায় আমরা বানাব শিখনের জন্য নেটওয়ার্ক’। এর অর্থ হলো আমাদের এমন একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা দরকার যাতে ভবিষ্যতে আবার কখনও এমন পরিস্থিতি হলেও যেন শিক্ষক সবার সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন আর পড়া শিখিয়ে দিতে পারেন।
হয়তো আমাদের মধ্যেই কেউ বড় হয়ে সেটি ডিজাইন করতে পারব। আমরা এখন নেটওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে সেটি শিখব, যাতে দরকার হলে বড় হয়ে আরও ভালো নেটওয়ার্ক বানিয়ে ফেলতে পারি।
নেটওয়ার্কিং কী তা বোঝার আগে আমরা একটি কাজ করে নিই। আমাদের কি মনে আছে, গত শিখন অভিজ্ঞতায় আমরা কী করেছিলাম। হ্যা, আমরা বন্ধুর সাথে ভ্রমণের একটি পরিকল্পনা করেছিলাম এবং সেই পরিকল্পনাটি আমরা একটি ফ্লোচার্টের মাধ্যমে দেখিয়েছিলাম। এবার আমরা বাংলাদেশের মানচিত্রে আমাদের ভ্রমণ পরিকল্পনাটি আকব, যাকে আমরা আমাদের ভ্রমণ পরিকল্পনার যোগাযোগ নেটওয়ার্ক বলতে পারি।
মানচিত্রের ওপরে আমরা যখন যোগাযোগের নেটওয়ার্ক আকব তখন বাস, রেল ও লঞ্চ যোগাযোগের জন্য ভিন্ন ধরনের দাগ ব্যবহার করব। রেল যোগাযোগের জন্য দুই সারি ড্যাশ, বাস যোগাযোগের জন্য সরলরেখা আর লঞ্চ যোগাযোগের জন্য বক্ররেখা ব্যবহার করব।
এছাড়াও বাহন যেখানে পরিবর্তন হচ্ছে, সেই জায়গাকে স্টপেজ ধরে একটি চিহ্ন দিব। এবার আমরা আমাদের ভ্রমণ পরিকল্পনায় যে যে জায়গায় যাব যে সকল জায়গা এবং বাহনগুলো মানচিত্রে আকি। একটি উদাহরণ আমাদের জন্য নিচে দেওয়া আছে।
এ শিখন অভিজ্ঞতায় আমরা যা শিখব: বিভিন্ন রকম মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়তে নেটওয়ার্কিং এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। নেটওয়ার্ক হলো দুই বা ততোধিক বিষয়/বস্তু/বাজি যখন একে অপরের সাথে কিছু দিয়ে যুক্ত থাকে। যেমন- রাস্তাঘাট, যানবাহন, টিকেট কাটার অফিস, যানবাহনের চালক বা হেলপার, ট্রাফিক পুলিশ, ট্রাফিক আইন এসব কিছু সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্কের অংশ।
যোগাযোগ নেটওয়ার্ক হলো নিজেদের যাওয়া-আসা বা কিছু একটা আদান-প্রদান বুঝায়। একইভাবে নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা, রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা, ডাকযোগাযোগ ব্যবস্থা, ফাইবার অপটিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, উপগ্রহভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, মুঠোফোন, রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট এসব কিছু মিলেই আমাদের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। ই-মেইল, এসএমএস এর মাধ্যমে ডিজিটাল সিস্টেমে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
প্রথম সেশন (মূল বই: পৃষ্ঠা ৮১)
১. রাজধানী থেকে সকল বাস, রেলগাড়ি ও লঞ্চ সময়মতো ছেড়ে যাবে কিনা তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়?
আমার উত্তর:
পরিবহনের কল সেন্টারে কল দিয়ে সময় নিশ্চিত হওয়া যায়।
যেসব ব্যক্তি সব সময় যাতায়াত করে তাদেরকে জিজ্ঞেস করা যায়।
গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে।
সহপাঠীর উত্তর:
ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে।
জিপিএস ব্যবহার করে।
আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে।
২. রাজধানী থেকে সকল যাত্রী বিভাগীয় শহরে বাহন পরিবর্তন করতে পারল কিনা তা কীভাবে জানা যেতে পারে?
আমার উত্তর:
সিসিটিভির মাধ্যমে।
মুঠো ফোনের মাধ্যমে।
ট্র্যাকিং সিস্টেম অন করে।
সহপাঠীর উত্তর:
সিসিটিভির মাধ্যমে।
SMS এর মাধ্যমে।
আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে।
৩. সকল যাত্রী বাহনে উঠল কিনা এবং বিভাগীয় শহর থেকে জেলা শহর পর্যন্ত সময়মতো পৌঁছাতে পারল কিনা তা রাজধানী থেকে কীভাবে জানা যেতে পারে?
আমার উত্তর:
গুগল ম্যাপের মাধ্যমে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে।
সিসিটিভির মাধ্যমে।
সহপাঠীর উত্তর:
বারকোড রিডারের মাধ্যমে।
আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে।
জিপিএস এর মাধ্যমে।
তিনটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমরা কিছু বিশেষ শব্দ পেলাম, যা ছাড়া আমাদের তথ্যটি পাওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ শব্দগুলো আমরা নিচের ঘরে লিখতে পারি।
উত্তর থেকে পাওয়া বিশেষ শব্দ: সিসিটিভি, ইন্টারনেট, গুগল ম্যাপ, জিপিএস, আন্তঃসংযোগ, মুঠো ফোন, SMS, ট্র্যাকিং সিস্টেম, বারকোড রিডার।
সেশন- ২: ডিজিটাল নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানি
আগের সেশনে দেওয়া তিনটি প্রশ্নের উত্তর আমাদের নির্ধারিত ঘরে লিখি। নিচে দুইটি ঘর দেওয়া আছে। প্রথম ঘরে যেখানে “আমার উত্তর” লেখা আছে, সেখানে আমরা যে উত্তর পেলাম তা লিখব এবং “সহপাঠীদের উত্তর” এর জায়গায় আমার সহপাঠী যে উত্তর খুঁজে এনেছে তা লিখি। সহপাঠীর উত্তরে এবং আমার উত্তরে কোনো বিশেষ শব্দ তেথ্য আদান-প্রদান সংক্রান্ত/ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কিত) থাকলে তা পরের পৃষ্ঠায় নির্ধারিত জায়গায় লিখি।
তৃতীয় সেশন (মূল বই: পৃষ্ঠা ৯৬)
১. রাজধানী থেকে সকল বাস, রেলগাড়ি ও লঞ্চ সময়মতো ছেড়ে যাবে কিনা তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়?
উত্তর : রাজধানী থেকে কোনো বাস, ট্রেন ও লঞ্চ ছাড়ার সময় যখন চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে তখন বাস, ট্রেন ও লঞ্চের অফিসের এ দায়িত্বে নিয়োজিত একজন ব্যক্তি তার ডিজিটাল যন্ত্র (কম্পিউটার/মোবাইলে) সময়সূচি দিয়ে দিবেন। এখানে এই ব্যক্তি হলো প্রেরক।
তার তথ্য রাউটার দেখবে কার কার কাছে যাবে। ঠিকানা অনুযায়ী রাউটার তথ্যটি সার্ভারে পাঠাবে এবং সার্ভার তথ্যটি আমার ঠিকানা দেখে আমার রাউটারে পাঠাবে এবং আমি আমার রাউটার থেকে ঠিকমতো তথ্য পেয়ে যাব। এখানে বলে রাখি, আমাকে এই তথ্য পেতে হলে কিন্তু ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোনের এসএমএস সেবা ব্যবহার করতে হবে যা মূলত একটি নেটওয়ার্ক।
২. রাজধানী থেকে সকল যাত্রী বিভাগীয় শহরে বাহন পরিবর্তন করতে পারল কিনা তা কীভাবে জানা যেতে পারে?
উত্তর : বিভাগীয় শহরে বাহন অফিসের ব্যক্তি তাদের ডিজিটাল যন্ত্রের মাধ্যমে সার্ভারে তথ্য পাঠাবে। সার্ভার তথ্যটি আমার ঠিকানা দেখে আমার রাউটারে পাঠাবে এবং আমি রাজধানীর যাত্রী বিভাগীয় শহরে বাহন পরিবর্তন করতে পারল কি-না সে তথ্য পেয়ে যাবো। এই তথ্য সরবরাহ করতে কম্পিউটার/মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হয় যা একটি নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।
৩. সকল যাত্রী বাহনে উঠল কিনা এবং বিভাগীয় শহর থেকে জেলা শহর পর্যন্ত সময়মতো পৌঁছাতে পারল কিনা তা রাজধানী থেকে কীভাবে জানা যেতে পারে?
উত্তর : সকল যাত্রী বাহনে উঠার সময় যাত্রীর টিকিট বারকোড রিডারের মাধ্যমে রিড করে যাত্রীর সকল তথ্য রাউটারের মাধ্যমে সার্ভারে পাঠাবে এবং কেন্দ্রীয় সার্ভার তথ্যটি আমার ঠিকানায় পাঠাবে এবং আমি ঠিকমতো তথ্য পেয়ে যাবো।
এখানে বলে রাখি, বারকোড স্ক্যানের জন্য স্ক্যানার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়েছে যা একটি নেটওয়ার্ক সিস্টেম।
চতুর্থ সেশন (মূল বই: পৃষ্ঠা ১০০)
দুটি নেটওয়ার্কের মাঝে মিল
১। নন-ডিজিটাল ও ডিজিটাল নেটওয়ার্ক উভয় নেটওয়ার্কেই তথ্য আদান-প্রদান করা যায়। নন-ডিজিটাল নেটওয়ার্ক দিয়ে চিঠি আদান-প্রদান করা যায়, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক দিয়েও ডিজিটাল চিঠি বা ই-মেইল পাঠানো যায়।
২। ডিজিটাল ডিভাইসে আমরা খবর পড়তে পারি। আবার খবরের কাগজ থেকেও খবর পড়তে পারি।
৩। নন-ডিজিটাল ও ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায়। নন- ডিজিটাল মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করা যায়, ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন আরেক জনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।
৪। নন-ডিজিটাল ও ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে খেলাধুলা করা যায়। নন- ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঘরে ও ঘরের বাইরে খেলাধুলা করা যায়, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক দিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে গেমস খেলা যায়।
দুটি নেটওয়ার্কের মাঝে অমিল
১। নন-ডিজিটাল নেটওয়ার্কে তথ্য আদান-প্রদানের সময় তথ্য যে মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে তা দেখা যায়, ছোঁয়া যায় কিন্তু ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য আদান- প্রদানের সময় তা সাধারণত দেখা বা ছোঁয়া যায় না।
২। খবরের কাগজ আমরা হাতে নেড়ে পরতে পারি আর ডিজিটাল ডিভাইসে সেটা পারি না।
৩। নন-ডিজিটাল নেটওয়ার্কে যোগাযোগের সময় সরাসরি দেখা যায়, ছোঁয়া যায়। ডিজিটাল মাধ্যমে যোগাযোগের সময় সরাসরি দেখা বা ছোঁয়া যায় না।
৪। নন-ডিজিটাল নেটওয়ার্কে খেলাধুলা করার সময় অনেকজন বন্ধু থাকতে পারে, মাঠে গিয়ে দৌড়াতে পারে। ডিজিটাল নেটওয়ার্কে সময় মাঠে গিয়ে খেলা যায় না।
আরো দেখো: ৬ষ্ঠ শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি সকল অধ্যায়ের সমাধান
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, ওপরে দেওয়া Answer Sheet অপশনে ক্লিক করে তোমার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি ৬ষ্ঠ অধ্যায় সকল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করে নাও। ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
Discussion about this post